ভারত-বাংলাদেশে গেলে আজকাল আমি আর শান্তি পাই না, পাই না স্বস্তি৷ শহরের কথা তো ছেড়েই দিলাম, গ্রামে-গঞ্জে, পাহাড়ে, নদীর ধারে – যেদিকেই তাকাই, চোখে পড়ে প্লাস্টিক, যত্রতত্র ছড়িয়ে থাকা স্তূপাকার প্লাস্টিক, শুধুই প্লাস্টিক৷
বিজ্ঞাপন
‘আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি' – ছোটবেলায় এ গানটি আপনার মতো আমিও গুনগুন করতাম৷ ‘সুজলা সুফলা শস্য শ্যামলা' বঙ্গদেশ তো আমারও দেশ ছিল৷ কিন্তু হায়, কোথায় গেল সেই সোনার বাংলা, দেশের মাটি? আজ যে সব প্লাস্টিকে ছেয়ে গেছে, আবর্জনায় ঢেকে গেছে আমার জন্মভূমি৷
আমি কিন্তু বরাবরই বিশ্বাস করে এসেছি, এই উপমহাদেশ ইউরোপ-অ্যামেরিকা থেকে কোনো অংশে কম নয়৷ ইটালির বোলোনিয়া বা রোম অথবা স্পেনের ভ্যালেন্সিয়া বা বার্সেলোনায় ঘুরতে ঘুরতে আমার যে বার বার ঢাকা-কলকাতা অথবা রাজস্থানের যোধপুর-জয়পুরের কথাই মনে পড়তো৷ কিন্তু এ কী! ২০১৩ সালে প্রায় ২৫ বছর পর আবারো রাজস্থানে বেড়াতে গিয়ে দেখলাম – যোধপুরের মহলটি ঠিক আছে, কিন্তু তার সিঁড়ি বেয়ে নীচে নেমে এলে রাজা-রানীর স্নান করার যে পুকুরটা ছিল, সেটায় আর জল নেই৷ ওটাও ঢেকে গেছে আবর্জনায়, প্লাস্টিকে৷
ডাস্টবিন নয়, রাস্তাই বেছে নিচ্ছেন ঢাকাবাসী
প্রায় দেড় কোটি মানুষের শহর ঢাকার বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বেশ নাজুক৷ দু’টি সিটি কর্পোরেশন বিপুল সংখ্যক বাসিন্দার প্রতিদিনের বর্জ্য অপসারণে যেমন অদক্ষ, তেমনি এ শহরের বেশিরভাগ বাসিন্দাই আবর্জনা ফেলার ব্যাপারে অসেচতন এবং উদাসীন৷
ছবি: DW/M. Mamun
কন্টেইনার আছে, তবুও...
ঢাকা শহরের মালিবাগের তালতলা এলাকায় সড়কের অর্ধেকজুড়ে ফেলা হয় আবর্জনা৷ ময়লা ফেলার কন্টেইনার থাকলেও, এলাকার বাসিন্দারা ময়লা ফেলেন বাইরে, সড়কের উপরেই৷
ছবি: DW/M. Mamun
দুর্গন্ধে অতিষ্ট পথচারীরা
খোলা জায়গায় ময়লা ফেলার কারণে দুর্গন্ধে কষ্ট করে চলতে হয় পথাচারীদের৷
ছবি: DW/M. Mamun
ক’দিনেই লোপাট ডাস্টবিন
ঢাকাকে পরিচ্ছন্ন রাখার লক্ষ্যে এ বছরের শুরুর দিকে উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন পুরো শহরজুড়ে সড়কের পাশে পাশে স্থাপন করেছিল কয়েক হাজার ডাস্টবিন৷ কিন্তু অল্প দিনের মধ্যেই এ সব ডাস্টবিনের বড় একটি অংশ চুরি হয়ে যায়, পড়ে থাকে শুধু তার স্ট্যান্ডগুলো৷
ছবি: DW/M. Mamun
পথচারীদের চলাফেরায় ব্যাঘাত
চুরি যাওয়া ডাস্টবিনের সেসব স্ট্যান্ড এখন পথচারীদের চলাফেরায় ব্যাঘাত ঘটায় অনেক জায়গাতেই৷
ছবি: DW/M. Mamun
ডাস্টবিন থাকলেই বা কী?
