1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

যক্ষ্মা রোগ

লুডিয়া হেলার/আরবি১০ নভেম্বর ২০১২

যক্ষ্মা রোগটি আর আগের মতো এতটা ভয়াবহ নয়৷ সঠিক চিকিত্সায় রোগটিকে সারিয়ে তোলা যায়৷ তবে আবার নতুন এক মারাত্মক রূপ নিয়ে আবির্ভূত হয়েছে অসুখটি, অনেক ক্ষেত্রে হয়ে পড়ছে ওষুধ প্রতিরোধী৷

Eine Blisterpackung mit einer Wochenration TB-Medikamente, aufgenommen im St. Thomas Home in Howrah. Im Hintergrund ein kompletter Therapie-Karton mit der persönlichen Halbjahres-Ration eines Patienten. Die Medikamente müssen unter Aufsicht eines ausgebildeten Arztes eingenommen werden. Alle leeren Blister werden zur Kontrolle aufgehoben und abgezählt um sicherzugehen, dass die Therapie komplett abgeschlossen wurde. Ansonsten drohen gefährliche Resistenzbildungen. Die Medikamente werden vom indischen Staat kostenlos zur Verfügung gestellt. Das St. Thomas' Home ist eine Spezialklinik der Hilfsorganisation "Ärzte für die dritte Welt" und der nordindischen Kirche für tuberkulosekranke Frauen. Sie liegt in der Großstadt Howrah im Großraum Kalkutta. (Aufnahme vom August 2007). Foto: Denis Meyer +++(c) dpa - Report+++
ছবি: picture-alliance

গত কয়েক বছর ধরে টিবি বা যক্ষ্মা রোগের বিস্তার আবারো লক্ষ্য করা যাচ্ছে৷ প্রচলিত অ্যান্টিবায়োটিক দিয়েও এ রোগ কাবু করা যাচ্ছে না৷ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, ডাব্লিউএইচও'র রিপোর্ট অনুযায়ী বিশ্বব্যাপী ৪ লক্ষেরও বেশি মানুষ মারাত্মক যক্ষ্মার জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত, যেগুলিকে নানারকমের অ্যান্টিবায়োটিক দিয়েও আয়ত্তে আনা সম্ভব হচ্ছে না৷

১০ বছর ধরে দারিয়া অচেরেট লিথুয়ানিয়ার রাজধানী ভিলনিয়াসে মাদকাসক্তদের দেখাশোনা করছেন৷ আগে কখনও যক্ষ্মা রোগটি নিয়ে তেমন মাথা ঘামাননি তিনি৷ কিন্তু ইদানীং একটি প্রবণতা দেখে শঙ্কিত হয়ে উঠেছেন দারিয়া ও তাঁর সহকর্মীরা৷ দারিয়ার ভাষায়, ‘‘অনেক বছর ধরে পূর্ব-ইউরোপে বহু মাদকাসক্ত ব্যক্তি মারা যেতেন অতিরিক্ত মাদক সেবন করে৷ কিংবা আত্মহত্যাও করতেন অনেকে৷ গত দুই বছর ধরে অবস্থার পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে৷ আমরা আজ যেসব মাদকাসক্তদের দেখাশোনা করছি, তাঁদের বেশিরভাগই মারা যাচ্ছেন যক্ষ্মায় আক্রান্ত হয়ে৷''

পূর্ব ইউরোপে যক্ষ্মার প্রকোপ

পূর্ব-ইউরোপ বিশেষ করে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নভুক্ত অনেক দেশেই যক্ষ্মা আবার মাথা চাড়া দিয়ে উঠছে৷ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ডাব্লিউএইচও'র তথ্য অনুযায়ী, এই এলাকায় ৮০ হাজার মানুষ মারাত্মক যক্ষ্মা রোগে আক্রান্ত৷ এই রোগের জীবাণুগুলিকে প্রচলিত ওষুধ দিয়ে ঘায়েল করা সম্ভব হচ্ছে না৷ পূর্ব-ইউরোপের ১৫টি দেশ ঝুঁকিপূর্ণ বলে চিহ্নিত৷ এর মধ্য রয়েছে রাশিয়া, বেলারুশ, বুলগেরিয়া, মলডেভিয়া৷ পর্যটকদের মাধ্যমে জার্মানিতেও রোগটি এসে পড়ছে৷ জানান রবার্ট কখ ইনস্টিটিউটের সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ বারবারা হাউয়ার৷ তাঁর ভাষায়, ‘‘আমরা জার্মানিতে যক্ষ্মা রোগীদের মধ্যে ওষুধ প্রতিরোধী জীবাণুর বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছি৷ আমাদের অপেক্ষা করে দেখতে হবে, অন্যান্য দেশে কীভাবে রোগটি বিস্তৃত হচ্ছে৷ অন্যান্য ইউরোপীয় দেশের তুলনায় জার্মানিতে এখনও এই রোগের প্রকোপ অনেক কম৷ বছরে ৫০টি ঘটনার কথা জানা গেছে৷ তবুও সংখ্যাটা একেবারে অগ্রাহ্য করার মতো নয়৷''

