এবোলা ভাইরাসে সংক্রমিত হলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মৃত্যই অবধারিত৷ এই অসুখের ওষুধ বা টিকা আবিষ্কার হয়নি এখন পর্যন্ত৷ তবে একটা ভাল খবর হলো খুব সংক্রামক নয় রোগটি৷
বিজ্ঞাপন
এবোলা ভাইরাসে আক্রান্ত হলে ৯০ শতাংশ ক্ষেত্রেই মৃত্যুর হাত থেকে নিস্তার পাওয়া যায় না৷ মধ্য ও পশ্চিম আফ্রিকার প্রত্যন্ত অঞ্চলে বিশেষ করে কঙ্গো, সুদান, গাবন ও আইভরিকোস্টে এই ভাইরাসের প্রকোপ বেশি৷
দেহের তরল পদার্থের মাধ্যমে সংক্রমণ
সাধারণত এবোলা ভাইরাস বাতাসে নয়, দেহের তরল পদার্থ রক্ত, লালা ইত্যাদির মাধ্যমে সংক্রমিত হয়৷ সরাসরি শারীরিক সংযোগের মাধ্যমে ঘটে থাকে সংক্রমণ৷ যেমন ভাইরাসে আক্রান্ত কারো সেবা করলে৷ এ কারণে হাসপাতালগুলিতে এর বিস্তৃতি লক্ষ্য করা যায়৷ এই ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির মরদেহ স্পর্শ করলেও সংক্রমণ হতে পারে৷ ভাইরাসরা বাহকের প্রতিটি সেলেই বিস্তৃত হতে পারে৷
সব ঋতুতেই সুস্থ থাকুন
গ্রীষ্মকালের রোদ ঝলমলে আনন্দের দিনগুলোকে বিদায় জানিয়ে মেঘলা আকাশ আর প্রচণ্ড শীতের কথা ভাবলেই তো খারাপ লাগে, শরীর খারাপ হয়৷ কিন্তু এর থেকে বাঁচার উপায়ও রয়েছে৷ চলুন জানা যাক সে বিষয়ে৷
ছবি: picture alliance/chromorange
হেমন্তকাল
যে কোনো দেশেই ঋতু পরিবর্তনের সময় মানুষের শারীরিক ও মানসিক কম বেশি সমস্যা দেখা দেয়৷ বিশেষকরে জার্মানির মতো শীতপ্রধান দেশে হেমন্তকালে৷ গ্রীষ্মকালের রোদ ঝলমলে আনন্দের দিনগুলোকে বিদায় জানিয়ে মেঘলা আকাশ আর প্রচণ্ড শীতের কথা ভাবলেই তো খারাপ লাগে৷ গ্রীষ্মকালে সূর্যের আলো থাকে রাত ১০টার পরেও৷ আর শীতের সময় বেলা চারটে হলেই যেন সূর্য পালাতে চায়৷ কাজেই এর প্রভাব তো মানুষের শরীর, মনের উপর পড়বেই৷
ছবি: picture-alliance/dpa
সর্দি, কাশি বা ঠান্ডার ভাইরাস
গলা খুস খুস, গলা ব্যথা, কাশি, নাকে সুরসুর – এসবের সাথে কে পরিচিত নয়? ঠান্ডার ভাইরাসকে চোখে দেখা যায়না, তবে খুব তাড়াতাড়ি ছড়িয়ে পড়ে৷ যখন একটু গলা খুস খুস বা নাকে সুরসুর করতে শুরু করে, তখনই কিন্তু দেরি হয়ে গেছে! তাহলে উপায়?
ছবি: Fotowerk - Fotolia.com
ঋতু উপভোগ
ঋতু পরিবর্তনের সময় হঠাৎ করে যখন বাইরের তাপমাত্রা কমে যায়, তখন শরীরের উপর তার প্রভাব পড়ে, যা খুবই স্বাভাবিক৷ তখনই শুরু হয় নানা ভাইরাসের উপদ্রব৷ ঘরে ঘরে সর্দি-কাশিতে মানুষ ভোগে৷ ঠিক এই সময়টাতে কিছুটা সাবধানতা অবলম্বন করে কিছু নিয়ম মেনে চললে অনেক সহজে হেমন্তকালকে উপভোগ করা যায়৷ কারণ সব বয়সের মানুষের মতো প্রত্যেক ঋতুরই যে রয়েছে চাহিদা আর আলাদা সৌন্দর্য !