সিটি কর্পোরেশনের বসানো সড়কের পাশের যেসব ডাস্টবিন এখনো টিকে আছে, এটি তার একটি৷ ঢাকার বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ এলাকার এ ডাস্টবিন খালি থাকা সত্ত্বেও ময়লা ফেলা হয়েছে বাইরে৷
ছবি: DW/M. Mamun
সড়কজুড়ে ফেলা হয়েছে ময়লা
বিপরীত চিত্র ঢাকার মিরপুর এলাকায়৷ নিয়মিত ডাস্টবিন পরিষ্কার না করায় বাধ্য হয়ে এলাকাবাসী ময়লা ফেলেছেন ডাস্টবিনের বাইরে, সড়কজুড়ে৷
ছবি: DW/M. Mamun
ভাঙাচোরা কন্টেইনার
অনেক এলাকাতে রাখা হয় ময়লা ফেলার ভাঙাচোরা কন্টেইনার৷ ফলে ময়লা বাইরে ছড়িয়ে পড়ে সহজেই৷
ছবি: DW/M. Mamun
উড়াল সড়কের নীচে আবর্জনা
ঢাকার যাত্রাবাড়ী এলাকার কিছু বাসিন্দ ময়লা ফেলেন মেয়র হানিফ উড়াল সড়কের নীচের সড়ক বিভাজনের ওপর৷
ছবি: DW/M. Mamun
অসহনীয় এক পরিবেশ
মেয়র হানিফ উড়াল সড়কের নীচে ফেলা ময়লা-আবর্জনা জ্বালানো হয় দিনে-দুপুরে৷ ফলে এলাকার পরিবেশ অসহনীয় হয়ে ওঠে৷
ছবি: DW/M. Mamun
বুড়িগঙ্গাই যখন ডাস্টবিন!
বুড়িগঙ্গার দক্ষিণ তীরে আগানগর এলাকার বাসিন্দরা ময়লা ফেলেন সরাসরি বুড়িগঙ্গা নদীতেই৷
ছবি: DW/M. Mamun
বাদামতলীর অপচনশীল প্লাস্টিক
পুরনো ঢাকার সবচেয়ে বড় ফলের পাইকারি বাজার বাদামতলী৷ সেখানকার ব্যবসায়ীরা নানান অপচনশীল প্লাস্টিক জাতীয় বর্জ্য ফেলেন সরাসরি বুড়িগঙ্গা নদীতে৷
ছবি: DW/M. Mamun
খোলা জায়গা মানেই আবর্জনার স্তূপ
ঢাকার মিরপুর বাংলা কলেজের বিপরীত পাশে ময়লা ফেলার কোনো কন্টেইনার না থাকায় ঐ এলাকার বাসিন্দারা ময়লা ফেলেন কড়কের ওপরে খোলা জায়গাতেই৷
ছবি: DW/M. Mamun
সড়ক বিভাজনের ওপরই...
হাতিরপুল এলাকার বাসিন্দাদের অনেকেই ময়লা ফেলেন সড়ক বিভাজনের ওপর৷
ছবি: DW/M. Mamun
অভিজাত এলাকাও বাদ নেই
ঢাকার অভিজাত আবাসিক এলাকার একটি মহাখালী ডিওএইচএস-এর প্রবেশমুখে ময়লা আবর্জনার স্তূপ৷
ছবি: DW/M. Mamun
মেডিক্যাল কলেজের বর্জ্য
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নানান ঝুঁকিপূর্ণ বর্জ্য ফেলা হয় সামনের ডাস্টবিনেই৷
ছবি: DW/M. Mamun
হরহামেশাই যে দৃশ্য দেখা যায়
দিনের বেলা বর্জ্য অপসারণের নিয়ম না থাকলেও হরহামেশাই সে দৃশ্য দেখা যায় ঢাকা শহরে৷
ছবি: DW/M. Mamun
সড়কজুড়ে ময়লার কন্টেইনার!
