কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার হারবাং ইউনিয়নের সাবানঘাটা এলাকার এক বাড়িতে সোমবার রাতে আগুন লেগে জীবন্ত দগ্ধ হয়েছে ঘুমন্ত তিন ভাই-বোন৷
বিজ্ঞাপন
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুল ইসলাম ডয়চে ভেলের কনটেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার কথা জানান৷ তিনি বলেন, সোমবার রাতে খাবার খেয়ে জাগিরের তিন ছেলে-মেয়ে ঘুমিয়ে পড়লে তাদের মা কাজল বেগম আরেক সন্তানকে নিয়ে বাড়ির কাচারি ঘরে ছিলেন৷ জাগির তখনও বাসায় ফেরেননি৷ এর মধ্যে কোনোভাবে ওই বাড়িতে আগুন লেগে যায়৷
চকরিয়া থানার ওসি সাকের মো. জুবায়ের বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, আগুন দেখে কাজল বেগম তার ছোট সন্তানকে নিয়ে কাচারি ঘরে থেকে বের হতে পারলেও ঘুমন্ত তিন শিশুকে আর বের করা যায়নি৷
ঘটনাস্থল দুর্গম হওয়ায় ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা পৌঁছানোর আগেই স্থানীয়রা এগিয়ে এসে পাম্পের পানি দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন৷ এবং পরে পুলিশ সদস্যরাও সেখানে যান৷
ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুল বলেন, বৈদ্যুতিক গোলযোগ থেকে ওই বাড়িতে আগুন লেগেছে বলে তাদের ধারণা৷
এনএস/কেএম (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)
গত সেপ্টেম্বরের ছবিঘরটি দেখুন...
আতঙ্কের নাম গ্যাস দুর্ঘটনা
গ্যাস লিক বা বিস্ফোরণ থেকে সৃষ্ট দুর্ঘটনা ঘটে প্রায়ই৷ অগ্নিকাণ্ড, অগ্নিদগ্ধ কিংবা গ্যাসে দমবন্ধ হয়ে মারা যাওয়ার সংখ্যাটাও ভীষণ উদ্বেগের৷
ছবি: AFP/Getty Images/M. Bernetti
২০১৮ সালে ১০৩ দুর্ঘটনা
ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের দেয়া তথ্যে দেখা যায়, ২০১৮ সালে জানুয়ারি থেকে ১৬ নভেম্বর পর্যন্ত ঢাকা বিভাগে গ্যাস দুর্ঘটনায় ১০৩টি অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে৷ এর মধ্যে গ্যাসলাইনের ছিদ্র থেকে ৫৫টি এবং এলপি গ্যাসের সিলিন্ডার থেকে ৪৮টি ঘটনা ঘটেছে৷ ঘটনাস্থলেই মারা গেছে শিশুসহ ছয়জন৷ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে ৩১ জনকে৷ চিকিৎসাধীন অবস্থায় যাঁরা হাসপাতালে মারা গেছেন, তাঁদের হিসাব ফায়ার সার্ভিসের খাতায় নেই৷
ছবি: bdnews24
২০১৭ সালে দুর্ঘটনা ২৩৮!
তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন ও ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের দেওয়া তথ্যে জানা যায়, ২০১৭ সালে চুলা থেকে সৃষ্ট কারণে অগ্নিদুর্ঘটনা ঘটেছে ২৩৮টি৷ আর এ সময় গ্যাস লিকেজের ঘটনা ঘটেছে পাঁচ হাজার ৬৫০টি৷
ছবি: bdnews24
নারায়ণগঞ্জে মসজিদে বিস্ফোরণ
চার সেপ্টেম্বর রাতে নারায়ণগঞ্জ শহরের পশ্চিম তল্লা এলাকার বায়তুস সালাত জামে মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে৷ এ পর্যন্ত ২৪ জন নিহত হয়েছেন৷ ফায়ার সার্ভিস বলছে, মসজিদ লাগোয়া গ্যাস লাইনই এই দুর্ঘটনার কারণ৷ পাইপে ছিদ্র দিয়ে গ্যাস নির্গত হয়েছে৷ পুরো মসজিদ শীতাতপনিয়ন্ত্রিত হওয়ায় গ্যাস মসজিদের মধ্যেই আটকে ছিল৷ ফ্যান চালানোর সময় সুইচবোর্ড থেকে আগুনের ফুলকি বের হয়ে ছয়টি এসিতে আগুন ধরেছে বলে তাদের ধারণা৷
ছবি: Reuters/M. P. Hossain
অবৈধ গ্যাস লাইন, নাকি মৃত্যুফাঁদ!
