কট্টর অ্যামেরিকা বিরোধী হিসেবেই নাম কিনেছিলেন কাসিম
৩ জানুয়ারি ২০২০
হত দরিদ্র পরিবার থেকে তাঁর উত্থান৷ এই মুহূর্তে তিনিই ছিলেন ইরানের সব চেয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তি৷ তাঁর হত্যা মধ্য প্রাচ্যের রাজনীতিতে বড় প্রভাব ফেলবে৷
বিজ্ঞাপন
মঞ্চ তৈরি ছিল৷ অপেক্ষা ছিল বারুদে আগুন ধরার৷ ইরানের সেনা বাহিনীর অন্যতম জেনারেল এবং কুদস ফোর্সের প্রধান কাসিম সোলেইমানের মৃত্যু সংবাদ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই জ্বলে উঠেছে ইরান৷ দিকে দিকে শুরু হয়েছে অ্যামেরিকা বিরোধী বিক্ষোভ৷ শুক্রবার মার্কিন বিমান হানায় নিহত হয়েছেন কাসিম৷
কে ছিলেন এই কাসিম? ইরান বিশেষজ্ঞদের কথায়, ধারে এবং ভারে তিনিই ছিলেন ইরানের সব চেয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তি৷ সুপ্রিম নেতার পরেই যাঁর স্থান৷ দীর্ঘ দিন ধরে সমগ্র গাল্ফ অঞ্চলে ইরানের প্রভাব এবং প্রতিপত্তি তৈরির মূল কারিগর ছিলেন এই কাসিম৷ সিরিয়ায় ইসলামিক স্টেটের সঙ্গে যুদ্ধ থেকে শুরু করে লেবানন এবং ইরাকে সরকার বিরোধী শক্তিকে সামরিক এবং অর্থ সাহায্য-সব কিছুর পিছনেই ছিলেন কাসিম সোলেইমানি৷ এবং একই সঙ্গে সমগ্র অঞ্চলে অ্যামেরিকা বিরোধী হিসেবে তাঁর কণ্ঠস্বর ছিল সব চেয়ে জোরালো৷
উত্থান অবশ্য এক দিনে হয়নি৷ ৬২ বছরের সুলেইমানির জন্ম হয়েছিল ১৯৫৭ সালে এক গরিব কৃষক পরিবারে৷ আত্মজীবনীতে তিনি লিখেছেন, মাত্র ১৩ বছর বয়সে পরিবারের ঋণ শোধ করার জন্য তৎকালীন রাজ পরিবারের কাজে ঢুকে পড়েছিলেন৷ দিন আনি দিন খাই পরিস্থিতির মধ্যে কাটিয়েছেন বহু বছর৷ ১৯৭৯ সালে ইরানে রাজ পরিবারের পতন হয়৷ ক্ষমতায় আসেন আয়াতোল্লা আলী খোমেনি৷ খোমেনির বিপ্লবী সেনায় যোগ দেন কাসিম৷ দুই বছরের মধ্যে ইরাকের সঙ্গে যুদ্ধ হয় ইরানের৷ সম্মুখ সমরে নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করেন কাসিম৷ এবং রাতারাতি একটি ব্রিগেডের দায়িত্ব পান৷ সেই শুরু তাঁর উত্থান৷ ইরাকে ঢুকে যুদ্ধ করতে গিয়ে তাঁর সেনা বাহিনীর বিপুল ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল বলে কথিত আছে৷ তিনি নিজেও আহত হয়েছিলেন৷ কিন্তু কখনও যুদ্ধক্ষেত্র ছেড়ে পালিয়ে আসেননি৷ বলা হয়, সেই সময়েই ইরাকের সরকার বিরোধী জঙ্গি গোষ্ঠীগুলির সঙ্গে যোগাযোগ শুরু কাসিমের৷ পরবর্তী কালে যা গোটা গাল্ফ অঞ্চলের কূটনীতি বদলে দেবে৷
ভয়ঙ্কর প্রতিশোধের ঘোষণা খামেনির
সোলাইমানি হত্যায় ভয়ঙ্কর প্রতিশোধের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি৷ সোলাইমানি দেখানো পথে এগিয়ে যাওয়ার শপথ নিয়েছে লেবাননের হেজবুল্লাহও৷ চলুন দেখা যাক এই ঘটনায় কার প্রতিক্রিয়া কেমন৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/Office of the Iranian Supreme Leader
মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধের দামামা
