ভারতে আকছারই ঘটছে কন্যাসন্তানের জন্মদানে বধূ নির্যাতন৷ এ নিয়ে আন্দোলন হয়নি, রাজনৈতিক দলগুলি পুরুষতান্ত্রিক সমাজের কুশ্রী মানসিকতা বদলাতে আসেনি এগিয়ে৷ মোদীর ‘বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও' স্রেফ একটা শব্দবন্ধ হয়ে রয়ে গেছে৷
বিজ্ঞাপন
পুত্রসন্তান ভূমিষ্ট হলে পরিবারে আকাশছোঁয়া আনন্দ৷ কন্যাসন্তান হলে সবার মুখ ব্যাজার৷ মেয়ে মানেই সংসারে বোঝা৷ আর ছেলে বংশরক্ষা করবে, রোজগার করবে, পরিবারে সবার অন্ন জোগাবে আর বৃদ্ধ বয়সে পরিবারের দায়দায়িত্ব সামলাবে৷ এই বস্তাপচা মানসিকতা সমাজে আজও বদ্ধমূল৷
সেকালের কথা আলাদা৷ মেয়েদের শিক্ষার ছিল নগণ্য৷ কিন্তু এখন? সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সমাজ কি পালটায়নি? কেন পালটায়নি? শিক্ষা-দীক্ষা আর মেধায় মেয়েরা আজ কত এগিয়ে গেছে৷ রোজগার করছে, ঘরে-বাইরে জীবনের প্রতিটি স্তরে তাঁদের প্রতিভার স্বাক্ষর জ্বলজ্বল করছে৷ তবু জোর গলায় বলা যাচ্ছে না – হ্যাঁ, পালটেছে বৈকি৷ রুঢ় বাস্তব বলছে সামাজিক কাঠামোটা মোটামুটি একই রয়ে গেছে৷ হয়ত স্থানকাল ও পাত্রবিশেষে উনিশ-বিশ হতে পারে৷
বলিউড তারকা: যারা গর্ভ ভাড়া করে সন্তান নিয়েছেন
২০১৬ সালে লোকসভায় পাশ হওয়া বিল অনুযায়ী, ভারতে বিদেশি, সিঙ্গেল, সমকামী বা ‘লিভ-ইন পার্টনারদের’ সারোগেসির মাধ্যমে সন্তান নেয়া অবৈধ৷ তবে বিলটি এখনো আইন হয়নি বলে বলিউডের কয়েকজন তারকা ইতিমধ্যে গর্ভ ভাড়া করে সন্তান নিয়েছেন৷
ছবি: picture alliance/Dinodia Photo
করণ জোহর
এ তালিকায় সর্বশেষ নাম করণ জোহর৷ চলচ্চিত্র নির্মাতা করণ জোহর গত ৫ মার্চ নিজেই জানিয়েছেন দুই সন্তানের ‘বাবা’ হওয়ার খবর৷ তবে বিপরীত লিঙ্গের কাউকে বিয়ে করে তিনি জনক হননি৷ তাঁর পক্ষে তা হয়ত সম্ভবও নয়, কারণ, ৪৪ বছর বয়সি এই পরিচালক সমকামী৷ সারোগেসি বিল ভারতের রাজ্যসভায় পাশ হলেই তা আইনের মর্যাদা পাবে৷ আইন হয়ে গেলে করণ জোহর এভাবে সন্তান নিতে পারতেন না৷
ছবি: Getty Images/AFP/STR
তুষার কাপুর
বলিউডের সাবেক জনপ্রিয় নায়ক জিতেন্দ্র’র ছেলে তুষার কাপুর৷ তিনিও হিন্দি ছবির নায়ক৷ এবং তিনিও বিয়ে না করেই বাবা৷ প্রস্তাবিত আইনে ‘সারোগেট মাদার’-এর সহায়তায় ‘সিঙ্গেল ফাদার’ হওয়াও অবৈধ৷ কিন্তু তুষারও সন্তান নিয়েছেন আইন হওয়ার আগে৷ এতদিন তিনিই ছিলেন বলিউডের একমাত্র ‘সিঙ্গেল ফাদার’৷
ছবি: STRDEL/AFP/Getty Images
শাহরুখ খান
‘বলিউড কিং’ শাহরুখ খান আর তাঁর স্ত্রী গৌরী খানের এমনিতেই দুই সন্তান ছিল৷ তারপরও ২০১৩ সালে তাঁরা গর্ভ ভাড়া করে তৃতীয় সন্তান নেন৷ সেই সন্তানের নাম আবরাম৷ সন্তান নিতে শারীরিকভাবে সক্ষম কোনো দম্পতির সারোগেট মাদারের মাধ্যমে সন্তান নেয়া প্রস্তাবিত আইন অনুযায়ী অবৈধ৷ সারোগেসি বিলটি এখনো আইন হয়নি বলেই ‘কিং খান’-ও গর্ভ ভাড়া আবরামের বাবা হতে পেরেছেন৷
