1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

এসপি বাবুলের অব্যাহতি কেন?

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা৭ সেপ্টেম্বর ২০১৬

চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয়া হলেও এসপি বাবুল আক্তার সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে এখনো কথা বলেননি৷ তবে তাঁকে অব্যাহতি দেয়া নিয়ে জনমনে প্রশ্ন রয়েছে৷ প্রশ্নটা হলো, এভাবে অব্যাহতি দেয়া হলো কেন বাবুল আক্তারকে?

Bangladesch Mord in Chittagong
ছবি: picture-alliance/dpa/EPA/Str

সদ্য অব্যাহতিপ্রাপ্ত এসপি বাবুল আক্তার এখন তাঁর শ্বশুরের ঢাকার বাসাতেই অবস্থান করছেন৷ গত জুনে চট্টগ্রামে দুর্বৃত্তদের হাতে তাঁর স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু নিহত হন৷

বাবুল আক্তারের অব্যাহতি প্রসঙ্গে তাঁর শ্বশুর মোশাররফ হোসেন ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘কী প্রক্রিয়ায় বাবুলকে অব্যাহতি দেয়া হলো তা স্পষ্ট নয়৷ তাঁর এর বিরুদ্ধে আদালতে যাওয়ার সুযোগ আছে৷ আমি বিশ্বাস করি, বাবুল কোনোভাবেই আমার মেয়ে মিতু হত্যায় জড়িত না৷''

এদিকে চট্টগ্রামের পুলিশ কমিশনার মো. ইকবাল বাহার ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, ‘‘(মিতু হত্যা মামলার) তদন্ত চলছে৷ বাবুল আক্তার মিতু হত্যায় জড়িত বলে এখনো এমন কোনো তথ্য-প্রমাণ পাওয়া যায়নি৷''

বাবুল আক্তারকে মঙ্গলবার চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়৷ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘‘তার (বাবুল আক্তার) আবেদনের প্রেক্ষিতেই তাকে চাকরি থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হলো৷''

মোশাররফ হোসেন

This browser does not support the audio element.

তবে বাবুল আক্তার এর আগে আরেক আবেদনপত্রে বলেছিলেন, ‘‘বিগত ২৪.০৬.২০১৬ ইং তারিখে পরিস্থিতির শিকার হয়ে অনিচ্ছাকৃতভাবে বাধ্য হয়ে আমাকে চাকরির অব্যাহতিপত্রে স্বাক্ষর করতে হয়৷ একজন সত্‍ পুলিশ অফিসার হিসেবে এবং আমার সন্তানদের বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন এই চাকরি৷ এমতাবস্থায় উক্ত অব্যাহতিপত্রটি প্রত্যাহারের আবেদন জানাচ্ছি৷'' কিন্তু তার এই আবেদন শেষ পর্যন্ত গ্রহণ করা হয়নি৷

৫ জুন চট্টগ্রামের জিইসি মোড়ে বাবুল আক্তারের স্ত্রী মিতুকে হত্যা করা হয়৷ হত্যার কিছু দিন আগেই বাবুল এসপি পদে পদোন্নতি পান এবং তাকে ঢাকায় বদলি করা হয়৷ হত্যাকাণ্ডের সময় বাবুল ঢাকায় ছিলেন৷ খবর পেয়ে ওই দিনই তিনি চট্টগ্রামে যান৷ এর আগে তিনি চট্টগ্রাম গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) হিসেবে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের উত্তর-দক্ষিণ জোনের দায়িত্বে ছিলেন৷ জঙ্গি দমনে তার উল্লেখযোগ্য ভূমিকা থাকার কারণে পুলিশ শুরুতে বলেছিল, বাবুলের স্ত্রী মিতু হত্যায় জঙ্গিরা জড়িত থাকতে পারে৷

