1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

আওয়ামী লীগ নেত্রীর হুমকি ও পৌর নির্বাচন

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১

বাংলাদেশে রবিবার চতুর্থ ধাপে ৫৫টি পৌরসভায় ভোট গ্রহণ হয়েছে৷ কিন্তু তার আগেই ঠাকুরগাঁওয়ে বিএনপি সমর্থকদের এলাকা ছাড়ার নির্দেশ দেন মহিলা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মাহমুদা বেগম৷

ফাইল ছবিছবি: DW/A. Islam

তিনি ভোটের আগের দিন শনিবার ঢাকায় ফিরে এসেছেন৷ তবে ঠাকুরগাঁও পৌর নির্বাচনের খোঁজ নিয়ে জানা গেছে নেত্রীর কথামতই কাজ করেছেন তার কর্মীরা৷ ভোটাররা পছন্দ মতো প্রার্থীকে ভোট দিতে  না পারার অভিযোগ উঠেছে৷ সহায়তার নামে বুথে ঢুকে কর্মীরা ভোটারদের নৌকায় ভোট দিতেই বাধ্য করেছেন, এমন কিছু ভিডিও পাওয়া গেছে৷

মহিলা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মাহমুদা বেগম গত বৃহস্পতিবার এক নির্বাচনী সভায় বলেন, ‘‘যাদের মনে ধানের শীষের সঙ্গে প্রেম আছে, তারা কী করবেন? ১৩ তারিখে ঠাকুরগাঁও ছেড়ে চলে যাবেন৷ ১৩ তারিখ সন্ধ্যার পরে তাদের দেখতে চাই না৷ তাদের ভোটকেন্দ্রে আসার কোনো প্রায়োজন নাই৷ তাহলে ভোটকেন্দ্রে যাবে শুধু কে? নৌকা, নৌকা আর নৌকা৷’’

মাহমুদা বেগম

This browser does not support the audio element.

এর একদিন আগে ওই এলাকারই আরেকটি নির্বাচনী সভায় তিনি বলেন, ‘‘সুস্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, যারা নৌকায় ভোট দিতে না চান, ১৩ তারিখ সন্ধ্যার পরে আপনাদের চেহারা এলাকায় দেখতে চাই না৷ কোথায় যাবেন আমি জানি না৷ তবে ঠাকুরগাঁওয়ে থাকতে পারবেন না৷ যারা নৌকায় ভোট না দেবেন, তারা ঠাকুরগাঁও থেকে বিদায় নেবেন৷’’

তার এই দুইটি বক্তব্যই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে৷ যা ডয়চে ভেলের কাছে অস্বীকার করেননি তিনি৷ এই বক্তব্যের জন্য তিনি অনুতপ্তও নন৷ বলেন, ‘‘আমি যা বলেছি নৌকার জন্যই বলেছি৷’’ তিনি বলেন, ‘‘নির্বাচনে মাঠে কি কেউ কাউকে সমীহ করে কথা বলে? আমি আমার ভোট নেয়ার কৌশলে বলব, সেও  আমাকে বলবে৷ প্রতিপক্ষতো নির্বাচনের মাঠে এরকমই করে৷ এটা নিয়ে কেন যে সবাই এমন করছেন! কত জায়গায় কত কিছু ঘটছে৷...শুধু আমারটাই ভাইরাল হয়েছে৷’’

তবে এক পর্যায়ে তিনি নতুন ব্যাখ্যা দেন৷ দাবি করেন, ‘‘আমি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য বিএনপির সন্ত্রাসীদের চলে যেতে বলেছি৷’’ তার ভিডিওতে সন্ত্রাসী শব্দটি যে নেই তা মনে করিয়ে দিলে বলেন, ‘‘না থাকতে পারে৷ কিন্তু আমার উদ্দেশ্য ছিলো সন্ত্রাসীদের চলে যেতে বলা৷ এটা আসলে একই কথা৷’’

২১ সেন্টারের মধ্যে ১৯টি সেন্টারই দখল করে: মির্জা ফয়সাল আমীন

This browser does not support the audio element.