ছবি: picture alliance/Dinodia Photo
আমীর খান
আমীর খান বিবাহিত এবং তিনিও শারীরিকভাবে সন্তান জন্ম দেয়ায় সক্ষম৷ আগের স্ত্রীর ঘরে তাঁর দু’টি সন্তান রয়েছে৷ ফলে প্রস্তাবিত আইন অনুযায়ী তাঁরও ‘সারোগেট চাইল্ড’ নিতে পারার কথা নয়৷ কিন্তু বর্তমান স্ত্রী কিরণ রাও একাধিকবার গর্ভ ধারণে ব্যর্থ হওয়ায় ২০১১ সালে আমীরও সন্তান নিয়েছেন এভাবে৷ তাঁদের ‘সারোগেট চাইল্ড’-এর নাম আজাদ৷
ছবি: STRDEL/AFP/Getty Images
সোহেল খান
সালমান খানের ছোট ভাই সোহেল খান সারোগেট মাদারের মাধ্যমে জনক হয়েছেন ২০০০ সালে৷ তার আগেও তাঁর দু’টি সন্তান ছিল৷ স্ত্রী সীমা খানের গর্ভের দুই সন্তানের পরও গর্ভ ভাড়া করে নির্ভানাকে পান তাঁরা৷
ছবি: AP
5 ছবি1 | 5
এই লিঙ্গ বৈষম্য শুরু হয়ে যায় কন্যাসন্তানের জন্মলগ্ন থেকেই৷ খাওয়া-পরা, পুষ্টি, যত্ন-পরিচর্যা – সবদিক থেকেই কন্যাসন্তান যেন অবহেলার পাত্রী৷ এরই চরম পরিণতি কন্যাভ্রুণ হত্যা অথবা কন্যা ভূমিষ্ট হবার পর তাকে পরিত্যাগ করা৷ আল্ট্রাসাউন্ড করে গর্ভস্থ শিশুর লিঙ্গ নির্ধারণ সরকারিভাবে নিষিদ্ধ হলেও, একটা পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে যে, ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্যে বছরে চার হাজারেরও বেশি কন্যাভ্রুণ হত্যা করা হচ্ছে৷ এখনও প্রত্যন্ত গ্রামে সন্তান ভূমিষ্ট হয় ঘরেই৷ তাই তাঁদের রেকর্ড অজানাই থেকে যায়৷ শুধু তামিলনাড়ুতেই নয়, ভারতের অন্যান্য রাজ্যেও ছবিটা মোটামুটি একরকম৷ আকছারই ঘটছে কন্যাসন্তানের জন্ম দেওয়ায় বধূ নির্যাতন৷
চারপাশে নজর দিলেই উঠে আসে কত ঘটনা৷ এই তো কিছুদিন আগে পশ্চিমবঙ্গের এক গ্রামে রুবিনা বিবিকে বিষ খাইয়ে মেরে ফেলে তাঁর শ্বশুরবাডির লোকেরা৷ কেন? কারণ আল্ট্রাসাউন্ড করে তাঁর স্বামী জানতে পেরেছিলেন রুবিনার গর্ভে কন্যাসন্তান আছে৷ স্ত্রীকে গর্ভপাত করাতে বলে কাজ হয় না৷ স্ত্রী রাজি না হলে স্বামী তাঁর বাপের বাড়ি থেকে একলক্ষ টাকা আনতে বলেন৷ সেটাও সম্ভব না হওয়ায়, স্ত্রীর গলায় জোর করে তরল বিষ ঢেলে দেন স্বামী৷ পশুরাও বুঝি লজ্জা পাবে এই আচরণে৷ আরো আছে৷ পর পর তিনবার কন্যা সন্তানের জন্ম দেওয়ায় স্ত্রীকে ঘর থেকে বের করে দেওয়া হয়, হচ্ছে৷ যেন কন্যাসন্তানের জন্য বৌ একাই দায়ী৷ বারবার মেয়ে হওয়ায় শেষে নবজাত কন্যাকে কাঁথায় মুড়ে ঝোপের মধ্যে ফেলে আসে হতভাগ্য নবজাতকের পরিবার৷ শিয়াল-কুকুর খাবার আগেই ভাগ্যক্রমে কোনো পথচারী শিশুটিকে উদ্ধার করে হোমে দিয়ে আসে৷ এর থেকেও বিভত্স ঘটনা রয়েছে৷
‘ভারতের রাজনীতিতে এই ইস্যুটি নেই’
