স্বাধীনতার ৪৬ বছরেও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পুরোপুরি বাস্তবায়ন হয়নি৷ আজও স্বাধীনতার চেতনাবিরোধী শক্তি তৎপর, পাঠ্যপুস্তকে সাম্প্রদায়িক তথ্য-উপাত্ত৷ তবে প্রাপ্তিও আছে৷ এই নিয়েই কথা বলছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী মোজাম্মেল হক৷
বিজ্ঞাপন
ডয়চে ভেলে: বাংলাদেশে মুক্তিযোদ্ধারা এখন কেমন আছেন?
আ ক ম মোজাম্মেল হক: আমি মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রী হিসেবে দেখি তাঁদের৷ আমার দৃষ্টিতে ইনশাল্লাহ তাঁরা ভালো আছেন৷
বাংলাদেশে এখন মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বাজেট কত?
মুক্তিযোদ্ধাদের ‘ওয়েলফেয়ার'-এর জন্য বাজেট তিন হাজার কোটি টাকার উপরে৷ তবে আমরা আরো কিছু পরিকল্পনা নিয়েছি, সেগুলো বাস্তবায়ন করতে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা লাগবে৷ যত জায়গায় পাক হানাদার বাহিনীর সঙ্গে সম্মুখ যুদ্ধ হয়েছে, সেগুলো সংরক্ষণ করা৷ যতগুলো বদ্ধভূমি আছে, সেগুলোরও সংরক্ষণ করা প্রয়োজন৷ প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স গঠন করা, মুক্তিযোদ্ধাদের বাড়িঘর তৈরি করে দেয়া৷ এছাড়া সোহরাওয়ার্দি উদ্যানকে মুক্তিযুদ্ধের সুতিকাগার হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা নিয়েছি এবং সেটা প্রধানমন্ত্রী অনুমোদনও করেছেন৷
এখন মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা কত বাংলাদেশে?
বাংলাদেশে এখন ২ লাখ ৩৮ হাজারের মতো মুক্তিযোদ্ধা আছেন৷
Liberation War Affairs Minister AKM Mozammel Haque for dwAlaap - MP3-Stereo
মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা কেন কমে-বাড়ে?
এখন বাড়ার কারণ হচ্ছে আমরা কিছু ‘ক্রাইটেরিয়া' যোগ করেছি, যেমন বীরাঙ্গনা, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে যাঁরা কাজ করেছেন, মুজিবনগর সরকারে যত কর্মচারী ছিল এবং যতজন মেডিকেল কোর-এ মুক্তিযোদ্ধাদের সেবা দিয়েছেন, তাঁদের সবাইকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গণ্য করায় এই সংখ্যা বাড়ছে৷ এর সঙ্গে সাধারণ মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা দিন দিন কমছে৷ অনেকেই সত্যি সত্যি মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন না, তাদের বাদ দেয়া হচ্ছে৷ তবে এ মুহূর্তে আদালতের নির্দেশের কারণে অনেকগুলো কাজ আটকে আছে৷ আমরা এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারছি না৷
আপনি কয়েকদিন আগে সংসদে বলেছেন যে আদালত মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে যাঁদের নাম তালিকাভুক্ত করতে বলেছে, মুক্তিযুদ্ধের সময় তাদের অনেকের বয়স ছিল মাত্র পাঁচ বছর৷ বিষয়টা একটু ব্যাখা করবেন?
শুধু পাঁচ বছর না, যাদের জন্মই হয়নি তাদেরও করতে বলেছে৷ এ বিষয়ে আমি শিগগিরই কথা বলব৷ এটা কোনোভাবেই ১০২ নম্বর আর্টিকেলে পড়ে না৷ সংবিধানের ১০২ নম্বর আর্টিকেলে বলা আছে, মানুষের মৌলিক অধিকার বা জন্মগত অধিকারের কথা৷ কিন্তু মুক্তিযোদ্ধা হওয়া কোনো মৌলিক অধিকার না, এটা অর্জিত অধিকার৷ ১০২ ধারায় মামলা যেভাবে নেয়া হচ্ছে, আমি মনে করি এটা এই ধারায় পড়ে না৷ আসলে এটার অপপ্রয়োগ হচ্ছে৷ এ ব্যাপারে আমরা আইনজীবীদের মতামত নিচ্ছি৷ পরবর্তীতে বিষয়টা আমরা জাতির সামনে তুলে ধরব৷
জাল সার্টিফিকেট নিয়ে কয়েকজন সচিবও ধরা পড়েছেন৷ এদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে?
