1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

নতুন ওষুধ

২০ অক্টোবর ২০১২

‘স্টেফিলোককাস অরেয়াস’ বা এমআরএসএ এক ধরনের মারাত্মক জীবাণু৷ ওষুধ বা অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী বলেই এদের ভয়াবহতা এত বেশি৷ সম্প্রতি নতুন অ্যান্টিবায়োটিক বাজারে এসেছে, যা এই জীবাণু দমনে সক্ষম হবে বলে আশা করা হচ্ছে৷

Medizin Krankheitserreger Bakterien Streptokokken Mikroaufnahme Vergrößerung 30000:1 Rasterelektronenmikroskop REM-Color medicine bacteria
ছবি: picture-alliance/OKAPIA

এমআরএসএ বা মাল্টিড্রাগ রেজিস্ট্যান্ট জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়াইতে সাধারণ ওষুধপত্র একেবারেই অসহায়৷ প্রচলিত অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে কাবু করা যায় না এগুলি৷

এই প্রসঙ্গে বন ইউনিভার্সিটি ক্লিনিকের ইমিউনোলজি ও প্যারাসাইটোলজি বিভাগের প্রধান চিকিৎসক অ্যার্নস্ট মলিটর বলেন, ‘‘এই ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আমাদের অস্ত্রের ভাণ্ডার তেমন পরিপূর্ণ নয়, যেমনটি দেখা যায় অন্যান্য জীবাণুর ক্ষেত্রে৷''

যে সব জীবাণু অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী, তাদের মধ্যে এমআরএসএ অন্যতম৷ অনেক মানুষই এই জীবাণু বহন করে চলেছে৷

ডা. মলিটর জানান, ‘‘৩০ থেকে ৪০ শতাংশ নিশ্চয়তা দিয়ে বলা যায়, এই জীবাণু আমাদের নাকে ও গলবিলে অবস্থান করে৷ এটা স্বাভাবিক ব্যাপার৷ দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই৷ তবে বিষয়টি মারাত্মক হয় তখনই, যখন এই জীবাণু থেকে ক্ষত, ফুসফুসের সংক্রমণ, রক্তদূষণ ইত্যাদির মত রোগ ব্যাধি দেখা দেয়৷''

সব এমআরএসএ ওষুধ প্রতিরোধী নয়

সব প্রজাতির এমআরএসএ, মাল্টিড্রাগ রেজিস্ট্যান্ট নয়৷ তবে যে সব এমআরএসএ ওষুধ প্রতিরোধী, সেগুলি জড়িত হয়ে পড়লে সমস্যা দেখা দেয়৷ পেনিসিলিনের মত গতানুগতিক অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে অন্যান্য ব্যাকটেরিয়া কাবু করা গেলেও এগুলিকে আয়ত্তে আনা যায় না৷

ডা. মলিটর বলেন, ‘‘এমআরএসএ'এর রয়েছে বিশেষ ধরনের এনজাইম বা উৎসেচক৷ তাই এখন পর্যন্ত পাওয়া অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে এই ধরনের জীবাণুকে ধ্বংস করা সহজ নয়৷''

চিকিৎসকরা যখন এই মারাত্মক ধরনের জীবাণুর অস্তিত্ব শনাক্ত করতে পারেন, তখন অনেক দেরি হয়ে যায়৷ জার্মানিতে এমআরএসএ'এর সংক্রমণে প্রতি বছর কয়েক হাজার রোগী মারা যায়৷ তিন ভাগের এক ভাগ সংক্রমণ, হাসপাতালের অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের কারণে হয়ে থাকে৷ এই তথ্য জানা গেছে বিভিন্ন সমীক্ষা থেকে৷ অন্য দুই ভাগ সংক্রমণ নানা কারণে হয়ে থাকে, যা এড়ানো সহজ নয়৷

বিকল্প-অ্যান্টিবায়োটিক পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াসম্পন্ন

অল্প কিছু বিকল্প-অ্যান্টিবায়োটিক এই ভয়ানক জীবাণুটিকে কাবু করতে পারে৷ তবে প্রায়ই এগুলির পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া বিপজ্জনক৷ এছাড়া এই ওষুধ শরীরের সব জায়গায় একই রকম কাজে লাগে না৷ যেমন কোনো ওষুধ ফুসফুসের সংক্রমণে কাজে লাগলেও গিঁটের সংক্রমণ ভাল করতে ব্যর্থ৷

তবে সম্প্রতি চিকিৎসকদের মনে আশার আলো জাগিয়েছে একটি ওষুধ৷ আর তা হল, ফার্মাসিটিক্যাল কোম্পানি ‘আস্ট্রাসেনেকা'র তৈরি ‘সিনফোরো' নামের অ্যান্টিবায়োটিক৷ এটি এমআরএসএ জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে জয়ী হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে৷ ডা. মলিটর বলেন, ‘‘এই পদার্থের ব্যাপারে আমাদের আশা হল, এটি অন্যান্য বিকল্প ওষুধের তুলনায় অনেক কম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াসম্পন্ন৷''

নতুন ওষুধে আশার আলো

আশা করা হচ্ছে, এই অ্যান্টিবায়োটিক, জীবাণুর প্রতিরক্ষা শক্তিকে মোকাবিলা করতে এবং এর ভেতরের এনজাইমকে দমন করতে পারবে৷ ফলে ব্যাকটেরিয়াগুলি আর বিস্তার লাভ করতে পারবে না৷ তবে নতুন ওষুধও যে এমআরএসএ প্রতিরোধে ধন্বন্তরি তা বলা যায় না৷

ছবি: Fotolia/Irina Tischenko

ডা. মলিটরের ভাষায়, ‘‘জীবাণুর বিস্তার ও ওষুধ প্রস্তুত করার সম্ভাবনার মধ্যে অনবরত একটা প্রতিযোগিতা চলছে৷ এটা প্রায় সব ক্ষেত্রেই লক্ষ্য করা যায় যে, কোনো কোনো জীবাণু তার সহযোগীদের তুলনায় কিছুটা শক্তিশালী এবং ওষুধকে পাশ কাটিয়ে টিকে থাকতে সক্ষম৷''

ব্যাকটেরিয়ারা টিকে থাকার কৌশলী শিল্পী৷ তারা অতি দ্রুত বিস্তার লাভ করতে পারে এবং নতুন নতুন পরিস্থিতিতে খাপ খাওয়াতে পারে৷ যত ঘন ঘন তারা মারণঘাতি ওষুধের সম্মুখীন হয়, ততই তারা ফাঁকফোকর খুঁজতে থাকে, হয়ে ওঠে ওষুধ প্রতিরোধী৷

ডাঃ মলিটর জানান, ‘‘ এই মুহূর্তে তেমন নিরাশ হবার কারণ নেই৷ এমআরএসএ দমনে নতুন ওষুধ আমাদের অতিরিক্ত নিরাপত্তা দিতে পারবে৷ আগামী কাল বা পরশু কেউ এমআরএসএ ব্যাকটেরিয়ায় আক্রান্ত হলে কার্যকর চিকিৎসা করা যাবে৷''

তবে গবেষকদের এমআরএসএ ও অন্যান্য ব্যাকটেরিয়াকে ঘায়েল করতে হলে অনবরত নতুন নতুন অ্যান্টিবায়োটিক তৈরি করে যেতে হবে৷ কৌশলী ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করতে হলে এটাই একমাত্র উপায়৷

প্রতিবেদন: ব্রিগিটে ওস্টারাট/আরবি

সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