যেমন নবজাত কন্যাসন্তানকে জ্যান্ত কবর দিয়ে আসে বাড়ির লোকজন৷ শিশুর কান্না এবং নড়াচড়া কারোর চোখে পড়ায় সে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়৷ আল্ট্রাসাউন্ড আসার পর কন্যাভ্রুণ হত্যার হার যেন বেড়ে গেছে৷ দিল্লিতে প্রতি হাজার ছেলের তুলনায় মেয়ের আনুপাতিক হার ৯৭৯, মহারাষ্ট্রে ৮৯৪, পাঞ্জাবে ৮৪৬ আর গুজরাটে ৮৯০৷
ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সোশ্যাল সায়েন্সের অধ্যাপক বুদ্ধদেব ঘোষ এর পেছনে আর্থিক কারণটাকে প্রধান বলে মনে করেন না৷ ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেন, দেশের যে দু'টি রাজ্য আর্থিক দিক থেকে এগিয়ে সেই পাঞ্জাব এবং হরিয়ানা রাজ্যে লিঙ্গ ব্যবধান, যাকে বলে সেক্স রেশিও, তার তারতম্য সবথেকে বেশি৷ কারণ কন্যাভ্রুণ হত্যা সেখানে বেশি হয়৷ মূলত এটা একটা সাংস্কৃতিক ইস্যু৷ এ নিয়ে যে সামাজিক আন্দোলন হয়নি বা হচ্ছে না, তা নয়৷ রামমোহন রায়ের সতীদাহ প্রথা নিবারণ থেকে যা শুরু হয়, তা এখনো চলছে অন্যভাবে৷ তবে একথা ঠিক যে, ভারতের রাজনীতিতে এই ইস্যুটি নেই৷ সংসদে মহিলাদের জন্য আসন সংরক্ষণ বিলটি দীর্ঘদিন ধরে আটকে আছে রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাবে৷ প্রধানমন্ত্রী মোদী অবশ্য এ বিষয়ে কিছুটা উদ্যোগ নিলেও, অন্যান্য নেতারা অনাগ্রহী৷ আরজেডি নেতা লালু প্রসাদ তো সামনাসামনি বলেছেন, মহিলারা আবার রাজনীতিতে কেন? সমাজবাদী পার্টির মুলায়েম সিং যাদবেরও একই মত৷ অন্য সব রাজনৈতিক দলগুলি মুখে কিছু না বললেও মনে মনে তারাও চায় না যে সংসদে মহিলাদের জন্য রিজার্ভেশন থাক৷
যেখানে নারীরা দেশ শাসন করেন
বিশ্বের স্বাধীন রাষ্ট্রের সংখ্যা ১৯৫টি৷অধিকাংশ দেশই শাসন করছেন পুরুষরা৷ তবে, নারী সরকারপ্রধান বা রাষ্ট্রপ্রধানের সংখ্যা হাতেগোনা হলেও যারা আছেন তারা বেশ ক্ষমতাধর৷ চলুন দেখে নিই তাঁদের৷
ছবি: picture-alliance/dpa/O.Hoslet
আঙ্গেলা ম্যার্কেল
বর্তমানে ৬২ বছর বয়সি জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল সরকারপ্রধান হিসেবে প্রথম নিয়োগ পান ২০০৫ সালে৷ তিনিই জার্মানির প্রথম নারী সরকার প্রধান৷ চতুর্থবারের মতো এই পদে থেকে যেতে পারেন তিনি৷ সাবেক পূর্ব জার্মানিতে বেড়ে ওঠা এক যাজকের মেয়ে ম্যার্কেল রসায়নে পিএইচডি ডিগ্রি নিয়েছিলেন৷ টাইম ম্যাগাজিন তাঁকে ২০১৫ সালে ‘‘পারসন অফ দ্য ইয়ার’’ ঘোষণা করে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/O.Hoslet
টেরেসা মে
টেরেসা মে হচ্ছেন মার্গারেট থ্যাচারের পর যুক্তরাজ্যের দ্বিতীয় নারী প্রধানমন্ত্রী৷ ৬০ বছর বয়সি সাবেক এই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী গত বছরের জুলাইয়ে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেন৷ ঐতিহাসিক ব্রেক্সিট গণভোটের পক্ষে সে দেশের জনগণ রায় দেয়ার পর তিনি ক্ষমতায় আসেন৷ তিনি ঠিক কতদিন ক্ষমতায় থাকতে পারেন তা নিয়ে অবশ্য প্রশ্ন রয়েছে৷ চলতি মাসে অনুষ্ঠেয় নির্বাচনে হারলে তাঁকে বিদায় নিতে হতে পারে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/H. Tyagi