তাদের চাকরি চলে গেছে৷ তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়েছে৷ তাদের ‘প্রভিডেন্ট ফান্ড' আটকে গেছে৷ আমরা তাদের চাকরিচ্যুত করতে পারি, আর্থিক দণ্ড দিতে পারি....সেই কাজগুলোই করেছি৷
মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিময় স্থাপনা
দীর্ঘ ন’মাসের মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতার সূর্য উঠেছিল বাংলাদেশে, যাতে ৩০ লাখ নিরীহ বাঙালিকে হত্যা করে পাক বাহিনী৷ প্রাণ বিসর্জন দেওয়া সেইসব শহিদদের স্মরণে দেশের বিভিন্ন স্থানে তৈরি করা হয়েছে স্মৃতিসৌধ ও ভাস্কর্য৷
ছবি: DW/M. M. Rahman
স্বাধীনতা স্তম্ভ ও স্বাধীনতা জাদুঘর
ঢাকার সোহরাওয়ার্দি উদ্যানে স্বাধীনতা স্তম্ভ ও স্বাধীনতা জাদুঘর৷ ১৯৭১-এর ৭ মার্চ এখানে দাঁড়িয়েই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘোষণা করেছিলেন স্বাধীনতা অর্জনের দৃঢ় প্রত্যয়৷৭১-এর ১৬ ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধের বিজয় দলিলও স্বাক্ষরিত হয়েছিল এখানেই৷ স্বাধীনতা স্তম্ভের পাশে আছে বাঙালি জাতিসত্তার অমরতার প্রতীক ‘শিখা চিরন্তনী’৷ স্বাধীনতা স্তম্ভটি বস্তুত ১৫০ ফুট উঁচু একটি গ্লাস টাওয়ার৷
ছবি: DW/M. M. Rahman
অপরাজেয় বাংলা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবন চত্ত্বরে রয়েছে মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্য ‘অপরাজেয় বাংলা’৷ কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বাংলার নারী-পুরুষের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ এবং বিজয়ের প্রতীক এই ভাস্কর্যটির স্থপতি সৈয়দ অব্দুল্লাহ খালিদ৷
ছবি: DW/M. M. Rahman
মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর
বাংলাদেশের গৌরবময় মুক্তিযুদ্ধ সংক্রান্ত নিদর্শন ও স্মারকচিহ্নসমূহ সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও প্রদর্শনের জন্য ১৯৯৬ সালের ২২ মার্চ ঢাকা শহরের সেগুনবাগিচার একটি পুরানো ভাড়া বাড়িতে প্রতিষ্ঠিত হয়৷ সম্পূর্ণ বেসরকারি উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধের তথ্য, প্রমাণাদি, নিদর্শন, রৈকর্ডপত্র ইত্যাদি সংগ্রহ করে এখানে রাখা হয়৷ ২০১৭ সালের এপ্রিল মাসে এ জাদুঘর স্থানান্তরিত হয় ঢাকার আগারগাঁও এলাকার নিজস্ব ঠিকানায়৷
ছবি: bdnews24.com/A. M. Ove
বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধ
ঢাকার মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধের পাশেই শহিদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ৷ ১৯৭১ সালের ১৪ই ডিসেম্বর দেশের প্রখ্যাত সন্তানদের নির্মমভাবে হত্যা করে এই স্থানের পরিত্যক্ত ইটের ভাটার পেছনের জলাশয়ে ফেলে রাখে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর দোসররা৷ নিষ্ঠুর এই হত্যাকাণ্ড স্মরণীয় করে রাখার জন্য ইটের ভাটার আদলে একটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হয় জায়গাটিতে৷ এর স্থপতি ফরিদ উদ্দীন আহমেদ৷
ছবি: DW/M. M. Rahman
শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ
