বিবাহ-বিচ্ছেদ চেয়েছিলেন, কিন্তু পাকিস্তানের করাচির জ়োয়া আহমদ ভাবতেও পারেননি সেই মামলা এতদূর গড়াবে৷
পাকিস্তানে কিন্তু ইসলামী আইন অনুযায়ী বিবাহবিচ্ছেদের অনুমোদন রয়েছে৷ নারীরা বিচ্ছেদ চাইতে পারেন, তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তাদের ক্ষতিপূরণ হিসেবে ‘হক মেহের’ বা বিবাহের যৌতুক স্বামীকে ফেরত দিতে হয়৷ ছবি: JAM STA ROSA/AFP
বিজ্ঞাপন
৩৩ বছরের এই নারী বিচ্ছেদ চাওয়ার পরেই তার বিরুদ্ধে একের পর এক পাল্টা অভিযোগের বন্যা বইয়ে দেন তার স্বামী৷ পুলিশে জ়োয়া-র বিরুদ্ধে পরকিয়ার মিথ্যা অভিযোগ জানান, সম্পত্তি সংক্রান্ত মামলাও শুরু করেন৷ জ়োয়া-র কথায়, ‘‘পরকিয়ার এই মিথ্যা অভিযোগ একজন নারীর পক্ষে অত্যন্ত অসম্মানজনক৷ আদালত ভর্তি পুরুষের সামনে লজ্জা করে, সকলে কেমন করে তাকিয়ে থাকেন!''
জ়োয়া জানিয়েছেন, তার স্বামীর সঙ্গে তার শারীরিক বোঝাপড়া ও চাহিদার কোনো সঙ্গতি ছিল না, তাই তিনি বিচ্ছেদের আবেদন করেন৷
কিন্তু এখন তার স্বামী সেই কারণটি সকলের সামনে তুলে ধরে তাকে অপমান করেন, দাবি করেন জ়োয়ার যৌনচাহিদা বেশি৷ পরকিয়ার মামলায় তার একাধিক বন্ধুর নামও জড়িয়েছেন জ়োয়ার স্বামী৷
এই ঘটনা প্রকারান্তরে দেখায়, পাকিস্তানসহ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে বিবাহবিচ্ছেদ খুব একটা ভাল চোখে দেখা হয় না৷ যদিও ভারত, পাকিস্তান ও ইন্দোনেশিয়ায় ডিভোর্স ক্রমশ বাড়ছে, কিন্তু মেয়েরা যদি বিচ্ছেদ চান, তবে এখনো তাদের বহু প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়৷
দু’ দিন পরপর ঝগড়া, দু’ দিন পরপর ছাড়াছাড়ি আর মানতে পারছিলেন না এক দম্পতি৷ পরস্পরের প্রতি ভালোবাসা এবং স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ককে দীর্ঘস্থায়ী করতে অভিনব উদ্যোগ নিয়েছেন তারা৷ দেখুন ছবিঘরে...
ছবি: GLEB GARANICH/REUTERS
বন্ধন অটুট রাখতে স্বেচ্ছাবন্দিত্ব
ছবির এই তরুণের নাম আলেক্সান্দর কুডলে আর তরুণীর নাম ভিক্টোরিয়া পুস্তোভিতোভা৷ তারা স্বামী-স্ত্রী৷ কিন্তু দু’জনের এত ঝগড়া হতো যে ইউক্রেনের এই দম্পতি দু’ দিন পরপরই আলাদা থাকতে বাধ্য হতেন৷ ঘনঘন ব্রেকআপে ক্লান্ত হয়ে সম্পর্কটাকে টিকিয়ে রাখতে অবশেষে হাতকড়া দিয়ে নিজেদের বেঁধে ফেলেছেন তারা৷
ছবি: GLEB GARANICH/REUTERS
২৪ ঘণ্টা একসঙ্গে
এই ছবির মতো এখন শুধু আলিঙ্গন করা বা চুমু খাওয়ার সময়ই নয়, সারা দিন সব জায়গায়, সব কাজেই দুজন একসঙ্গে থাকেন৷ হাতকড়াই এক রাখে তাদের৷
ছবি: GLEB GARANICH/REUTERS
ভেবেছিলেন মজা হবে
এখন ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় শহর খারকিভের ফ্ল্যাটেই থাকছেন আলেক্সান্দর আর ভিক্টোরিয়া৷রয়টার্সকে তারা জানান, সবশেষ ছাড়াছাড়ির পর আলেক্সান্দর যথারীতি ফিরে আসার অনুরোধ জানানোয় ভিক্টোরিয়া বলেছিলেন, ‘‘দু দিন পরপর ঝগড়া আর ব্রেকআপে আমি ক্লান্ত৷’’ ব্যস, এক পর্যায়ে ঠিক হলো এবার হাতকড়া পরে এক সঙ্গে থাকা শুরু করবেন, ফলে চাইলেও কেউ কাউকে ছেড়ে যেতে পারবে না আর কিছুটা কষ্ট হলেও তাতে মজাও হবে৷
ছবি: GLEB GARANICH/REUTERS
আপাতত তিনমাস...