সড়কের সিংহভাগ দখল করে ময়লা ফেলার কন্টেইনার রাখার এ দৃশ্য ঢাকার মিরপুর এলাকার৷
ছবি: DW/M. Mamun
আধুনিক মানের ডাস্টবিন
ঢাকার হাতিরঝিলে বসানো হয়েছে চীন থেকে আনা আধুনিক মানের ডাস্টবিন৷ এ সব ডাস্টবিনে পুনরায় ব্যবহারযোগ্য ও অন্যান্য বর্জ্য ফেলার আলাদা কন্টেইনার আছে৷
ছবি: DW/M. Mamun
ময়লার ভাগাড়
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোশেনের সব ময়লা এনে ফেলা হয় ডেমরার ডাম্পিং ইয়ার্ডে৷ উত্তর সিটি কর্পোশেনেরও এরকম একটি বড় ময়লার ভাগাড় আছে আমিন বাজার এলাকায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পাশে৷
ছবি: DW/M. Mamun
19 ছবি1 | 19
দাঁড়িয়ে দেখতে দেখতে একসময় চোখ বেয়ে জল উবচে পড়ে৷ তবে শুধু রাজস্থান কেন? ঢাকা-কলকাতার বনেদি বাড়ি, পুরনো শহরের অলি-গলিগুলোরও একই হাল৷ আগের তুলনায় শিল্পে, কারিগরি দিক থেকে অনেক উন্নতি হয়েছে, রাস্তাগুলো বড় হয়েছে, কিন্তু রাস্তার ধারের আবর্জনার স্তূপগুলো থেকেই গেছে৷
বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো ভারত-বাংলাদেশেও মিনারেল ওয়াটার, সফট ড্রিংক্স, প্রসাধন বা ভোজ্যতেল এখন বিক্রি হয় প্লাস্টিকের বোতলে৷ চিপস, চানাচুর, রুটির ক্ষেত্রেও অবস্থা তথৈবচ৷ তার ওপর ব্যবহারের পর এগুলো কখনও ছুড়ে ফেলা হয় রাস্তায়, কখনও আবার করা হয় পুনর্ব্যবহার৷ দু'টোই অস্বাস্থ্যকর৷ পরিবেশের জন্য তো বটেই, আমাদের জন্যও৷ কারণ এ সব প্লাস্টিকে রয়েছে ‘বাইসফেনল' নামের এক ধরনের রাসায়নিক, যা কিনা খাবার আর পানীয়র সঙ্গে মিশে ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায়৷ দূষিত করে বাতাসকে, মাটিকে৷ তারপর সেই প্লাস্টিক বা পলিথিনই মাটির নীচে চাপা পড়ে, সমুদ্রে গিয়ে মেশে৷ তবে একেবারে মিশে যায় না, এত সহজে ক্ষয় হয় না তার৷ হাজার হাজার বছর ধরে আমাদের এই পরিবেশেই থেকে যায় প্লাস্টিক, অনেকটা প্যারাসাইটের মতো৷
তাই আজ সুন্দরবন হোক অথবা সুদূর আন্দামানের সমুদ্র সৈকত – সর্বত্রই পলিথিনের মতো ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে উচ্ছিষ্ট প্লাস্টিক বোতল৷ আর মানুষ বাড়ছে বলে এ সবও বাড়ছে অনিয়ন্ত্রিতভাবে৷ ভারতের অনেক জায়গায় প্লাস্টিক পোড়োনোর একটা চল দেখেছি৷ এতে প্লাস্টিক পোড়ে ঠিকই, কিন্তু বাড়ে বায়ুদূষণ৷ আবার ঢাকার অদূরে উচ্ছিষ্ট বোতল থেকে কাঁচামাল তৈরি করার কারখানা চোখে পড়ে৷ বোতলগুলোকে ক্রাশার মেশিনে টুকরা করা হয়৷ পরে সোডা আর ব্লিচিং পাউডার দিয়ে ধোয়া হয় সেগুলো৷ কিন্তু কখনও ভেবেছেন, এ ধরনের রাসায়নিক মিশ্রিত পানি যখন আশেপাশের পুকুর, নর্দমা, ক্ষেতে গিয়ে পড়ে, তখন ফসল বা জলজ প্রাণীদের কী অবস্থাটা হয়?