দীর্ঘ টানাপড়েন, হুমকি-পালটা হুমকির পর অবশেষে ইরানের ওপর বড় আঘাত হানলো মার্কিন বাহিনী৷ ইরাকে মার্কিন বিমান হানায় নিহত হয়েছেন ইরানের কুদস ফোর্সের প্রধান জেনারেল কাসিম সোলাইমানি৷ যার ফলে অ্যামেরিকা এবং ইরানের মধ্যে যে প্রক্সি যুদ্ধ চলছিল, তা আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞেরা৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/Office of the Iranian Supreme Leader
পেন্টাগন
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশেই এ হামলা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগন৷ ভবিষ্যতে ইরানকে যেকোনো হামলার পরিকল্পনা থেকে বিরত রাখতেই সোলাইমানিকে হত্যা করা হয়েছে বলেও এক বিবৃতিতে জানিয়েছে সংস্থাটি৷ বিশ্বের যেকোনো প্রান্তে অবস্থান করা মার্কিন নাগরিকদের রক্ষা করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানানো হয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/A. Dunaway
ডনাল্ড ট্রাম্প
বাগদাদে মার্কিন দূতাবাসে ইরান সমর্থিত ইরাকি মিলিশিয়ার হামলার পরই তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছিলেন ট্রাম্প৷ বলেছিলেন, ‘‘কোনো প্রাণহানি বা আমাদের কোনো ক্ষয়ক্ষতি হলে তার জন্য ইরানই দায়ী থাকবে৷ সেজন্য তাদের চড়া মূল্য দিতে হবে৷ এটা কোনো সতর্কবার্তা নয়, এটা হুমকি৷’’ সোলাইমানিকে হত্যার পর নিজের টুইটার অ্যাকাউন্টে মার্কিন পতাকা শেয়ার করেছেন ট্রাম্প৷
ছবি: Getty Images/D. Angerer
মার্কিন কংগ্রেস
তবে কংগ্রেসের প্রতিনিধি পরিষদের পররাষ্ট্র বিষয়ক কমিটির প্রধান এলিওট এনজেল এক বিবৃতিতে বলেছেন, কংগ্রেসকে অবগতকরণ কিংবা কোনো আলোচনা ছাড়াই সোলাইমানির বিরুদ্ধে হামলা চালানো হয়েছে। কংগ্রেসকে না জানিয়ে এমনতর গুরুতর পদক্ষেপ সরকারের কংগ্রেস অবমাননার শামিল বলেও মন্তব্য করেন এনজেল।
ছবি: picture-alliance/dpa/J. Schwenkenbecher
খামেনির প্রতিশোধের বার্তা
কুদস ফোর্সের প্রধান কাসিম সোলাইমানিকে যারা হত্যা করেছে সেই ‘অপরাধীদের’ জন্য ভয়ঙ্কর প্রতিশোধ অপেক্ষা করছে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আল খামেনি। খামেনি বলেছেন, “প্রতিরোধ বাহিনীর জিহাদ দ্বিগুণ উদ্যমে অগ্রসর হবে, অবশ্যই পবিত্র এ যুদ্ধে যোদ্ধাদের জন্য নিশ্চিত বিজয় অপেক্ষা করছে।’’ সোলেইমানির মৃত্যুতে তিনদিনের ‘রাষ্ট্রীয় শোকের’ ঘোষণাও দিয়েছে ইরান।
ছবি: ravapress.ir
হেজবুল্লাহর শোক
যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে প্রতিশোধের ঘোষণা দিয়েছে লেবাননের শিয়া মিলিশিয়া গোষ্ঠী হেজবুল্লাহ আন্দোলন৷ এক বিবৃতিতে হিজবুল্লাহ প্রধান হাসান নাসরাল্লাহ বলেছেন, বিশ্বজুড়ে সব প্রতিরোধ যোদ্ধাদের কাজ ও দায়িত্ব হচ্ছে এসব খুনি অপরাধীদের যথাযথ শাস্তি দেয়া। সোলাইমানির দেখানো পথে হেজবুল্লাহ অগ্রসর হবে বলেও জানান নাসরাল্লাহ৷
ছবি: picture-alliance/dpa/AP Photo/B. Hussein
ইরানের পাশে রাশিয়া