ঢাকার মিরপুরে অবস্থিত শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ৷ ১৯৭১ সালের ১৪ই ডিসেম্বর পাক হানাদার বাহিনী রাজাকার আলবদরদের সহায়তায় এ দেশের সূর্যসন্তান বুদ্ধিজীবীদের নির্বিচারে হত্যা করে৷ তাঁদের স্মরণে ৭১ সালের ২২ ডিসেম্বর মিরপুরে এ স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হয়৷ এর স্থপতি ফরিদ ইউ আহমেদ ও জামি আল শাফি৷
ছবি: DW/M. M. Rahman
জাতীয় স্মৃতিসৌধ
ঢাকা থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার দূরে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পাশে সাভারের নবীনগরে জাতীয় স্মৃতিসৌধ৷ স্বাধীনতা সংগ্রামে প্রাণ উৎসর্গকারী শহিদদের স্মরণে ১৯৭২ সালের ১৬ই ডিসেম্বর প্রথম বিজয় দিবসে এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান৷ স্থপতি সৈয়দ মঈনুল হোসেনের নকশায় এর নির্মাণ কাজ শেষ হয় ১৯৮২ সালে৷
ছবি: DW/M. M. Rahman
জাগ্রত চৌরঙ্গী
ঢাকার অদূরে গাজীপুর জেলার জয়দেবপুর চৌরাস্তার সড়কদ্বীপে অবস্থিত৷ ১৯৭৩ সালে নির্মিত এই ভাস্কর্যের স্থপতি আব্দুর রাজ্জাক৷ ডান হাতে গ্রেনেড, বাঁ হাতে রাইফেল, লুঙ্গি পরা, খালি গা, খালি পা আর পেশিবহুল এক মুক্তিযোদ্ধার ভাস্কর্য এটি৷
ছবি: DW/M. M. Rahman
শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ
মুক্তিযুদ্ধের শহিদদের স্মরণে ময়মনসিংহের শম্ভুগঞ্জে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতুর কাছেই এই স্মৃতিসৌধটি নির্মাণ করেছে ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসন৷
ছবি: DW/M. M. Rahman
বিজয় ৭১
ময়মনসিংহের কৃষিবিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্য ‘বিজয় ৭১’৷ মহান মুক্তি সংগ্রামে বাংলাদেশের সকল শ্রেণির মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের মূর্ত প্রতীক এ সৌধ৷ ভাস্কর্যটিতে একজন নারী, একজন কৃষক ও একজন ছাত্র মুক্তিযোদ্ধার প্রতিকৃতি রয়েছে৷ ভাস্কর্যটির দেয়াল জুড়ে আছে পোড়া মাটিতে খোদাই করা মুক্তিযুদ্ধের নানান ঘটনাবলী৷ ২০০০ সালে নির্মিত এ ভাস্কর্যের শিল্পী শ্যামল চৌধুরী৷
ছবি: DW/M. M. Rahman
মুজিবনগর স্মৃতিসৌধ
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত অন্যতম একটি স্থান মেহেরপুরের মুজিবনগর৷ ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল মেহেরপুরের বৈদ্যনাথ আম্রকাননে বাংলাদেশের অন্তরবর্তীকালীন সরকার শপথ গ্রহণ করেছিল৷ ১৯৭১ সালের এ ঘটনাকে চিরস্মরণীয় করে রাখতে ১৯৮৭ সালের ১৭ এপ্রিল সেখানে উদ্বোধন করা হয় এ স্মৃতিসৌধ৷ স্মৃতিসৌধটির নকশা করেন স্থপতি তানভীর করিম৷
ছবি: DW/M. M. Rahman
সাবাশ বাংলাদেশ
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মতিহার চত্বরের মুক্তাঙ্গনের উত্তর পাশে অবস্থিত৷ রাকসু এবং দেশের ছাত্রজনতার অর্থ সাহায্যে শিল্পী নিতুন কুন্ডু এই ভাস্কর্য বিনা পারিশ্রমিকে নির্মাণ করেন৷ ১৯৯২ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি এর উদ্বোধন করেন শহিদ জননী জাহানারা ইমাম৷ এই স্মৃতিস্তম্ভে আছে দু’জন মুক্তিযোদ্ধার মূর্তি৷ একজন অসম সাহসের প্রতীক, অন্য মুক্তিযোদ্ধার হাত বিজয়ের উল্লাসে মুষ্টিবদ্ধ হয়েছে পতাকার লাল সূর্যের মাঝে৷
ছবি: DW/M. M. Rahman
11 ছবি1 | 11
মুক্তিযোদ্ধাদের জাল সার্টিফিকেট রোধে মন্ত্রণালয় কী ব্যবস্থা নিয়েছে?