ছবি: picture-alliance/dpa

যক্ষ্মা রোগে বহু ওষুধ

যক্ষ্মা রোগীরা সাধারণত চার থেকে পাঁচ ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক পেয়ে থাকেন, যা তাঁদের ছয় মাস ধরে নিতে হয়৷ রোগীরা এই নিয়ম মেনে না চললে বা ওষুধ ছেড়ে দিলে ব্যাকটেরিয়াগুলি ওষুধ প্রতিরোধী হয়ে পড়ে৷ এই রকম অবস্থায় চিকিত্সা করতে গেলে দৈনিক ১৭টি পর্যন্ত ট্যাবলেটের প্রয়োজন হতে পারে৷ সেই সাথে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ও খরচ তো রয়েইছে৷ যা সাধারণ যক্ষ্মা চিকিত্সার চেয়ে কয়েকশ গুণ বেশি হতে পারে৷ এছাড়া আরোগ্যের সম্ভাবনাও নিশ্চিত করে বলা যায় না৷ এক্ষেত্রে প্রয়োজন নিবিড় পর্যবেক্ষণের৷ এই প্রসঙ্গে ডাব্লিউএইচও'র ইউরোপ দপ্তরের আন্দ্রেই ডাদু বলেন, ‘‘ওষুধ প্রতিরোধী যক্ষ্মায় আক্রান্ত রোগীর হার তেমন বেশি নয়৷ কিন্তু আমরা রোগীদের খবর না জানলে তাঁরা অন্যদেরও সংক্রমিত করতে পারেন৷ আমাদের ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলিতে আরো বেশি করে রোগ শনাক্তকারী কারিগরি সহায়তা দিতে হবে, যাতে তাঁরা সহজেই ওষুধ প্রতিরোধী যক্ষ্মা নির্ণয় করতে পারেন৷''

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অর্থ বরাদ্দ

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ২০১১ সালে ৪০ কোটি ডলারেরও বেশি অর্থ ইউরোপের যক্ষ্মা রোগের ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলির জন্য বরাদ্দ করেছে৷ এর মধ্যে রয়েছে দ্রুত জীবাণু শনাক্তকারী যন্ত্রপাতি৷ এর মাধ্যমে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই জীবাণুর ডিএনএ বিশ্লেষণ করা সম্ভব৷ ২০১৫ সালের মধ্যে এই খাতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বাজেট ২ বিলিয়নে উন্নীত করা হবে৷

এছাড়া রোগটির সুচিকিত্সার জন্য হাসপাতালের বেড ও উপযুক্ত গবেষণাগারেরও প্রয়োজন৷ কেননা পরীক্ষা করে দেখা দরকার, কোন ওষুধ রোগীর কাজে লাগছে৷ দারিয়া অচেরেটের মতে, এক্ষেত্রে সামাজিক সচেতনতাও জাগাতে হবে৷ তাঁর ভাষায়, ‘‘রাশিয়ায় গত কয়েক বছরে যে সব যক্ষ্মা রোগী মারা গেছেন, তাঁদের বেশির ভাগই এইচআইভি ভাইরাসে সংক্রমিত ও মাদকাসক্ত৷ তাই এটা সহজেই বোঝা যায়, কেন এই সব মানুষের চিকিত্সা করা হয়নি৷ দেশটিতে মাদকদ্রব্য বেআইনি৷ তাই মাদকাসক্তরা জেলে যাওয়ার ভয়ে ডাক্তারের কাছেও যেতে চান না৷ হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও মাদকের কোনো বিকল্প না দিয়ে ছয় মাসের জন্য রেখে দেয়া হয় রোগীদের৷ তাই অনেকেই পালিয়ে যান৷ কিংবা মাদকসহ ধরা পড়লে তাঁদের বের করে দেয়া হয়৷ এইভাবে চিকিত্সায় বাধা পড়ে এবং ওষুধ প্রতিরোধী যক্ষ্মার ঝুঁকি ও বিস্তারের সম্ভাবনাও বেড়ে যায়৷''

সচেতনতা বৃদ্ধি করা

মাদকাসক্তদের যক্ষ্মায় চিকিত্সায় সম্পৃক্ত করা যায় কিন্তু অনায়াসেই৷ যেমন যে সব মাদকসেবী নিয়মিত মাদকের বিকল্প মেথাডন নিতে হাসপাতালে আসেন, তাঁদের টিবির ওষুধও দেয়া যেতে পারে৷ কিন্তু এই ধরনের চিন্তাভাবনা সোভিয়েত আমলের স্বাস্থ্যসেবা কাঠামোর আবর্তে মার খেয়ে যাচ্ছে৷ ইউক্রেন, রাশিয়া, বেলারুশ এবং আজারবাইজান ও কাজাখিস্তানেও যক্ষ্মার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাব লক্ষ্য করা যায়৷ তবে রোগটিকে রুখতে হলে শুধু সরকারি সহায়তা নয়, প্রয়োজন সামাজিক সচেতনতারও৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