1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

এমপিদের স্থানীয় উন্নয়ন বনাম নেতা-কর্মীদের উন্নয়ন

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
১৩ আগস্ট ২০২০

চলতি বাজেটে এমপিদের উন্নয়নমূলক কাজের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়েছে সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি টাকা৷ কিন্তু টিআইবি বলছে, এমপিদের বরাদ্দের টাকা উন্নয়নের নামে দলীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে ভাগবাটোয়ারা হয়৷

Bangladesch Büro der Anti-Korruptions Kommission
ছবি: bdnews24.com

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ(টিআইবি) তাদের এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলেছে, উন্নয়নকে সামনে রেখে সংসদ সদস্যদের নামে বরাদ্দ এই অর্থ নয় ছয় হয়৷ আর এর সুবিধা নেয় দলীয় নেতা-কর্মীরা৷

উন্নয়ন কাজের ২০ থেকে ২৫ ভাগ বিক্রি হয়ে যায়৷ কাগজে কলমে ঠিকাদার থাকলেও বাস্তবে তারা কাজ করেন না৷ প্রকল্পগুলো তদারকিও তেমন হয়না৷ টিআইবি তাদের গবেষণা এলাকায় দেখেছে নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ হয়েছে ৭৪ ভাগ প্রকল্পে, ২১ ভাগ প্রকল্পে আংশিক এবং পাঁচ ভাগ প্রকল্পে কোনো কাজই হয়নি৷ ২৫ ভাগ প্রকল্পে কাজ চলাকালে কোনো ধরনের তদারকি হয়নি৷ আর শেষ হওয়া প্রকল্পের কাজের মান খারাপ৷

জাতীয় সংসদের ৩০০ আসনের মধ্যে দৈবচয়নের ভিত্তিতে ৫০টি সংসদীয় আসনের সংসদ সদস্যদের প্রকল্প পর্যালোচনা ও সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে টিআইবি গবেষণা প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে৷ তবে সংরক্ষিত নারী আসন এই গবেষণায় নেওয়া হয়নি৷ ২০১৯ সালের মে থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত তথ্য সংগ্রহ করা হয়৷ ৬২৮ প্রকল্প তাদের গবেষণার আওতায় আসে৷

‘এটা উন্নয়নের নামে দলীয়করণ’: ড. ইফতেখারুজ্জামান

This browser does not support the audio element.

প্রকল্পগুলো হলো- রাস্তাঘাট নির্মাণ, সেতু ও কালভার্ট, হাটবাজারে রাস্তা ও ড্রেনেজ নির্মাণ সংক্রান্ত৷ এইসব কাজ পেতে গিয়ে ঠিকাদারদের আবার ১৪টি ধাপে অবৈধ কমিশন খরচ করতে হয়৷ খরচের পরিমাণ প্রকল্প ব্যয়ের ৮ থেকে ১২ শতাংশ৷ টাকার অঙ্কে ৪১ হাজার থেকে ৫৯ হাজার টাকা পর্যন্ত৷

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন,‘‘আমাদের কাছে স্পষ্ট হয়েছে যে, উন্নয়ন বরাদ্দের নামে এই বরাদ্দ হয় দলীয় রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের সুবিধা দিতে৷ এটা উন্নয়নের নামে দলীয়করণ৷ এতে সাধারণ মানুষের জন্য খুব বেশি উন্নয়ন হয়৷ লাভ হয় দলীয় নেতা আর কর্মীদের৷ এর ফলে রাষ্ট্রের বিপূল অর্থের অপচয় হয়৷

নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এই অপচয়-দুর্নীতির অভিযোগমানতে নারাজ৷ তিনি বলেন, ‘‘এটা ঢালাও অভিযোগ৷ যারা এই অভিযোগ করেন তারা বাস্তবতার নিরিখে অভিযোগ করেন না৷ সংসদ সদস্যরা শুধু পরিকল্পনা করেন৷ কাজ তদারকি করেন সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ৷''

কিন্তু বিএনপির সংসদ সদস্য হারুন অর রশীদ কাজে অনিয়ম হয় বলে মনে করেন৷ তিনি বলেন,‘‘বরাদ্দ পাওয়ার ক্ষেত্রে ক্ষমতাসীন দলের সংসদ সদস্যরা সব সময় এগিয়ে থাকেন৷ তারা নানা সুযোগ সুবিধাও বেশি পান৷ আমার এলাকায় আমি এখনো কোনো বরাদ্দ পাইনি৷''

টিআইবি মনে করে এই অনিয়ম এড়াতে সংসদ সদস্যদের উন্নয়নমূলক কাজের বাইরে রাখা উচিত৷ তাদের মূল কাজ আইন প্রণয়ন করা৷ সেখানেই তাদের ব্যস্ত থাকা উচিত৷ উন্নয়ন কাজ স্থানীয় সরকার ও সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের৷ ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘‘একই সঙ্গে গত ১৫ বছর সংসদ সদস্যদের জন্য থোক বরাদ্দ কীভাবে ব্যববহার করা হয়েছে তা তদন্ত করার জন্য একটি স্বাধীন কমিশন গঠন কর দরকার৷ আর যদি সংসদ সদস্যদের উন্নয়ন কাজ থেকে দূরে রাখা সম্ভব না হয় তাহলে বাস্তবায়ন থেকে তাদের বাদ রাখতে হবে৷ তারা শুধু পরিকল্পনায় থাকবেন,'' প্রস্তাব ড. ইফতেখারুজ্জামানের৷

‘যারা এই অভিযোগ করেন তারা বাস্তবতার নিরিখে অভিযোগ করেন না’: খালিদ মাহমুদ চৌধুরী

This browser does not support the audio element.

কিন্তু সংসদ সদস্যরা মনে করেন, উন্নয়ন কাজে অংশ নেয়া তাদের দায়িত্ব৷ এলাকার সমস্যা এবং সম্ভাবনা সংসদে তুলে ধরা এবং এলাকায় তার সমাধান করার জন্যই জনগণ তাদের ভোট দিয়েছে৷ খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন,‘‘টিআইবির তথ্যে ভুল আছে৷ সংসদ সদস্যরা শুধু পরিকল্পনাই করেন৷ বাস্তবায়নে তাদের ভূমিকা নেই৷ মনে রাখতে হবে যারা জরিপ করেন তাদের কাছে জনগণের কোনো প্রত্যাশা নেই৷ আমাদের কাছে তাদের প্রত্যাশা আছে৷''

হারুন অর রশীদও মনে করেন, সংসদ সদস্যদের এলাকার উন্নয়ন কাজের বাইরে রাখার কোনো উপায় নেই৷ তবে তিনি এই অর্থ কিভাবে ব্যয় হয় বা হয়েছে তার স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে টিআইবির তদন্ত কমিশন গঠনের দাবি সমর্থন করেন৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