সামহয়্যারইন ব্লগে এএমএম নিজাম লিখেছেন মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি স্থাপনে ওবামার ভূমিকা নিয়ে৷ তিনি লিখেছেন, ‘‘আল কায়দা, ওসামা বিন লাদেন, ইরাক ইত্যাদি ইস্যুতে জড়িয়ে যুক্তরাষ্ট্র তথা পুরো বিশ্বে বুশ যখন একজন ঘৃণার পাত্র হয়ে দাঁড়ালেন ঠিক তখনই প্রেসিডেন্ট হিসেবে দেশের মানুষ নির্বাচিত করলো যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাকে৷ বারাক হোসেন ওবামা নির্বাচিত হওয়ায় সত্যি তখন মুসলিম বিশ্ব একটু সস্তির নিশ্বাস ফেলেছিল৷''
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় প্রাণ হারাচ্ছে অসংখ্য মানুষ৷ পরিসংখ্যান বলছে, নিহতদের মধ্যে প্রায় ৩০ শতাংশই শিশু ও নারী৷ বোমার আঘাতে প্রাণ হারানো শিশুরা হয়ত যুদ্ধ কি তাই জানে না৷ গাজার শিশুদের বর্তমান অবস্থা নিয়ে আমাদের ছবিঘর৷
ছবি: Reutersইসরায়েলি বিমান হামলায় বিধ্বস্ত একটি গাড়ি পরীক্ষা করে দেখছে এক ফিলিস্তিনি শিশু৷ ছবিটি গত ১৪ জুলাই তোলা৷ বিমান হামলায় গাজায় নিহতদের মধ্যে প্রায় ৩০ শতাংশই নারী ও শিশু৷
ছবি: Mohammed Abed/AFP/Getty Imagesইসরায়েলের বিমান হামলা থেকে বাঁচতে পরিবার পরিজন নিয়ে ছুটছেন ফিলিস্তিনিরা৷ তবে গাজায় তাদের জন্য নিরাপদ আশ্রয় নেই বললেই চলে৷ ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা মনে করেন, ইসরায়েলের হামলা সহসা বন্ধের কোনো লক্ষণ নেই৷
ছবি: Reutersইসরায়েলি হামলায় আহত ফিলিস্তিনি এই ছেলেটি গাজার দক্ষিণাঞ্চলে মিশর সীমান্তে অ্যাম্বুলেন্সে শুয়ে মিশরে ঢোকার জন্য অপেক্ষা করছে৷ আহতদের চিকিৎসার সুবিধার্থে মিশর রাফা সীমান্ত খুলে দেয় ১০ জুলাই৷
ছবি: Said Khatib/AFP/Getty Imagesবাড়িতে যে-কোনো মুহূর্তে পড়তে পারে ইসরায়েলের বোমা৷ তাই ঘরবাড়ি ছেড়ে এই শিশুরা আশ্রয় নিয়েছে গাজায় অবস্থিত জাতিসংঘের স্কুলে৷ এখানে যে বোমা পড়বে না, এমন কোনো নিশ্চয়তা নেই৷ তবে আশঙ্কা কম৷
ছবি: Mahmud Hams/AFP/Getty Imagesবাড়ির উপরে উড়ছে ইসরায়েলি ড্রোন৷ আর সেটাই দেখছে এই শিশুটি৷
ছবি: Thomas Coex/AFP/Getty Imagesগাজার উত্তরাঞ্চলে ইসরায়েলের বিমান হামলায় প্রাণ হারায় চার বছরের শিশু ইয়াসমিন৷ ছবিটি ১০ জুলাই তার জানাজার সময় তোলা৷
ছবি: Reutersগাজার শিশুরা জানে না তাদের অপরাধ কি? কেনই বা বোমা হামলার নির্মম শিকার তারা? সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক, টুইটারেও এমন প্রশ্ন করেছেন অনেকে৷ গত ১৪ জুলাই তোলা ছবিতে চাচার মৃত্যুতে কাঁদছে দুই শিশু৷
ছবি: Mahmud Hams/AFP/Getty Imagesছবিটি ২০১২ সালের এপ্রিলে তোলা৷ দৃষ্টি প্রতিবন্ধী এক শিশুকে জাতিসংঘের স্কুলে নিয়ে যাচ্ছে তার এক সহপাঠী৷ গাজায় ইসরায়েলি হামলায় আহতও হচ্ছে অসংখ্য শিশু৷ পঙ্গুত্ব নিয়ে বেঁচে থাকতে হচ্ছে তাদের৷ তবে এই শিশুটি ইসরায়েলি হামলায় দৃষ্টি হারিয়েছে কিনা জানা যায়নি৷
