1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

এবোলা ভাইরাস

২৪ জুলাই ২০১২

বিশ্বের সবচেয়ে মারাত্মক জীবাণুর মধ্যে একটি এবোলা ভাইরাস৷ এই ভাইরাসকে প্রথম লক্ষ্য করা যায় কঙ্গো ও দক্ষিণ সুদানে৷ প্রাণঘাতী এই জীবাণুকে আয়ত্তে আনার জন্য বিজ্ঞানীরা অনবরত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন৷

Das undatierte Handout zeigt eine Übung im Pavillon mit der mobilen Notfalleinheit für hochinfektiöse Patienten der I. Medizinischen Klinik im im Hamburger UKE. Dort wird eine Forscherin des Hamburger Tropeninstituts behandelt, die sich möglicherweise mit dem Ebola-Virus infiziert hat. Bei einem Unfall im Hochsicherheitslabor habe sich die Frau durch drei Paar Handschuhe hindurch «minimal» mit einer Nadel verletzt. Das teilte das Universitätsklinikum Hamburg-Eppendorf mit. Foto: Jochen Koppelmeyer/UKE dpa/lno +++(c) dpa - Report+++
ছবি: picture-alliance/dpa

কঙ্গোর এবোলা নদীর তীরবর্তী অঞ্চলে মারাত্মক ভাইরাসজনিত এক রোগের খবর শোনা যায় ১৯৭৬ সালে৷ সেই নদীর নাম থেকেই এই ভাইরাসের নাম দেয়া হয় এবোলা৷ সেই সময় নদী তীরবর্তী গ্রামগুলিতে এবোলা ভাইরাসে আক্রান্ত ৩১৮ জনের মধ্যে ২৮০ জনই মারা যায়৷

ধারণা করা হয় এক জাতীয় বানর ও বাদুরের মধ্যে এই ভাইরাস আস্তানা গাড়ে৷ এই সব জীবজন্তুর ভাইরাস প্রতিরোধী শক্তি আছে বলে মনে করা হয়, তাই রোগটা এদের মধ্যে মাথা চাড়া দিতে পারে না৷ কিন্তু এই সব প্রাণীর সংস্পর্শে এলে মানুষ রোগাক্রান্ত হয়৷ তবে কিছু কিছু গরিলার মধ্যেও এই অসুখ দেখা গেছে৷

রক্তের মাধ্যমে সংক্রমণ

সাধারণত শরীরের তরল পদার্থ যেমন রক্ত, লালা ইত্যাদির মাধ্যমে একজন থেকে আরেকজনে সংক্রমিত হয় এবোলা ভাইরাস৷ ক্ষুদ্র কোনো ক্ষত দিয়েই শরীরে ঢুকে পড়তে পারে এই ভাইরাস৷ আক্রান্ত হওয়ার চার থেকে ১৬ দিনের মধ্যে রোগের লক্ষণগুলি দেখা যায়৷ আক্রান্তরা জ্বর, শরীর কাঁপুনি, মাথাব্যথা, পেশিব্যথা, অরুচি এসব উপসর্গের কথা বলেন৷ সংক্রমণের এক সপ্তাহের মধ্যে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ থেকে রক্ত বের হতে থাকে৷ চলে যেতে পারে দৃষ্টি শক্তিও৷ এমনকি মানসিক বৈকল্য ও শরীরে অবশ ভাবও দেখা যায়৷ একে একে সব অঙ্গপ্রত্যঙ্গ কার্যক্ষমতা হারিয়ে ফেলে৷ মৃত্যু ঘটে অল্প কয়েক দিনের মধ্যেই৷

এবোলা ভাইরাসের বেশির ভাগ সংক্রমণই ঘটে থাকে উন্নয়নশীল দেশগুলির হাসপাতালের অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে নোংরা যন্ত্রপাতির মাধ্যমে৷ হাসপাতালের কর্মী ও নার্সদের মাধ্যমেও ছড়ায় এই ভাইরাস৷

ছবি: picture-alliance/ dpa

এবোলা ভাইরাসে সংক্রমণ হলে পরিত্রাণ পাওয়ার সম্ভাবনা খুব কম৷ ৫০ থেকে ৯০ শতাংশ রোগীই মারা যান৷ এটা নির্ভর করে ভাইরাসটির প্রজাতির ওপর৷ এই জীবাণুর গবেষণাও করতে হয় খুব সতর্কতার সঙ্গে৷ গবেষণাগারের নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার মধ্যে করতে হয় পরীক্ষা নিরীক্ষা৷