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারাও তার এই ধরনের বক্তব্যে বিব্রত৷ সে কারণেই তাকে শনিবার তলব করে ঢাকায় আনা হয়৷ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের তার সাথে টেলিফোনে কথাও বলেন বিষয়টি নিয়ে৷ তিনি একদিন আগে সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘‘তার বক্তব্য তদন্ত করে দেখা হচ্ছে৷ তার অডিও-ভিডিও পরীক্ষা করা হচ্ছে৷’’

এর জবাবে মাহমুদা বেগম বলেন, ‘‘হ্যাঁ তার (ওবায়দুল কাদের) সাথে আমার কথা হয়েছে৷ তদন্ত করুক, দেখুক৷ ভিডিওতে কী বলেছি দেখুক৷ আমি তো ভিডিওতে কোনো থানার ওসিকে বলি নাই, এসপিকে বলি নাই যে এটা আপনি কেটে নিয়ে আসেন, এটা করে নিয়ে আসেন৷ আমি যা বলেছি তা বলতেই পারি৷ আমি তো নৌকার জন্যই বলেছি৷’’

ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর মেয়র মির্জা ফয়সাল আমীন জানান, তারা মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রীর বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশন ও ডিসি-এসপির কাছে অভিযোগ করেও কোনো ফল পাননি৷ নির্বাচনের আগের দিন পর্যন্ত তিনি ছিলেন৷ নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘‘আমাদের কাছে এরকম কিছু এখানো আসেনি৷ তারপরও ওই নেত্রীর বক্তব্য তদন্ত করে দেখা হচ্ছে৷ অভিযোগ প্রমাণ হলে ব্যবস্থা নেয়া হবে৷’’ তবে তিনি দাবি করেন, ‘‘আজকাল ফেসবুক-ইউটিউবে অনেক কিছু ভাইরাল করে দেয়া যায়৷ আদৌ তিনি ওই কথা বলেছেন কিনা তা নিশ্চিত নয়৷’’ মাহমুদা বেগম তার বক্তব্যের কথা অস্বীকার করছেন না বলে জানালে তিনি বলেন, ‘‘আমরা সেটা জানি না৷ আমরা তদন্ত করে দেখতে বলেছি৷’’

রফিকুল ইসলাম

This browser does not support the audio element.

মির্জা ফয়সাল আমীন অভিযোগ করেন, ‘‘আজ (রবিবার) নির্বাচনের দিনও ওই নেত্রীর বক্তব্যের প্রতিফলনই ঘটেছে৷ এখানে (ঠাকুরগাঁও) ভোটের নামে প্রহসন হয়েছে৷ ২১ সেন্টারের মধ্যে ১৯টি সেন্টারই তারা দখল করে নেয়৷ ভোটাররা চাইলেও ধানের শীষে ভোট দিতে পারেননি৷ ভোটারদের বলেছে, আপনাদের ভোট নৌকায় দেয়া হয়ে গেছে৷ আমাদের ভোটার ও নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷'' তিনি জানান, তাদের পক্ষ থেকে নির্বাচন চলাকালেও নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ করা হয়েছে৷ কিন্তু কোনো ফল হয়নি৷’’

আরো অনেক পৌর এলকায় নির্বাচনে একই ধরনের অভিযোগ পাওয়া গেছে৷ নির্বাচন বর্জনও করেছে স্বতন্ত্র এবং বিএনপি'র প্রার্থীরা কয়েকটি পৌরসভায়৷ সহিংসতায় একজন নিহতও হয়েছেন৷ তবে নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘‘টেলিভিশনের খবরে এরকম কিছু তো আমি দেখেনি৷ যদি ঘটে থাকে, অভিযোগ পাওয়া যায় এবং তা যদি সঠিক তথ্য ভিত্তিক হয় তাহলে আমরা ব্যবস্থা নেব৷’’

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