স্বাধীনতার ৪৯ বছর পর প্রথম বিশ্বকাপ জিতেছে বাংলাদেশ৷ আনন্দের আতিশয্যে এখন ‘আসল’ লক্ষ্য থেকে সরে যাবে না তো? এবার তো বড়দের বিশ্বকাপটাও জিততে হবে!
বিজ্ঞাপন
ফাইনালে ভারতকে একরকম নাস্তানাবুদ করে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জিতে নিয়েছে বাংলাদেশ৷ বোলিং, ফিল্ডিং, ব্যাটিং সব বিভাগেই ভারতকে কুপোকাত করেছে আকবর আলীর দল৷ শরিফুল, ইমন, অভিষেক, রকিবুলদের দেখে মনে হয়েছে ক্রিকেটে আরো বড় প্রাপ্তির কাছাকাছি চলে এসেছে বাংলাদেশ৷
আরো বড় প্রাপ্তি মানে, সাফল্যে ধারাবাহিক হয়ে ক্রিকেট দুনিয়ার ‘এলিট’ শ্রেণিতে জায়গা পাকা করে নেয়া৷ তা করতে হলে ওয়ানডে বিশ্বকাপটাও এবার জিততে হবে৷
টেস্ট আর টি-টোয়েন্টির চেয়ে বাংলাদেশ ওয়ানডেতে বরাবরই ভালো৷ ভালো হওয়ার সবচেয়ে বড় কারণ সাকিব, তামিম, মুশফিক, মাশরাফি এবং মাহমুদুল্লাহ৷ গত কয়েকবছরে যত সাফল্য, তার প্রায় সবই এসেছে এই পাঁচজনের হাত ধরে৷ তাদের শূন্যস্থান পূরণের জন্য তেমন কেউ এগিয়ে আসছেন না, বাংলাদেশের ক্রিকেটে এই সংখ্যা ক্রমশ বড় হচ্ছিলো৷ এবার অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপে তা দূর হবার আশা দেখা গেছে, মনে হয়েছে এই দলের কয়েকজন অন্তত অনেকদূর যাবেই৷
কোনো সাফল্য এলে মাতামাতি, প্রশংসা আর পুরস্কারের বাড়াবাড়ি শুরু হতে দেরি হয় না৷
বিশ্বকাপজয়ী দলটার প্রশংসা এবং পুরস্কার অবশ্যই প্রাপ্য৷ তবে যে-কোনো কিছুই অতিরিক্ত হয়ে গেলে ফলাফল ভালো হয় না, এই কথাটা মনে রাখা দরকার৷
অনূর্ধ্ব ১৯ দলের খেলোয়াড়দের ইতিমধ্যে 'সোনালি প্রজন্ম' বলা শুরু হয়ে গেছে৷ অধিনায়ক আকবর আলীকে আকবর দ্যা গ্রেট বলতে শুরু করেছেন কেউ কেউ৷ কেউ কেউ আকবরের মধ্যে খুঁজে পেয়েছেন মহেন্দ্র সিং ধোনিকে৷
বিশ্বকাপ এনে দিলেন যারা, তাদের নিয়ে গর্ব তো হবেই৷ অবশ্যই তারা সোনালি প্রজন্ম৷ কিন্তু মনে রাখতে হবে, ফুটবলে পর্তুগাল এমনই একটা প্রজন্ম পেয়েছিল৷ দেশকে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ গিয়েছিল তারা৷ কিন্তু বিশ্বকাপে তারা কোনোদিন পাত্তাই পায়নি৷
অসাধারণ, গ্রেট ইত্যাদি শব্দগুলো অতি ব্যবহারে কখনো কখনো খুব ক্লিশে হয়ে যায়৷ শব্দের ভারে, অতি স্বীকৃতির চাপে চাপা পড়ে যায় অনেক ক্রিকেট-প্রতিভা৷
অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের প্রায় প্রতি আসরেই কেউ না কেউ মহাতারকা হওয়ার সম্ভাবনা দেখিয়েছেন, ফাইনালে সেঞ্চুরি করে বা পাঁচ উইকেট নিয়ে সাড়া জাগিয়েছেন ৷ অথচ ফাইনালের সেই ম্যাচ-সেরাদের অনেকের এখন কোনো পাত্তাই নেই৷