কিন্তু এভাবে কতদিন থাকা যাবে? খাওয়া-দাওয়া, ঘুমানো, গোসল, ঘরের যাবতীয় কাজ, এমনকি পায়খানা-প্রস্রাবও হাতকড়া পরা অবস্থায় একসঙ্গে করা তো সহজ কথা নয়! না, ৩৩ বছর বয়সি আলেক্সান্দর আর ২৮ বছর বয়সি ভিক্টোরিয়া সারাজীবন এভাবেই কাটানোর কথা ভাবছেন না৷ এভাবে আপাতত তিনমাস থাকতে চান তারা৷
ছবি: GLEB GARANICH/REUTERS
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছবি
হাতকড়া পরে জীবনযাপনের ছবি নিয়মিত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করছেন আলেক্সান্দর আর ভিক্টোরিয়া৷অনেক মানুষ দেখছেন সেসব ছবি৷ সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে মরিয়া এই দম্পতির প্রশংসা করছেন অনেকেই৷
ছবি: GLEB GARANICH/REUTERS
সম্পর্কটা কি টিকবে?
এভাবে সম্পর্ক টিকিয়ে রাখা যাবে কিনা এমন প্রশ্নও তুলছেন অনেকে৷ তবে ইন্সটাগ্রামে অনেকে আবার আলেক্সান্দর-ভিক্টোরিয়াকে বলছেন, ‘লাভ কাপল’৷ তারা মনে করেন, সব সম্পর্কই ভেঙে যেতে পারে, তবে পরস্পরের প্রতি ভালোবাসা না থাকলে এভাবে পরস্পরের কাছে থাকার ইচ্ছা সবাই প্রকাশ করতে পারে না৷ ছবিতে বাথরুমে দাড়ি কামাচ্ছেন আলেক্সান্দর, তখনও হাতকড়ার টানে কাছে থাকতে হচ্ছে ভিক্টোরিয়াকে৷
ছবি: GLEB GARANICH/REUTERS
টক শো-র নিয়মিত বক্তা
আজকাল ইউক্রেনের বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলের টক শো-তে ডাক পড়ে ভিক্টোরিয়া আর আলেক্সান্দরের৷ সেখানে গিয়ে ভালোবাসা টিকিয়ে রাখার জন্য তাদের এই উদ্যোগের পাশাপাশি সম্পর্কে বিশ্বাসযোগ্যতা, পারস্পরিক সম্মান ইত্যাদির গুরুত্ব নিয়ে কথা বলতে হয়৷ ছবিতে আয়নায় মুখ দেখে মেক আপ নিচ্ছেন ভিক্টোরিয়া, আলেক্সান্দর তখন মোবাইলে ব্যস্ত৷
ছবি: GLEB GARANICH/REUTERS
হাতকড়ার কৃতিত্ব
এমন নয় যে ঝগড়া একেবারে বন্ধ হয়ে গেছে৷ আলেক্সান্দর জানালেন, ঝগড়া আগের মতোই হয়, তবে চাইলেও কেউ আার ব্যাগ গুছিয়ে চলে যেতে পারেন না৷ হাত তো বাঁধা, যাবেন কী করে! অগত্যা বাধ্য হয়েই থামাতে হয় ঝগড়া, ফিরতে হয় শান্তিময় স্বাভাবিক জীবনে৷ছবিতে রান্নাঘরে দুজনের থালাবাসন ধোয়ার দৃশ্য৷
ছবি: GLEB GARANICH/REUTERS
পারস্পরিক বোঝাপড়া
হাতকড়া তাদের প্রতিটি কাজে পারস্পরিক বোঝাপড়ার গুরুত্ব বুঝিয়ে দিচ্ছে, বোঝাপড়া ঠিক না থাকলে এভাবে একসঙ্গে জুতা পরাও তো সম্ভব হতো না৷
ছবি: GLEB GARANICH/REUTERS
