ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড এ মুহূর্তে শুধু নামেই বড় দল৷ কিন্তু রেয়াল মাদ্রিদ, বোরুসিয়া ডর্টমুন্ড এবং চেলসি? স্প্যানিশ, জার্মান আর ইংলিশ লিগে তারা উজ্জ্বল৷ এবার এই চার দলকেই দেখা যাবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শেষ ষোলো-র নকআউট পর্বে৷
বিজ্ঞাপন
মঙ্গলবার রাশিয়ায় জেনিত সেন্ট পিটার্সবুর্গের মুখোমুখি হবে জার্মান বুন্ডেসলিগা এবং চ্যাম্পিয়ন্স লিগের বর্তমান রানার্স আপ বোরুসিয়া ডর্টমুন্ড৷ কাগজে-কলমে খুব বড় প্রতিপক্ষ নয় জেনিত৷ তবে খেলা হবে তাদের মাঠে আর বুন্ডেসলিগায় নিজেদের শেষ ম্যাচে শনিবারই ডর্টমুন্ড ৩-০ গোলে হেরেছে হামবুর্গের কাছে৷ সুতরাং রাশিয়া থেকে জার্মান ক্লাবের জয় নিয়ে ফেরাটা কঠিনই হওয়ার কথা৷
মঙ্গলবার আরেকটি ম্যাচ হবে গ্রিসে৷ অলিম্পিয়াকসের বিপক্ষে সেই ম্যাচের অতিথি দল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড৷ ম্যানেজার স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসন অবসর নেয়ার পর থেকে ম্যানইউ-র সঙ্গে সাফল্যেরও যেন বিচ্ছেদ ঘটেছে৷ ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে তারা এখন ষষ্ঠ স্থানে৷ গ্রিস থেকে হার এড়িয়ে ফিরতে পারলেও ম্যান ইউ ম্যানেজার ডেভিড ময়েস নিশ্চয়ই খুশি হবেন৷
বুন্ডেসলিগার সাবেক তারকারা
বুন্ডেসলিগার গত ৫০ বছরের তারকারা
ছবি: picture-alliance/Pressefoto UL
উভে জেলার
১৯৬৩ সালে জার্মান ফুটবল লিগ বুন্ডেসলিগার খেলা শুরু হওয়ার আগেই হামবুর্গ দলের ফরোয়ার্ড উভে জেলার খেলোয়াড় হিসেবে পরিচিত ছিলেন৷ তখন তাঁকে সবাই আদর করে ডাকতেন ‘আমাদেরই উভে’ বলে৷ ১৯৫৪ সাল থেকে তিনি জাতীয় দলে খেলতেন৷ বুন্ডেসলিগার ২৩৯ ম্যাচে অংশগ্রহণ করে ১৩৭টি গোল করেন তিনি৷
ছবি: picture-alliance/dpa
গ্যার্ড ম্যুলার এবং ফ্রানৎস বেকেনবাওয়ার
গ্যার্ড ম্যুলার (বাঁয়ে) বুন্ডেসলিগার ৪২৭ খেলায় ৪৬৫ গোল করেন৷ তাঁর এই অবিশ্বাস্য গোল করার ক্ষমতার জন্য তাঁকে ‘বোম্বার’ বলা হতো৷ ফ্রানৎস বেকেনবাওয়ার (ডানে) ও গোল জেপ মায়াযের সাথে মিলে ১৯৬৫ থেকে সত্তরের দশকের শেষ পর্যন্ত তিনি বায়ার্ন মিউনিখ দলের হয়ে বহু শিরোপা জেতেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa
গ্যুন্টার নেৎসার এবং ভল্ফগাং ওবারাথ
