শিকাগোর ম্যাককরমিক প্লেসে প্রায় ১৮ হাজার সমর্থকের সামনে ভাষণ দিলেন ওবামা৷ ২০০৮ সালে এই শহরেই বিজয় ভাষণ দিয়েছিলেন তিনি৷ এবার সেখানেই বিদায়ী ভাষণে ওবামা বললেন, সাধারণ মানুষের হাতেই পরিবর্তন আনার ক্ষমতা রয়েছে৷
বিজ্ঞাপন
‘চেঞ্জ', পরিবর্তন হলো ‘‘অ্যামেরিকার ধারণাটির স্পন্দনরত হৃৎপিণ্ড – স্বশাসনের ক্ষেত্রে আমাদের নির্ভীক এক্সপেরিমেন্ট'' – বললেন ওবামা৷ এই শিকাগোতেই ওবামার নিজের রাজনীতির গোড়াপত্তন হয়, স্মরণ করেন তিনি৷
‘‘আমি যখন প্রথম শিকাগোতে আসি, তখন আমার বয়স সবে বিশ ছাড়িয়েছে – আমি তখনও বোঝার চেষ্টা করছি, আমি কে; তখনও আমার জীবনের লক্ষ্য খুঁজছি'', শিকাগোতে বললেন বারাক ওবামা৷ ‘‘এখানেই আমি শিখি যে পরিবর্তন আসে শুধুমাত্র যখন সাধারণ মানুষ তাতে সংশ্লিষ্ট হন, উদ্বুদ্ধ হন, পরিবর্তনের দাবিতে একত্রিত হন৷''
গণতন্ত্রের প্রতি জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট বা আইএস ও অপরাপর বিপদ সম্পর্কে সাবধান করে দিয়ে ওবামা বলেন, ‘‘আমরা ভয়ের কাছে নতি স্বীকার করলে গণতন্ত্র ভেঙে পড়তে পারে৷ কাজেই একদিকে যেমন নাগরিক হিসেবে আমাদের বহির্বিশ্ব থেকে আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সজাগ থাকতে হবে, তেমনি যে মূল্যবোধ আমাদের সত্তা গড়ে দিয়েছে, তাকে দুর্বল করার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে৷''
হোয়াইট হাউসে ওবামা পরিবারের ৮ বছর
দুই দফা থাকার পর হোয়াইট হাউস ছাড়ছেন ওবামা পরিবার, জায়গা করে দিচ্ছেন ট্রাম্প পরিবারের জন্য৷ হোয়াইট হাউসে ওবামা পরিবারের কিছু বিশেষ মুহূর্ত আপনাদের জন্য...
ছবি: Getty Images/P. Marovich
বিবাহিত এবং সন্তানের জনক
২০০৯ সালে ওবামা পরিবার প্রথম হোয়াইট হাউসে ওঠে৷ মালিয়ার বয়স তখন ১০ আর শাসা তখন ৭ বছরের৷ ব্যক্তিত্বসম্পন্ন এবং বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণের কারণে অন্য আর দশটি সাধারণ অ্যামেরিকান পরিবারের মতোই মনে হয়েছে ওবামা পরিবারকে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
প্রেসিডেন্টের মাথায় হাত!
প্রেসিডেন্ট ওবামা স্বতঃস্ফূর্ত এবং মাটির মানুষ৷ ওভাল অফিসে এক কর্মীর পরিবার দেখা করতে এসেছিল, সেই সময় তাদের ছোট্ট ছেলেটির ইচ্ছে হলো প্রেসিডেন্টের চুল ছুঁয়ে দেখার৷ তার চুল ওবামার মতো কিনা পরীক্ষা করে দেখতে চাইলো৷ ওবামাও সাথে সাথে মাথা নীচু করলেন৷
ছবি: picture alliance/dpa/Pete Souza
সুপার বোল
হোয়াইট হাউসে নিজেদের মুভি থিয়েটারে এক পার্টিতে প্রেসিডেন্ট এবং ফার্স্ট লেডি থ্রিডি চশমা লাগিয়ে সুপার বোল দেখছেন৷
ছবি: Getty Images/White House/P. Souza
পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানো
২০১১ সালের মেয়েদের বিশ্বকাপ ফাইনালে যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানের মধ্যকার ফুটবল ম্যাচটি টিভিতে উপভোগ করছে ওবামা পরিবার৷ তাদের মধ্যে টান টান উত্তেজনা৷ হোয়াইট হাউসের আলোকচিত্রী পিট সুজা পারিবারিক এই মুহূর্তটি ক্যামেরাবন্দি করেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa
প্রথম পোষ্য
সেনেটর এডওয়ার্ড কেনেডির কাছ থেকে পাওয়া উপহার এটি৷ পর্তুগিজ ওয়াটার ডগটির নাম ‘বো’৷ ওবামা পরিবারের সঙ্গে এটি যুক্ত হয় ২০০৯ সালে৷ চার বছর পর সানি নামে একই প্রজাতির একটি মাদি কুকুর পরিবারকে পরিপূর্ণতা দেয়৷
ছবি: Getty Images/W. McNamee
তোমার প্রতিবেশী বন্ধু স্পাইডারম্যান
ওহ হো! স্পাইডারম্যানের মাকড়সা জালে আটকা পড়েছেন বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর ব্যক্তিটি! হ্যাঁ ওবামা এমনই, বরাবরই খেলতে ভালোবাসেন৷ ২০১২ সালে হ্যালোইনের ঠিক আগে হোয়াইট হাউসে এক শিশুর সঙ্গে খেলার সময় এভাবেই ক্যামেরায় বন্দি হন ওবামা৷
ছবি: picture alliance/dpa/Pete Souza
সব শক্তিশালী মানুষের পেছনে...