সাই ইং-ভেন
সাই ইং-ভেন হচ্ছেন ‘রিপাবলিক অফ চায়না’ বা তাইওয়ানের প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট৷ ২০১৬ সালের মে মাসে তিনি দায়িত্ব গ্রহণের পর দ্বীপটির সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে বেইজিং, কেননা চীন মনে করে দ্বীপটি স্বাধীন নয়৷ তবে সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে সে দেশের কাছে নতি স্বীকার করবেন না বলে পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন সাই৷
ছবি: Reuters/T. Siu
এলেন জনসন সার্লিফ
৭৮ বছর বয়সি এই নারী ২০০৬ সাল থেকে লাইবেরিয়ার রাষ্ট্রপতি৷ তিনি আফ্রিকার প্রথম নারী রাষ্ট্রপ্রধান৷ ২০১১ সালে সার্লিফ এবং লাইবেরিয়া ও ইয়েমেনের আরো দুই নারী শান্তিতে নোবেল পুরষ্কার জয় করেন৷ অহিংস পথে নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার সংগ্রাম এবং শান্তিপ্রক্রিয়ায় নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করায় এই সম্মাননা দেয়া হয় তাঁদের৷
ছবি: Reuters/N. Kharmis
দালিয়া গ্রেবাউসকাইতি
লিথুনিয়ার প্রথম নারী রাষ্ট্রপ্রধান দালিয়া গ্রেবাউসকাইতি৷ কারাতে ব্লাক বেল্ট থাকায় এবং কথাবার্তায় কঠোর মনোভাব প্রকাশ করায় তাঁকে অনেকেই ‘আয়রন লেডি’ বলেন৷ ৬১ বছর বয়সি গ্রেবাউসকাইতি ২০০৯ সালে প্রথমে দায়িত্ব নেন এবং ২০১৪ সালে পুনরায় নির্বাচিত হন৷
ছবি: Reuters/E. Vidal
এর্না সোলব্যার্গ
নরওয়ের সরকারপ্রধানও একজন নারী৷ ২০১৩ সালে দ্বায়িত্ব পান তিনি৷ তবে সোলব্যার্গ দেশটির দ্বিতীয় নারী প্রধানমন্ত্রী৷ রাজনৈতিক আশ্রয় বিষয়ে কঠোর নীতির কারণে তাঁকে ‘আয়রন এর্না’ বলা হয়ে থাকে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/V. Wivestad Groett
বেয়াটা শিডউয়ো
পোল্যান্ডের তৃতীয় নারী প্রধানমন্ত্রী বেয়াটা শিডউয়ো৷ ২০১৫ সালের নভেম্বর থেকে দায়িত্বে আছেন তিনি৷ প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আগে তিনি মেয়র এবং সংসদ প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন৷
ছবি: picture-alliance/W. Dabkowski
সারা কুগোনগেলওয়া-আমাথিলা
নামিবিয়ার চতুর্থ প্রধানমন্ত্রী সারা কুগোনগেলওয়া-আমাথিলা ২০১৫ সাল থেকে দায়িত্ব পালন করছেন৷ তরুণ বয়সে সিয়েরা লিয়নে রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়েছিলেন তিনি৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ শেষে ১৯৯৪ সালে দেশে ফেরেন ৪৯ বছর বয়সি এই নারী৷ তিনি সে দেশের প্রথম নারী সরকারপ্রধান৷
ছবি: Imago/X. Afrika
মিশেল বাচিলেট