সোলাইমানির হত্যা মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা উসকে দেবে বলে মন্তব্য করেছে রাশিয়া৷ সংবাদ সংস্থা তাস পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, ‘‘সোলাইমানি পরম বিশ্বস্ততার সঙ্গে ইরানিদের স্বার্থ সুরক্ষায় কাজ করেছেন। আমরা ইরানি জনগণের প্রতি গভীর শোক জানাচ্ছি।’’
ছবি: picture-alliance/dpa/TASS/A. Shcherbak
ইরাকে যুদ্ধের শঙ্কা
মার্কিন হামলায় সোলাইমানি ছাড়াও ইরাকি কমান্ডার আবু মাহদি আল মুহান্দিসসহ আরো চারজন নিহত হয়েছেন৷ এই হামলাকে আগ্রাসন আখ্যা দিয়ে নিন্দা জানিয়েছেন ইরাকের প্রধানমন্ত্রী আদেল আবদেল মাহদি। এক বিবৃতিতে তিনি জানিয়েছেন, ইরাকের মাটিতে মার্কিন সেনা উপস্থিতির শর্তের লঙ্ঘন ঘটেছে এ হামলায়। এর ফলে ভয়াবহ যুদ্ধের আশঙ্কাও প্রকাশ করেন তিনি৷ মুহান্দিস ছিলেন আধা সামরিক বাহিনী হাশেদ আল-শাবির উপপ্রধান।
ছবি: Getty Images/AFP/A. Al-Rubaye
তেহরানে বিক্ষুব্ধ জনতার ঢল
ইরাকে মার্কিন হামলায় ইরানি জেনারেল নিহতের ঘটনায় তীব্র বিক্ষোভ চলছে তেহরানে৷ জুম্মার নামাজের পর হাজার হাজার মানুষ নেমে এসেছেন রাস্তায়৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/V. Salemi
ট্রাম্পের পাশে ইসরায়েল
রাষ্ট্রীয় সফরে গ্রিসে থাকা ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সফর সংক্ষেপ করে দেশে ফেরত গেছেন৷ এয়ারপোর্টে সাংবাদিকদের নেতানিয়াহু বলেন, ‘‘যুক্তরাষ্ট্রের নিজেকে রক্ষার অধিকার রয়েছে৷ ট্রাম্প দক্ষভাবে সে কাজটিই করেছেন৷ ইসরায়েল ট্রাম্পের পাশে আছে৷’’
ছবি: picture-alliance/dpa/AP/Y. Karahalis
10 ছবি1 | 10
২০০৩ সালে ইরাক যুদ্ধের সময় সাদ্দাম বিরোধী জঙ্গি গোষ্ঠীগুলিকেও মদত দিয়েছিলেন কাসিম৷ সরকারের পতনের পর এক দিকে যখন অ্যামেরিকা সেখানে নতুন সরকার গঠনের প্রস্তুতি নিচ্ছে, তখন গোটা দেশে ইরানের প্রভাব তৈরির মূল কারিগর ছিলেন কাসিম৷ এবং সফল ভাবে তা করতেও পেরেছিলেন৷ এতটাই যে, ইরাকের ভূখণ্ডেও মার্কিন ঘাটিতে হামলা হলে অ্যামেরিকা ইরানের বিরুদ্ধে ফুঁসে ওঠে৷ গত সপ্তাহে তেমনই এক ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ইরানের সঙ্গে প্রক্সি যুদ্ধ শুরু হয়েছিল অ্যামেরিকার৷ যার জেরে নিহত হলেন কাসিম৷
বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, মধ্য প্রাচ্যে আজ ইরানের যে দাপট, তা একা হাতে তৈরি করেছেন কাসিম৷ ২০০৭-০৮ সালে সরাসরি মার্কিন প্রতিরক্ষা দফতরে চিঠি লিখে তিনি বলেছিলেন, 'ভুলে যাবেন না, এই ভূখণ্ডে এখনও কাসিম সুলেইমানি আছেন৷ তিনি শুধু ইরান নয়, ইরাক, লেবানন, ইরাক এবং সিরিয়ার পররাষ্ট্র নীতিও দেখভাল করেন৷ গাজা, প্যালেস্তাইন পর্যন্ত তাঁর যাতায়াত আছে৷' ২০০৮ সালে অ্যামেরিকা কাসিমকে 'সব চেয়ে বড় শয়তান' বলে চিহ্নিত করে৷