এগুলো অধিকাংশই নিজেরা তৈরি করে নিয়েছে৷ অবিকল মন্ত্রণালয়ের কাগজ জাল করে সার্টিফিকেট তৈরি করে নিয়েছে এরা৷ আবার আমাদের কেউ-ও তাদের এই কাগজ ‘সাপ্লাই' দিয়ে থাকতে পারে৷ এখন আমরা পুরো তালিকা ওয়েবসাইটে দিয়েছি৷ যাদের নাম বাদ গেছে, তারা অবেদন করলে যাচাই-বাছাই করে আমরা তাদের নাম যুক্ত করে দেবো৷ এর বাইরে আর কোনো তালিকা নেই৷ অন্য যারা আছে, তাদেরগুলো আমরা বাতিল বলে ঘোষণা করেছি৷
ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার সার্টিফিকেটের মাধ্যমে অনেক ছেলে-মেয়ের চাকরি হয়েছে৷ তাদের বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে?
এ ব্যাপারে আমরা সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোকে নোট দিয়েছি যে, এমন কেউ থাকলে তাকে যেন চাকরিচ্যুত করা হয়৷ শুধু তাই নয়, তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় এবং ফৌজদারি মামলা করার জন্যও অনুরোধ করেছি আমরা৷
সরকার তো মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে কাজ করছে৷ কিন্তু চেতনাবিরোধী শক্তিই তো মনে হচ্ছে শক্তিশালী৷ এর কারণ কী?
মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে শতকরা ৩০ ভাগ লোক ১৯৭০ সালেও ছিল৷ তখন কিন্তু এই ৩০ ভাগ মানুষ আওয়ামী লীগকে ভোট দেয়নি৷ সেই ৩০ ভাগ জামায়াতে ইসলাম, আল-বদর, আল-শামস, মুসলিম লীগে রয়ে গেছে৷ তারা তো মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস করে না৷ তাই তারা রয়ে গেছে৷ দুঃখের বিষয়, এদের সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস করে এমন কিছু লোকও দলে ঢুকেছে৷ তিনভাগের এক ভাগ লোক তো সবসময় ছিল, এখনো আছে৷ তবে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে কতভাগ মানুষ সেটা ব্যালটের মাধ্যমে ঠিক হয়৷ মিছিল-মিটিং করে কতভাগ নাগরিক? এক বছরের মধ্যে তো নির্বাচন৷ তখন জাতিই প্রমাণ করবে তারা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে না বিপক্ষে৷
এখনো পাঠ্যপুস্তকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী লেখা পাওয়া যাচ্ছে কেন?
এটা স্বাধীন দেশ, আদালত তো আরো স্বাধীন৷ দুর্নীতিবাজরা আদালতে গেলেই প্রথম শুনানিতে যে সুবিধা পায়, সেটা হলো – আইনের কথা অনুযায়ী ধরে নিতে হবে যে অভিযুক্ত ব্যক্তি নিদোষ৷ আইন ব্যবস্থার কারণে এটা প্রমাণ করাও কঠিন৷ পত্রিকায় লেখা যেমন সহজ, প্রমাণ করা ততটাই কঠিন৷ আমাকে কেউ ঘুস দিলে সে কি প্রমাণ রেখে কাজটা করবে?