১৯৯৮-এর অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ ফাইনালে সেঞ্চুরি করে ইংল্যান্ডকে শিরোপা জিতিয়েছিলেন স্টিফেন পিটার্স৷ অনেক মাতামাতি হয়েছিল তাকে নিয়ে৷ সেই পিটার্সের পক্ষে ইংল্যান্ড জাতীয় দলে খেলার সুযোগ কোনোদিনই হয়নি৷
দুই বছর পর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ফাইনালে জ্বলে উঠেছিল নীরজ প্যাটেলের ব্যাট৷ ম্যান অফ দ্যা ম্যাচ হয়েছিলেন তিনি৷ ভারতের ক্রিকেটে তিনিও এখন দপ করে জ্বলে উঠে ফুস করে নিভে যাওয়ার দৃষ্টান্ত৷ জাতীয় দলের হয়ে টেস্ট, ওয়ানডে, টি-টোয়েন্টি কিছুই খেলা হয়নি তার৷
২০০২-এর অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জিতেছিল অস্ট্রেলিয়া৷ ৪ উইকেট নিয়ে ফাইনালের সেরা খেলোয়াড় হয়েছিলেন জারার্ড বার্ক৷ নিজেকে আর মেলে ধরতে না পারায় বার্কের ক্যারিয়ারও আর এগোয়নি৷ দেশের হয়ে টেস্ট, ওয়ানডে বিশ্বকাপ খেলার স্বপ্ন তার জীবনেও অধরাই থেকেছে৷
অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ মাতানো পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের অবস্থা আরো করুণ৷
২০০৪ এবং ২০০৬- টানা দুইবারের চ্যাম্পিয়ন তারা৷ ২০০৪-র ফাইনালে দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলে পাকিস্তানকে প্রথম অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জিতিয়েছিলেন আসিফ ইকবাল৷ পরের আসরের ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে জয় এনে দিয়েছিলেন আনোয়ার আলী৷ দুজনের একজনও পরে একবারের জন্যও জাতীয় দলে ডাক পাননি৷ দুবারে ফাইনাল খেলা ২২ জনের মধ্যে শুধু ফাওয়াদ আলম এবং নাসির জামশেদই তিন ফরম্যাটে দেশকে প্রতিনিধিত্ব করার অল্পবিস্তর সুযোগ পেয়েছেন৷
ভারতকে ২০০৮ বিশ্বকাপ জেতানো অজিতেশ আরগান, ২০১২ বিশ্বকাপ জেতানো উন্মুক্ত চান্দ, সাউথ আফ্রিকাকে ২০১৪ বিশ্বকাপ জেতানো করবিন বশ, ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ২০১৬ বিশ্বকাপ জেতানো কিসি কার্টিও একই পথের পথিক৷ অনূর্ধ-১৯ বিশ্বকাপ জেতার পর তারা সবাই বিস্মরণের পথেই হেঁটেছেন৷ দেশের হয়ে আর কিছু করতে পারেনি, তাদের কথা কেউ খুব বেশি মনেও রাখেনি৷
২০২০ সালে যেখানে যে খেলা দেখবেন
২০২০ সালের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বিশ্বের নানা দেশে চলবে খেলাধুলার বড় বড় প্রতিযোগিতা৷ ফুটবল, ক্রিকেট, টেনিস রাগবি, অ্যাথলেটিকস, হ্যান্ডবল, বলতে গেলে সব খেলারই তারকারা নামবেন শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে৷ দেখুন ছবিঘরে...