কাসিম সুলেইমানিকে হত্যা করতে পারা অ্যামেরিকার সাময়িক জয় তো বটেই৷ বহু দিন ধরেই তিনি মার্কিন লক্ষ্য ছিলেন৷ কিন্তু তাঁর মৃত্যু মধ্য প্রাচ্যে অ্যামেরিকার প্রভাব বাড়াতে পারবে কি? বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, অদূর ভবিষ্যতে কী হবে বলা মুশকিল৷ তবে সুলেইমানির হত্যা সহজে ভুলবে না ইরান এবং পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্রগুলির ইরান প্রভাবিত গোষ্ঠীগুলি৷ অ্যামেরিকার বিরুদ্ধে এর বদলা তারা নেবেই৷ যা আর প্রক্সি যুদ্ধ নয়, বড় সড় যুদ্ধের সম্ভাবনা তৈরি করবে৷ আন্তর্জাতিক কূটনীতি তা কী ভাবে থামাতে পারে, সেটাই এখন দেখার৷
এসজি/কেএম (দ্য গার্ডিয়ান, রয়টার্স, আল জাজিরা)
ইরাকে ইরান-মার্কিনি প্রক্সি লড়াই
ইরাকের বাগদাদে মিলিশিয়ার মার্কিন দূতাবাসে হামলা চালানোকে কেন্দ্র করে ইরান-মার্কিন উত্তেজনা আবার চরমে পৌঁছেছে৷ বিক্ষোভকারীরা দূতাবাসের সামনে থেকে সরে গেলেও ট্রাম্প-রোহানির পালটাপালটি হুঁশিয়ারিতে ঠাণ্ডা লড়াই চলমান৷
ছবি: Imago/UPI//Imago/Russian Look
বিক্ষোভের কারণ
কিরকুকে রকেট হামলায় মার্কিন এক ঠিকাদার নিহত হওয়ার প্রতিক্রিয়ায় ২৯ ডিসেম্বর ইরাক ও সিরিয়ায় সশস্ত্র গোষ্ঠী কাতাইব হিজবুল্লাহর ৫টি ঘাঁটিতে বিমান হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র। এতে ২৫ জন মিলিশিয়া মারা যান৷ গোষ্ঠীটি ইরানের ঘনিষ্ঠ বলে মনে করা হয়৷ একে ইরাকের সার্বভৌমত্বের লঙঘন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছিল ইরাকও৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo
সরকারের প্রতিক্রিয়া
ইরাক সরকারও এ হামলার ব্যাপক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে৷ প্রধানমন্ত্রী আদেল আবদুল মাহদি নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, এ ঘটনা ইরাককে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের ‘প্রক্সি ওয়ারের’ কেন্দ্রে ঠেলে দিয়ে উপসাগরীয় দেশটিকে আরও সংকটে ফেলতে পারে। মার্কিন নেতৃত্বাধীন ইসলামিক স্টেটবিরোধী আন্তর্জাতিক জোটে অবস্থান পুনর্বিবেচনায় বাধ্য করতে পারে বলে সতর্কও করেছে ইরাকের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ।
ছবি: picture-alliance/AP Photo/A. A. Hassan
তাহরির স্কয়ারে বিক্ষোভ
৩১ ডিসেম্বর কয়েক হাজার মানুষ পতাকা হাতে জড়ো হন প্রায় সব আন্দোলনের কেন্দ্র তাহরির স্কয়ারে৷ সেখানে তারা যুক্তরাষ্ট্র বিরোধী স্লোগান দেন এবং মার্কিন অভিযানের নিন্দা জানান৷
ছবি: Reuters/T. Al-Sudani
গ্রিন জোনে প্রবেশ
এক পর্যায়ে কয়েক হাজার ইরাকি বাগদাদের ইরাকের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত সুরক্ষিত কূটনৈতিক এলাকা গ্রিন জোনে ঢুকে পড়েন৷ সেখানে তারা বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে থাকেন৷
ছবি: Reuters/T. al-Sudani
নিষ্ক্রিয় ইরাকি বাহিনী
গ্রিন জোনের নিরাপত্তায় ইরাকী আইনশৃঙ্খলা বাহিনি নিয়োজিত থাকলেও বিক্ষোভকারীদের তারা আটকাননি বলে অভিযোগ রয়েছে৷ ফলে নিরাপত্তা বেষ্টনী পেরিয়ে সহজেই জনতা মার্কিন দূতাবাসের সামনে অবস্থান নিতে পারে৷ সেখানে তারা মার্কিন পতাকাতেও আগুন ধরিয়ে দেয়৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/A. A. Hassan
