১৪ এপ্রিল থেকে ‘কঠোর লকডাউনের’ মধ্যে জরুরি সেবা প্রতিষ্ঠান ছাড়া সরকারি-বেসরকারি সব অফিস বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ও জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন৷
বিজ্ঞাপন
ডয়চে ভেলের কন্টেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে শুক্রবার জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে এবার কঠোর লকডাউনে যাচ্ছে সরকার৷ সংক্রমণ রোধে সবাইকে এর আওতায় আনার পরিকল্পনা রয়েছে ৷ এক সপ্তাহের লকডাউন শেষের আগের দিন ‘রোববারের মধ্যে কঠোর লকডাউনের’ প্রজ্ঞাপন জারি করার পরিকল্পনার কথা জানান তিনি৷
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরও প্রায় একই কথা বলেন৷ শুক্রবার সরকারি বাসভবনে করা এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ভয়াবহ রূপ নেওয়ায় এবং জনগণের অবহেলা ও উদাসীনতার কারণে সরকার ১৪ এপ্রিল থেকে এক সপ্তাহের সর্বাত্মক লকডাউন’ দেওয়ার পরিকল্পনা করছে৷
বৃহস্পতিবার করোনাভাইরাস সংক্রমণে ৭৪ জনের মৃত্যুর সংবাদের পর মহামারি থেকে মানুষকে বাঁচাতে সামনে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হতে পারে বলে সতর্ক করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৷
এর আগে গত রোববার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে জারি করা এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনে ১১ দফা নিষেধাজ্ঞায় সরকারি-বেসরকারি অফিস-আদালত, ব্যাংক জরুরি প্রয়োজনে সীমিত পরিসরে খোলা রাখার সুযোগ দেওয়া হয় ৷
পহেলা বৈশাখ ও রোজার আগে দোকান-পাট খুলতে কয়েকদিন ধরেই বিক্ষোভ চালিয়ে আসছিলেন দোকান মালিক ও কর্মচারীর৷
দাবির মুখে বৃহস্পতিবার ‘কঠোর স্বাস্থ্যবিধি’ প্রতিপালনসাপেক্ষে লকডাউনের মধ্যেও দোকানপাট ও শপিংমলও খোলা রাখার সিদ্ধান্ত দেয় সরকার৷
তাই ৯ এপ্রিল থেকে ১৩ এপ্রিল সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত দোকানপাট ও শপিংমল খোলা রাখা যাবে ৷
এনএস/এসিবি (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)
বাংলাদেশে করোনা টিকার দ্বিতীয় ডোজ শুরু
দেশব্যাপী করোনা টিকার দ্বিতীয় ডোজ দেয়া শুরু হয়েছে। ৭ ফেব্রুয়ারি গণটিকাদান শুরুর পর থেকে ডোজের টিকা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নিয়েছেন ৫৫ লাখ ৬৮ হাজার ৭০৩ জন। দ্বিতীয় ডোজের পাশাপাশি প্রথম ডোজও চলছে। ছবিঘরে বিস্তারিত...
ছবি: Mortuza Rashed/DW
প্রথম ডোজ অব্যাহত আছে
প্রথম ডোজের টিকা প্রয়োগ ৬ এপ্রিল শেষ হলেও যারা নিবন্ধন করেছেন কিন্তু টিকা দিতে পারেননি, তারা টিকা দিতে পারবেন। এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, “ ৮ এপ্রিল শুরু হওয়া দ্বিতীয় ডোজ প্রয়োগের পাশাপাশি প্রথম ডোজের টিকা নেওয়ার কার্যক্রমও চালু থাকবে৷”
বাংলাদেশে ভারতের সেরাম ইন্সটিটিউটে তৈরি অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা ‘কোভিশিল্ড’ দেওয়া হচ্ছে৷
ছবি: Mortuza Rashed/DW
অধিকাংশই এসেছেন দ্বিতীয় ডোজ নিতে
শহীদ সোহরাওয়ার্দি হাসপাতাল, জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটসহ আরো বেশ কয়েকটি টিকাকেন্দ্র ঘুরে দেখা যায়, আগতদের অধিকাংশই দ্বিতীয় ডোজের জন্য এসেছেন। একজন কর্মকর্তা জানান, এখন যারা দ্বিতীয় ডোজের জন্য এসেছেন, তারা সবাই ফেব্রুয়ারির ৭,৮,৯ তারিখে প্রথম ডোজ টিকা দিয়েছেন।
ছবি: Mortuza Rashed/DW
প্রথম ডোজের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সামান্য
জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউটের সাবেক চিকিৎসক মো. আবুল কাশেম স্ত্রীসহ এসেছেন দ্বিতীয় ডোজ নিতে। প্রথম ডোজের অভিজ্ঞতা জানতে চাইলে তিনি বলেন, “সামান্য জ্বর এবং হাতব্যথা ছাড়া তেমন কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছিল না আমার৷”
ছবি: Mortuza Rashed/DW
মার্চে আসেনি
জানুয়ারি থেকে পরবর্তী ৬ মাসে ৫০ লাখ করে মোট ৩ কোটি ডোজ টিকার চালান আসার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত চালান এসেছে ৫০ লাখ। শেষ ২০ লাখ ডোজের চালান এসেছে ফেব্রুয়ারির ২২ তারিখে। মার্চে কোনো চালান আসেনি। এদিকে করোনার ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণে ভারতে উৎপাদিত টিকা আমদানি বন্ধ করেছে দেশটির সরকার।
ছবি: Mortuza Rashed/DW
অসন্তোষ
দ্বিতীয় ডোজের প্রথম দিনে জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউটে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে ফটোকপির জন্য লাইনে দাঁড়িয়েছেন টিকাগ্রহীতারা। একজন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ফটোকপির কথা আগে আমাদের জানানো হলে আমরা সেটি নিয়েই টিকাকেন্দ্রে আসতাম। এতদিন পরে এসেও এমন অব্যবস্থাপনা মানা যায় না।
ছবি: Mortuza Rashed/DW
শিক্ষকদের টিকাদান
গত বছরের মার্চের ১৭ তারিখ থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ। সরকার ঘোষণা করেছে, ঈদের পর থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হবে। শিক্ষকরা সে ক্ষেত্রে যেন নিরাপদে থাকেন, তাই তাদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নিবন্ধনের কার্যক্রম শুরু করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
ছবি: Mortuza Rashed/DW
ভ্যাকসিন পাসপোর্ট
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্বিতীয় ডোজের টিকা নিতে আসা আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা ভ্যাকসিন পাসপোর্ট দেওয়ার ব্যাপারে প্রযুক্তিগত প্রস্তুতি নিয়েছি। যেহেতু বিদেশে যেতে কোভিডমুক্তি বা ভ্যাকসিনের সার্টিফিকেট লাগে, সুতরাং আমরা এটি চালু করতে পারলে টিকাগ্রহীতারা উপকৃত হবেন।’’
ছবি: Mortuza Rashed/DW
পৃথক টিকা বুথ
জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউটের জরুরি বিভাগে গিয়ে দেখা গেল সেখানে বয়স্ক, মুক্তিযোদ্ধা এবং অসুস্থ ব্যক্তিদের জন্য আলাদা কক্ষে টিকা প্রয়োগের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এই উদ্যেগের প্রশংসা করেছেন টিকা নিতে আসা ব্যক্তিরা।
ছবি: Mortuza Rashed/DW
পর্যাপ্ত মজুদ আছে?
করোনা টিকার দ্বিতীয় ডোজের পর্যাপ্ততা নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক ডা. মীরজাদি সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, “যারা প্রথম ডোজ দিয়েছেন, তাদের সবাইকে দ্বিতীয় ডোজ দেওয়ার মতো টিকা আমাদের নেই।’’ এদিকে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, “ ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজ পাওয়া নিয়ে কোনো সংশয় নেই।’’
ছবি: Mortuza Rashed/DW
টিকা নিয়েও পজিটিভ
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. হাশিম রেজা করোনা টিকার প্রথম ডোজ ফেব্রুয়ারির ৭ তারিখে নেওয়ার পর মার্চের ২৪ তারিখেই করোনা পজিটিভ হন। এ বিষয়ে তিনি বলেন, “আমার পরিচিত বেশ কয়েকজন চিকিৎসক ভ্যাকসিন নেওয়ার পরেও করোনা পজিটিভ হয়েছেন। তবে টিকা নেওয়ার কোনো বিকল্প নেই, কারণ, টিকা নেওয়ার ফলে সংক্রমণ পরবর্তী জটিলতা অনেকাংশে কমে যায়।’’