এশিয়া কাপ: পাকিস্তানে যাবে না ভারত, ক্ষুব্ধ পিসিবি
১৯ অক্টোবর ২০২২
এশিয়া কাপ খেলতে পাকিস্তান যাবে না ভারত। পাকিস্তানও জানিয়েছে, তাহলে তারা ভারতে একদিনের বিশ্বকাপে অংশ নেবে না।
বিজ্ঞাপন
দ্বিতীয়বারের জন্য ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সম্পাদক হওয়ার পরই বোমাটা ফাটিয়েছেন জয় শাহ। তিনি স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন, ''২০২৩ সালে এশিয়া কাপ খেলতে পাকিস্তানে যাবে না ভারত। আমি এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল(এসিসি)-এর সভাপতি হিসাবে বলছি, ২০২৩-এর এশিয়া কাপ তৃতীয় কোনো নিরপেক্ষ দেশে হবে। অতীতেও ভারত ও পাকিস্তান এশিয়া কাপের ম্যাচ তৃতীয় কোনো নিরপেক্ষ দেশে খেলেছে।''
জয় শাহ বলেছেন, ''ভারত ও পাকিস্তান এখন একে অপরের দেশে ক্রিকেট খেলতে পারবে না। তাই নিরপেক্ষ দেশেই খেলতে হবে। এটা অভূতপূর্ব নয়। আগেও হয়েছে।'' অতীতে আমিরাতে খেলেছে ঊারত ও পাকিস্তান।
পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড(পিসিবি) আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি। তবে চেয়ারম্যান রামিজ রাজার ঘনিষ্ঠ সূত্র সংবাদসংস্থা পিটিআইকে জানিয়েছেন, তারা জয় শাহের সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারছেন না। এই সিদ্ধান্ত বহাল থাকলে পাকিস্তানও আগামী বছর ভারতে একদিনের ক্রিকেট বিশ্বকাপ থেকে নাম তুলে নেবে।
ভারত-পাক ম্যাচে নজরে যে সব ক্রিকেটার
রোববার আমিরাতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ। এই ম্যাচে নজরে থাকবেন দুই দলের বেশ কিছু ক্রিকেটার।
বিরাট কোহলির অভিজ্ঞতা
এই বিশ্বকাপের পর ভারতীয় অধিনায়কের দায়িত্ব ছাড়ছেন বিরাট কোহলি। তার আগে এই ম্যাচ তিনি জিততে চাইবেন। কোহলির অভিজ্ঞতা প্রচুর। কোহলি এর আগে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ছয়টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন। সেই ছয় ম্যাচে রান করেছেন ২৫৪। সর্বোচ্চ অপরাজিত ৭৮। বর্তমান বিশ্বের অন্যতম সেরা ও আক্রমণাত্মক ব্যাটসম্যান যে কোনো সময় ম্যাচ ঘুরিয়ে দিতে পারেন।
ছবি: Getty Images/A. Davidson
বাবর আজম ভালো ফর্মে
পাকিস্তানের অধিনায়ক বাবর আজম। তিনি টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের আন্তর্জাতিক তালিকায় দুই নম্বরে আছেন। কোহলির থেকেও এগিয়ে। তিনি ভালো ফর্মে আছেন। পাকিস্তানের ব্যাটিংয়ের বড় ভরসা বাবর আজম। প্র্যাকটিস ম্যাচেও রান পেয়েছেন। ভারতের বিরুদ্ধে ম্যাচ জেতানো ইনিংস খেলার জন্য বাবরের দিকে তাকিয়ে পাকিস্তান।
ছবি: Getty Images/M. Hewitt
দুই অধিনায়কের তুলনা
বিরাট কোহলি ও বাবর আজম দুজনেই টি-টোয়েন্টির অন্যতম সেরা ক্রিকেটার। বাবর আজম টি-টোয়েন্টির আন্তর্জাতিক তালিকায় কোহলির থেকে এগিয়ে থাকলেও পিছিয়ে অভিজ্ঞতায়। তিনি এর আগে ভারতের বিরুদ্ধে কোনো টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেননি। তাই তিনি বেশি চাপে থাকতে পারেন। অধিনায়কত্বের চাপ তার খেলায় প্রভাব ফেলতে পারে। ক্রিকেটার হিসাবে বিরাট কোহলি ও বাবর আজম দুজনেই বড় মাপের ক্রিকেটার। কোহলি অধিনায়ক হিসাবে খুবই আক্রমণাত্মক।
রোহিত শর্মার উপর ভরসা
কোহলির পর ভারতের পরবর্তী অধিনায়ক হিসাবে রোহিত শর্মার নামও আলোচনায় আছে। রোহিত ভালো ফর্মে আছেন। টি-টোয়েন্টিতে ভারতের হয়ে ওপেন করেন। রোহিত যদি প্রথমে রান তুলে দেন, তা হলে মিডল অর্ডারের উপর চাপ কমবে। প্র্যাকটিস ম্যাচে রোহিত খুবই ভালো খেলেছেন। সদ্যসমাপ্ত আইপিএলেও রান পেয়েছেন। ভারতের ব্যাটিংয়ের বড় ভরসা রোহিত।