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের কিছু দুর্লভ ছবি
সংবাদ সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি)-র সংগ্রহে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের কিছু দুর্লভ ছবি রয়েছে৷
ছবি: AP
উত্তাল মার্চ
১৯৭১ সালের ২৩ শে মার্চ ঢাকার রাস্তায় স্বাধীনতার দাবিতে হারপুন হাতে বিক্ষোভ মিছিল৷
ছবি: AP
যশোরে মুক্তিবাহিনী
২ এপ্রিল ১৯৭১৷ যশোরে মার্চ করছে মুক্তিবাহিনী৷
ছবি: AP
ত্রিপুরায় বাংলাদেশি শরণার্থী
১৯৭১ সালের ৫ এপ্রিল৷ প্রচণ্ড যুদ্ধ চলছে৷ প্রাণ বাঁচাতে ভারতের ত্রিপুরার মোহনপুরের একটি স্কুল ভবনে আশ্রয় নিয়েছেন বাংলাদেশিরা৷
ছবি: AP
ভারত সীমান্তের কাছে বাংলাদেশিদের অবস্থান
১৯৭১ সালের ৮ এপ্রিল৷ ভারত সীমান্তের ৩০ মাইলের মধ্যে কুষ্টিয়ায় মুক্তিযোদ্ধাসহ অনেকেই অবস্থান করছিল৷
ছবি: AP
বেনাপোলের কাছে শরণার্থী শিবির
১৪ এপ্রিল ১৯৭১, যশোরের বেনাপোলের কাছে ভারত সীমান্তে শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নিয়েছিল পাঁচ হাজারেরও বেশি বাংলাদেশি৷
ছবি: AP
আহত মুক্তিযোদ্ধা
১৯৭১ সালের ১৬ এপ্রিল চুয়াডাঙ্গায় পাকিস্তানি বিমানবাহিনীর বোমা হামলায় আহত একজন মুক্তিযোদ্ধাকে চিকিৎসা দিতে নিয়ে যাচ্ছেন বেসামরিক মানুষ এবং মুক্তিযোদ্ধারা৷
ছবি: AP
মুক্তিবাহিনী
১৯৭১ সালের ৩ রা আগস্ট৷ ঢাকার কাছে মুক্তিবাহিনীর সদস্য হেমায়েতউদ্দীন একটি গোপন ক্যাম্প থেকে মেশিনগান তাক করে রেখেছেন৷
ছবি: AP
১৯ বছর বয়সি শিক্ষার্থীর নেতৃত্বে প্লাটুন
১৩ নভেম্বর ১৯৭১৷ ফরিদপুরে রাইফেল হাতে তরুণ মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ৷ ৭০ সদস্যের একটি প্লাটুন গড়া হয়েছিল সেখানে৷ সেই প্লাটুন দক্ষিণাঞ্চলে সামরিক ও চিকিৎসা দ্রব্য সরবরাহ করত৷ একদম বামে থাকা ১৯ বছর বয়সি তরুণটি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র৷ ৭০ জনের প্লাটুনের নেতৃত্বে ছিলেন তিনি৷
ছবি: AP
মুক্তিবাহিনীর পারুলিয়া দখল
১৯৭১ সালের ২৬ নভেম্বর৷ তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের পারুলিয়া গ্রাম দখল করে নেয় মুক্তিবাহিনী৷
ছবি: AP
আখাউড়ায় পাকিস্তানি সেনাবাহিনী
২৯ নভেম্বর, ১৯৭১৷ আখাউড়ায় অস্ত্র পাহাড়া দিচ্ছে পাকিস্তানি সেনারা৷ তাদের দাবি ছিল, ভারতীয় সৈন্যদের কাছ থেকে এসব অস্ত্র জব্দ করা হয়েছে৷
ছবি: AP
ভারতীয় সেনাদের হামলা
২ ডিসেম্বর, ১৯৭১৷ যশোরে পাকিস্তানি সেনাদের উপর গোলাবর্ষণ শুরু করে ভারত ৷ এক পাকিস্তানি সেনাসদস্য রাইফেল নিয়ে অন্যত্র যাচ্ছে৷ অন্য সেনারা তখন অস্ত্র তাক করে পরিখার মধ্যে রয়েছে৷
ছবি: AP
ভারতীয় সেনা
১৯৭১ সালের ৭ ডিসেম্বর৷ ভারতীয় সীমান্তের কাছে ডোঙ্গারপাড়ায় খোলা মাঠে মেশিনগান তাক করে রেখেছেন এক ভারতীয় সেনা৷