একসঙ্গে বেড়ানো
কোথাও বেড়াতে গেলেও হাতকড়ার কথা মনে রেখে চলতে হয় তাদের৷
ছবি: GLEB GARANICH/REUTERS
10 ছবি1 | 10
আর্থিক অনিরাপত্তা ও ব্যাহত মানসিক শান্তি
পাকিস্তানে কিন্তু ইসলামী আইন অনুযায়ী বিবাহবিচ্ছেদের অনুমোদন রয়েছে৷ নারীরা বিচ্ছেদ চাইতে পারেন, তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তাদের ক্ষতিপূরণ হিসেবে ‘হক মেহের' বা বিবাহের যৌতুক স্বামীকে ফেরত দিতে হয়৷ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বছর ৩৪-এর এক নারী জানান, তার বিচ্ছেদের আবেদন কার্যত লড়াইয়ে পরিণত হয়েছে৷ তার কারণ, তার বিবাহের চুক্তিপত্র থেকে ‘খুলা' নীতিটি সরিয়ে ফেলা হয়েছিল৷ এই ‘খুলা' নীতির সাহায্যেই মুসলিম নারীরা বিচ্ছেদের আবেদন করতে পারেন৷
বাস্তবে অনুমোদন থাকলেও একজন নারী বিচ্ছেদের আবেদন করার পরে তাকে যে সকল দ্বন্দ্ব ও কটাক্ষের সম্মুখীন হতে হয়, তার প্রভাব সুদূরপ্রসারী৷ ২০২০ সালের এক গবেষণায় পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের ৪২৭ জন বিবাহবিচ্ছিন্না মহিলার উপর একটি সমীক্ষা চালানো হয়৷ তাতে দেখা গিয়েছে, তাদের মধ্যে হতাশা ও উদ্বেগের হার অত্যন্ত বেশি৷ তার মূল কারণ, আর্থিক নিরাপত্তাহীনতা ও পারিবারিক প্রতিক্রিয়া৷
৪০ বছরের নবীন নোতিয়ার বর্তমানে থাকেন ব্রিটেনে৷ তিনি জানিয়েছেন, তার মায়ের বিয়ের চুক্তিপত্রে এই ‘খুলা' নীতিটি ছিল৷ তার নানী, বিশেষ করে এই নীতিটি রাখতে বলেছিলেন, তার বাবার পরিবার মেনেও নিয়েছিল৷ কিন্তু তাতেও শেষরক্ষা হয়নি৷
নবীনের কথায়, তার মা বিচ্ছেদ পেলেও কাস্টডি ব্যাটেল, অর্থাৎ তার পরের সন্তানের অধিকারের মামলা থেকে রক্ষা পাননি৷
ডিডাবলিউকে তিনি বলেন, ‘‘সন্তানের অধিকার সংক্রান্ত লড়াই মেয়েদের জীবন আরো কঠিন করে দেয়৷''
পাকিস্তানে অবশ্য সন্তান ছোট থাকলে তার হেফাজত মাকে দেওয়া হয়৷ বাবারা আর্থিক সহায়তা প্রদান করতে পারেন, তবে সন্তানের সঙ্গে দেখা করার বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে মায়ের বিবেচনাধীন৷
এই প্রেক্ষিতেই আব্বাস (নাম পরিবর্তিত) জানিয়েছেন, বিচ্ছেদের পরে তিনি সন্তানদের জন্য আর্থিক সহায়তা দিলেও তার প্রাক্তন স্ত্রী যোগাযোগ রাখেন না৷ তার কথায়, ‘‘দাদা-দাদীর ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত আমার সন্তান, কষ্ট হয় খুব৷''
বিজ্ঞাপন
ফিলিপাইন্সে বিচ্ছেদ আইনত নিষিদ্ধ