ছবি: Reutersইসরায়েলের বিমান হামলা থেকে বাঁচতে অনেক ফিলিস্তিনি তাদের স্ত্রী সন্তান নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধান করছেন৷ তবে গাজার দু’দিকে ইসরায়েল, একদিনে মিশর এবং অপর পাশে সমুদ্র৷ এই অবস্থায় নিরাপদ আশ্রয় খুঁজে পাওয়া দুষ্কর৷ তবুও প্রাণ বাঁচানোর চেষ্টা৷
ছবি: picture-alliance/dpaগাজায় ইসরায়েলের হামলা নতুন নয়৷ হামাসের রকেট ছোড়ার জবাব সেদেশ দেয় বিমান হামলার মাধ্যমে৷ আর তাতে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই প্রাণ হারায় নারী, শিশু এবং হামাসের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয় এমন মানুষ৷
ছবি: Reuters
নিজাম লিখেছেন, ‘‘মুসলমানদের সবচেয়ে বড় আশা ছিল যে, বারাক ওবামা হয়তো ১৯৪৮ সালে জাতিসংঘ যে বানরের রুটি ভাগ করার মতো ফিলিস্তিনের ভূখণ্ড থেকে ৫৫ শতাংশ ইসরায়েলকে দিয়েছে, বাকিটা ফিলিস্তিনের জন্য রেখেছে, তার ব্যাপারে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন৷ সেই আশায় ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস নিরাপত্তা পরিষদে ও সাধারণ অধিবেশনে তাদের স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার আবেদন করেছিল৷ কিন্তু সেখানে আমাদের শান্তিপ্রিয় ওবামা মহোদয় ভেটো প্রদান করলেন৷ এখন আবার যখন ইসরায়েল ফিলিস্তিনের নিরপরাধ জনগণের উপর নির্বিচারের গোলাবর্ষণ করে প্রায় ৫০০ জনকে হত্যা করলো, যার ৫০ ভাগই শিশু ও মহিলা, ঠিক তখন আমাদের শান্তিতে নোবেল পাওয়া ওবামা বললো, ইসরায়েলের অধিকার রয়েছে তাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করার এবং হামাসকে জবাব দেওয়ার৷''
একই ব্লগে আব্দুর রব প্রান্ত লিখেছেন, গাজা ইস্যুতে ফেসবুক এখনো সরগরম৷ চলছে তর্ক বিতর্ক, চায়ের টেবিলে ঝড়৷ অনেকেই আবার ইসরায়েলি পণ্য বর্জনের ডাক দিচ্ছেন! ইসরায়েলি পণ্য বর্জনের জন্য আবার মানববন্ধনও হচ্ছে!৷ তাঁর প্রশ্ন, ‘‘এসব করে লাভটা কি?'' তিনি লিখেছেন, ‘‘আপনি ইসরায়েলি পণ্য বর্জনের ডাক দিচ্ছেন, ওদিকে আপনার সন্তান লেইস চিপ্স খাচ্ছে, কোকাকোলা কিংবা পেপসি খাচ্ছে৷ আপনার স্ত্রী হয়তো বাজার থেকে ইসরায়েলি নুডুলস কিনে আনছেন৷'' তাঁর মতে, ‘‘আমরা মুখে যতই বড় বড় বুলি ছাড়ি না কেনো আমরা তা কাজে লাগাতে পারিনা৷''
প্রান্ত লিখেছেন, ‘‘এই গ্লোবালাইজেশনের যুগে কোনো বিদেশি পণ্য ত্যাগ করে যেমন আমরা চলতে পারবো না, তেমনি আমদের পণ্যও বিশ্ববাজারে না গিয়ে চলতে পারবে না৷... মুসলিম দেশগুলোর আজ একতার অভাব৷ আজ যদি বিশ্বের সকল মুসলিম দেশ এক হয়ে ফিলিস্তিনিদের পাশে দাঁড়ায় তাহলে ইসরায়েলের কোনো ক্ষমতা নেই কিছু করার৷''
সংকলন: অমৃতা পারভেজ
সম্পাদনা: জাহিদুল হক