ছবি: picture-alliance/dpa/F. Gambarini
টেনিসের নতুন আসর
টেনিসে বছরের প্রথম গ্র্যান্ডস্লাম টুর্নামেন্ট অস্ট্রেলিয়ান ওপেন শুরুর আগে অস্ট্রেলিয়াতেই বসছে পুরুষদের দলগত চ্যাম্পিয়নশিপের নতুন আসর ‘এটিপি কাপ’৷ নোভাক জোকোভিচের সার্বিয়া, রাফায়েল নাদালের স্পেনসহ পুরুষদের টেনিসের তারকা খেলোয়াড়দের সবার দেশই সেখানে অংশ নেবে বলে ধারণা করা হচ্ছে৷ এটিপি কাপ তিন জানুয়ারি শুরু হয়ে চলবে ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত৷ ২০ জানুয়ারি থেকে শুরু হবে অস্ট্রেলিয়ান ওপেন৷
ছবি: Reuters/Actions images/T. O'Brien
মিয়ামি গার্ডেন্সে সুপার বৌল
২ ফেব্রুয়ারি থেকে মিয়ামি গার্ডেন্সে শুরু হবে সুপার বৌল৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/D. J. Phillip
ক্রিকেটে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ
নারী এবং পুরুষদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপও হবে এ বছর৷ আয়োজক অস্ট্রেলিয়া৷ ২১ ফেব্রুয়ারি শুরু হবে নারীদের আসর, শেষ হবে ৮ মার্চ৷ পুরুষদের আসর শুরু হবে ১৮ অক্টোবর, শেষ হবে ১৫ই নভেম্বর৷
ছবি: Getty Images/AFP/D. Sarkar
ভিয়েতনামে ফর্মুলা ওয়ানের তারকামেলা
হ্যানয়ে ৫ এপ্রিল থেকে শুরু হচ্ছে ভিয়েতনাম গ্রাঁ প্রিঁ৷ ভিয়েতনামে আসবেন ফর্মুলা ওয়ানের বড় বড় তারকারা, রাজধানী হ্যানয়ের স্ট্রিট সার্কিটে ঝড় উঠবে লুইস হ্যামিল্টনদের গাড়ির চাকায়- ভাবা যায়!
ছবি: Getty Images/C. Mason
মেয়েদের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনাল
২০২০ সালের ২৪ মে অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় হবে মেয়েদের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনাল৷সেখানে টানা পঞ্চম শিরোপা জিততে পারে লিয়ঁ৷ ফ্রান্সের এই ক্লাব ইতিমধ্যে কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করেছে৷ সেখানে আরো আছে ফ্রান্সের আরেক ক্লাব পিএসজি, স্পেনের আটলেটিকো মাদ্রিদ ও বার্সেলোনা, জার্মানির বায়ার্ন মিউনিখ ও ভল্ফসবুর্গ, স্কটল্যান্ডের গ্লাসগো সিটি এবং ইংলিশ ক্লাব আর্সেনাল৷
ছবি: picture alliance/Actionplus
ইউরো ২০২০
এ বছর ৬০ বছরে পা দিচ্ছে ইউরো ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপ৷ এবার ১৬তম আসরের ম্যাচগুলো হবে ১২টি দেশে৷ফুটবলে দক্ষিণ অ্যামেরিকার শ্রেষ্ঠত্বের আসর কোপা অ্যামেরিকাও চলবে একই সময়ে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/F. Gambarini
টুর ডি ফ্রান্স
২৭ জুন থেকে সাইক্লিংয়ের এই আসরও শুরু হবে, চলবে ১৯ জুলাই পর্যন্ত৷২১ পর্বে সাইক্লিস্টদের তিন হাজার ৪৭০ কিলোমিটার পাড়ি দেয়ার এই প্রতিযোগিতার জন্যও মুখিয়ে আছেন অনেকে৷