জার্মান জাতীয় দলে ভল্ফগাং ওবারাথ (ডানে) গ্যুন্টার নেৎসারের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন৷ তবে নেৎসার এফসি কোলন দলের ওবারাথের চেয়ে বোরুসিয়া ম্যোয়েনশেনগ্লাডবাখের হয়ে বুন্ডেসলিগায় একটি শিরোপা বেশি জেতেন৷ ১৯৭৩ সালে নেৎসার স্পেনের রেয়াল মাদ্রিদ এবং পরে সুইজারল্যান্ডের ফুটবল লিগে যোগদান করেন৷ কিন্তু ওবাররাথ বুন্ডেসলিগার কোলন দলেই থেকে যান৷
ছবি: picture-alliance/dpa
ক্লাউস ফিশার
শালকে দলের ফরোয়ার্ড ফিশারও গোল করায় পারদর্শী ছিলেন৷ কিন্তু গ্যার্ড ম্যুলারের সময়ে সক্রিয় থাকায় সর্বোচ্চ গোলদাতার তালিকায় তাঁকে সবসময় দ্বিতীয় স্থানেই থাকতে হয়েছে৷ বুন্ডেসলিগায় তিনি ৫৩৫ খেলায় অংশ নিয়ে ২৬৮টি গোল করেন৷
ছবি: picture-alliance/WEREK
কেভিন কেগেন
ছোটোখাটো মানুষটি ১৯৭৭ সালে হামবুর্গ দলে যোগ দেন এবং খুব তাড়াতাড়িই দর্শকদের নজর কাড়েন৷ ‘মাইটি মাউস’ হিসেবে পরিচিত কেগেন ৯০ খেলায় অংশ নিয়ে ৩২টি গোল করেন৷ সংগীত জগতেও তিনি অবদান রেখেছেন৷ সে সময় তাঁর গাওয়া ‘হেড ওভার হিলস ফর লাভ’ গানটি জার্মানির হিট গানের তালিকায় দশম স্থান অধিকার করেছিল৷
ছবি: picture-alliance/dpa/dpaweb
হারাল্ড ‘টনি’ শুমাখার
১৫ বছর ধরে এফসি কোলন দলের গোলরক্ষক ছিলেন শুমাখার৷ এরপর ‘আনফিফ’ বা ‘হুইসেল’ নামে তাঁর একটি বিতর্কিত বই প্রকাশিত হওয়ার পর ১৯৮৭ সালে তাঁকে খেলোয়াড় হিসেবে সাসপেন্ড করা হয়৷ তবে পরে তিনি শালকে, ইস্তাম্বুল, মিউনিখ এবং ডর্টমুন্ডে খেলেন৷ শুমাখার বুন্ডেসলিগার মোট ৪৬৪ টি খেলায় অংশগ্রহণ করেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa
লোথার মাথিউস
জার্মান জাতীয় দলের হয়ে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলার রেকর্ড মাথিউসের৷ বুন্ডেসলিগায়ও তিনি দীর্ঘ ২১ বছর ধরে খেলেছেন৷ ১৯৭৯ সালে বুন্ডেসলিগায় প্রথম খেলা শুরু করার পর তিনি বায়ার্ন মিউনিখে যোগ দেন৷ বুন্ডেসলিগায় তিনি ৪৬৪ খেলায় অংশ নিয়ে ১২১ গোল করেন৷
ছবি: imago/Uwe Kraft
রুডি ফ্যোলার
১৯৮২ সালে তিনি ভের্ডার ব্রেমেন দলের হয়ে খেলা শুরু করেন৷ অল্পদিনের মধ্যেই তিনি তারকা হয়ে ওঠেন৷ পরে রোম এবং ফ্রান্সের মার্সেই দলেও খেলেছেন তিনি৷ এরপর আবারও বুন্ডেসলিগায় ফিরে বায়ার লিভারকুজেন দলের ক্রীড়া পরিচালক হন৷
ছবি: picture-alliance/dpa
ইয়োর্গেন ক্লিসমান
ক্লিসমান জার্মানির স্টুর্টগার্ট, বায়ার্ন মিউনিখ, ইটালির মিলান, মোনাকো, ইংল্যান্ডের টটেনহ্যাম, জেনুয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া দলে খেলেছেন৷ বুন্ডেসলিগায় ২২১টি খেলায় ক্লিসমানের গোল সংখ্যা ১১০টি৷ বর্তমানে তিনি মার্কিন জাতীয় দলের কোচ৷
