এবার জার্মানিতে কিশোরদের জন্যও করোনার টিকা
২৮ মে ২০২১আগামী ৭ই জুন থেকে জার্মানির ১৬ বছরের বেশি সব মানুষ করোনা টিকার জন্য আবেদন করতে পারবেন৷ এবার ১২ থেকে ১৬ বছর বয়সি কিশোর-কিশোরীরাও সেই তালিকায় নাম লেখাতে পারবে৷ জার্মানির ফেডারেল ও রাজ্য সরকারগুলি বৃহস্পতিবার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷ তবে প্রাপ্তবয়স্কদের মতো কিশোরদের ক্ষেত্রেও টিকা বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে না৷ সরকারের এই সিদ্ধান্তকে ঘিরে একাধিক কারণে বিতর্ক দানা বাঁধছে৷
প্রথমত বায়োনটেক-ফাইজার কোম্পানির করোনা টিকা আদৌ কিশোরদের জন্য উপযুক্ত কিনা, সে বিষয়ে দ্বন্দ্ব দূর হয়নি৷ শুক্রবার ইউরোপীয় ওষুধ সংক্রান্ত দফতর সেই ছাড়পত্র দেবার আগেই জার্মানি রাজনৈতিক স্তরে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললো৷ সরকার অবশ্য সেই অনুমোদনের শর্তেই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে৷ জার্মানির নিজস্ব স্থায়ী টিকা কমিশন আগামী সপ্তাহে এ বিষয়ে নিজস্ব অবস্থান জানাবে৷ এই টিকা কিশোরদের জন্য আদৌ নিরাপদ কিনা, যথেষ্ট তথ্যের অভাবে সে বিষয়ে সংশয় প্রকাশ করছে কমিশন৷ শিশু-কিশোরদের মধ্যে করোনা ভাইরাস তেমন তীব্র প্রতিক্রিয়া না দেখানো সত্ত্বেও তড়িঘড়ি করে টিকা দেবার সিদ্ধান্ত তাই সমালোচনার মুখে পড়ছে৷ গ্রীষ্মের ছুটির পর স্কুলে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনার তাগিদে এমন ‘হঠকারী' পদক্ষেপ নিয়ে সংশয় প্রকাশ করছে কিছু মহল৷ বৈজ্ঞানিক কারণের বদলে সরকার সাংগঠনিক দুশ্চিন্তাকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠছে৷
দ্বিতীয়ত জার্মানিতে টিকার জোগান নিয়েও সমস্যা দেখা যাচ্ছে৷ ধাপে ধাপে শুধু উচ্চ ঝুঁকিসম্পন্ন গোষ্ঠীগুলির জন্য করোনা টিকার ব্যবস্থা করে যথেষ্ট সুফল পাওয়া যাচ্ছে৷ টিকাদান কর্মসূচিতে যথেষ্ট গতি এসেছে৷ ৪০ শতাংশেরও বেশি মানুষ টিকার প্রথম ডোজ এবং প্রায় ১৫ শতাংশ মানুষ দুটি ডোজই পেয়ে গেছেন৷ তবে অধিকার সত্ত্বেও অনেক মানুষ এখনো আবেদন করেও অ্যাপয়েন্টমেন্ট পাচ্ছেন না৷ রাজ্যগুলির মধ্যে টিকার বণ্টন নিয়েও ক্ষোভ বাড়ছে৷ ৭ই জুন থেকে সবাই টিকার জন্য আবেদনের সুযোগ পেলে চাপ আরো বেড়ে যাবে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন খোদ স্বাস্থ্যমন্ত্রী ইয়েন্স স্পান৷ অথচ বাড়তি টিকার সরবরাহ নিশ্চিত না করেই তিনি কিশোরদের জন্যও ছাড়পত্রের পক্ষে সওয়াল করেছেন৷ ফলে চাহিদা ও জোগানের মধ্যে ফারাক আরো বেড়ে যাবে এবং প্রাপ্তবয়স্কদের সঙ্গে কিশোররাও শুধু আবেদন করে দীর্ঘ সময় ধরে অপেক্ষা করতে বাধ্য হবে বলে অনুমান করা হচ্ছে৷
জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল কিশোরদের টিকা সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে সংশয় মেনে নিয়ে বলেছেন, শিশুদের টিকার বিষয়টি অত্যন্ত সংবেদনশীল৷ তবে করোনা টিকা না নিলেও স্কুলের শিক্ষার্থীদের প্রতি কোনো বৈষম্য করা হবে না৷ বরং স্কুলের পরিবেশ করোনামুক্ত রাখার উদ্যোগের উপর বেশি জোর দেওয়া হবে৷ করোনা পরক্ষার নিয়মেও কোনো পরিবর্তন করা হবে না৷ ফলে কিশোররা টিকা ছাড়াই তাদের বাবা-মার সঙ্গে ছুটি কাটাতে ভ্রমণও করতে পারবে৷ ম্যার্কেল আরো বলেন, যে সব কিশোরের নির্দিষ্ট কিছু স্বাস্থ্যগত সমস্যা রয়েছে, টিকার ক্ষেত্রে তাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে৷
এসবি/এসিবি (ডিপিএ, রয়টার্স)