ছবি: picture-alliance/Augenklick/Roth
টোকিও অলিম্পিকস
জাপানের রাজধানীতে বসছে খেলাধুলার সবচেয়ে বড় আসর৷ আসর শুরু হবে ২৪ জুলাই, শেষ হবে ৯ আগস্ট৷ ৩৩টি খেলায় অংশ নিতে অলিম্পিক ভিলেজে ভিড় জমাবেন প্রায় ১১ হাজার ক্রীড়াবিদ৷
ছবি: Getty Images/AFP/C. Triballeau
টোকিও প্যারালিম্পিকস
২৩ আগস্ট থেকে ৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত টোকিওতেই হবে প্যারালিম্পিকস৷ শারীরিক প্রতিবন্ধীদের সবচেয়ে বড় এই ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় অংশ নেবেন প্রায় চার হাজার ক্রীড়াবিদ৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/S. Lodge
রাইডার কাপ
টাইগার উডস ফেরায় ২০১৮-র আসরে আবার চ্যাম্পিয়ন হবার আশা করেছিল যুক্তরাষ্ট্র৷ প্যারিসে সেবার ব্যর্থ হলেও এবার নিশ্চয়ই আয়োজক হওয়ার সুবিধা পুরোদমে কাজে লাগাতে চাইবে উডসের দল৷ তিনদিনের এ আসরটি শুরু হবে ২০২০ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর৷
ছবি: Getty Images//M. Ehrmann
ইউরোপিয়ান হ্যান্ডবল চ্যাম্পিয়নশিপ
হ্যান্ডবলে ইউরোপের পুরুষদের এই চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল হবে আগামী ২৬ জানুয়ারি, সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/M. Wolf
11 ছবি1 | 11
যেভাবে শিরোপা এলো
ভারতকে তিন উইকেটে হারিয়েছে আইসিসি অনুর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপের শিরোপা ছিনিয়ে নিয়েছে বাংলাদেশ৷ ছবিঘরে দেখুন শিরোপা জয়ের পথে কিছু মুহূর্ত৷
ছবি: AFP/M. Spatari
পেসারদের অগ্নিবর্ষণ
টসে জিতে ফিল্ডিং নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক আকবর আলি৷ শুরু থেকেই দর্দান্ত লাইন লেংথের বলে ভারতকে চেপে ধরেন পেসার শরিফুল ও সাকিব৷ প্রথম ১০ ওভারে এক উইকেট হারিয়ে ভারত তোলে মাত্র ২৩ রান৷
ছবি: AFP/M. Spatari
বাধা জয়সাওয়াল
বাংলাদেশের বোলিং আক্রমণের সামনে তেমন একটা সুবিধা করতে পারছিল না ভারতের কোন ব্যাটসম্যানই৷ কিন্তু বাধা হয়ে দাড়ান যাশাসবি জয়সাওয়াল৷ ১২১ বলে আট চার ও এক ছক্কায় ৮৮ রান করেন এই ওপেনার৷ তাকে ফেরান শরিফুল৷
ছবি: AFP/M. Spatari
১৭৮ রান দূরে
শেষ পর্যন্ত ভারত গুটিয়ে যায় ৪৭ দশমিক দুই ওভারে ১৭৭ রানে৷ অভিষেক দাস ৪০ রানে ৩ উইকেট নেন৷ দুটি করে উইকেট নিয়েছেন তানজিম ও শরিফুল৷ বাংলাদেশ তখন শিরোপা থেকে ১৭৮ রান দূরে৷
ছবি: AFP/M. Spatari
বিষ্ণু ঘূর্ণি
বাংলাদেশের দুই ব্যাটসম্যান শুরুটা করেছিলেন দুর্দান্ত৷ ওপেনিং জুটিতে অর্ধশত রান ওঠে মাত্র আট ওভারেই৷ কিন্তু এরপর থেকেই একের পর এক আঘাত হানতে শুরু করেন রবি বিষ্ণু৷ নিজের প্রথম পাঁচ ওভারে তুলে নেন চার উইকেট৷ এ সময় উজ্জীবিত হয়ে ওঠেন ভারতীয় খেলোয়াড়রা৷