ভাংচুর, হামলা
কিছু বিক্ষোভকারী এসময় দূতাবাসের সামনে থাকা গাড়িতে ভাংচুর চালায়৷ গাড়িতে আগুনও ধরিয়ে দেয়া হয়৷
ছবি: AP/K. Mohammed
দূতাবাসে প্রবেশের চেষ্টা
এক পর্যায়ে কিছু বিক্ষোভকারী দেয়াল টপকে দূতাবাসের ভেতরে ঢুকে পড়ার চেষ্টা চালান৷ এসময় দূতাবাসের নিরাপত্তায় নিয়োজিত মার্কিন বাহিনী ব্যারিকেড তৈরি করে বিক্ষুব্ধদের আটকানোর চেষ্টা করে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/AA/M. Sudani
নাশকতার চেষ্টা
ভেতরে ঢুকতে না পেরে দূতাবাসের দেয়ালে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়৷ দূতাবাসে বাড়তে থাকে বিক্ষোভকারীদের ভিড়৷ মার্কিন আগ্রাসনের প্রতিবাদ জানিয়ে বাগদাদের বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ জড়ো হতে থাকেন দূতাবাসের সামনে৷
ছবি: Reuters/T. al-Sudani
অভ্যর্থনাকেন্দ্রে ভাংচুর
আরো বিক্ষোভকারী জড়ো হওয়ায় এক পর্যায়ে কিছু ইরাকি দুতাবাসের মধ্যে ঢুকে পড়তে সমর্থ হন৷ তারা অভ্যর্থনাকেন্দ্র তছনছ করে আগুন ধরিয়ে দেন ও ভাংচুর চালায়৷ দূতাবাসের কর্মকর্তারা ভেতরে আটকা পড়েন৷
ছবি: picture-alliance/dpa/AP/K. Mohammed
মেরিন সেনা
দূতাবাস আক্রান্তের খবর পেয়ে দ্রুতই পার্শ্ববর্তী ঘাঁটি থেকে মেরিন সেনা পাঠানো হয়৷ তারা এসে স্টান গ্রেনেড ও টিয়ার সেল নিক্ষেপ করে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে সক্ষম হয়৷
ছবি: Reuters/T. al-Sudani
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে
অবশেষে এক পর্যায়ে বিক্ষোভকারীরা দূতাবাস এলাকা থেকে বের হয়ে বাইরে অবস্থান নেন৷ পুরোটা সময় নিষ্ক্রিয় থাকা ইরাকি বাহিনী এসময় ব্যারিকেড তৈরি করে৷ দীর্ঘক্ষণ ধরে জ্বলতে থাকা আগুন নেভাতে তৎপর হয় দমকল কর্মীরা৷
ছবি: picture-alliance/AP/K. Mohammed
ইরানকে ট্রাম্পের হুমকি
ঘটনার জন্য ইরানকে দায়ী করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ‘‘কোনো প্রাণহানি বা আমাদের কোনো ক্ষয়ক্ষতি হলে তার জন্য ইরানই দায়ী থাকবে৷ সেজন্য তাদের চড়া মূল্য দিতে হবে৷ এটা কোনো সতর্কবার্তা নয়, এটা হুমকি৷
ছবি: Getty Images/D. Angerer
খামেনির জবাব
ট্রাম্পের হুমকির তাৎক্ষণিক জবাব দিয়েছেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতোল্লাহ আলী খামেনি৷ তিনি বলেন, ‘‘ওই লোক (ট্রাম্প) নাকি টুইট করে বলেছে, ‘বাগদাদের ঘটনার জন্য আমরা ইরানকে দায়ী মনে করি এবং আমরা ইরানকে এর জবাব দেবো৷' আপনারা কিছুই করতে পারবেন না৷''
ছবি: AFP/Iranian Presidency
বাড়ছে নিরাপত্তা
হামলার ঘটনার পর বাগদাদে দূতাবাসে নিরাপত্তা বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে যুক্তরাষ্ট্র৷ মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব মার্ক এসপার জানিয়েছেন, ৭৫০ জন সেনা তৈরি রয়েছে৷ কয়েক দিনের মধ্যেই তাদের দূতাবাস ও আশেপাশের এলাকায় মোতায়েন করা হবে৷