গত মঙ্গলবার থেকেই সারা বিশ্বের সোশ্যাল মিডিয়ায় একটা আজব কথা ঘুরছে: ‘ওম তেলোলেৎ ওম’৷ টুইটার ছেয়ে গেছে, ডিস্ক জকিরা তাঁর ভিডিও ক্লিপ দিচ্ছেন... কিন্তু ব্যাপারটা কী?
বিজ্ঞাপন
‘ওম তেলোলেৎ ওম’-এর মর্ম ভেদ করতে হলে সুদূর ইন্দোনেশিয়ায় যেতে হবে৷ বাহাসা ইন্দোনেশিয়া, অর্থাৎ ইন্দোনেশীয় ভাষায় বয়সে বড় মানুষদের ‘ওম’ বলে সম্ভাষণ করতে হয়৷ কথাটা নাকি এসেছে ওলন্দাজ ভাষা থেকে; মানে দাঁড়ায় চাচা বা দাদা বা মিস্টার বা ‘ও মশাই’৷ আর ‘তেলোলেৎ’ হলো ইন্দোনেশীয় ভাষায় গাড়ি বা বিশেষ করে বাসের ইলেকট্রিক হর্নের আওয়াজ: বাংলায় হলে আমরা হয়তো বলতাম, ঐ যে, ভেঁপু-ভেঁপু বা ভ্যাঁপো-ভ্যাঁপো করে যে হর্ন বাজছে৷
বহুদিন আগের কথা৷ কলকাতায় গড়িয়াহাট মার্কেটে কাঁচাবাজার সেরে পায়ে হেঁটে ট্রাম স্টপের দিকে যাচ্ছি৷ কে এক সাইকেল রিকশা চালানেওয়ালা ছোকরা অকারণে ভেঁপু-ভেঁপু করে মনের সুখে তার রিকশার রাবারের হর্ন বাজাতে বাজাতে চলেছে৷ আমি ধমক দিয়ে বললাম, ‘অ্যাই, অকারণে হর্ন বাজাচ্ছিস কেন?' ছোকরা কী বলল জানেন? ‘ভালো লাগে, দাদা৷’ সারা রাস্তার লোক তখন হাসছে৷ আজ মনে হচ্ছে, সে আমলে ইন্টারনেট থাকলে আমার সেই হর্ন বাজানো ছোকরাই হয়ত স্টার হয়ে যেত৷
মনে আছে, দেশে এককালে লরির পেছনে ‘হর্ন প্লিজ’ লেখা থাকত৷ সেটাও এই ইন্দোনেশীয় ‘ওম তেলোলেৎ ওম’-এর পূর্বসুরি হতে পারত৷ ইন্দোনেশিয়ার শহরে শহরে ছেলেছোকরারা রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে চলন্ত বাসগুলোর চালকদের বলছে, ‘চাচা, একবার হর্ন বাজান!’ আর চাচাও একবার ‘তেলোলেৎ’, অর্থাৎ ভেঁপু-ভেঁপু করে তাদের খুশি করে দিচ্ছেন৷
দ্বিতীয় পর্যায়ে ইন্দোনেশিয়ার সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপারটা ট্রেন্ড করতে শুরু করে৷ তৃতীয় পর্যায়ে ইন্দোনেশিয়ার ছেলেছোকরারা নামকরা পপ গায়ক আর ডিজে-দের স্প্যাম করতে শুরু করে৷ তাদের মধ্যে এক ওলন্দাজ ডিজে তাঁর একটি গানে ‘তেলোলেৎ’-এর আওয়াজ পর্যন্ত ঢুকিয়ে দেন৷ ‘তেলোলেৎ’ নিয়ে লাখ লাখ টুইট হতে থাকে৷
আর ক'টা দিন অপেক্ষা করলেই যে ‘তেলোলেৎ’ নিয়ে ‘গ্যাংনাম স্টাইল’ গোছের একটা হিট গান বেরিয়ে যাবে, তা ধরেই নেওয়া যেতে পারে৷
ইন্টারনেটে যে কেউ যে কোনো সময় আলোচনায় আসতে পারেন৷ আফগানিস্তানের এক গ্রাম থেকে পোস্ট করা ছবি মেসি অবধি পৌঁছাতে পারে, আলোড়ন তুলতে পারে যেকোন ভিডিও৷ চলুন ইন্টারনেটে সবচেয়ে প্রভাবশালীদের দেখে নেই৷
ছবি: Colourbox/L. Dolgachov
গেমারের ভক্ত চার কোটি!
