1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

কন্যা শিশুরা ভালো নেই বাংলাদেশে

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
১১ অক্টোবর ২০১৬

বিশ্বে মোট জনসংখ্যার ১৫ ভাগ কন্যা শিশু৷ বাংলাদেশে মোট জনসংখার ১০ ভাগ৷ কিন্তু এই কন্যা শিশুরা নানা দিক দিয়ে এখনো অবহেলিত৷ তারা নিরাপত্তাহীনতা আর অপুষ্টির শিকার ঘরে বাইরে, সবখানে৷

Proteste gegen Gebühren in Schulen in Bangladesh
ছবি: DW

গত আগস্টে ঢাকায় উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী সুরাইয়া আখতার রিশাকে কুপিয়ে আহত করা হয় তার স্কুলের সামনে৷ পরে সে হাসপাতালে মারা যায়৷ কিন্তু আহত রিশাকে হাসপাতালে নেয়া তো দূরের কথা, স্কুল কর্তৃপক্ষ তাকে স্কুল চত্বরেও রাখতে দেয়নি৷ তারা তখন ঘটনাটিকে ‘ঝামেলা' মনে করেছে৷

তাকে হত্যার জন্য দায়ী করা হয়েছে ওবায়দুল নামে টেইলার্সের এক কর্মচারীকে৷ আর পোশাক বানাতে গিয়ে ওই কর্মচারীকে রিশার ফোন নাম্বার দিয়েছিলেন তার মা-বাবাই৷ তারা অজান্তেই রিশার নিরাপত্তাকে অবহেলা করেছেন৷

গত ১৫ এপ্রিল ঢাকার মিরপুরে ইভটিজিংয়ের শিকার হয়ে আত্মহত্যা করে জামেনা আক্তার নামে সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রী৷ ইভটিজিংয়ের বিরুদ্ধে আইন থাকার পরও তা থামছেনা৷

ঢাকার একটি স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী সাবেরা টিউলিপ ডয়চে ভেলেকে জানায়, ‘‘আমরা ঘরে-বাইরে সবখানেই এক ধরণের অবহেলা এবং নিরাপত্তাহীনতার শিকার৷ যে কোনো ঘটনার জন্য আমাদের দায়ী করার প্রবণতা স্পষ্ট৷ কেউ ইভটিজিংয়ের শিকার হলে তার জন্য আমাদের দায়ী করা হয়৷ আবার প্রতিবাদ করলে বলা হয়, আমরা কেন ঝামেলা করতে গেলাম৷''

এলিনা খান

This browser does not support the audio element.

টিউলিপ আরো বলে, ‘‘এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও আমরা নানাভাবে হয়রানি, নির্যাতন এবং নিপীড়নের শিকার হচ্ছি৷''

বাংলাদেশে এখন কন্যা শিশু এক কোটি ৬০ লাখ, যা মোট জনসংখ্যার শতকরা দশ ভাগ৷ দেশের বিভিন্ন জরিপ এবং গবেষণায় ১৫ থেকে ১৮-১৯ বছরের মেয়েরা গরুত্ব পায়৷ কিন্তু ১০ থেকে ১৪ বছর  বয়সি কন্যা শিশুরা কী অস্থায় আছে তার চিত্র পরিসংখ্যানে স্পষ্ট নয়৷ অথচ উপরে যে দু'টি উদাহরণ দেয়া হলো তাদের বয়স ১০ থেকে ১৪ বছরের মধ্যে৷

নারী  ও মানবাধিকার নেত্রী অ্যাডভোকেট এলিনা খান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘এই বয়সের কন্যা শিশুরা প্রধানত পরিবারে, রাস্তায় এবং স্কুলে নানা ধরণের নির্যাতনের শিকার হয়৷ তাদের ওপর যৌন নির্যাতনও করা হয়৷ তারা তা প্রকাশ করেনা৷ বা ভয়ে প্রকাশ করতে পারেনা৷''

পরিসংখ্যণ অনুযায়ী মাধ্যমিক পর্যায়ের স্কুলে ভর্তির দিক দিয়ে কন্যা শিশুরা এগিয়ে৷ আবার তাদের ড্রপ ‘আউট'ও বেশি৷ মাধ্যমিকে মেয়েদের অন্তর্ভূক্তি  ৬৪ ভাগ আর ছেলে ৫৭ ভাগ৷ কিন্তু ঝরে পড়া হিসেবে মেয়ে ৪৭ এবং ছেলে ৩৫ ভাগ৷ অন্যদিকে এই কন্যা শিশুরা কাজে অংশ গ্রহণের ক্ষেত্রেও ছেলেদের চেয়ে পিছিয়ে৷

জাতিসংঘের শিশু-বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফের তথ্য অনুযায়ী, বাল্যবিবাহের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ শীর্ষ স্থানীয় দেশগুলোর একটি৷ বাংলাদেশে ১৮ শতাংশ মেয়ের ১৫ বছর বয়সের মধ্যে বিয়ে হয়৷ ১৮ বছর বয়সের মধ্যে ৫২ শতাংশ মেয়ের বিয়ে হয়৷ ‘সেভ দ্য চিল্ড্রেন'-এর তথ্য অনুসারে, ১০ বছর বয়সি কন্যা শিশুদের অনেক বেশি বয়সি পুরুষদের সঙ্গে জোর করে বিয়ে দেওয়া হয়৷

মাহবুবা নাসরিন

This browser does not support the audio element.

এলিনা খান বলেন, ‘‘এই পরিসংখ্যান একটি ভয়াবহ তথ্য দেয়৷ আর তা হলো, মেয়েরা বাবার বাড়িতে যেমন  ঠিকমতো খাবার পায়না, তেমনি অল্প বয়সে বিয়ে হওয়ায় তারা শ্বশুর বাড়িতে গিয়েও নানা চাপে পড়ে৷ তারা নানা রোগে আক্রান্ত হয় এবং অপুষ্টি এবং শারীরিক সমস্যায় ভোগে৷''

তিনি বলেন, ‘‘আমরা শহরে আর গ্রামে ভিন্ন চিত্র দেখি৷ শহরে এখানো মেয়েদের দিয়ে ঘরকন্যার কাজ করানো হয়৷ আর শহরে আছে নানা হয়রানি৷ যদিও তারপরও মেয়েরা নানা ক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছে৷''

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং সমাজবিজ্ঞানী ড. মাহবুবা নাসরিন ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘নিরাপত্তার বিষয় থেকেই কন্যাশিশুর সব অবহেলা এবং নির্যাতনের শুরু৷ আর কন্যা শিশুকে শুরু থেকেই মেয়ে হিসেবে চিহ্নিত করা হয়৷ এই দৃষ্টিভঙ্গি এখানো তেমন পল্টায়নি৷''

সমাজবিজ্ঞানী ড. মাহবুবা নাসরিনের মতে,  ‘‘কন্যা শিশু জন্মের পর থেকেই প্রতিকূল অবস্থার মধ্য দিয়ে বেড়ে ওঠে৷ ফলে তার নিজের মানসিকতায়ও এক ধরণের অবদমন থাকে৷''

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