1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বোম্বেটেদের দল

২৮ মার্চ ২০১২

জার্মানির দলীয় রাজনীতির মানচিত্র কাঁপিয়ে দিয়ে একের পর এক রাজ্য বিধানসভায় প্রবেশ করছে ‘পিরাটেনপার্টাই’ – বাংলায় যাকে বোম্বেটেদের দল বলা যায়৷ এবার তাদের লক্ষ্য জাতীয় সংসদ৷

ছবি: dapd

জার্মানিতে রক্ষণশীল, সামাজিক গণতন্ত্রী, বামপন্থী, উদারপন্থী শিবিরের সমর্থকদের অনেকেই আর দল ও নেতাদের প্রতি আস্থা রাখতে পারছেন না৷ রাজনীতির উপর থেকে তাদের আস্থাই উঠে যাচ্ছে৷ এই শূ্ণ্যস্থান পূরণ করতে উদয় হয়েছে ‘পিরাটেনপার্টাই' বা বোম্বেটেদের দলের৷ প্রথমে নগর-রাজ্য বার্লিনের বিধানসভা নির্বাচনে প্রায় ৯ শতাংশ ভোট পেয়ে অবাক বোম্বেটের দল৷ এবার ক্ষুদ্র রাজ্য সারলান্ড'এও ৭.৪ শতাংশ ভোট পেয়ে বিধানসভায় প্রবেশ করলো বোম্বেটেরা৷ একই নির্বাচনে প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে উদারপন্থী এফডিপি দল৷

কেন বোম্বেটেদের প্রতি এত জনসমর্থন দেখা যাচ্ছে? তাদের দলীয় কর্মসূচিই বা কী? তাদের মূল বক্তব্য ইন্টারনেট ও তথ্য সংরক্ষণকে ঘিরে৷ তথ্য অধিকার ও ব্যক্তিগত তথ্যের আরও সংরক্ষণ চায় এই দল৷ চায় আরও স্বচ্ছতা৷ এমনকি চার দেওয়ালের গোপনীয়তার বেড়াজাল ভেঙে দলীয় মিটিং'ও প্রকাশ্যে করে থাকে এরা, যাতে সবাই তা দেখতে পায়৷ শুরুতে কিছুটা অপ্রস্তুত থাকলেও ‘পিরাটেনপার্টাই' গত ডিসেম্বর মাসে কিছু সার্বিক কর্মসূচি ঘোষণা করেছে৷ সবার জন্য ন্যূনতম আয়, রাষ্ট্র ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে সব সম্পর্ক ছিন্ন করা এবং মাদকের উপর সব নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া তাদের মূলমন্ত্র৷ বিনামূল্যে শিক্ষা এবং পশুপাখির সুরক্ষাও তাদের পছন্দের বিষয়৷ অর্থনীতি ও অন্যান্য বিষয় সম্পর্কে এখনো দলীয় নীতি চূড়ান্ত হয় নি৷ আর ঠিক এই কারণেই তাদের এমন সাফল্য দেখা যাচ্ছে বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ গেরো নয়গেবাউয়ার৷ তারা শুরু থেকে মোটেই নিজেদের সবজান্তা হিসেবে তুলে ধরছে না৷ কোনো বিষয় সম্পর্কে কিছু না জানার অর্থ বোকা হওয়া নয়৷ সবাই মিলে বিষয়টা শিখে ফেলতে কতক্ষণ!

ছবি: picture-alliance/dpa

সারলান্ড রাজ্যে দলের অন্যতম নেতা মিশায়েল হিলবারার বললেন, ‘‘সবার আগে আমরা তাদের উদ্বুদ্ধ করতে পেরেছি, যারা সাধারণত ভোটই দেন না৷ মানুষকে আবার গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার অন্তর্গত করতে পেরে আমরা খুবই সন্তুষ্ট৷ আমাদের সাফল্যের রহস্য বুঝতে গেলে এটাও বুঝতে হবে, যে আমরা রাজনীতিকে আবার খোলামেলা মুক্ত মঞ্চে পরিণত করতে পেরেছি৷ অন্য দলের অনেক সমর্থকও প্রতিবাদ হিসেবে আমাদের ভোট দিচ্ছেন৷ অনেক মানুষ সারলান্ড'এর রাজনীতি সম্পর্কে বীতশ্রদ্ধ৷ শুধু বিষয় নয়, প্রচলিত রাজনীতির ধারাই তাদের পছন্দ নয়৷ আমরা এবার রাজনীতিতে এসে কিছু পরিবর্তনের চেষ্টা করছি৷''

ছবি: Creative Commons/Piratenpartei Deutschland/Bastian Greshake

প্রশ্ন উঠছে, রাজনৈতিক মঞ্চে ‘পিরাটেনপার্টাই'-এর অবস্থান ঠিক কোথায়? দলের মুখপাত্র আলেক্স লেসমান ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, আসলে অনেক মানুষ সামাজিক-উদারপন্থী এক দলের অভাব বোধ করছিলেন৷ সেই শূ্ণ্যস্থান পূরণ করতে পারে বোম্বেটেরা৷ গোটা দেশে আপাতত তাদের সদস্যসংখ্যা ২২,০০০-এর মতো৷ তাদের বয়স সাধারণত ৩৫এর কম৷ ইন্টারনেট সংক্রান্ত বিষয়ে তাদের বিশেষ আগ্রহ রয়েছে৷ তাদের মধ্যে অনেকেই প্রতিষ্ঠিত দলগুলির বিকল্প খুঁজছিল৷ সারলান্ড রাজ্যে দলের নেত্রী ইয়াসমিন মাউরার'এর বয়স মাত্র ২২৷ তিনি ফেসবুক ও টুইটার'এর মতো সাইটের মাধ্যমেই সবার সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন৷

সুইডেনের একই নামের দলের আদর্শে প্রায় ৬ বছর আগে জার্মানিতে আত্মপ্রকাশ করেছিল এই দল৷ তখন কেউ কল্পনাও করতে পারে নি, যে একদিন এই দল নির্বাচিত হয়ে কোনো রাজ্য বিধানসভায় প্রবেশ করতে পারবে৷ আর এখন জাতীয় রাজনীতিতেও নতুন এই দলের অংশগ্রহণের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না৷ ফলে নড়েচড়ে বসছেন বাকি দলের নেতারাও৷ স্বয়ং চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল স্বীকার করেছেন, যে বোম্বেটেরা রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ‘ফ্যাক্টর'এ পরিণত হয়েছে৷ দীর্ঘমেয়াদী ভিত্তিতে তাদের সম্পর্কে কিছু বলা না গেলেও আপাতত তাদের অস্তিত্ব মেনে নিতেই হবে৷ তবে বোম্বেটেদের সঙ্গে জোট বাঁধতে এখনো প্রস্তুত নয় বাকি দলগুলি৷ আগে বিভিন্ন বিষয়ে তাদের অবস্থান পুরোপুরি স্পষ্ট করতে হবে, তারপরই এবিষয়ে ভাবা যাবে, বলছেন রাজনৈতিক দলের নেতারা৷

প্রতিবেদন: সঞ্জীব বর্মন

সম্পাদনা: দেবারতি গুহ

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