করোনা সংক্রমণ দিল্লির জ্যোতিষ ব্যবসায় ব্যাপক জোয়ার এনেছে৷ মানুষের মনে ভয়ের সুযোগে এই পেশায় এখন বাড়ছে আগ্রহ৷
বিজ্ঞাপন
ভারতে হু হু করে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ৷ অফিস-বাজার আস্তে আস্তে খুললেও মানুষের মনে ভয় কাটছে না৷ অনেকেরই ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তায় ভরা৷এমন পরিস্থিতিতে দিল্লির মানুষ ভয় কাটাতে ছুটে যাচ্ছেন জ্যোতিষ সঞ্জয় শর্মার কাছে৷
করোনার ভ্যাকসিন আবিস্কার না হওয়ায় সংখ্যাতত্ত্ব, ট্যারো কার্ড, জ্যোতিষবিদ্যা ও অন্যান্য পন্থায় আস্থা রাখা মানুষের সংখ্যা বাড়ছে৷
জ্যোতিষী সঞ্জয় শর্মার চেম্বার গত কয়েক মাস ধরে রীতিমতো ব্যস্ত৷ তিনি বলেন, ‘‘মানুষ এখন ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত৷ কীভাবে বাঁচবে, কীভাবে সংসার চালাবে, এইসব ভাবাচ্ছে তাদের বেশি করে৷’’
আরেক জ্যোতিষ অজয় ভাম্বি ভারতের টেলিভিশনে বিখ্যাত নাম৷ লাইভ অনুষ্ঠানে নানা সমস্যায় পরামর্শ দিতে দেখা যায় তাঁকে৷ তাঁর নিয়মিত খদ্দেরের তালিকায় রয়েছে বলিউড, ক্রিকেট, টেলিভিশন ও রাজনীতিজগতের বড় বড় তারকারা৷ কোভিড সংকট শুরু হবার পর থেকে তার ব্যবসা ৪০ শতাংশ বেড়েছে৷ এর কারণ জানতে চাইলে সংবাদসংস্থা রয়টার্সকে তিনি বলেন, ‘‘আমরা মানুষের মনে আশা জাগিয়ে রাখি৷ ওই আশার চিত্র দেখিয়ে ভবিষ্যতের একটা ধারণা দেবার চেষ্টা করি৷’’
মনখারাপের সুযোগে...
ভারতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৩৭ লাখেরও বেশি৷ মৃত ৬১ হাজার ৫২৯৷ তাই সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক থাকাটা খুব একটা অস্বাভাবিক নয়৷
সঞ্জয় শর্মার নিয়মিত খদ্দের অঞ্জু দেবী৷ তিনি বলেন, ‘‘আমার মনে অশান্তি, অস্থিরতা এলেই আমি ওনার কাছে আসি৷ আমার ছেলের ব্যবসার ভবিষ্যৎ ও মেয়ের বিয়ে নিয়েও প্রশ্ন করেছি৷ যারা বিষাদগ্রস্ত বা নানা ধরনের ওষুধ খেয়ে ভালো থাকেন, তারা এখানে এলে ভালো বোধ করেন৷ এই সব পরিস্থিতি থেকে একটা উত্তরণের পথ পান৷’’
ভারতে জ্যোতিষবিদ্যা লাভজনক একটি ব্যবসা হয়ে উঠেছে৷ বছরে কোটি কোটি টাকা লাভ করেন এই পেশার সাথে যুক্ত থাকা মানুষ৷ রাস্তার পাশেই চট করে এক হস্তরেখাবিদকে হাত দেখাতে খরচ হয় মাত্র ১০০ রুপি৷ কিন্তু নামী জ্যোতিষের কাছে নিজের ভূত-ভবিষ্যৎ-বর্তমান নিয়ে আলাপ করতে গেলে কয়েক হাজার রুপিও ঘন্টাপিছু দিতে হতে পারে৷
এসএস/এসিবি (রয়টার্স)
অন্ধ বিশ্বাসে ঝাড়ফুঁকে চিকিৎসা
নামী কবিরাজ বা হুটহাট গজিয়ে ওঠা ফকিরের কেরামতিতে রোগবালাই না সারলেও ঝাড়ফুঁকের পেছনে ছোটেন বাংলাদেশের অনেক মানুষ৷ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিকল্প চিকিৎসা হিসেবে অন্ধ বিশ্বাস থেকে অনেকে এসবের দ্বারস্থ হয়৷
ছবি: DW/Z. Ljubas
বিশ্বাসে মিলে মুক্তি!