ভারতে টয়লেটের অভাব, তাই...
01:23
একে কী বলবো? ‘কলি যুগ' না ‘প্লাস্টিকের যুগ'? আসলে এই প্লাস্টিকের যুগে, প্লাস্টিকের কারণেই হয়ত শেষ হয়ে যাবো আমরা৷ অথচ দেখুন, শুরুতে এমনটা ছিল না৷ এই তো, বছর ৩০ আগেও বিয়ে বাড়িতে পাত পড়তো কলাপাতায়, চা খাওয়া হতো মাটির ভাড়ে৷ মাসে মাসে পুরনো খবরের কাগজ নিয়ে যেত কাগজওয়ালা, কাঁচের শিশি-বোতল, লোহার জিনিসের জন্যও ছিল আলাদা মানুষ৷ আর রান্না করার পর ফেলে দেওয়া সবজির টুকরো, চা-পাতা – এ সব ব্যবহার করা হতো গাছের সার হিসেবে৷
এই যে জার্মানিতে ময়লা আলাদা করার এত নিয়ম-কানুন, এ সব তো ছোটবেলায় দেশেও কম দেখিনি! তাহলে? বিশ্বায়নের সঙ্গে সঙ্গে আমরা কি তবে অসভ্য হয়ে গেছি, যাচ্ছি? নিজের দেশ, পরিবেশ, সমাজের প্রতি আমাদের মধ্যে আর কি কোনোরকম আবেগ, দায়িত্বজ্ঞান – কিছুই অবশিষ্ট নেই? না, আমার এ প্রশ্ন শুধু আপনাদের দিকে নয়, এ প্রশ্ন আমার নিজের কাছে, এমনকি কাছের মানুষদের জন্যও৷
আমার মায়ের পেটের ভাইয়ের অবশ্য আমার এই দৃষ্টিভঙ্গিতে, এই অস্বস্তিতে ভয়ানক রাগ৷ তার কথায়, বিদেশে থাকি বলেই নাকি আমি এমনভাবে ‘রিঅ্যাক্ট' করি৷ কিন্তু বিশ্বাস করুন, ভাইটাকে আমি বোঝাতে পারি না যে, আসলে ও, ওরা অন্ধ হয়ে গেছে৷ ওরা যে ওদের চারপাশটা দেখেও দেখতে পায় না৷ ওদের চোখে স্তূপাকৃতি আবর্জনা ধরা পড়ে না৷ ওরা দেখতে পারে না, বুঝতে পারে না কতটা কষ্টে আছে দেশের মাটি, নদী, খাল-বিল, কীভাবে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে পরিবেশ আর তার সঙ্গে সঙ্গে অসুস্থ হয়ে পড়ছি আমরা৷
তাছাড়া পরিচ্ছন্নতার কথা তো মহাত্মা গান্ধীও বলেছিলেন৷ স্বাধীনতার লড়াইয়ে তিনি সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছিলেন পরিচ্ছন্নতাকে৷ সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখেই ২০১৪ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী শুরু করেছিলেন ‘ক্লিন ইন্ডিয়া ক্যাম্পেন' বা ‘পরিচ্ছন্ন ভারত অভিযান'৷ শৌচাগার থেকে শুরু করে বড়-ছোট সব রাস্তাঘাট হবে স্বাস্থ্যকর আর প্লাস্টিকমুক্ত – এমন স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন তিনি৷ হ্যাঁ, আমিও সেই স্বপ্ন দেখেছিলাম৷ কিন্তু কোথায় কী? কয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা বাদ দিলে এই অভিযান কি এতটুকু সাফল্যের পথ দেখেছে? সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে দেশের অনেক ভুল-ভ্রান্তি, রাজনীতি নিয়ে বিতর্ক চলছে, চলছে আলোচনা৷ কিন্তু বলিউড স্টারদের কতগুলো ‘সেল্ফি' ছাড়া মনুষকে সত্যিকারের কোমড় বাঁধতে কি দেখেছি আমরা? দেখিনি৷