এর বিপরীতে বিশ্বের দুটি দেশ, ফিলিপাইন্স ও ভ্যাটিকান সিটিতে বিবাহবিচ্ছেদ আইনত নিষিদ্ধ৷ ফিলিপাইন্সে বিচ্ছেদের একমাত্র উপায় আইনের সাহায্যে বিবাহ খারিজ করা৷ তা ব্যয়বহুল ও সময়সাপেক্ষ৷
বার্লিনের ফিলিপিনো সাংবাদিক আনা পি সান্তোস ডিডাবলিউকে জানিয়েছেন, তিনি চার বছর ধরে তার বিয়ে খারিজ করার চেষ্টা করেছেন৷
তার দাবি, তার সেই সুবিধা ছিল, ছিল উপযুক্ত আইনজীবীও৷ কিন্তু বেশিরভাগ নারী এই সময়সাপেক্ষ ও ব্যয়বহুল পথটি নিতে পারে না৷ অনেক সময় এই পদ্ধতিতে ঘুসও দাবি করা হয়৷ আনা জানান, ‘‘আমি কাউকে কোনো টাকা দিইনি৷''
মূলত প্রতারণা, মানসিক সমস্যা সংক্রান্ত বিষয় হলে ফিলিপাইন্সে বিয়ে খারিজ হয়৷ কিন্তু এর ফলে বহু মহিলাকে তাদের গভীর ব্যক্তিগত বিষয়কে তুলে ধরতে হয় আদালতে, সর্বসমক্ষে৷
ফিলিপিনো সমাজতাত্ত্বিক আথেনা শারেন প্রেস্তোর কথায়, ‘‘স্বামীর থেকে বিচ্ছেদ চাইলেই একজন নারীকে খারাপ বলে দাগিয়ে দেওয়া হয়৷''
সমীক্ষায় প্রকাশ, মাত্র ১.৯ শতাংশ ফিলিপিনো বিয়ে খারিজ করেছেন৷
উচ্চপদস্থ নারীর জীবনে বিবাহ বিচ্ছেদ কি অনিবার্য?
সফল একটি ক্যারিয়ার আর ভালোবাসায় পূর্ণ সংসার, প্রায় সব মানুষের স্বপ্ন৷ কিন্তু নারীর জীবনে পদোন্নতি আর বিচ্ছেদ যেন এক সুতায় গাঁথা৷ উচ্চপদে থাকা পুরুষের তুলনায় উচ্চপদের থাকা নারীদের জীবনে সংসার ভেঙ্গে যাওয়া হার অনেক বেশি৷
ছবি: SAP
আমেরিকান ইকোনমিক জার্নাল
জানুয়ারির শুরুতে আমেরিকান ইকোনমিক জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণাপত্রে বলা হয়, পেশা জীবনে সফল হতে পুরুষদের তুলনায় নারীদের ব্যক্তিগত জীবনে বেশি মূল্য দিতে হয়৷
ছবি: @WomenTwenty_Ger
সিইও পদে নারী
সুইডেনে কোনো বেসরকারি কোম্পানির প্রধান নির্বাহী পদে নিয়োগ পাওয়ার তিন বছরের মধ্যে বিবাহিত পুরুষদের তুলনায় নারীদের বিচ্ছেদের হার প্রায় দ্বিগুণ৷
ছবি: SAP
সরকারি পদে
গত তিন দশকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী মেয়র বা সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর তাদের বিবাহ বিচ্ছেদের আশঙ্কা দ্বিগুণ হয়ে যায়৷ অথচ পুরুষদের ক্ষেত্রে এ আশঙ্কা প্রায় শূন্য৷
ছবি: Getty Images/AFP/K. Krzaczynski
অন্যান্য পেশার চিত্রও প্রায় এক
চিকিৎসক বা পুলিশের মত দায়িত্বপূর্ণ ও চ্যালেঞ্জিং পেশাতেও নারীদের পদন্নোতির পর সঙ্গীর সঙ্গে বিচ্ছেদের আশঙ্কা একই হারে বাড়ে৷