ছবি: AP
ডিসেম্বরেও ঢাকায় পাকিস্তানি সার্জেন্ট
১২ ডিসেম্বর, ১৯৭১৷ রাজধানী ঢাকার অদূরে একটি এলাকায় একজন পাকিস্তানি সার্জেন্ট দুই সেনাকে নির্দেশনা দিচ্ছে৷
ছবি: AP
যুদ্ধবিরতি
রবিবার ১২ ডিসেম্বর. ১৯৭১৷ ঢাকা বিমানবন্দরে অপেক্ষায় আছেন বিদেশিরা৷ একটি ব্রিটিশ বিমান অবতরণ করেছে৷ ৬ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতির সময় বিদেশিদের নিয়ে যাওয়ার জন্যই ঐ বিমানটি পাঠানো হয়েছিল৷
ছবি: AP
ভারতীয় ট্যাংক
১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর৷ ভারতীয় সেনাবাহিনীর ট্যাংক বগুড়ার দিকে রওনা হয়েছে৷
ছবি: AP
চার রাজাকারকে হত্যার পর মুক্তিবাহিনীর প্রতিক্রিয়া
হত্যা, ধর্ষণ ও লুটপাটে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে সহযোগিতা করা চার রাজাকারকে হত্যার পর আল্লাহ’র উদ্দেশে শুকরিয়া জানাচ্ছেন মুক্তিসেনারা৷
ছবি: AP
16 ছবি1 | 16
এখনো অনেক স্কুল ও মাদ্রাসায় জাতীয় পতাকা ওড়ানো হয় না, মন্ত্রণালয় কি এটা জানে?
আমরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে এ বিষয়ে তাগিদ দিয়েছি৷ বলেছি বিষয়টার দিতে লক্ষ্য রাখতে৷ প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জাতীয় সংগীত গাওয়া, জাতীয় পতাকা উড়ানো প্রাক ঐতিহাসিক যুগ থেকে চলে আসছে৷ তাই কেউ যদি জাতীয় পতাকা না তোলে তাহলে সেটা আইনবিরোধী কাজ৷ এখন মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটিতেও সরকারের লোক আছে৷ তাঁরা নিশ্চয় বিষয়টা দেখবে৷ আগে মাদ্রাসাগুলো সরকারের নিয়ন্ত্রণে ছিল না৷ এখন সরকার তাদের অনুদান দিচ্ছে, অনুমোদনও দিচ্ছে৷ তাই কেউ সংবিধান অমান্য করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারবে সরকারই৷
মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রসারে সরকার কী করছে?
এটা করতে হবে একেবারে শিশুকাল থেকে৷ কারণ একবার শিশুদের মগজে অন্যকিছু ঢুকে গেলে, তা বের করা কঠিন৷ এই মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে আমি সরকারকে পরামর্শ দেব, একেবারে শিশুকাল থেকে যেন প্রতিটি নাগরিক মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বড় হয়ে উঠে৷ আমাদের দুর্ভাগ্য যে দেশে এমন মানুষও আছে, যারা রাষ্ট্রের সৃষ্টিই মানে না৷ যেমন জামায়াতে ইসলামী কখনও বলেনি মুক্তিযুদ্ধের সময় তাদের সিদ্ধান্ত ভুল ছিল৷ কোনো রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত তো ভুল হতে পারে৷ কিন্তু এখনও সুযোগ পেলে তারা বলে যে, তাদের সিদ্ধান্ত ঠিক ছিল৷ দেশের স্বাধীনতা, স্বার্বভৌমত্ব এখনো তারা মেনে নেয়নি৷
আপনার কি কিছু বলার আছে? লিখুন নীচের মন্তব্যের ঘরে৷