ছবি: Getty Images/D. Sarkar
কে এল রাহুলের উপর নজর
রোহিতের সঙ্গে ওপেন করতে পারেন কে এল রাহুল। ঠান্ডা মাথার ক্রিকেটার। রোহিতের সঙ্গে বোঝাপড়া ভালো। ফর্মেও আছেন। রোহিত-রাহুল জুটি রান পেলে পরের দিকের ব্যাটসম্যানরা অনেকটা চাপমুক্ত হয়ে খেলতে পারবেন।
ছবি: Getty Images/D. Sarkar
শোয়েব মালিকের অভিজ্ঞতা
শোয়েব মালিকের বয়স ৩৯ বছর। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ দলে তাকে নেয়া হয়েছে। তার অভিজ্ঞতা সব চেয়ে বেশি। তিনি অলরাউন্ডার। তবে দীর্ঘদিন পর টিমে ফিরেছেন। সেই চাপ থাকবে। তবে তার উপর প্রত্যাশার ভারও থাকবে। ভারতের তুলনায় অনভিজ্ঞ পাকিস্তান দল তার অভিজ্ঞতার ফসল তুলতে পারে।
ছবি: Reuters/D. Liyanawatte
পাকিস্তানের ভরসা অলরাউন্ডার হাফিজ
পাকিস্তানের অভিজ্ঞ বোলার। বর্তমান বোলারদের মধ্যে সব চেয়ে বেশি উইকেট তার ঝুলিতেই। ডান হাতি অফ ব্রেক বোলার। ব্যাটও ভালো করেন। এই অলরাউন্ডার পাকিস্তান দলের বড় ভরসা।
ছবি: Getty Images/M. Steele
বোলারদের দিকে তাকিয়ে পাকিস্তান
সাবেক পাক ক্রিকেটার সেলিম মালিক বলেছেন, ভারতের বিরুদ্ধে জিততে হলে পাকিস্তানকে বোলারদের ভরসায় থাকতে হবে। লেগ স্পিনার শাদাব খান, বাঁহাতি স্পিনার ইমাদ ওয়াসিম, পেস বোলার শাহিন শাহ আফ্রিদি, মিডিয়াম পেসার হাসান আলিরা পাকিস্তান বোলিংকে গভীরতা দিয়েছেন। উপরের ছবিটি শাহিন শাহ আফ্রিদির।
ছবি: Getty Images/AFP/A. Dennis
ভারতীয় বোলাররা ভালো ফর্মে
বুমরা, মহম্মদ শামি, শার্দুল ঠাকুররা সদ্যসমাপ্ত আইপিএলে ভালো বল করেছেন। আমিরাতের উইকেটের সঙ্গে তারা মানিয়ে নিয়েছেন। তাছাড়া স্পিনারদের মধ্যে আছেন অভিজ্ঞ রবিচন্দ্রন অশ্বিন, রবীন্দ্র জাদেজা এবং বরুণ চক্রবর্তী। সকলেই ভালো স্পিনার। এদের মধ্যে সম্ভবত দুইজন সুযোগ পাবেন। উপরের ছবিটি বুমরার।
ছবি: Getty Images/AFP/A. Dennis
ভারতের মিডল অর্ডার
বিরাট কোহলি তো আছেনই, সেই সঙ্গে আছেন সূর্যকুমার যাদব, ঋষভ পন্থ, ইশান কিষাণরা। রবীন্দ্র জাদেজা, শার্দুল ঠাকুররাও রান তুলে দিতে পারেন। সবমিলিয়ে ভারত খুবই ব্যালেন্সড দল। উপরের ছবিটি ঋষভ পন্থের।
ছবি: Getty Images for Nissan/P. Pillai
10 ছবি1 | 10
তিনি জানিয়েছেন, পিসিবিও কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে। আইসিসি ও এসিসি-র প্রতিযোগিতায় বাণিজ্যিক দায়ও থাকে। ভারত-পাক ম্যাচ না হলে সেখানে বিপুল আর্থিক ক্ষতি হবে। তিনি বলেছেন, পিসিবি আগামী মাসে মেলবোর্নে আইসিসি-র বোর্ড মিটিংয়ে এই বিষয়টি তুলবে। দরকার হলে এসিসি থেকে বেরিয়ে আসবে পাকিস্তান।
পাকিস্তানের ক্রিকেটের সঙ্গে জড়িতরা একটা বিষয় বুঝতে পারছেন না। ২০২৩ সালের এশিয়া কাপ হতে এখনো এক বছর দেরি আছে। এত আগে থেকে কেন জয় শাহ পাকিস্তানে না যাওয়ার কথা বললেন। আর পাকিস্তানকে এই দায়িত্ব দিয়েছে এসিসি-র এক্সিকিউটিভ বোর্ড, এসিসি সভাপতি নয়। তাহলে কেন জয় একথা বললেন?
প্রবীণ সাংবাদিক আশিস গুপ্ত ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, ''এই বছর ডিসেম্বরেই গুজরাটে বিধানসভা নির্বাচন। এবার অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আপ গুজরাটে তেড়েফুঁড়ে ভোটে লড়ছে। সেই হিসাবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের ছেলে জয় শাহ ঠিক সময়েই এই কথা বলেছেন। গুজরাটে হিন্দু ভোট এককাট্টা করতে পাকিস্তান প্রসঙ্গ তোলাটা বিজেপি-র কাছে জরুরি।''
ভারত শেষবার পাকিস্তানে গিয়েছিল ২০০৮ সালে। আর পাকিস্তানের ক্রিকেট দল শেষবার ভারত সফরে আসে ২০১২-তে। তারপর আর ভারত ও পাকিস্তান একে অপরের দেশ সফর করেনি।