ফ্রান্স ও বার্সেলোনার দুই খেলোয়াড় গ্রিজমান ও ডেম্বেলের একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে৷ দুই ফুটবলারের বিরুদ্ধে বর্ণবাদের অভিযোগ উঠেছে৷
বিজ্ঞাপন
ভিডিওতে গ্রিজমানকে দেখা গেছে৷ আর ডেম্বেলে এটি রেকর্ড করেছেন বলে জানা গেছে৷ ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, এশীয় চেহারার কয়েক ব্যক্তি একটি টিভি মেরামতের চেষ্টা করছেন৷ সেই ঘটনার ভিডিও করার সময় ডেম্বেলে ‘এসব কুৎসিত চেহারার লোকজন’ বলে মন্তব্য করেন৷ এরপর তাদের ভাষা নিয়েও ব্যঙ্গ করেন৷ ডেম্বেলের এই কথা শুনে গ্রিজমানকে হাসতে দেখা গেছে৷
ভিডিওটি ঠিক কবে ধারণ করা তা জানা যায়নি৷ তবে এটি দুই বছরেরও পুরনো হতে পারে৷ ভিডিওটি একটি হোটেল রুমে রেকর্ড করা৷ গ্রিজমান ও ডেম্বেলে যেন ভিডিও গেম খেলতে পারেন সেজন্য টিভিটি মেরামত করা হচ্ছিল৷
এই ভিডিও প্রকাশ হওয়ার পর সামাজিক মাধ্যমে #স্টপএশিয়ানহেট হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে সমালোচনা শুরু হয়েছে৷ অনেকে এই ঘটনা নিয়ে ফরাসি ফুটবল ফেডারেশন থেকে একটি বিবৃতি আশা করছেন৷ সংশ্লিষ্ট ফুটবলারদের শাস্তি দেওয়ারও দাবি উঠেছে৷
টাইব্রেকারে সুইজারল্যান্ডের কাছে হেরে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের দ্বিতীয় রাউন্ড থেকে বিদায় নিয়েছে বর্তমান বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স৷ এরপর এমবাপে, রাবিয়ো, পগবা ও গ্রিজমানকে ঘিরে অভ্যন্তরীণ বিবাদের বিভিন্ন খবর ইতিমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে৷
জেমস থরোগুড/জেডএইচ
বর্ণবাদ রোখার সাত উপায়
কিছু মানুষের কাজই বিভেদ সৃষ্টি করা, বিদ্বেষ ছড়ানো৷ বর্ণ, ধর্ম, জাতপাত, সংখ্যা, ভাষা বা সংস্কৃতির ভিত্তিতে বর্ণবাদ ছড়ানোর এসব প্রয়াস রুখে দেয়া খুব জরুরি৷ কীভাবে তা সম্ভব? দেখুন সাতটি উপায়...