প্রতিটি সফল পুরুষের পেছনে নাকি একজন নারীর হাত থাকে৷ এক্ষেত্রেও ঠিক তাই৷ ওবামা পরিবারে এই নারীর জনপ্রিয়তা কিন্তু তাঁর স্বামীর জনপ্রিয়তাকে ছাড়িয়ে গেছে৷ জনপ্রিয়তার দিক দিয়ে তিনি বরাবরই ৭০ ভাগ সমর্থন পেয়ে আসছেন, যেখানে তার স্বামীর জনপ্রিয়তা নেমে গেছে ৪০ শতাংশে৷ এই দম্পতিকে বলা হয় ‘স্বপ্নযুগল’৷
ছবি: Getty Images/AFP/S. Loeb
মা-কর্ত্রী
মা হিসেবে তাঁর কর্তৃত্ব এবং রাজনৈতিক ভূমিকার জন্য অনেক অ্যামেরিকানের কাছে মিশেল অত্যন্ত পছন্দের৷ একটি প্রকল্পের অংশ হিসেবে হোয়াইট হাউসের বাগানে মিশেল এবং একদল শিক্ষার্থী মিষ্টি আলুর চারা বুনছে৷
ছবি: Getty Images/C. Somodevilla
কখনো কোনো কিছুতে বিচলিত না হওয়া
পোশাকের ক্ষেত্রে তার পছন্দ-অপছন্দ বিশ্ববাসী ততটাই লক্ষ্য করেছে, যতটা তার রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা৷ এমনকি এলমো আর রোজালিতার পাশে বসেও তার স্টাইলে কোনো বিচ্যুতি চোখে পড়ে না৷
ছবি: Getty Images/W. McNamee
‘এটা আমার মেয়েদের জন্য’
কারপুল কারাওকি সিরিজে ফার্স্ট লেডি এই ক্লিপটির ব্যাখ্যা করেছেন এভাবে৷ ইউটিউবে এই ভিডিওটি দেখা হয়েছে ৫ কোটি বার৷ হোয়াইট হাউসে গাড়ি চালাচ্ছেন জেমস করডেন৷ তখনই মিশেল এবং মিশি এলিয়ট বলে ওঠেন ‘এটা আমাদের মেয়েদের জন্য’৷
ছবি: YouTube/The Late Late Show with James Corden
অভিষেকের সেলফি
এমন অসম্ভব উচ্ছ্বল বাবা-মায়ের সন্তান শাসা ও মালিয়াও বাবা-মা’র মতোই ‘কুল’৷ ২০১৩ সালে যখন তাদের বাবা’র অভিষেক হচ্ছিল, সেই সময় দুই বোন ব্যস্ত ছিল সেলফি তোলায়৷
ছবি: Getty Images/AFP/J. Klamar
পরিবার অন্তঃপ্রাণ
হোয়াইট হাউসে থাকার সময় মালিয়ার ১৮তম জন্মদিন উদযাপন৷ বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ঐ অনুষ্ঠানে বলেছিলেন,‘‘ বাবা হিসেবে আমি যে কাজটা করছি তাতে হয়ত আমার মেয়েরা বিব্রত হয়েছে, কিন্তু এটাই আমার শেষ বার৷’’ বক্তব্যে এর পুরো ব্যাখ্যা তুলে ধরেন তিনি৷ অনুষ্ঠান শেষ করেন ‘শুভ জন্মদিন’ জানিয়ে৷
ছবি: Getty Images/A. Guerrucci-Pool
শুভ বিদায়, ওবামা এবং পরিবার
বারাক, মিশেল, মালিয়া, শাসা হোয়াইট হাউস ছেড়ে দিচ্ছেন৷ কিন্তু ওয়াশিংটন ডিসি ছাড়ছেন না তাঁরা৷ এই শহরেই শাসার স্কুল আর মালিয়া হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা শুরু করবে৷
ছবি: Getty Images/P. Marovich
13 ছবি1 | 13
ওবামা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে বিশ্বে তার ভূমিকা ও বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন সংঘাত থেকে সরে দাঁড়ানোর ব্যাপারে সাবধান করে দেন৷ অপরদিকে তিনি তাঁর সমর্থকদের গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করতে ও একটি নতুন ‘সামাজিক সংহতি' গড়ে তুলতে বলেন৷
ওবামা তাঁর স্ত্রী মিশেল ও দুই কন্যা সাশা ও মালিয়াকে ধন্যবাদ জানাতে ভোলেননি, বিশেষ করে মিশেল ওবামার প্রতিটি উল্লেখে প্রায় ১৮,০০০ মানুষের জনতা হর্ষধ্বনিতে ফেটে পড়েছে, ওবামাকেও চোখের জল মুছতে দেখা গেছে৷
ওবামা শুধু একবার পরবর্তী প্রেসিডেন্টের সংক্ষিপ্ত উল্লেখ করলে জনতা ধিক্কার ধ্বনি দেয়, ‘‘না, না, না, না, না'', তবে ওবামা সঙ্গে সঙ্গে বলেন, ‘‘জাতির একটি বড় শক্তি হলো এক প্রেসিডেন্ট থেকে আরেক প্রেসিডেন্টের হাতে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর৷''
Highlights from Obama's farewell speech
02:26
এসি/এসিবি (এপি, এএফপি, রয়টার্স)
ওবামার বিদায়ী ভাষণটি কি আপনি দেখেছেন? এ সম্পর্কে আপনার মন্তব্য লিখুন নীচের ঘরে৷