বাংলাদেশের রোহিঙ্গা শরণার্থীরা স্থানীয় মিডিয়া স্কুলে ফটোগ্রাফি শিখছেন৷ যেসব শরণার্থী শিবিরে তারা থাকেন সেখানকার অবস্থা এর মাধ্যমে নথিভুক্ত করতে সাহায্য করবেন তারা৷
বিজ্ঞাপন
এই প্রশিক্ষণকে কাজে লাগিয়ে ভবিষ্যতে সাংবাদিকতাকে পেশা হিসেবে বেছে নিতে পারেন তারা৷ গত চার বছর ধরে কক্সবাজারে দশ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বাস করছেন শরণার্থী শিবিরগুলোতে৷ বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে বড় শরণার্থী শিবির এটা৷
গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে এখানে ওমর'স ফিল্ম স্কুল প্রতিষ্ঠা হয়৷ এর লক্ষ্য-তরুণ রোহিঙ্গা শরণার্থীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে ফটোসাংবাদিক হিসেবে গড়ে তোলা৷ ২২ বছর বয়সি রোহিঙ্গা শরণার্থী জামাল আরাকানি৷ সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে তিনি বলেন, ‘‘আমি ফটোগ্রাফিকে পেশা হিসেবে নিতে চাই, এ কারণে আমি শিখছি৷ আমার ছবিগুলোর মাধ্যমে বিশ্বের কাছে তুলে ধরতে চাই আমরা কীভাবে এখানে বাস করছি৷’’
স্কুলের প্রধান প্রশিক্ষক মোহাম্মদ ফারুক খণ্ডকালীন প্রশিক্ষণ দেন৷ মূলত তিনি বিভিন্ন বিদেশি সংবাদ সংস্থার জন্য ফটোগ্রাফারের কাজ করেন৷ শরণার্থী শিবিরগুলোর ছবি তোলাই তার বর্তমান কাজ৷ ছোট ভাই ওমরকে সাথে নিয়ে এই স্কুল প্রতিষ্ঠা করেছিলেন তিনি৷ তার ভাই একজন এনজিও কর্মী এবং সাংবাদিক ছিলেন, যিনি রয়টার্সসহ অনেক খ্যাতনামা সংবাদ সংস্থার হয়ে কাজ করেছেন৷ ২০২০ সালের মে মাসে মারা যান তিনি৷ তার সম্মানেই স্কুলটির নাম রাখা হয়েছে৷
ফারুক রয়টার্সকে বলেন, ‘‘ আমরা তরুণ রোহিঙ্গাদের ভিডিও ও ফটোগ্রাফির প্রশিক্ষণ দিতে চাই৷ আমরা চাই শরণার্থীদের জীবন যাপন কেমন তার রেকর্ড থাকুক৷ আমরা যখন মিয়ানমারে ফিরে যাবো, ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে দেখাতে পারবো শরণার্থী শিবিরের জীবন কেমন৷’’
ফারুক বর্তমানে ১২ জন শিক্ষার্থীকে প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন, যাদের বয়স ২০ থেকে ২৫ এর মধ্যে৷ সপ্তাহে একদিন ক্লাস হয় এবং এর জন্য কোনো বেতন দিতে হয় না৷ ফারুক চান শিক্ষার্থীদের সংখ্যা আরো বাড়ুক এবং ভবিষ্যতে স্কুলে আরো ক্যামেরা যেন থাকে৷
এপিবি/এফএস (রয়টার্স)
২০২০ সালের সেরা ১০ ওয়াইল্ডলাইফ ছবি
প্রকৃতির অসাধারণ সৌন্দর্য ও বৈচিত্রকে যারা চমৎকারভাবে ক্যামেরাবন্দি করেন, প্রতিবছর লন্ডনের ন্যাচরাল হিস্ট্রি মিউজিয়াম তাদের সম্মান জানায় পুরস্কারের মাধ্যমে৷ ছবিঘরে দেখে নিন এ বছরের সেরা ১০টি ছবি৷
ছবি: Mogens Trolle
বাঘিনীর আলিঙ্গন
২০২০ সালের ফটোগ্রাফার অফ দ্য ইয়ারের পুরস্কার জিতে নিয়েছেন রাশিয়ার সের্গেই গোরোসকোভ৷ রাশিয়ার পূর্বাঞ্চলের একটি অরণ্যে এক সাইবেরিয়ান বাঘিনী মাঞ্চুরিয়ান ফার গাছের গুড়ি দুই হাতে জড়িয়ে ধরে আছে৷ লুকিয়ে রাখা ক্যামেরায় এই মুহূর্তটি পেতে গোরোসকোভের সময় লেগেছে ১১ মাস৷
