1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
পরিবেশনেপাল

এভারেস্ট অভিযানের নতুন সমস্যা, নতুন সমাধান

৩০ এপ্রিল ২০২৪

জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে এভারেস্ট অভিযাত্রীরা নিত্যনতুন সমস্যায় পড়ছেন৷ বরফ গলায় একদিকে বাড়ছে পাহাড় চড়ার ঝুঁকি, অন্যদিকে, আবর্জনা ও বর্জ্যের দুর্গন্ধে নিঃশ্বাস নেওয়া কষ্টকর হয়ে পড়ছে৷

এভারেস্টে তেনজিন শেরপা
প্রতি বছর, আইসফল ডক্টরসের শেরপারা দড়ি ও অন্যান্য জিনিস দিয়ে মে মাসের শেষ পর্যন্ত কার্যকর থাকবে এমন পোক্ত পথ তৈরি করেনছবি: Phurba Tenjing Sherpa/epa/picture alliance/dpa

এভারেস্টের পশ্চিম ঢালের খুম্বু তুষারপ্রপাতকে পর্বতারোহীরা ডাকেন ‘মৃত্যুর নাচঘর' নামে৷ তলোয়ারের মতো ধারালো বরফ এই পথকে আরো বিপজ্জনক করে তোলে৷

দুর্ঘটনাও ঘন ঘন ঘটে সেই অঞ্চলে৷ দশ বছর আগে, ২০১৪ সালের ১৮ এপ্রিল, তুষারের বড় চাঁই ভেঙে পড়ায় প্রাণ হারান ১৬জন নেপালি পর্বতারোহী৷ সেই থেকে এই ধরনের তুষারপ্রপাত অভিযানে পটু, এমন কয়েকজন শেরপা মিলে গড়েন ‘আইসফল ডক্টরস' নামের সংগঠন৷ এভারেস্টের পথকে যতটা সম্ভব এই বিপজ্জনক পশ্চিম ঢালু থেকে সরিয়ে আনতে চেষ্টা করছেন তারা৷

কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তন এবারের বসন্তে এই পথকে আবার সরিয়ে নিয়ে গেছে সেই মৃত্যুর নাচঘরের কাছেই৷ কম ঝুঁকিপূর্ণ পথ খুঁজতে ব্যর্থ হন শেরপারা৷ পর্যপ্ত তুষারপাত না হওয়ায় রাস্তা পিচ্ছিল হয়, পাথরের ফাঁকের গহ্বরগুলি আরো বড় হওয়ায় মইয়ের সাহায্যে তা পেরোনো অসম্ভব ছিল৷

প্রতি বছর, আইসফল ডক্টরসের শেরপারা দড়ি ও অন্যান্য জিনিস দিয়ে মে মাসের শেষ পর্যন্ত কার্যকর থাকবে এমন পোক্ত পথ তৈরি করেন৷ কিন্তু তবুও, শেরপারা সতর্ক করে বলেন যে এই পথে রয়েছে পাঁচটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ পয়েন্ট, যা পেরোতে পারা প্রায় রাশিয়ান রুলেট খেলার মতোই৷

তুষারহীন এভারেস্ট, অর্থাৎ..

পাঁচ হাজার ৮০০ মিটার উচ্চতার অঞ্চলগুলিতেও তুষারের ছিঁটেফোঁটা নেই, যা চিন্তার বিষয়, বলেন তুষারপ্রবাহ বিশেষজ্ঞ তেনজিং চোগিয়াল শেরপা৷ তার মতে, ‘‘পরিসংখ্যান বলছে তুষারপাত হয় যে দিনগুলিতে, সেই সংখ্যা ও তুষারের পরিমাণে ঘাটতি দেখা দিচ্ছে৷ এমন নগ্ন পাহারের চূড়াই বোঝাচ্ছে আসলে কী হচ্ছে৷''

হিমবাহ গলার হারও বেড়েছে৷ ফলে, বরফ গলে পানি জমছে হ্রদে, সেই চাপে ফেটে পড়ছে তাদের বাঁধও৷ এভারেস্টের পাদদেশেও জমছে বরফ গলা জল৷ এর ফলে, পাহাড় থেকে পাথর ভেঙে পড়াও বেড়েছে, বাড়ছে তুষারধসের ঝুঁকিও৷

শেরপার সতর্কতা, ‘‘এমন তুষারধসে বহু মানুষ প্রাণ হারান৷ পাহাড় আরো বিপজ্জনক, পরিবর্তনশীল হয়ে পড়ছে৷''

পাহাড়ে চড়ার সুযোগ কমছে

২০২৩ সালের বসন্তে ১৮জন এভারেস্ট অভিযানে মারা যান৷ এতজন অভিযাত্রী এর আগে এত কম সময়ে মারা যাননি৷ কিন্তু সেই বছর সবচেয়ে বেশি ৪৭৮টি পাহাড়ে চড়ার অনুমতি বা পারমিট দিয়েছিল নেপাল সরকার৷ ২০২৪ সালে গত বছরের তুলনায় ২০ শতাংশ কম পারমিট দেওয়া হয়েছে৷

কিন্তু তাতেও কমবে না এভারেস্ট পাড়ি দেওয়া মোট যাত্রীদের সংখ্যা৷ চীনা অংশেও সেখানকার সরকার সর্বোচ্চ পারমিটের সংখ্যা তিনশতে বেঁধে দিয়েছে৷ সাথে, বাধ্যতামূলকভাবে অক্সিজেন ট্যাংক রাখার নিয়মও চালু করেছে তারা৷

ট্র্যাকিং চিপ ও বর্জ্যের ব্যাগ চালু

নেপালের দক্ষিণাঞ্চলেও চালু হয়েছে কিছু নতুন নিয়ম৷ বাধ্যতামূলকভাবে নিজেদের জ্যাকেটে ট্র্যাকিং চিপ লাগাতে হবে পর্বতারোহীদের৷ তাতে হারিয়ে যাওয়া পর্বতারোহীদের খুঁজতে সুবিধা হবে৷

এবছর প্রথমবারের জন্য বাধ্যতামূলক হচ্ছে বর্জ্যের ব্যাগ সাথে রাখা, যাতে ভরে সব বর্জ্য নিয়ে আসতে হবে পর্বতারোহীদের৷ মলত্যাগ করার পর সেই বর্জ্য নিয়ে আসার জন্য রয়েছে বিশেষ সিল করা ব্যাগ, যার গায়ে লাগানো বিশেষ পদার্থ দুর্গন্ধকে ঠেকাবে৷

নেপালের সাগরমাথা দূষণ নিয়ন্ত্রণ কমিটি (এসপিসিসি) এসব নিয়ম মানা হচ্ছে কি না, তা দেখার দায়িত্বপ্রাপ্ত৷ এসপিসিসি জানাচ্ছে, এভারেস্টের ক্যাম্প ওয়ান থেকে ক্যাম্প ফোরের মাঝের এলাকা থেকে সাধারণত তিন টন জৈবিক বর্জ্য পরিষ্কার করা হয়৷ এই এলাকায় সেই বর্জ্য বিকট দুর্গন্ধ ছড়াতো, যা নতুন ব্যাগের সাহায্যে নিয়ন্ত্রণে আনা যাবে বলে আশা করছেন তারা৷

স্টেফান নেসলার/এসএস

 

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