করোনা ভাইরাসের কারণে এ বছর উচ্চমাধ্যমিক ও সমমানের পরীক্ষা না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার৷ বিকল্প হিসেবে শিক্ষার্থীদের এসএসসি ও জেএসসির ফল গড় করে মেধা মূল্যায়ন করা হবে৷
বিজ্ঞাপন
বুধবার এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী ড. দীপু মনি এ সিদ্ধান্তের কথা জানান বলে ডয়চে ভেলের কন্টেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম জানিয়েছে৷
তিনি বলেন, "২০২০ সালের এইচএসসি পরীক্ষা সরাসরি গ্রহণ না করে ভিন্ন পদ্ধতিতে মূল্যায়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছি৷ এরা (শিক্ষার্থীরা) দুটি পাবলিক পরীক্ষা অতিক্রম করে এসেছে৷ এদের জেএসসি ও এসএসসির ফলের গড় অনুযায়ী এইচএসসির ফল নির্ধারণ করা হবে৷’’
শিক্ষামন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম আরো জানায়, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে শিক্ষার্থীদের চূড়ান্ত মূল্যায়ন ঘোষণা করা হবে৷ আর জানুয়ারি থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির কার্যক্রম শুরু হবে৷
উচ্চ মাধ্যমিকের পরই শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের লেখাপড়ায় যায়৷ শিক্ষার্থীরা ভবিষ্যতে কোন পেশায় যেতে পারবে বা যেতে চায় তা অনেক ক্ষেত্রে এ পর্যায় থেকেই নির্ধারিত হয়৷ এ কারণে এইচএসসির ফল শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ৷
এইচএসসি পরীক্ষা সাধারণত এপ্রিল মাসে অনুষ্ঠিত হয়৷ কিন্তু এ বছর করোনার কারণে ১৭ মার্চ থেকে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে৷
এ প্রেক্ষাপটে সরকার চলতি বছরের প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী ও ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা, অষ্টম শ্রেণির জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষাও বাতিল করেছে৷
আরআর/এসিবি (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)
শিক্ষিতদের এক-তৃতীয়াংশ বেকার
সরকারি স্বায়ত্তশাসিত গবেষণা সংস্থা বিআইডিএস-এর গবেষণা বলছে, এসএসসি থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী তরুণদের এক-তৃতীয়াংশ পুরোপুরি বেকার৷ গত ডিসেম্বরে গবেষণাটি প্রকাশিত হয়৷ ছবিগুলো ফাইল থেকে নেয়া৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Z. H. Chowdhury
শিক্ষিতদের এক-তৃতীয়াংশ বেকার
সরকারি স্বায়ত্তশাসিত গবেষণা সংস্থা ‘বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান’ বা বিআইডিএস-এর গত ডিসেম্বরে প্রকাশিত এক গবেষণার ফল বলছে, দেশে এসএসসি থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী তরুণদের এক-তৃতীয়াংশ (৩৩.১৯ শতাংশ) পুরোপুরি বেকার৷ ১৮ থেকে ৩৫ বছর বয়সি ১৫ হাজার ২৫ জন শিক্ষিত তরুণ ফেসবুক ও ইমেলের মাধ্যমে এই জরিপে অংশ নেন৷
ছবি: Sawpan Chandra Dash
কতদিন ধরে বেকার?
জরিপ বলছে, শিক্ষাজীবন শেষে এক থেকে দুই বছর পর্যন্ত বেকার ছিলেন ১১.৬৭ শতাংশ, দুই বছরের চেয়ে বেশি সময় ধরে বেকার ১৮.০৫ শতাংশ এবং ছয় মাস থেকে এক বছর পর্যন্ত বেকার ১৯.৫৪ শতাংশ৷
ছবি: Sawpan Chandra Dash
সবচেয়ে বেশি বেকার স্নাতকেরা
গবেষণা বলছে, প্রায় ৩৬.৬ শতাংশ স্নাতক ডিগ্রিধারী বেকার৷ স্নাতকোত্তরদের মধ্যে এই হার ৩৪.৩ শতাংশ৷ আর এসএসসি ও এইচএসসি পাস করাদের মধ্যে বেকারত্বের হার যথাক্রমে ২৬.৭৯ ও ২৭.৯৫ শতাংশ৷
ছবি: Bangla Tribune
চাকরির জন্য অপেক্ষা
গবেষণা বলছে, পড়াশোনা শেষ করার ছয় মাসের মধ্যে চাকরি পেয়েছেন অর্ধেক তরুণ (৫০.৭৪)৷ ছয় মাস থেকে দুই বছর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছে ৩১ শতাংশকে৷ আর ১৮ শতাংশ তরুণকে দুই বছরের বেশি সময় অপেক্ষা করতে হয়েছে৷
ছবি: Abdur Razzaque
দুইবছর পরও বেকার
মাস্টার্স পাস করার দুই বছর পরও বেকার ছিলেন ১৯.২১ শতাংশ৷ অনার্সের ক্ষেত্রে সংখ্যাটি ৮.৭৩ শতাংশ৷
ছবি: DW/A. Khanom
প্রথম শ্রেণি পাওয়াদের বেকারত্ব
অনার্সে প্রথম শ্রেণি পাওয়াদের ১৭.২১ শতাংশ শিক্ষার্থী দুই বছরেরও বেশি সময় কর্মহীন অবস্থায় ছিলেন৷ মাস্টার্সের ক্ষেত্রে সংখ্যাটি আরও বেশি, ২৬.৮ শতাংশ!
ছবি: Sawpan Chandra Dash
উচ্চ বেতন
জরিপে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে যারা মাস্টার্স পাস করেছেন তাদের ২৮.৭৫ শতাংশের মাসিক বেতন ৪০ হাজার টাকার উপরে৷ আর অনার্স ডিগ্রিধারীদের ১৮.২ শতাংশ মাসে ৪০ হাজারের বেশি বেতন পান৷ অর্থাৎ মাস্টার্স করলে বেশি বেতনে চাকরি পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Z. H. Chowdhury
কম বেতন
মাস্টার্স পাস করে মাসিক ১০ হাজার টাকার নীচে বেতনে চাকরি করছেন ৫.৯২ জন৷ আর ১১.৪৩ শতাংশ অনার্স ডিগ্রিধারীর বেতন মাসে ১০ হাজার বা তার চেয়ে কম৷