ছবি: imago/Martin Wagenhan
সন্তানের উপর প্রভাব
গবেষণায় অংশ নেওয়া বেশিরভাগ দম্পতির সন্তান ছিল এবং বাবা-মার বিচ্ছেদের পর তারা বাড়ি ছেড়ে চলে গেছে৷ কিন্তু অপ্রাপ্তবয়স্ক সন্তান থাকলে বিষয়টা আরো অনেক বেশি চাপের হয়ে যায়৷
ছবি: picture-alliance
কোথায় সংঘাত
সুইডেনের একটি অভিজাত আসবাবপত্র তৈরির কোম্পানির সিইও শার্লট লিজুং৷ বিবাহ বিচ্ছেদের সময় তার দুই সন্তান খুব ছোট ছিল৷ সন্তানের দায়িত্ব এবং বড় পদে কাজের চাপ তার সংসারে চিড় ধরাতে মুখ্য ভূমিকা রেখেছে বলে মনে করেন তিনি৷
তবে সন্তান না থাকলেও একই সংকট তৈরি হতে পারে বলে মনে করেন লিজুং৷ বলেন, ‘‘সংসারের লাগাম কার হাতে, কার আয় বেশি৷ এটা ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ৷ আজকাল অনেক পুরুষ এটার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলেও বাস্তবতা হচ্ছে বিষয়টা তাদের জন্য মেনে নেওয়া খুব কঠিন৷’’
ছবি: Imago/Xinhua
লিঙ্গ সমতা
ইউরোপীয় ইউনিয়নের লিঙ্গ সমতা ইনডেক্সে সুইডেন সবার উপরে৷ সন্তান জন্মের পর ছুটি, দিবাযত্ন কেন্দ্রে ভর্তুকি, শিথিল কাজের সময় ইত্যাদি কারণ এক্ষেত্রে ভূমিকা রেখেছে৷ তারপরও ইউরোপের অন্যান্য দেশের তুলনায় সেখানে বিচ্ছেদের হার বেশি৷
নারীরা আর্থিকভাবে সাবলম্বী হওয়ার পর বিচ্ছেদের হার বেড়েছে৷ একটি অসুস্থ সংসার জীবন বয়ে নিয়ে যাওয়ার চেয়ে বিচ্ছেদই ভালো নয় কি?
ছবি: picture-alliance/PPE/Beijersbergen
9 ছবি1 | 9
সামাজিকতাবনামনিজেরজীবন
পাকিস্তান বা ফিলিপাইন্সের মতো দেশে অর্থনৈতিক নির্ভরতার কারণে বহু নারী অসুখী বৈবাহিক সম্পর্কে থেকে যেতে বাধ্য হন৷ পাকিস্তানের লিঙ্গসাম্য বিষয়ের গবেষক বেলা নওয়াজের মতে, স্রেফ পুরুষতন্ত্রই এর কারণ নয়৷ তিনি ডিডাবলিউকে বলেন, ‘‘সামাজিক নিয়ম-নীতিও একটা কারণ, আমরা সমাজবদ্ধ ও পরিবারবদ্ধ৷ ফলে স্বাধীন সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না বহু নারীই৷''
নিজের জীবনে ভালো থাকাকে অবহেলা করে পরিবারের সম্মানকে গুরুত্ব দিয়েও সম্পর্কে থেকে যান অনেকে৷ যারা বিচ্ছেদ চান, তাদের বলা হয় স্বার্থপর বা অনৈতিক৷
বিশেষজ্ঞদের অনেকেই মনে করেন, সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি ও নারীদের আর্থিক সুবিধার ক্ষেত্রে অগ্রগতি না হলে, স্রেফ আইন দিয়ে এই বিষয়ে সমান সুযোগ তৈরি করা কার্যত অসম্ভব৷