১০৬ বছরের ভার্জিনিয়া ম্যাকলরিন গটগট করে হেঁটে ঢুকলেন হোয়াইট হাউসে৷ তাঁকে অভ্যর্থনার জন্য অপেক্ষায় ছিলেন খোদ মার্কিন প্রেসিডেন্ট৷ হ্যাঁ৷ আর বারাক ওবামাকে দেখে দুয়েকটা কথার পরই আনন্দে নাচতে শুরু করলেন বৃদ্ধা৷
বিজ্ঞাপন
ভার্জিনিয়ার পরনে গাঢ় নীল রঙের স্কার্ট-ব্লাউজ, পায়ে কালো বুট৷ বয়সের ভারে নুয়ে পড়েছে তাঁর দেহ৷ তাই হাতে শক্ত করে ধরা একটা লাঠি৷ কিন্তু তাতে কী? ওবামা এসে হাত ধরতেই, বাঁ হাতের লাঠিটা উঁচু করে ধরে কোমর দোলাতে থাকেন ভার্জিনিয়া৷ তারপর শুরু করেন নাচ৷ তাঁর তড়িৎ গতিতে ছোট্ট ছোট্ট পা ফেলা দেখে ওবামা-পত্নী ভার্জিনিয়াকে জড়িয়ে ধরেন, যোগ দেন সেই নাচে৷ আনন্দের নাচ, তা-ও আবার স্বয়ং প্রেসিডেন্টের হাত ধরে! এ দিনটার জন্য যে অনেকগুলো বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে ভার্জিনিয়াকে৷
ওবামা-দম্পতির সঙ্গে ১০৬ বছরের বৃদ্ধা ভার্জিনিয়া ম্যাকলরিনের মাত্র কিছুক্ষণের এই নাচ নিয়ে তোলপাড় ইন্টারনেট বিশ্ব৷ ‘ব্ল্যাক হিস্টরি মান্থ' উপলক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দেখা করতে আসা এই ‘ব্ল্যাক লেডি'-র কথায়, ‘‘কখনও ভাবিনি জীবনে কোনো কৃষ্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্টকে অ্যামেরিকায় কর্তৃত্ব করতে দেখতে পারবো৷''
কয়েক বছর আগে থেকেই ওবামার সঙ্গে দেখা করার পরিকল্পনা করছিলেন ভার্জিনিয়া৷ কিন্তু ওয়াশিংটনে থেকেও প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দেখা করা তো আর চাট্টিখানি কথা নয়! তার ওপর বয়স বাড়ছিল ভার্জিনিয়ার৷ কিন্তু তিনি হাল ছাড়েননি৷ বরং এ যাবৎ ইন্টারনেটে রীতিমতো আন্দোলন চালিয়েছেন তিনি, করেছেন দেন-দরবার৷ অবশেষে আসে এই সুযোগ৷ আসে ‘বিশাল এই সম্মান', তা-ও আবার ১০৬ বছর বয়সে৷
মিশেল ওবামা যখন তাঁকে বলেন, ‘‘ভার্জিনিয়া, আমিও বয়সের সঙ্গে সঙ্গে আপনার মতো হতে চাই'', তখন উত্তর আসে, ‘‘তুমি নিশ্চয়ই পারবে৷''
২০০৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় বারাক ওবামার প্রতি জার্মানরা বেশ মুগ্ধ ছিল৷ কিন্তু এখনও কী সেটা আছে?
ছবি: AP
অনুমোদন দেননি আঙ্গেলা ম্যার্কেল
২০০৮ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারণার জন্য জার্মানিতে এসেছিলেন বারাক ওবামা৷ তিনি বার্লিনের ঐতিহাসিক ‘ব্রান্ডেনবুর্গ গেট’-এর সামনে বক্তব্য রাখতে চেয়েছিলেন৷ কিন্তু সে অনুমতি দেননি জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল৷ তাঁর যুক্তি ছিল, বিদেশি নির্বাচনি প্রচারণার অংশ হতে দেয়া যাবে না এই নিদর্শনকে৷ পরে অবশ্য বার্লিনের আরেক জায়গায় বক্তৃতা দেন ওবামা৷ প্রায় দুই লক্ষ মানুষ তাঁর কথা শোনেন৷
ছবি: AP
প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রথম বার্লিন সফর
২০০৮ সালে প্রচারণার সময় প্রচুর জার্মানের সমর্থন পেলেও প্রেসিডেন্ট হিসেবে ওবামা প্রথমবারের মতো রাজধানী বার্লিনে আসছেন আগামী মঙ্গলবার৷
ছবি: picture-alliance/dpa
‘ওবামা ফিঙ্গার্স’
প্রথমবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর জার্মানির একটি ফ্রোজেন ফুড কোম্পানি ‘ওবামা ফিঙ্গার্স’ নামে ফ্রাইড চিকেন বাজারে ছেড়েছিল৷ সঙ্গে ছিল মজাদার সস৷
ছবি: AP
ওবামার কাছ থেকে শিক্ষাগ্রহণ
২০০৮ সালের এই ছবিতে বার্লিনের মেয়র ক্লাউস ভোভেরাইটের সঙ্গে ওবামাকে দেখা যাচ্ছে৷ ওবামার নির্বাচনি প্রচারণার সফলতা দেখে জার্মান রাজনীতিবিদরা ওবামার কাছ থেকে অনেক কৌশলই গ্রহণ করেছেন৷ যেমন অনলাইনে উপস্থিতি বাড়ানো, তৃণমূলকে শক্তিশালী করা, ক্যাম্পেইন ব্লগ চালু, অনলাইনে চাঁদা সংগ্রহ করা ইত্যাদি৷
ছবি: AP
২০০৯ সালে একবার
প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর এবারই প্রথম সরকারি সফরে বার্লিনে আসছেন ওবামা৷ তবে এর আগে ২০০৯ সালে জার্মানিতে এসেছিলেন তিনি৷ সেবার মিশর থেকে ফ্রান্স যাওয়ার পথে ড্রেসডেন শহরে ক্ষণিকের যাত্রা বিরতি করেছিলেন ওবামা৷
ছবি: Getty Images
চিত্রকর্মে ওবামা
গত এপ্রিলে কোলন শহরে অনুষ্ঠিত একটি মেলার ছবি এটি৷ চিত্রশিল্পী ফিক মুনোৎসের আঁকা এই ছবিটির নাম ‘ওবামা’৷
ছবি: Reuters
খেলনায় ওবামা
২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে জার্মানির ন্যুরেমব্যার্গ শহরে আন্তর্জাতিক খেলনা মেলা অনুষ্ঠিত হয়৷ সেখানেও ছিল ‘ওবাম্যানিয়া’-র চিহ্ন৷
ছবি: AP
ম্যার্কেলের যুক্তরাষ্ট্র সফর
২০১১ সালের জুন মাসে জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলকে যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ বেসামরিক অ্যাওয়ার্ড ‘প্রেসিডেনশিয়াল মেডেল অব ফ্রিডম’ দেয়া হয়৷ এরপর ম্যার্কেলের সম্মানে সরকারি নৈশভোজের আয়োজন করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা৷ তখন থেকে এই দুই বিশ্বনেতা একে অপরকে তাদের প্রথম নামে ডাকেন – অ্যাঙ্গেলা ও বারাক৷