জার্মানির আগামী জোট সরকার প্রস্তুত
২৫ নভেম্বর ২০২১চরম গোপনীয়তার বেড়াজালে আলোচনা চালিয়ে নিজস্ব সময়সূচি মেনে জার্মানির তিনটি রাজনৈতিক দল আগামী জোট সরকারের রূপরেখা চূড়ান্ত করেছে৷ সামাজিক গণতন্ত্রী এসপিডি, উদারপন্থি এফডিপি ও পরিবেশবাদী সবুজ দলকে এবার শুধু আনুষ্ঠানিকভাবে কোয়ালিশন চুক্তির অনুমোদন করতে হবে৷ তারপর মন্ত্রিসভার সদস্যদের নাম চূড়ান্ত করে ওলাফ শলৎসের নেতৃত্বে জার্মানির আগামী সরকার কার্যভার গ্রহণ করতে পারবে৷ সম্ভবত ৬ই ডিসেম্বর ফেডারেল জার্মানির নবম চ্যান্সেলর হিসেবে শপথ নেবেন তিনি৷ সেইসঙ্গে আঙ্গেলা ম্যার্কেলের দীর্ঘ প্রায় ১৬ বছরের কার্যকালের অবসান ঘটবে৷ তার রক্ষণশীল ইউনিয়ন শিবিরকে সংসদের বিরোধী আসনে বসতে হবে৷
বুধবার ‘ট্রাফিক লাইট কোয়ালিশন'-এর তিন শরিক দলের শীর্ষ নেতারা সাংবাদিকদের সামনে ১৭৭ পাতার কোয়ালিশন চুক্তি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন এবং তাদের প্রশ্নের জবাব দেন৷ শলৎস বলেন, ১৯২৪ সালে বার্লিনের পটসডামার প্লাৎস এলাকায় যখন প্রথম ট্রাফিক লাইট বসানো হয়েছিল, অনেকে তখন সেটির কার্যকারিতা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছিলেন৷ আজ নিয়ন্ত্রণ ও সঠিক দিশা দেখানোর ক্ষেত্রে ট্রাফিক লাইট অপরিহার্য হয়ে উঠেছে৷ চ্যান্সেলর হিসেবে তিনি ‘ট্রাফিক লাইট' জোটের মাধ্যমে জার্মানিতে একই রকম যুগান্তকারী ভূমিকা পালনের আশা প্রকাশ করেন৷
একাধিক ক্ষেত্রে আমূল সংস্কারের মাধ্যমে জার্মানির আধুনিকীকরণের উপর জোর দেন তারা৷ জলাবায়ু পরিবর্তনের মোকাবিলা করতে কার্বন নির্গমন কমানো, দেশের প্রায় সব ক্ষেত্রে ডিজিটাল প্রযুক্তির প্রয়োগ, ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে আরও নিবিড় সম্পর্কের মতো একাধিক ক্ষেত্রে উচ্চাকাঙ্ক্ষী লক্ষ্যমাত্রা স্থির করছে এই জোট৷ বাড়তি সরকারি ঋণ ছাড়াই এমন অসাধ্যসাধন করতে হবে৷ তবে সবার আগে জার্মানি তথা ইউরোপের ভয়াবহ করোনা সংকট মোকাবিলার উপর জোর দিতে চায় এই জোট৷ সরকার গঠনের আগেই সংসদে সংক্রমণ সুরক্ষা আইন সংশোধনী প্রস্তাব অনুমোদন করে এই তিন দল সেই উদ্যোগ শুরু করেছে৷ সংকটের মোকাবিলা করতে বিশেষজ্ঞ কমিটি গড়ার মতো আরও পদক্ষেপ নিয়ে নতুন সরকার অবিলম্বে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে চায়৷
এখনো জার্মানির নতুন মন্ত্রিসভার তালিকা চূড়ান্ত না হলেও কিছু নাম উঠে আসছে৷ শলৎস মন্ত্রিসভায় সমান সংখ্যক নারী ও পুরুষ সদস্যদের স্থান দিতে চান৷ নির্বাচনে সবুজ দলের চ্যান্সেলর পদপ্রার্থী আনালেনা বেয়ারকক পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং দলের নেতা রোব্যার্ট হাবেক অর্থনীতি বিষয়ক মন্ত্রী ও ভাইস চ্যান্সেলর হতে পারেন৷ এফডিপি দল শেষ পর্যন্ত অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বের উপর ‘অধিকার' কায়েম করতে সফল হওয়ায় দলের শীর্ষ নেতা ক্রিস্টিয়ান লিন্ডনার অর্থমন্ত্রী হবেন বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে৷
এসবি/কেএম (এএফপি, ডিপিএ, রয়টার্স)