ছবি: AFP/M. Spatari
ক্যাপ্টেনস নক
একের পর এক যখন বাংলাদেশের উইকেট পড়ছিল তখন হাল ধরেন অধিনায়ক আকবর আলী৷ পারভেজকে সাথে নিয়ে জয়ের পথে এগিয়ে যান তিনি৷ পারভেজ আউট হওয়ার পর তাদের ৪১ রানের জুটি ভাঙ্গে৷ বাকি পথ রকিবুলকে সাথে নিয়ে নির্বিঘ্নে পাড়ি দেন আকবর৷ দলকে জিতিয়ে এই দুইজন মাঠ ছাড়েন৷ আকবর অপরাজিত থেকেছেন ৪৩ রানে৷ ম্যান অব দ্য ম্যাচও তিনি৷
ছবি: AFP/M. Spatari
বারোতম খেলোয়াড়
পুরো সময় বাংলাদেশকে উৎসাহ দিয়েছেন সমর্থকরা৷ পুরস্কার বিতরণীতে তাই দর্শকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন অধিনায়ক আকবর আলী৷ বলেছেন, দর্শকরা ছিল এই ম্যাচে বাংলাদেশের বারোতম খেলোয়াড়৷
ছবি: AFP/M. Spatari
প্রথম বিশ্বকাপ শিরোপা
আইসিসির বিশ্বকাপে এটিই বাংলাদেশে প্রথম কোনো শিরোপা৷ আর তা এল যুবাদের হাত ধরে, দেশ থেকে আট হাজার কিলোমিটার দূরে দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে৷
ছবি: AFP/M. Spatari
7 ছবি1 | 7
ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া আর ভারতকে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জেতানোদের কেউ কেউ হারিয়ে গেলেও সেই দেশগুলোর ক্রিকেট তাতে পিছিয়ে পড়েনি৷ এর কারণ তাদের ঘরোয়া ক্রিকেট৷ সেখানে খুব প্রতিযোগিতামূলক খেলা হয়৷ খেলা হয় স্পোর্টিং উইকেটে৷ পাতানো ম্যাচ হয় না৷ ফলে দু-চারজন ঝরে পড়লেও কিছু আটকে থাকে না৷
কিন্তু পাকিস্তান বা ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাপারটা ওরকম নয়৷ তাই ভালো অভিভাবকত্ব, ভালো পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে কয়েকজন সম্ভাবনাময় খেলোয়ার হারিয়ে গেলেই লম্বা সময়ের জন্য সেখানে বড় একটা শূন্যতার সৃষ্টি হয়৷ পাকিস্তান আর ওয়েস্ট ইন্ডিজে প্রতিভার ঘাটতি আগে ছিল না, এখনো হয়তো নেই৷ শুধু অগোছালো, পরিকল্পনাহীন ঘরোয়া ক্রিকেটের জন্যই তাদের উজ্জ্বল ঐতিহ্য ক্রমশ ফিকে হচ্ছে৷
বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটও খুবই দুর্বল কাঠামোর ওপর দাঁড়িয়ে৷ দেশে পাটা উইকেটের ছড়াছড়ি৷ পাতানো ম্যাচও হয় নিয়মিত৷ তা সত্ত্বেও বাংলাদেশ যে তরুণদের এমন একটা দল গড়তে গড়তে পেরেছে এটা দারুন সৌভাগ্যের৷
আকবর আলীর দলটা বাংলাদেশের জন্য অমূল্য সম্পদ৷ তাদের উপযুক্ত মর্যাদা এবং পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে রক্ষা করতেই হবে৷ পাশাপাশি ঘরোয়া ক্রিকেটকেও ঢেলে সাজানো শুরু করতে হবে তাড়াতাড়ি৷ এত বড় সাফল্যের পর আবার 'যেই লাউ সেই কদু' হওয়া যাবে না৷ ওয়ানডে বিশ্বকাপ জয়ের পথ রচনা শুরু করতে হবে এখন থেকেই৷