গ্যাস দুর্ঘটনার আরেকটি বড় কারণ অবৈধ সংযোগ৷ ঢাকসহ আশেপাশের এলাকায় ২৩০ কিলোমিটার দীর্ঘ অবৈধ গ্যাস বিতরণ লাইন শনাক্ত করা হয়েছে, যেখান থেকে অবৈধ গ্যাস সংযোগ নিয়েছেন বিপুল সংখ্যক গ্রাহক৷ নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার এবং নিরাপত্তা ঝুঁকির বিষয় বিবেচনা না করেই এমন সংযোগ লাইন করা হয়েছে, যা মৃ্ত্যুফাঁদ তৈরি করেছে৷ এসব লিকেজ থেকে প্রায়শই হচ্ছে দুর্ঘটনা৷
ছবি: bdnews24
চুলায় কাপড় শুকানো
বাংলাদেশে গ্যাস সংযোগ রয়েছে এমন বাড়িতে শীত বা বর্ষাকালে চুলায় কাপড় শুকাতে দেওয়ার অভ্যাস কম-বেশি সবারই আছে৷ আর এভাবেই দুর্ঘটনাকে বাড়িতে ডেকে নিয়ে আসা হয়৷ কাপড় শুকানোর ঘটনায় অসংখ্যবার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে৷ তাই রান্না ছাড়া গ্যাসের চুলায় অন্য যে-কোনো ধরনের কাজকে নিরুৎসাহিত করে তিতাস ও ফায়ার সার্ভিস কর্তৃ্পক্ষ৷
ছবি: bdnews24
সিলিন্ডার, না বিস্ফোরক!
এলপিজি বা সিলিন্ডারের গ্যাস আমাদের অনেকের বাড়িতেই ব্যবহৃত হয় রান্নার কাজে৷ কিন্তু অসাবধানতা ও সিলিন্ডারের ত্রুটির কারণে প্রায়শই এলপিজি সিলিন্ডার বিস্ফোরণ ঘটার সংবাদ পাওয়া যাচ্ছে৷ চাহিদা ভালো, তাই লিকুডিফায়েড পেট্রোলিয়াম গ্যাস বা এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবসার জন্য একের পর এক নতুন কোম্পানি আসছে বাজারে৷ কিন্তু এই ব্যবসায়ীরা নিজেদের লাভ বুঝলেও গ্রাহকের নিরাপত্তার বিষয়টি আমলে নেন না৷
ছবি: picture alliance/ZUMAPRESS
সিলিন্ডার ৪০ লাখ, পরীক্ষাকেন্দ্র ৬টি
শুধুমাত্র ২০১৭-১৮ সালেই দেশে মোট আমদানিকৃত এলপিজি সিলিন্ডারের সংখ্যা ৩৯ লাখ ৬৪ হাজার ৭২৮৷ আর অনুমতিপ্রাপ্ত এবং দেশে তৈরি এলপিজি সিলিন্ডারের সংখ্যা ১১ লাখ চার হাজার ৩৪৫৷ দেশে মোট সিলিন্ডার পরীক্ষার কেন্দ্র আছে ছয়টি৷ আর এলপিজি সিলিন্ডার নির্মাণ কারখানা আছে চারটি৷