1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

এসএসসির তালিকা নিয়ে আবার প্রশ্ন সুপ্রিম কোর্টে

শময়িতা চক্রবর্তী কলকাতা
২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সোমবার দিনভর চলল এসএসসি নিয়ে চাপানউতোর। চাকরিহারাকে হেনস্থার অভিযোগ উঠল পুলিশের বিরুদ্ধে।

সুপ্রিম কোর্টে নিয়োগ দুর্নীতি মামলা
সুপ্রিম কোর্টে নিয়োগ দুর্নীতি মামলাছবি: Satyajit Shaw/DW

শনিবার মাঝরাতে এক হাজার ৮০৪ জন অযোগ্যের তালিকা প্রকাশ করে স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)। এক দিকে যেমন এই তালিকায় শাসক দলের নেতা-নেত্রীদের আত্মীয়-পরিজনের নাম দেখা গেছে, অন্যদিকে, অভিযোগ উঠেছে, এই তালিকা সম্পূর্ণ নয়।

এসএসসির 'অনিয়ম' নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে চলছে একাধিক মামলা। এর আগে তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই মোট পাঁচ হাজার ৩০৩ জন দাগির তালিকা পেশ করেছিল। এসএসসির এক হাজার ৮০৪ জনের তালিকা প্রসঙ্গে সোমবার বিচারপতি সঞ্জয় কুমার এবং বিচারপতি সতীশচন্দ্র শর্মার এজলাসে একটি মামলায় বিচারপতিরা আবারও বলেন, কোনো অযোগ্য শিক্ষক বা শিক্ষিকা যেন নতুন পরীক্ষায় অংশ নিতে না পারেন, তা নিশ্চিত করতে হবে এসএসসিকেই।

'এসএসসির তালিকা অসম্পূর্ণ'

শনিবার তালিকা প্রকাশ হওয়ার পরেই আইনজীবী ফিরদৌস শামীম প্রশ্ন তোলেন, এই তালিকার বাইরে কি কোনো অযোগ্য প্রার্থী নেই? এদিন শুনানির পরে, তিনি ডিডাব্লিউকে জানান, "আমরা বলেছিলাম এই তালিকা অসম্পূর্ণ। অর্থাৎ, অর্থের বিনিময়ে যারা চাকরি পেয়েছিলো, তাদের সকলের নাম নেই এই তালিকায়।এসএসসি সেই প্রসঙ্গে আদালতকে জানায়, সিবিআইয়ের তালিকায় অযোগ্য কিন্তু চাকরি পায়নি এমন শিক্ষক শিক্ষিকারও নাম আছে। এসএসসির তালিকায় কেমলমাত্র যারা চাকরি পেয়েছিল তাদের নাম আছে। এসএসসি-র আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে এদিন বিচারপতিরা নির্দেশ দেন, চাকরি পাননি কিন্তু অযোগ্য এমন চাকরিপ্রার্থীরা যেন নতুন করে পরীক্ষায় না বসেন তা নিশ্চিত করতে হবে।" এছাড়া এসএসসির তালিকায় কেবলমাত্র অযোগ্য শিক্ষক শিক্ষিকাদেরই নাম আছে। শিক্ষাকর্মীদের নাম নেই।

আইনজীবী বিকাশ ভট্টাচার্য বলেন, তাদের হিসেবে অযোগ্যদের তালিকা প্রায় ছয় হাজার। তিনি জানান, "এসএসসি ইচ্ছে করেই স্বচ্ছতা আনছে না। আমাদের হিসেবে অযোগ্যদের তালিকা ছয় হাজারের কম না।"  

