1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

কমিটি গঠন নিয়ে আওয়ামী লীগে উত্তেজনা-সংঘর্ষ

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
১১ ডিসেম্বর ২০১৯

কেন্দ্রীয় সম্মেলনের আগেই আওয়ামী লীগের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের সম্মেলন ও কমিটি গঠন শেষ পর্যায়ে৷ তবে নতুন কমিটি নিয়ে আছে ক্ষোভ৷ সম্মেলনের সময় সংঘর্ষও হয়েছে বেশ কিছু এলাকায়৷

Bangladesch Wahlen Wahlkampf 2018 Awami Muslim League
ছবি: DW/M. Mostafigur Rahman

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সম্মেলন ২১ ও ২২ ডিসেম্বর৷ সর্বশেষ সম্মেলন হয়েছে ২০১৬ সালে৷ মূলত সাধারণ সম্পাদক কে হচ্ছেন তা এখন আওয়ামী লীগে মূল আলোচনায় পরিণত হয়েছে৷

কেন্দ্রীয় সভাপতি পদে কোনো পরিবর্তন যে আসবে না তা নিশ্চিত৷ তবে সাধারণ সম্পাদক পদে পরিবর্তন আসতে পারে৷ বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের কথায় তার ইঙ্গিত পাওয় যায়৷ তিনি মঙ্গলবারও বলেছেন, ‘‘নেত্রী যদি সাধারণ সম্পাদক পদে নতুন কাউকে আনেন তাহলে আমার কোনো আপত্তি থাকবে না৷''

তবে তিনি নিজেকে সাধারণ সম্পাদক পদে কর্মক্ষম মনে করেন৷ তার কথা, একই সঙ্গে মন্ত্রী এবং  দলের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালনের মতো শারীরিক সক্ষমতা তার রয়েছে৷ তিনি আরো বলেন, ‘‘সাধারণ সম্পাদক পদে কে আসবেন সে ব্যাপারে নেত্রীর সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত৷ তবে আমি কখনো বলিনি যে আমি দায়িত্ব নিতে অনাগ্রহী৷''

এদিকে আওয়ামী লীগে একজন ‘ফুলটাইম' সাধারণ সম্পাদকের দাবি প্রবল হচ্ছে৷ বিশেষ করে আওয়ামী লীগ টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় থাকার কারণে এই দাবি আরো প্রবল হচ্ছে৷ দলটির একটি অংশ মনে করে বড় দল হিসেবে সাধারণ সম্পাদকের যে পরিমান সাংগঠনিক কাজ থাকে তাতে তাকে অন্যকোনো দায়িত্ব না দেয়াই ভালো৷ একই সঙ্গে মন্ত্রী এবং দলের সাধারণ সম্পাদক একজন হলে তিনি দলের প্রতি ঠিকমতো মনোযোগ দিতে পারেন না৷ নেতা-কর্মীরাও তাকে সহজে পান না৷ অনেক সাংগঠনিক কাজ ঝুলে থাকে৷

মনিরুজ্জামান মনির

This browser does not support the audio element.

আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, এবার আওয়ামী লীগ একজন ফুলটাইম সাধারণ সম্পাদক পেতে পারে৷ দলের শীর্ষ নেতৃত্বের মনোভাবও সেরকমই মনে হয়৷ আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বিভিন্ন সময় দলীয় বৈঠবেও পূর্ণকালীন সাধারণ সম্পাদকের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন৷ তবে শেষ পর্যন্ত কী হবে তা শেখ হাসিনার উপরই নির্ভর করছে বলে জানান তারা৷

আওয়ামী লীগের তরুণ নেতা ও সহ-সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনির মনে করেন, ‘‘কেউ প্রকাশ্যে বলুক আর না বলুক আওয়ামী লীগে একজন ফুলটাইম সাধারণ সম্পাদকের দাবি প্রবল হচ্ছে৷ আমি মনে করি একই সঙ্গে মন্ত্রী এবং সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করতে গেলে দলকে তিনি ঠিকমত সময় দিতে পারেন না৷ নেতা-কর্মীরা সহজে তার কাছে পৌঁছতে পারেন না৷ এটা একটা সংকট৷ তাই এবার অনেকেই ফুলটাইম সাধারণ সম্পাদকের কথা বলছেন৷''

