1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

এরশাদের শপথ

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা১১ জানুয়ারি ২০১৪

অনেক নাটকীয়তার পর অবশেষে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ শনিবার একতরফা নির্বাচনের সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নিয়েছেন৷ এদিকে, জাতীয় পার্টি বিরোধী দলে থাকার পাশাপাশি মন্ত্রিসভায়ও থাকতে চাইছে৷

শনিবার দুপুরে শপথ নেন এরশাদছবি: JEWEL SAMAD/AFP/Getty Images

নির্বাচনের আগে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা চিকিৎসার নাম করে এরশাদকে সিএমএইচে নিয়ে যান৷ তখন তিনি নির্বাচন বর্জনের কথা বলেছিলেন৷ বলেছিলেন নির্বাচনকালীন সরকারে যোগ দেয়া জাতীয় পার্টির নেতাদের পদত্যাগ করার কথা৷ কয়েকজন প্রার্থী মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করলেও জাতীয় পার্টির অন্যান্য প্রার্থীরা নির্বাচনে অংশ নেন৷ এরশাদ নিজেও নির্বাচিত হন৷ মন্ত্রীরাও কেউ পদত্যাগ করেননি৷ সব মিলিয়ে জাতীয় পার্টি ৩৩টি আসন পায়৷

বৃহস্পতিবার এরশাদের স্ত্রী ও দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য রওশন এরশাদের নেতৃত্বে জাতীয় পার্টির এমপিরা শপথ নিলেও এরশাদ নেননি৷ রওশন এরশাদকে বৃহস্পতিবার জাতীয় পার্টির সংসদীয় দলের নেতা নির্বাচন করা হয়৷ এরপর শনিবার সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নিলে এরশাদ৷ বেলা ১২টার দিকে সংসদ ভবনে তাঁকে শপথ পড়ান স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী৷

স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী এরশাদকে শপথ পড়ানছবি: DW/M. Mamun

জাতীয় পার্টি বিরোধী দল হিসেবে এবার সংসদে আত্মপ্রকাশ করেছে৷ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়া আওয়ামী লীগকে রাষ্ট্রপতি সরকার গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন৷ রবিবার নতুন মন্ত্রিসভা শপথ নিতে পারে৷ ৩৩ আসন নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা জাতীয় পার্টি একইসঙ্গে বিরোধী দলে বসতে চায়, আবার সরকারেও থাকতে চায়৷

জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ ডয়চে ভেলেকে জানান, এবার তাঁরা একটি আদর্শ বিরোধী দল হতে চান৷ সরকারের শুধু সমালোচনা নয়, তাঁরা সরকারকে সহযোগিতাও করতে চান৷ এজন্য তাঁরা মন্ত্রিসভায়ও থাকতে চান৷ তিনি বলেন এতে কোনো অসুবিধা নেই এবং আইনেরও কোনো লঙ্ঘন হবে না৷

জাতীয় পার্টির আরেক নেতা মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, জাতীয় পার্টি যদি সত্যিকারের বিরোধী দল হিসেবেও ভূমিকা পালন করে, তারপরও সরকারের আজ্ঞাবহ বলা হবে৷ তাই এই সিল যদি লাগেই, তাহলে জাতীয় পার্টির মন্ত্রিত্ব নেয়াই শ্রেয় হবে, বলে মনে করেন তিনি৷

রওশন এরশাদ দলের নেতাদের নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে জাতীয় পার্টি থেকে মন্ত্রিত্ব নেয়ার আগ্রহ দেখান৷ তিনি একটি তালিকাও দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীকে৷ তাঁরা কমপক্ষে ৪ জন মন্ত্রী চান জাতীয় পার্টি থেকে৷

তবে বিরোধী দলে থেকে জাতীয় পার্টির মন্ত্রিত্ব নেয়ায় সায় নেই দলের চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদের৷ কিন্তু এরশাদ এই সময়ে রওশনপন্থিদের সঙ্গে পেরে উঠবেন বলে মনে হয় না৷ কারণ এখন পর্যন্ত রওশন এরশাদের সিদ্ধান্ত মতোই কাজ হয়েছে৷ এরশাদও শেষ পর্যন্ত শপথ নিয়েছেন৷

বিরোধী দলে থেকে সরকারে যোগ দেয়ার জাতীয় পার্টির এই আগ্রহের সমালোচনা করেছেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত এমপি৷ তিনি বলেন, ‘‘আমরা নির্ভেজাল বিরোধী দল চাই৷ যারা সরকারের গঠনমূলক সমালোচনা করবে৷ মাথাটা সরকারি দলের আর লেজটা বিরোধী দলের – এটা করা যাবে না৷ আবার মাথা, লেজ বিরোধী দলের, আর পেট সরকারি দলের, এটাও হবে না, হয়ও না৷ সবাই যদি মন্ত্রিত্বের জন্য কাঙাল হয়ে পড়ে, তাহলে গণতন্ত্রের কাঙাল হবে কে?'' সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, বিরোধী দল থেকে মন্ত্রী হওয়ার বৈধতা নিয়ে ২০০৬ সালে একটি মামলা হয়েছিল৷ ঐ মামলায় তৎকালীন বিচারপতি মোস্তফা কামাল একটি পর্যবেক্ষণ দিয়েছিলেন৷ তিনি পর্যবেক্ষণে বলেছেন, একইসঙ্গে সরকারে এবং বিরোধী দলে থাকা অনৈতিক, গণতান্ত্রিক শিষ্টাচার এবং সংবিধান বহির্ভূত৷

তবে জাতীয় পার্টি শেষ পর্যন্ত বিরোধী দলে থেকে মন্ত্রিত্ব পাবে কিনা তা এখনো স্পষ্ট নয়৷ কারণ ৫ই জানুয়ারির নির্বাচনের পরদিন এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসনা অন্য দল থেকে মন্ত্রী করা যেতে পারে বললেও, এও বলেছেন যে বিরোধী দলও থাকতে হবে৷ শেষ পর্যন্ত যদি বিরোধী দলে থেকে জাতীয় পার্টি মন্ত্রিত্ব পায় তাহলে বাংলাদেশে তা হবে এক অদ্ভুত এবং অভিনব সরকার ব্যবস্থা৷ আর তা দেখতে অপেক্ষা করতে হবে রবিবার পর্যন্ত৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