তেল-পানির বোতল হাতে ছুটছেন হাজার হাজার মানুষ৷ কিংবা কোনো পুকুর থেকে পানি নিতে ভীড় করেছেন অনেকে৷ বাংলাদেশে প্রায়ই এমন দৃশ্যের দেখা মিললেও ঝাড়ফুঁকে আদৌ রোগ নিরাময় না বলেই চিকৎসকদের অভিমত৷
ছবি: picture-alliance/NurPhoto/A. Fuente
শক্তিবর্ধকে শক্তি নেই
দেশের বিভিন্ন স্থানে দোকান বসিয়ে নানা ধরনের শক্তিবর্ধক ওষুধ বিক্রি করেন অনেকে৷ আর এসব ওষুধ কিনে প্রতিনিয়ত প্রতারিত হচ্ছেন মানুষ৷ ওষুধের নামে এসব শক্তিবর্ধকে আসলে কোনো কাজ হয় না বলে ভুক্তভোগীদের ভাষ্য৷
ছবি: picture-alliance/NurPhoto/A. Fuente
প্রতারণা
ঢাকার ব্যস্ততম এলাকার ফুটপাথে হাঁটলেই চোখে পড়বে পসরা সাজিয়ে সর্বরোগের ওষুধ বিক্রি করছেন অনেকে৷ সাধারণত নিম্ন আয়ের মানুষ ক্যানভাসারের বয়ান শুনে পটে গিয়ে এসব ওষুধ কেনন৷ বেশিরভাগ ওষুধই যৌনশক্তি বর্ধক৷ তবে চিকিৎসকরা বলছেন, ফুটপাটের ওইসব ক্যানভাসারা আসলে সরল বিশ্বাসী মানুষদের সঙ্গে প্রতারণা করেন৷
ছবি: Fotolia/granata68
ঝাড়ফুঁকের অজুহাতে ধর্ষণ
জিন ও ভুত তাড়ানো বা ঝাড়ফুঁক করার নাম করে কবিরাজদের কাছে ধর্ষণের স্বীকার হন অনেক নারী৷ লাজলজ্জায় অনেকে এসব ঘটনা ফাঁস না করলেও অনেক ঘটনা প্রকাশের পর সংশ্লিষ্ট কবিরাজদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ৷
ছবি: picture-alliance/Pacific Press/E. McGregor
সাংসারিক সমস্যার সমাধান
অনেক সময় নানা ধরনের সাংসারিক সমস্যার সমাধান ছাড়াও প্রিয়জনদের সঙ্গে সৃষ্টি হওয়া দূরত্ব ঘোচাতে আধ্যাতিক গুরু নামধারীদের কাছে ধর্ণা দেন অনেকে৷ অন্ধ বিশ্বাস থেকেই তারা এদের কাছে গিয়ে টাকা খরচ করেন৷
ছবি: DW/Z. Ljubas
জ্যোতিষীর দ্বারে
নানা কারণে হতাশ হয়ে, কেউবা আরেকটু ভালো কিছুর আশায় জ্যোতিষীর স্মরণাপন্ন হন৷ বলা হয়, জ্যোতিষীরাও কারো কারো দূর্বলতার সুযোগ নিয়ে ভুলভাল পরামর্শ দেন, যা আসলে কোনো কাজে আসে না৷
ছবি: picture-alliance/NurPhoto/A. Fuente
বিকল্প চিকিৎসা
কেউ চিকিৎসা প্রচলিত ব্যবস্থায় বিশ্বাস হারিয়ে আবার কেউ কেউ অর্থ সংকটে চিকিৎসা নিতে না পেরে বিকল্প চিকিৎসা হিসেবে কবিরাজের পেছনে ছোটেন৷