সুইডেনের কম্পিউটার গেমার ফিলিক্স আরভিড উলফ শেলবের্গের ইউটিউব চ্যানেলের সাবসক্রাইবারের সংখ্যা চার কোটির বেশি৷ গত বছর টাইম ম্যাগাজিনে প্রকাশিত ইন্টানেটে প্রভাবশালীদের তালিকায় তাঁকে সবার আগে রাখা হয়েছে৷ তালিকায় থাকা আরো কয়েকজন সম্পর্কে জানতে ক্লিক করুন নেক্সট বাটনে৷
ছবি: Roslan Rahman/AFP/Getty Images
সংগীত তারকার উত্তর
২৫ বছর বয়সি সংগীত তারকা টেইলর সুইফটের ইন্টারনেট ভক্তের সংখ্যা কয়েক কোটি৷ তাঁর সবগুলো সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম অ্যাকাউন্টই ভক্ত সংখ্যার বিবেচনায় বেশ উপরের দিকে৷ ভক্তদের সঙ্গে তিনি নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করেন৷ কেউ গালি দিলে জবাব দেয়া কিংবা প্রেমে ব্যর্থ ভক্তের জন্য গান খুঁজে দেয়ার মতো কাজও করেছেন তিনি৷ ইন্টারনেটে খুঁজে পাওয়া মানুষদের নিয়ে একাধিক পার্টিও করেছেন তিনি৷
ছবি: Getty Images/G. Denholm
দ্য জেস্টার
কারো কাছে হিরো, বাকিদের কাছে ক্রিমিনাল৷ দ্য জেস্টার ইন্টারনেটে প্রভাবশালী হ্যাক্টিভিস্টদের একজন, যাদের কাজ হচ্ছে ইন্টারনেট সন্ত্রাসী এবং ঘৃণা ছড়ানো গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে লড়াই করা৷ জেস্টার দাবি করেন, তিনি তথাকথিত ‘ইসলামিক স্টেট’ বা আইএস-সহ ক্ষতিকর ১৮০টি ওয়েবসাইট হ্যাক করেছেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa/M. Tirl
ভাইনে সবচেয়ে জনপ্রিয় যিনি
সোশ্যাল মিডিয়া ভাইন যারা ব্যবহার করেন কিংবা যারা এখন টিনএজার, তাদের কাছে এক অতি পরিচিত নাম ন্যাশ গ্রিয়ার৷ ১৭ বছর বয়সি এই তরুণের ভাইনে ফলোয়ারের সংখ্যা এক কোটি পচিশ লাখের বেশি৷
ছবি: picture alliance/empics/A. Matthews
ফেসবুকে যাকে সবচেয়ে বেশি পছন্দ করা হয়
বলছি মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার কথা৷ টাইমের হিসেবে ফেসবুকে সবচেয়ে বেশি লাইক পাওয়া বিশ্বে নেতা তিনি, টুইটারে সবচেয়ে বেশি অনুসারী আছেন এমন বিশ্ব নেতাও তিনি৷ রেডিট-এর ইতিহাসে সবচেয়ে বেশিবার প্রদর্শিত হয়েছে বারাক ওবামার ‘আস্ক মি এনিথিং’ পাতাটি৷
ছবি: Gabriel Bouys/AFP/Getty Images
ইন্সটাগ্রাম রানি কিম কার্দেশিয়ান
মার্কিন টিভি তারকা কিম কার্দেশিয়ান নানাভাবে নিজেকে আলোচিত রাখেন৷ ইন্সটাগ্রামে তাঁর ভক্তের সংখ্যা ছয় কোটির মতো৷ সেখানে মূলত সেলফি পোস্ট করে এত ভক্তকে সন্তুষ্ট রেখেছেন তিনি৷
ছবি: Getty Images/D. Becker
আছেন এক লাইফস্টাইল ব্লগারও
টাইম ম্যাগাজিনে প্রকাশিত ত্রিশ ব্যক্তির তালিকার প্রথম সাতজনের মধ্যে আছেন একজন লাইফস্টাইল ব্লগারও৷ ব্লগার জয় চো আছেন জনপ্রিয় সব সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে৷ তবে পিন্টারেস্ট-এ তাঁর এক কোটি ত্রিশ লাখ ভক্ত থাকাটা বিশেষভাবে উল্লেখ করতে হয়৷