তবে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বলেন, ‘‘বিচ্ছিন্নভাবে হয়তো কেউ কেউ দলে ফুলটাইম সাধারণ সম্পাদকের কথা বলছেন৷ কিন্তু এটা দলের কোনো সিদ্ধান্ত বা ভিতরের আলোচনা কীনা আমার জানা নেই৷ দলের ভিতরের আলোচনায় আমি এ ধরনের কথা শুনিনি৷''

আওয়ামী লীগের আরেকজন সাংগঠনিক সম্পাদক এবং নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আওয়ামী লীগে কোনো পার্ট টাইম নেতা নাই, সবাই ফুল টাইম৷ সরকার শক্তিশালী হলে দলও শক্তিশালী হবে৷ ফলে শক্তিশালী সরকার ও দল গঠনে আমরা কাজ করছি৷''

আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন

This browser does not support the audio element.

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক জেলা ৭৫টি৷ এর মধ্যে ২৮টি জেলার সম্মেলন এবং সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ঠিক করা হয়েছে৷ অধিকাংশ জেলায়ই পূর্নাঙ্গ কমিটি হয়নি৷ ১৮ ডিসেম্বরের মধ্যে বাকি জেলাগুলোর সম্মেলন করা হবে৷ উপজেলা পর্যায়েও কমিটি গঠন প্রায় শেষ পর্যায়ে৷ তবে যেখানে কমিটি মেয়াদোত্তীর্ণ সেখানেই নতুন কমিটি হচ্ছে৷

এই কমিটি গঠন নিয়ে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রায় প্রতিদিনই উত্তেজনা ও সংঘাত-সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে৷ গত কয়েকদিনে চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, কুষ্টিয়া, রংপুর ও মানিকগঞ্জে উত্তেজনা ও সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে৷ কমিটিতে বিতর্কিত নেতাদের অন্তর্ভুক্ত করারও অভিযোগ উঠেছে৷ মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার ২৯ জন নেতা-কর্মী কেন্দ্রে পাঠানো এক আবেদনে বলেছেন, ‘‘উপজেলা আওয়ামী লীগের পদ কেনাবেচা হচ্ছে৷ দলের সঙ্গে কোনো সম্পৃক্ততা নেই এমন অযোগ্য লোকদের দিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটি গঠন করা হয়েছে৷ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা আওয়ামী লীগের নির্বাহী কমিটির সদস্য আজিম উদ্দিন বাবু বলেন, ‘‘স্থানীয় এমপি তার নিজের পছন্দের লোকজন দিয়ে কমিটি করেছেন৷ অর্থের বিনিময়েও কমিটিতে ঠাঁই দেয়া হয়েছে৷ এমনকি যারা আগে অন্যদল করেছেন তাদেরও কমিটিতে নেয়া হয়েছে৷ কিন্তু ত্যাগী নেতা-কর্মীদের বাদ দেয়া হয়েছে৷''

তবে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী মনে করেন সম্মেলনের সময় উত্তেজনা, হাতাহাতি হতেই পারে৷ চেয়ারে বসা নিয়ে, বক্তৃতা দেয়াসহ বিভিন্ন কারণে এটা হয়, যা বড় কোনো ঘটনা নয়৷ তিনি দাবি করেন, ‘‘এবার কোনা পর্যায়ে কোনো কমিটিতেই বিতর্কিতরা ঠাঁই পাচ্ছে না৷ এই সুযোগ নেই কারণ আমরা আগেই তাদের তালিকা করেছি৷''

আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বলেন, ‘‘আসলে নিজের লোক বা নিজে কমিটিতে না থাকলেই যারা থাকে তাদের বিতর্কিত বলা হয়৷ এটা একটা প্রবণতা৷''

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