এবোলা নিরোধক ওষুধ বের হয়নি

এখন পর্যন্ত এবোলা প্রতিরোধী ওষুধ বা টিকা বাজারে আসেনি৷ রোগীকে উপসর্গগুলি কমানোর ওষুধ দেয়া হয়৷ বিগত বছরগুলিতে এই ভাইরাস প্রতিরোধী টিকা বের করার জন্য বহু পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হয়েছে৷ কিন্তু মানবদেহে প্রয়োগ করার অনুমোদন এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি৷

সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনায় গবেষক চার্লস আর্নজটেন ও তাঁর টিম ইঁদুরের ওপর পরীক্ষা নিরীক্ষা করে এবোলা প্রতিরোধে এমন এক ধরনের টিকা আবিষ্কার করেছেন, যা চিকিত্সা জগতে আশার আলো জাগাতে পারে৷ এটি সুলভ মূল্যে প্রস্তুত করা যায়৷ আরেকটি ইতিবাচক দিক হল, বহুদিন পর্যন্ত এই টিকা মজুত করে রাখা যায়৷ বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কেননা যখন তখন এই টিকার প্রয়োজন হতে পারে এবং দ্রুত সরবরাহ করতে হতে পারে৷

এবোলা ইমিউন কমপ্লেক্স

এই টিকাকে ‘এবোলা ইমিউন কমপ্লেক্স' বলা হয়৷ এবোলা ভাইরাস থেকে সংগ্রহ করা প্রোটিন এবং এক ধরনের অ্যান্টিবডি দিয়ে তৈরি হয় এই প্রতিরোধী পদার্থটি৷ উত্পাদনের এই প্রক্রিয়াটি চলে জিন পরিবর্তন করা তামাক গাছে৷ গবেষণাগারে এই টিকা দেয়ার পর ইঁদুরগুলিকে এবোলা ভাইরাস দ্বারা সংক্রমিত করা হয়৷ পাঁচটির মধ্যে চারটি ইঁদুরই বেঁচে থাকে৷

ক্যানাডায় আরেক ধরনের টিকা বের করে মানুষের ওপর পরীক্ষা করা হয়েছে৷ বছর তিনেক আগে হামবুর্গের এক ভাইরাস বিশেষজ্ঞ সুই এর খোঁচায় আহত হয়ে সম্ভবত এবোলা ভাইরাস দ্বারা সংক্রমিত হন৷ নিরাপত্তাজনিত কারণে তাঁকে এমন এক ধরনের ওষুধ দিয়ে টিকা দেয়া হয়, যা শুধুমাত্র বানরের ওপরই পরীক্ষা করা হয়েছিল৷ কয়েক সপ্তাহ পর তিনি হাসপাতালের কঠোর নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা থেকে মুক্ত হতে পারেন৷

ক্যানাডার এই টিকা এখনও বাজারে বের হওয়ার অনুমোদন পায়নি৷ এজন্য আরো পরীক্ষা নিরীক্ষার প্রয়োজন৷ এছাড়া এই টিকা সংরক্ষণ করাও সহজ নয়৷ সব সময় ওষুধের গুণাগুণের দিকে নজর রাখতে হয়৷

অ্যারিজোনায় তৈরি টিকা মানুষের জন্য কতটা কার্যকর হবে, তা এখনও গবেষকরা বলতে পারছেন না৷ এছাড়া এটাও বলা যাচ্ছে না, এই টিকা এবোলা দ্বারা সংক্রমিত হওয়ার পর কাজে লাগবে কিনা৷

ডা. চার্লস আর্নজটেন আশা করেন, ভবিষ্যতে হাসপাতালগুলিতে এবোলা প্রতিরোধী টিকা ও অ্যান্টিবডি দুটোই মজুত করে রাখা যাবে৷ তাঁর ভাষায়, ‘‘কেউ যদি এবোলা ভাইরাস দ্বারা সংক্রমিত হয়, তাকে প্রথমে অ্যান্টিবডি দিয়ে ইনজেকশন দেয়া হবে, তারপর আমাদের তৈরি এবোলা প্রতিরোধী টিকা দেয়া হবে তাকে৷ এর ফলে নিজস্ব রোগ প্রতিরোধী শক্তি গড়ে উঠতে পারে রোগীর শরীরে৷ বিশেষ করে মধ্য আফ্রিকার দেশগুলিতে, যেখানে এই অসুখ মাথা চাড়া দেয়ার সম্ভাবনা বেশি, সেখানে এই টিকা ও অ্যান্টিবডি কাজে লাগবে৷''

প্রতিবেদন: মারিয়েকে ডেগেন / আরবি
সম্পাদনা: জাহিদুল হক

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