ছবি: picture-alliance/dpa
অলিভার কান
বায়ার্ন মিউনিখ দলের গোলরক্ষক হিসেবে তিনি দীর্ঘদিন খেলেছেন৷ জার্মান জাতীয় দলেরও একজন খ্যাতিমান গোলরক্ষক হিসেবে কান পরিচিত ছিলেন৷ বেশ কয়েকবার জার্মান লিগ শিরোপা অর্জন করেন তিনি৷একসময় তিনি জার্মান জাতীয় দলের ক্যাপ্টেনও ছিলেন৷
ছবি: AP
মিশায়েল বালাক
নামি ফুটবল খেলোয়াড় বালাকের ফুটবল জীবন কখনও পূর্ণতা পায়নি৷ তাঁকে গণ্য করা হয় দ্বিতীয় স্থান অধিকারী তারকা হিসেবে৷ কারণ তিনি বিশ্বকাপ শিরোপা বা ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়নশীপ – কোনটাই অর্জন করতে পারেননি৷ তবে বুন্ডেসলিগায় ২৬৭টি খেলায় অংশগ্রহণ করে ৭৭টি গোল করেন৷ মিশায়েল বালাক মোট চারবার লিগ শিরোপা জেতেন৷
ছবি: picture-alliance/Pressefoto UL
11 ছবি1 | 11
বুধবারের ম্যাচ দুটি হবে জার্মানি আর তু্রস্কে৷ গেলসেনকিয়ের্শেনে জার্মান ক্লাব শালকের বিপক্ষে খেলবে রেয়াল মাদ্রিদ আর তুরস্কের গালাতাসারাইয়ের মাঠে কঠিন এক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবে চেলসি৷ চ্যাম্পিয়ন্স লিগে সবচেয়ে বেশি নয়বারের চ্যাম্পিয়ন রেয়ালের জন্য জার্মানির মাঠ খুব অপয়া৷ গত দু'মৌসুমে তারা আসর থেকে বিদায় নিয়েছে জার্মানির দুই জায়ান্ট বায়ার্ন আর ডর্টমুন্ডের কাছে হেরে৷ ১২ বছরের শিরোপাখরা কাটাতে রেয়াল অবশ্য এবার বেশ প্রস্তুত৷ বার্সেলোনার চেয়ে তিন পয়েন্ট এগিয়ে থেকে স্প্যানিশ লিগের শীর্ষে আছে তারা৷ দলের সব খেলোয়াড় পুরোপুরি ফিট৷ সেরা তারকা ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডো লিগে সর্বোচ্চ গোলদাতার আসন ধরে রেখে বড় হুমকি হয়েই আসছেন শালকের মুখোমুখি হতে৷ জার্মানি থেকে অবশেষে রেয়াল জয় নিয়ে ফিরতে পারে কিনা তা দেখতে বুধবার তাই লক্ষ লক্ষ চোখ আটকে থাকবে টিভি পর্দায়৷
চেলসির বিপক্ষে গালাতাসারাইয়ের মোক্ষম অস্ত্রটির নাম দিদিয়ের দ্রগবা৷ দু-বছর আগে তাঁর কৃতিত্বেই চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতেছিল চেলসি৷ ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ পয়েন্ট টেবিলে সবার ওপরে থাকলেও তুরস্ক থেকে মাথা উঁচু করে ফেরা যে কঠিন হবে তা জোসে মুরিনিয়ো-ও মানছেন৷ দিদিয়ের দ্রগবা সম্পর্কে চেলসি কোচের একটাই কথা, ‘‘ও এখনো খুব ভালো, যে কোনো দলের জন্যই ও সত্যিকারের হুমকি৷ ''