কিন্তু ২৪ জুন মধ্যরাতে হঠাৎ বাবুল আক্তারকে মিতু হত্যায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ঢাকার বনশ্রী এলকায় শ্বশুরের বাসা থেকে মিন্টো রোডের গোয়েন্দা কার্যালয়ে নেয়া হয়৷ ১৬ ঘন্টা পর তাকে ২৫ জুন সন্ধ্যায় আবার তাঁকে শ্বশুরের বাসায় পৌঁছে দেয়া হয়৷ আর তখনই কিছু সংবাদমাধ্যমে মিতু হত্যায় বাবুল আক্তার জড়িত বলে খবর প্রকাশ হয়৷ সংবাদ মাধ্যমের খবরে আরও বলা হয়, বাবুল আক্তারকে চাকরি ছেড়ে দেওয়ার শর্তে রেহাই দেওয়া হয়েছে৷ আর বাবুল আক্তারও তার চাকরি ফিরে পাওয়ার আবেদনে বলেছেন, তিনি ২৪ জুন পদত্যাগে বাধ্য হন৷

বাবুল আক্তারের শ্বশুর মোশাররফ হোসেন বুধবার ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমি বিশ্বাস করি বাবুল মিতু হত্যাকাণ্ডে জড়িত নয়৷ আর মামলার তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কেও আমাকে কিছু জানায়নি পুলিশ৷ আমি সংবাদমাধ্যম থেকে যেটুকু জানতে পারছি, তার বাইরে কিছু জানি না৷''

ইকবাল বাহার

This browser does not support the audio element.

তিনি বলেন, ‘‘বাবুল চাকরি ফিরে পেতে আবেদন করেছিল৷ সে বলেছে তাকে পদত্যাগে বাধ্য করা হয়েছে৷ এরপরও কিভাবে পদত্যাগ-পত্র গ্রহণ করে তাকে অব্যাহতি দেয়া হলো, তা আমি বুঝতে পারছি না৷'' টেলিফোন সাক্ষাৎকারের এক পর্যায়ে মোশাররফ হোসেন বলেছেন, ‘‘বাবুল চাইলে এর বিরুদ্ধে আদালতে যাওয়ার সুযোগ আছে৷ বাবুল আমার বাসায়ই আছে৷ আমার সঙ্গে এ নিয়ে তার কথাও হয়েছে তবে সে আদালতে তার অব্যাহতি চ্যালেঞ্জ করবে কিনা তা আমাকে এখনো জানায়নি৷''

মোশাররফ হোসেন নিজেও একজন অপসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা (ওসি)৷ চাপ দিয়ে পদত্যাগে বাধ্য করার কথা বলা হলেও তারপরে তার পদত্যাগ-পত্র কিভাবে গ্রহণ করা হয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘এটা সরকারের সিদ্ধান্ত, এ নিয়ে আমি কিছু বলতে চাই না৷ তবে এখন পুলিশে কী নিয়ম আছে, তা জানি না৷'' এ বিষয় নিয়ে ঢাকায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বা পুলিশ সদর দপ্তরের কেউ কোনো কথা বলতে রাজি হননি৷

মিতু হত্যার তদন্ত করছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি)৷ মিতু হত্যাকাণ্ডে বাবুল আক্তার জড়িত কিনা তা জানতে চাইলে সিএমপি-র কমিশনার মো. ইকবাল বাহার ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘এটা হলো তদন্তের বিষয়৷ যখন সাক্ষ্য-প্রমাণ পাওয়া যাবে, বা যদি কখনো পাওয়া যায়, তখন বলা যাবে৷ এখন আমি সরাসরি বলব- ‘না'৷''

প্রসঙ্গত, চট্টগ্রাম পুলিশ এরই মধ্যে মিতু হত্যায় কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেছে৷ গ্রেপ্তারকৃতরা জবানবন্দিতে হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দিয়েছে৷ তবে মূল সন্দেহভাজন মুসা এখনও আটক হয়নি৷ ফলে এখনও জানা যায়নি, মিতু হত্যার নেপথ্যে আসলে কারা আর হত্যার মোটিভই বা কী৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

বাংলাদেশ