২০১৪ সাল থেকে দায়িত্বে রয়েছেন চিলির প্রেসিডেন্ট মিশেল বাচিলেট৷ তবে এটাই তাঁর প্রথমবারের মতো প্রেসিডেন্ট হওয়া নয়৷ সে দেশের প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট হিসেবে ২০০৬ থেকে ২০১০ অবধিও দায়িত্ব পালন করেছিলেন তিনি৷
ছবি: Getty Images/AFP/C. Reyes
শেখ হাসিনা ওয়াজেদ
ফোর্বস ম্যাগাজিনে ২০১৬ সালে প্রকাশিত বিশ্বের ১০০ ক্ষমতাশালী নারীর মধ্যে স্থান পেয়েছিলেন বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা৷ ২০০৯ সাল থেকে জনসংখ্যার বিচারে বিশ্বের অষ্টম বৃহত্তম রাষ্ট্রটি শাসন করছেন তিনি৷ তবে রাজনীতিতে তিনি আছেন কয়েক দশক ধরে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Bildfunk
কোলিন্দা গ্রাবার-কিটারোভিচ
৪৯ বছর বয়সি এই নারী ২০১৫ সালে ক্রোয়েশিয়ার প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগ অবধি সরকারের বিভিন্ন পদে, এমনকি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তাঁর দেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন৷ তিনি সেদেশের প্রথম নারী রাষ্ট্রপ্রধান৷
ছবি: Reuters/D. Sagolj
সালম চুবারবিশভিলি
জর্জিয়ার সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী দেশটির প্রথম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন৷ ২০১৮ সালের নভেম্বরে ৬০ শতাংশ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন তিনি৷
ছবি: Reuters/D. Mdzinarishvili
12 ছবি1 | 12
এই প্রসঙ্গের রেশ টেনে ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সোশ্যাল সায়েন্সের আপর এক অধ্যাপক দেবদাস ভট্টাচার্য ডয়চে ভেলেকে বলেন, পিতৃতান্ত্রিক ব্যবস্থা শুধু ভারতেই নয়, গোটা দুনিয়াতেই আছে৷ তবে ভারতে কন্যাসন্তানের প্রতি বৈষম্যের একটা বড় কারণ সম্ভবত পণপ্রথা৷ শহরে পণপ্রথার প্রকৃতি কিছুটা বদলালেও সর্বত্র সেটা দেখা যায় না৷ পণপ্রথা বেআইনি হলেও তা কার্যকর করতে সরকার গা করে না৷ চরম নির্যাতন বা বধূ হত্যা বা আত্মহত্যা পর্যন্ত না গড়ালে পুলিশ প্রশাসন নীরব দর্শকই থাকে৷ অথচ এতবড় একটা সামাজিক ব্যাধি নিয়ে বড় কোনো আন্দোলন তৈরি হচ্ছে না৷ রাজনৈতিক দলগুলি এই ইস্যু নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছে না, পাছে ভোটব্যাংকে টান পড়ে৷
প্রধানমন্ত্রী মোদী নারী স্বশক্তিকরণের লক্ষ্যে ‘বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও' নামে একটা প্রকল্প হাতে নিয়েছেন৷ কিন্তু সেটা কত দূর সফল হয়েছে তা বলার সময় এখনও আসেনি৷ কন্যাসন্তান বোঝা – একমাত্র এই মানসিকতা সমাজের তৃণমূল স্তর থেকে মুছে ফেলতে পারলেই প্রধানমন্ত্রীর এই প্রকল্প সাফল্যের মুখ দেখতে পারবে৷
এ বিষয়ে আপনার কোনো মতামত থাকলে লিখুন নীচে মন্তব্যের ঘরে৷