তাই তো, আজও ভারতের প্রায় ৬৪ কোটি মানুষ খোলা আকাশের নীচে প্রাতঃকৃত্য সারেন৷ নিজের বাড়িতে অথবা কাছাকাছি টয়লেট থাকা সত্ত্বেও অনেকে আজও এই অভ্যাস ছাড়তে প্রস্তুত নন৷ ফলে ডায়রিয়ার মতো রোগে অনেক মানুষের, বিশেষত শিশুদের মৃত্যু ঘটছে৷ তাছাড়া শুধু টয়লেট নির্মাণ করে আর কাগজে-কলমে ‘ক্যাম্পেন' করে কি এ সমস্যার সমাধান হয়? এর জন্য যে ছেলে-মেয়ে, শিশু-বৃদ্ধ – সকলকে এগিয়ে আসতে হবে৷ তৃণমূল থেকে শুরু করে রাষ্ট্রীয় পর্যায় পর্যন্ত উদ্যোগ নিতে হবে৷ ‘ছোট পরিবার, সুখি পরিবার' বা শুধু আমার-আমার নয়, পরিবেশ-প্রকৃতি-সমাজকে নিজের বলে ভাবতে হবে, বিশ্বাস করতে হবে৷ থাকতে হবে নিজের কাছে নিজের জবাবদিহিতা৷ তা না হলে, অচিরেই আমরা, আমাদের সত্ত্বা তলিয়ে যাবে ঐ পর্বতসমান প্লাস্টিকের নীচে, হারিয়ে যাবে মনুষ্যত্ব, হারিয়ে যাবো আমরা৷
কেমন লাগলো দেবারতি গুহর লেখা? তাঁকে আপনি কি কিছু বলতে চান? লিখুন নীচে, মন্তব্যের ঘরে৷
ময়লা দিয়ে ব্যবসা করেন তাঁরা
বর্জ্য, বিশেষ করে প্লাস্টিক বর্জ্যকে কাজে লাগিয়ে অনেকেই ব্যবসা করছেন৷ এতে একদিকে যেমন পরিবেশের ভাল হচ্ছে, তেমনি কিছু মানুষের কর্মসংস্থানও হচ্ছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/C. Frentzen
বিলিকিস আদেবিয়ি-আবিওলা
যুক্তরাষ্ট্রে এমবিএ করার পর আইবিএম-এ সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে পাঁচ বছর কাজ করার পর নিজ দেশ নাইজেরিয়ায় গিয়ে বর্জ্য নিয়ে ব্যবসা করছেন৷ দেশটির সবচেয়ে বেশি জনসংখ্যা অধ্যুষিত শহর লাগসের ময়লা নিয়ে ব্যবসা করছেন৷ কোম্পানির নাম ‘উইসাইকেলার্স’৷ তাদেরকে আবর্জনা দেয়ার মাধ্যমে স্থানীয়রা ‘উপহার’ পেয়ে থাকেন৷ আর আবিওলার কোম্পানি ঐ আবর্জনা থেকে বিভিন্ন পণ্য তৈরি করে৷ আরও জানতে উপরে (+) চিহ্নে ক্লিক করুন৷
ছবি: WeCyclers
থাটো গাটহানিয়া ও রেয়া এনগোয়ানে
দক্ষিণ আফ্রিকার এই দুই তরুণী প্লাস্টিক বর্জ্য থেকে স্কুল ব্যাগ তৈরি করেন৷ দরিদ্র শিক্ষার্থীদের এগুলো দেয়া হয়৷ এ সব ব্যাগে সোলার প্যানেল বসানো আছে৷ ফলে শিক্ষার্থীরা হেঁটে স্কুলে যাওয়া-আসার ফলে প্যানেলগুলো যে চার্জ পায় তা দিয়ে রাতের বেলায় আলো জ্বলে৷ ফলে মোমবাতি না জ্বালিয়ে শিশুরা পড়তে পারে৷ ছবিতে একেবারে ডানে রেয়া আর বাম থেকে তিন নম্বরে থাটোকে দেখা যাচ্ছে৷ আরও জানতে উপরে (+) চিহ্নে ক্লিক করুন৷