বিধানসভায় অর্ডিন্যান্সের প্রস্তাব  

এদিন, চাকরিহারা শিক্ষকদের একটি প্রতিনিধিদল বিধানসভায় বিরোধী নেতা শুভেন্দু অধিকারী, নওশাদ সিদ্দিকিসহ একাধিক জনপ্রতিনিধিদের কাছে নিজেদের দাবিপত্র পৌঁছে দেন। দাবিতে তারা বলেন, সরকার চাইলে বিশেষ অধিবেশন ডেকে চাকরিহারা যোগ্য শিক্ষকদের পুনর্বহালের অর্ডিন্যান্স আনতে পারে। এই প্রতিনিধি দলের চাকরিহারা শিক্ষক চিন্ময় মণ্ডল বলেন, "নতুন করে ফ্রেশারসদের সঙ্গে পরীক্ষায় বসা এক সাংঘাতিক কঠিন কাজ। আমরা সসম্মানে শিক্ষকতা করতাম। নতুন করে পরীক্ষা দেওয়া আমাদের পক্ষে অত্যন্ত কঠিন। সরকার বিশেষ আইন এনে আমাদের পুনর্বহাল করতে পারে। এ প্রসঙ্গে শুভেন্দু জানান, "রাজ্য সরকার সর্বদলীয় বৈঠক করলে আমরা এই প্রস্তাব সমর্থন করবো।"        

এরই মধ্যে, সোমবার এসএসসি ভবন বা আচার্য সদন অভিযানের ডাক দেয় চাকরিহারা শিক্ষকদের একাংশ। সেই কর্মসূচির আগে চাকরিহারা সুমন বিশ্বাসকে পুলিশি হেনস্থার অভিযোগে উত্তপ্ত হয় করুণাময়ী মেট্রো স্টেশন। এদিন সকালে করুণাময়ী মেট্রো স্টেশনে পুলিশের অতিসক্রিয়তার অভিযোগ ওঠে। চাকরিহারা শিক্ষকরা অভিযোগ করেন, পুলিশ তাদের হেনস্থা করছে। পুলিশের দাবি, করুণাময়ী থেকে কোনো কর্মসূচির অনুমতি দেয়নি তারা। পরে সুমনসহ ছয় জনের একটি প্রতিনিধি দল এসএসসির চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদারের সঙ্গে দেখা করার অনুমতি পান।

দেড় ঘণ্টার বৈঠক

বিকেলে চাকরিহারা সত্যব্রত জানা, শুভশ্রী মিদ্যা, হরিপদ বল্লভ অধিকারী, তুহিন শুভ্র মণ্ডল, কৃষ্ণ গোপাল অধিকারী এবং সুমন এসএসসি ভবনে সিদ্ধার্থের সঙ্গে দেরঘণ্টারও বেশি সময় ধরে বৈঠক করেন। সুমন ডিডাব্লিউকে জানান, "আমাদের মূল দাবী প্রত্যেক যোগ্য শিক্ষক শিক্ষিকার নামের তালিকা প্রকাশ করতে হবে। আর নতুন যে তালিকা বের হয়েছে তার পরিপ্রেক্ষিতে এসএসসিকে নিজেদের ওয়েবসাইটে লিখিত আকারে জানাতে হবে, এর বাইরে আর কোনও অযোগ্য শিক্ষক শিক্ষিকা নেই। আমরা চেয়ারম্যানকে আমাদের দাবি জানাই। তিনি বলেন, তাকে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। আমরা ওনাকে মনে করিয়ে দিই, উনি একটি স্বশাসিত সংস্থার চেয়ারম্যান। ফলে তার সিনিয়ার আর কেউ নেই। তখন উনি জানান, উনি মুখ্যমন্ত্রীর কাছ থেকে অনুমতি পেলে আমাদের দাবি মানতে পারবেন।"        

অন্যদিকে, এসএসসির বের করা অযোগ্যদের তালিকায় আছে একাধিক শাসক দলের নেতামন্ত্রীর পরিজনের নাম। আছে বেশ কিছু বিজেপি নেতার আত্মীয়ের নামও। রাজপুর-সোনারপুর মিউনিসিপ্যালিটির তৃণমূল কাউন্সিলর কুহেলী ঘোষ, পানিহাটির এমএলএ নির্মল ঘোষের পুত্রবধূ শম্পা ঘোষ, হিংগলগঞ্জ তৃণমূলের সভাপতি দেবেশ মণ্ডলের মেয়ে প্রিয়াঙ্কা মণ্ডলসহ একাধিক নাম সামনে এসেছে। নাম জড়িয়েছে বিজেপি নেতার পরিজনদেরও। এক সিপিএম নেতার নামও সা্নে এসেছে। এই প্রসঙ্গে আইনজীবী শামীম বলেন, "কেবলমাত্র তৃণমূল কর্মী নন, নেতা, এমএলএ, ব্লক সভাপতির নিকট আত্মীয়রাও এই তালিকায় আছেন। এর থেকেই বোঝা যায়, দুর্নীতি কতটা গভীর।"

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