এমআইটিতে পড়তে চায় ফারুক
১৭ জুন ২০১৩এরকম একটা প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হতে পেরে দারুণ খুশি ফারুক৷ তার চেয়েও বেশি খুশি প্রতিযোগীদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে পেরে৷ ডয়চে ভেলের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে ফারুক বলে, ‘‘মাদ্রাসায় আমার যারা সহপাঠী তারা ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে বিজ্ঞান পড়ছে, কিন্তু প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়ারা আমার মতো বিজ্ঞানকে ভালোবেসেই সেখানে গিয়েছিল৷''
রেডিও-টিভিতে প্রচারিত জনসচেতনতামূলক অনুষ্ঠানগুলো শিক্ষার্থীদের উপর কতটা প্রভাব ফেলতে পারছে – সে বিষয়ে একটা জরিপ চালিয়েছিল ফারুক৷ এছাড়া মাদ্রাসায় কীভাবে বিজ্ঞান সচেতনতামূলক কর্মসূচি চালু করা যায় সেটাও সে জানতে চেয়েছিল৷
নিজ মাদ্রাসার চতুর্থ থেকে দশম শ্রেণির প্রায় শ'খানেক শিক্ষার্থীর উপর এই জরিপ চালায় ফারুক৷ সেই প্রতিবেদন নিয়ে সে হাজির হয়েছিল প্রতিযোগিতার বিচারকদের সামনে৷
বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের ‘গুগল' আয়োজিত বার্ষিক এক বিজ্ঞান মেলায় অংশ নেয়ার যোগ্য করে তুলতে সম্প্রতি ঢাকায় ঐ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়৷ সারা দেশ থেকে বাছাই করা প্রায় ২৭০ জন স্কুল শিক্ষার্থী তাতে অংশ নেয়৷ সেখানে তারা বিজ্ঞানভিত্তিক বিভিন্ন প্রকল্প উপস্থাপন করে৷ বিজয়ীদের নিয়ে এ মাসের শেষে ছয়দিনের একটি ক্যাম্প আয়োজনের পরিকল্পনা করা হয়েছে৷
বাংলাদেশ বিজ্ঞান জনপ্রিয়করণ সমিতি (এসপিএসবি) ও বাংলাদেশ ফ্রিডম ফাউন্ডেশন যৌথভাবে এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করে৷
আয়োজক এসপিএসবি-র সাধারণ সম্পাদক ও বুয়েটের তড়িৎ কৌশল বিভাগের সহকারি অধ্যাপক ফারসীম মান্নান মোহাম্মদী বিচারক হিসেবেও কাজ করেছেন৷ ফারুক সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি উচ্ছ্বাস প্রকাশ করলেন৷ বিশেষ করে মাদ্রাসার একজন শিক্ষার্থীর সেরাদের সেরা হওয়াটাকে তিনি গুরুত্বের চোখে দেখছেন৷ ফারুকের গবেষণা সম্পর্কে ফারসীম বলেন, ‘‘ওর (ফারুকের) জরিপটা বেশ বিজ্ঞানসম্মত ছিল৷ এছাড়া সে একে একে তার সীমাবদ্ধতার কথাও আমাদের জানিয়েছে৷''
মাদ্রাসায় প্রচলিত বিজ্ঞান শিক্ষা সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে ফারুক সেখানে মানসম্মত বিজ্ঞান শিক্ষকের অভাবের কথা জানায়৷ এছাড়া তার অভিযোগ, অনেক বিজ্ঞান শিক্ষক শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞান না পড়ার পরামর্শ দেন৷
ফারুক ভবিষ্যতে পদার্থবিজ্ঞান নিয়ে উচ্চতর লেখাপড়া করতে চায়৷ এছাড়া পরিবেশ নিয়েও তার আগ্রহ রয়েছে৷ ইচ্ছা আছে যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত ‘ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনলজি', অর্থাৎ এমআইটি-তে পড়ার৷ তবে সেই স্বপ্ন পূরণ হবে কিনা – তা সে জানে না৷