ছবি: repurposeschoolbags.com/Screenshot
অ্যান্ড্রু মুপুয়া
মাত্র ১৬ বছর বয়সে স্কুলে পড়ার সময় বাবা-মা দু’জনই যখন চাকরি হারিয়ে ফেলেন তখন অ্যান্ড্রু কাগজের ব্যাগ তৈরির ব্যবসা শুরু করেন৷ পুঁজি জোগাড় করতে ৭০ কেজি প্লাস্টিক বোতল বিক্রি ও শিক্ষকের কাছ থেকে টাকা ধার নেন তিনি৷ ব্যাগ তৈরি শিখতে ইন্টারনেট আর ভিডিওর সাহায্য নেন তিনি৷ বর্তমানে ২৪ বছর বয়সি অ্যান্ড্রুর অধীনে ২০ জন কাজ করছেন৷ আরও জানতে উপরে (+) চিহ্নে ক্লিক করুন৷
ছবি: DW
লরনা রুট্ট
ব্যাংকের চাকরি ছেড়ে কেনিয়ার নাইরোবিতে প্লাস্টিক রিসাইক্লিং ফ্যাক্টরি গড়ে তোলেন তিনি৷ এসব প্লাস্টিক দিয়ে তাঁর কোম্পানি বেড়া তৈরি করে৷ ঘরবাড়ি সহ সংরক্ষিত এলাকায় বেষ্টনী দিতে তাঁর বেড়া ব্যবহৃত হয়৷ কাঠের বদলে এ সব বেড়া খুব দ্রুতই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে৷ আরও জানতে উপরে (+) চিহ্নে ক্লিক করুন৷
ছবি: L. Rutto
বেথেলহেম টিলাহুন আলেমু
আফ্রিকার ফুটওয়্যার ব্র্যান্ডগুলোর মধ্যে ইথিওপিয়ার ‘সোলরেবেলস’ বিশ্বে অনেক জনপ্রিয়৷ আলেমু’-র উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত কোম্পানিটি গাড়ির পুরনো টায়ার, ফেলে দেয়া জামাকাপড় ব্যবহার করে জুতা তৈরি করে৷ আরও জানতে উপরে (+) চিহ্নে ক্লিক করুন৷
ছবি: picture-alliance/dpa/C. Frentzen
বাংলাদেশে রিসাইক্লিং ব্যবসা
প্লাস্টিক বোতল রিসাইকেল করে এমন অনেক কারখানা গড়ে উঠেছে ঢাকায়৷ তাদের হয়ে পরিত্যক্ত বোতল সংগ্রহ করছেন অনেকে৷ এতে তাদের দারিদ্র্যতা দূর হচ্ছে৷ বোতলগুলো মেশিন দিয়ে টুকরো করে প্লাস্টিক পণ্য বানায় এমন কোম্পানির কাছে বিক্রি করা হয়৷ কিছু অংশ বিদেশে, বিশেষ করে চীনেও রপ্তানি হয়ে থাকে৷ আরও জানতে উপরে (+) চিহ্নে ক্লিক করুন৷
ছবি: Getty Images/AFP/M.Uz Zaman
ওয়েস্ট কনসার্ন
বেশ কয়েক বছর ধরে ঢাকার বর্জ্য থেকে কমপোস্ট সার তৈরি করছে ওয়েস্ট কনসার্ন নামের একটি কোম্পানি৷ তাদের ওয়েবসাইটে গিয়ে দেখা যায়, ২০১৬ সালের ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত কোম্পানিটি এক লক্ষ মেট্রিক টনের বেশি বর্জ্য রিসাইকেল করেছে৷ বিস্তারিত জানতে উপরে ‘+’ চিহ্নে ক্লিক করুন৷