ছবি: Imago Images/PhotoAlto/F. Cirou
বাকস্বাধীনতার ‘হামলা’ পরিহার
ব্যক্তি থেকে পরিবার, পরিবার থেকে সমাজ, সমাজ থেকে রাষ্ট্র- এভাবে ছোট থেকে খুব বড় পরিসরে বিভিন্ন রূপে থাকে বর্ণবাদ৷ মুখের কথায়ও তা ব্যাপকভাবে ছড়াতে পারে৷ ক্যানাডার অ্যালবার্টা সিভিল লিবার্টিজ রিসার্চ সেন্টার বলছে, মত প্রকাশের স্বাধীনতার নামে ‘ব্যক্তিগত মতামত’ হিসেবে যা কিছু বলা বা লেখার মাধ্যমেও তা ব্যাপক হারে ছড়ায়৷ তাই ধর্ম, বর্ণ, ভাষা, সংস্কৃতি ইত্যাদির নামে পক্ষপাত বা ঘৃণা প্রকাশ পরিহার করুন৷
ছবি: AP
উদারতায় শ্রেষ্ঠত্ব, অহঙ্কারে নয়
উদারতায় শ্রেষ্ঠত্ব, অহঙ্কারে নয়৷ ধর্ম, জাতপাত, গায়ের রং, উচ্চতা, ভাষা, আঞ্চলিকতা ইত্যাদি দিয়ে শ্রেষ্ঠত্ব জাহির করাও বর্ণবাদের নামান্তর৷ যে সমাজ বা রাষ্ট্রে এসব প্রবণতা যত কম, সেই সমাজ বা রাষ্ট্র তত বেশি বর্ণবাদমুক্ত৷
ছবি: Colourbox
অসহিষ্ণুতা ও উগ্রতা বর্জন
কারো মত বা কাজ পছন্দ না হলে তাকে শারীরিক বা মানসিকভাবে আঘাত করার প্রবণতা প্রায় সব সমাজেই দেখা যায়৷ এমন অসহিষ্ণু এবং বিদ্বেষপূর্ণ আচরণে বর্ণবাদ বিস্তৃতি পায়৷ গালাগাল, হুমকি, তুচ্ছতাচ্ছিল্য করা ইত্যাদিও এমন আচরণের অন্তর্ভুক্ত৷
ছবি: Imago/Indiapicture
ভুক্তভোগীর পাশে দাঁড়ান
যে কোনো স্থানে নির্দিষ্ট ব্যক্ত , শ্রেণি বা গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে অপপ্রচার, অশ্লীলতা কিংবা কুৎসা ছড়ানোর অপপ্রয়াস না রুখলে অপশক্তির সক্রিয়তা বাড়ে৷ ফলে ঘৃণার সঙ্গে সঙ্গে নানা পর্যায়ে বর্ণবাদও বাড়ে৷ মানবিক মূল্যবোধ সম্পন্ন প্রতিটি মানুষের উচিত এসব ক্ষেত্রে ভুক্তভোগীর পাশে দাঁড়ানো৷
ছবি: Imago/E. Biba
রুখে দিন সাইবার দুনিয়ার বর্ণবাদ
বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও চিকিৎসা শাস্ত্র বিষয়ক তথ্যের উৎস সায়েন্সডাইরেক্ট ডটকম দশ বছরের এক গবেষণা শেষে বলেছে, ইন্টারনেটের প্রসারের ফলে সাইবার দুনিয়ায় বর্ণবাদী তৎপরতা ব্য্যাপকহারে বেড়েছে৷ ব্যক্তি এবং গোষ্ঠীগতভাবে চালানো হচ্ছে বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন ধরণের বর্ণবাদী প্রচার৷ যে কোনো সমাজে বর্ণবাদ রুখতে সাইবার দুনিয়ায় মানবিকতার প্রসার জরুরি৷
ছবি: picture-alliance/imageBROKER/J. Tack
প্রমান রাখুন, কর্তৃপক্ষকে জানান
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মানহানিকর যে কোনো বক্তব্যের প্রমাণ রেখে দেয়া উচিত৷ অনেক সময় সম্মান এবং নিরাপত্তার স্বার্থে সাইবার অপরাধ দমন বিভাগকে প্রমাণসহ বিষয়টি জানানো জরুরি হয়ে পড়ে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/MAXAPP/R. Brunel
সংঘাত নয় সমর্থন চান
সব দেশের সব মানুষের সুখে শান্তিতে থাকার অধিকার আছে৷ কারো বর্ণবাদী আচরণে শান্তি বিঘ্নিত হলেও সংঘাতে না যাওয়া ভালো৷ সংঘাতে অনেক সময় সমস্যা বাড়ে৷ তাছাড়া সংখ্যা বা শক্তিতে পিছিয়ে থাকাদেরই বেশি টার্গেট করে বর্ণবাদীরা৷ সেক্ষেত্রে প্রতিকার বা আত্মরক্ষার জন্য ‘প্রতিবেশীদের’ সমর্থন বা সহযোগিতা চান৷