ছবি: James Early
২০০ রকমের সর্দি-কাশি রয়েছে
টিকা, অ্যান্টিবায়োটিক, এমনকি ক্যানসারের মতো রোগের জন্য নানা সাফল্য বের হলেও সর্দি, কাশি বা ঠান্ডা লাগার মতো ছোটখাটো রোগের জন্য কোনো ওষুধ বের করতে বিশেষজ্ঞরা এখনো অসমর্থ৷ এর অবশ্য কারণও রয়েছে৷ প্রায় ২০০ রকমের ঠান্ডা লাগার অসুখ রয়েছে৷
ছবি: Yvonne Bogdanski/Fotolia
সাথে জ্বর
তবে সবচেয়ে বড় ধরনের ঠান্ডা লাগা যেটা আমরা জানি, প্রচণ্ড শরীর, মাথা ও গলা ব্যথা, কাশি, জ্বর, সেই সাথে সর্দি – যা সত্যিই খুব কষ্ট দেয়৷ এরকম ঠান্ডা লাগলে তা ৭ থেকে ১০ দিন থাকবেই, কোনো ওষুধ খাওয়া হোক আর না হোক৷
ছবি: Fotolia
ইনফ্লুয়েন্জা
সাধারণ ঠান্ডা সাথে ইনফ্লুয়েন্জার কোনো সম্পর্ক নেই৷ সাধারণ ঠান্ডা লাগা আর ইনফ্লুয়েন্জার লক্ষণগুলো অনেকটা একরকম হলেও ইনফ্লুয়েন্জা পুরোপুরি ভিন্ন৷ এটাকে অবশ্যই গুরুত্ব দেওয়া উচিত৷ তা না হলে হঠাৎ করে তা মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে৷ ইনফ্লুয়েন্জা একটি ইনফেকশাস বা ছোঁয়াচে রোগ – বিশেষ করে শিশু, ডায়াবেটিসের রোগী এবং বয়স্কদের ক্ষেত্রে৷ বলেন জার্মানির চিকিৎসা সংগঠনের সভাপতি অধ্যাপক ফ্যার্ডিনান্ড গেয়ারলাখ৷
ছবি: Novartis Vaccines
সাবধানতা অবলম্বন
বাইরে থেকে এসে হাত ধুতে হবে৷ শুধু তাই নয়, অন্যের কম্পিউটার বা যে কোনো কিছু ব্যবহার করার আগে ও পরে হাত ধুয়ে নেওয়া ভালো৷ যানবাহনে চলাফেরা করার সময় ইনফ্লুয়েন্জা জাতীয় ইনফেকশন রোগীদের কাছ থেকে কিছুটা দূরে থাকার চেষ্টা করুন৷ গোসলের সময় গরম পানির পর গায়ে ঠান্ডা পানির ঝাপটা দিন৷ প্রচুর ফল, নানা রংয়ের সবজি খান ও পানি পান করুন৷ আর অবশ্যই নিয়মিত মুক্ত বাতাসে হাঁটাহাঁটি করতে হবে – এমনটাই বিশেষজ্ঞরা বলেন৷
ছবি: picture alliance/chromorange
7 ছবি1 | 7
এছাড়া জীবজন্তু বিশেষ করে বাঁদুড় এই ভাইরাস ছড়াতে পারে৷ অসুস্থ বা মৃত জন্তুর সংস্পর্শে এলে সংক্রমণ হতে পারে৷ মাইক্রোস্কোপের মাধ্যমে এই ভাইরাসকে লম্বা ও পাতলা সুতার মতো মনে হয়৷ এগুলির অনেক প্রজাতি রয়েছে৷ বিশেষ কয়েকটি মানুষকে অসুস্থ করতে পারে৷ আর এরকম হলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মৃত্যু হয়৷
আক্রান্ত ব্যক্তি দুর্বল হতে থাকে
দুই থেকে একুশ দিনের মধ্যে আক্রান্ত ব্যক্তি দুর্বল হতে থাকে৷ মাথাব্যথা, পেশিব্যথা ও কাঁপুনি দেখা দেয়৷ রুচি নষ্ট হয়ে যায়৷ বমি ও পেটখারাপ হয়৷ পেটের শিরায় টান খায়৷ এক ধরনের জ্বর হয়ে অভ্যন্তরীণ রক্তপাত হয়৷ বিশেষ করে পেট ও অন্ত্রের নালী এবং প্লীহা ও ফুসফুস আক্রান্ত হয়৷ যা ভুক্তভোগীকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়৷
টিকা বা ওষুষ বের হয়নি
এই ভাইরাস প্রতিরোধে টিকা বের হয়নি৷ বের হয়নি ওষুধ বা থেরাপিও৷ এবোলার সংক্রমণ ও মহামারির হাত থেকে উদ্ধার পাওয়ার একমাত্র উপায় প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া৷ হাসপাতালগুলিতে স্বাস্থ্য রক্ষার ব্যাপারে বিশেষ নজর দিতে হবে৷ কাজ করতে হবে গ্লাভস পরে৷ আক্রান্ত রোগীর সংস্পর্শ বাঁচিয়ে চলতে হবে৷
প্রথম ১৯৭৬ সালে গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র কঙ্গোতে রোগটি লক্ষ্য করা যায়৷ বিশ্বস্বাস্থ্যসংস্থার তথ্য অনুযায়ী, তখন থেকে আফ্রিকার দেশগুলিতে ১৫টি মহামারি দেখা গিয়েছে৷ মারা গিয়েছে ১৩০০-এর বেশি মানুষ ৷ ইদানীং গিনি ও সম্ভবত লাইবেরিয়া এই ভাইরাসের কবলে পড়েছে৷ এর আগে ২০১২ সালে উগান্ডা ও কঙ্গো হয়েছিল এবোলার শিকার৷