ছবি: Sergey Gorshkov
বানরের সূর্যস্নান
মোগেনস ট্রোলের এই ছবিটিতে একটি বানর মিষ্টি রোদের আবেশ গায়ে মাখছে৷ প্রোবোসিস প্রজাতির এই বানরেরা এখন বিলুপ্তির পথে৷ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দ্বীপগুলোতেই কেবল এদের দেখা মেলে৷
ছবি: Mogens Trolle
কঠিন সিদ্ধান্ত
এ বছর বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ৪৯ হাজার ছবি জমা পড়েছিল৷ প্রতিযোগিতার ৫৬ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম অনলাইনে লাইভস্ট্রিমের মাধ্যমে বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হয়৷ সোঙ্গদা চাই এই ছবিটির জন্য ‘আন্ডার ওয়াটার’ ক্যাটাগরিতে বিজয়ী হয়েছেন৷
ছবি: Songda Cai
বিরল প্রাণীদের অগ্রাধিকার
প্রতিযোগিতার লক্ষ্য হল বিশ্বের বিরল প্রাণীদের হাইলাইট করা৷ ছবিতে মান্ডুরিয়াকু ব্যাঙকে দেখা যাচ্ছে, যা বিলুপ্তির পথে৷ ইকুয়েডরের ছোট্ট একটি এলাকাতেই কেবল এদের দেখা পাওয়া যায়৷ ‘বিহেভিয়ার অফ রেপটাইলস অ্যান্ড অ্যাম্ফিবিয়ান্স’ ক্যাটাগরিতে এই ছবির জন্য পুরস্কার জিতেছেন জেইমে কুলেব্রাস৷
ছবি: Jaime Culebras
প্রকৃতির শক্তি
লুসিয়ানো গাওডেনজিও’র তোলা মাউন্ট এটনা’র এই ছবিটিতে প্রকৃতির শক্তি ফুটে উঠেছে৷ এটি ‘আর্থস এনভার্নমেন্ট’ ক্যাটাগরিতে পুরস্কার জিতেছে৷
ছবি: Luciano Gaudenzio
অরণ্য থেকে লোকালয়ে
ইন্দোনেশিয়ার বালি শহরের পাখি বাজারে একটি বানর শিশুকে বিক্রির জন্য শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে৷ পল হিল্টন এই ছবিটির জন্য ‘ওয়াইল্ডলাইফ ফটোজার্নালিস্ট স্টোরি অ্যাওয়ার্ড’ জিতেছেন৷
ছবি: Paul Hilton
তরুণ প্রতিভা
১৫ থেকে ১৭ বছর বয়সি ফটোগ্রাফারদের ক্যাটাগরিতে গ্র্যান্ড পুরস্কার জিতেছেন ফিনল্যান্ডের লিনা হাইক্কিনেন৷ একটি শেয়ালের হাঁস খাওয়ার দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি করেছেন তিনি৷
ছবি: Liina Heikkinen
সবচেয়ে কমবয়সি বিজয়ী
১১ থেকে ১৪ বছর বয়সিদের বিভাগে বিজয়ী হয়েছেন স্যাম স্লোস৷ একটি ক্লাউন মাছের ছবি তুলেছে সে৷
ছবি: Sam Sloss
উড়ন্ত প্রতিবেশী
‘ইনভার্ট্রিব্রেট বিহেভিয়ার’ ক্যাটাগরিতে এই ছবিটির জন্য পুরস্কার জিতেছেন ফ্র্যাঙ্ক ডেশান্ডলস৷ পিঁপড়ের বাসায় ঢোকার আগ মহূর্তে উড়ন্ত পিঁপড়েদের ছবিটি তুলেছেন তিনি৷
ছবি: Frank Deschandol
খাবারের খোঁজে ক্যামেরাবন্দি
চীনের উত্তর পশ্চিমে তিব্বতের কাছে তোলা হয়েছে এই ছবিটির জন্য পুরস্কার পেয়েছেন শানিইউয়ান৷ খাবারের খোঁজে এই পালাস বিড়ালের পরিবারটি পাহাড়ি এলাকা থেকে সাড়ে ১২ হাজার ফুট নীচে নেমে আসে৷ ফটোগ্রাফারে তাদের পিছু নিয়েছিলেন৷ আর হঠাৎই এভাবে তাকে দেখে থমকে যায় পরিবারের সদস্যরা৷