করোনা মহামারি বিশ্বব্যাপী বহু পরিবারকে দারিদ্রের মুখে ঠেলে দিচ্ছে৷ ফলে মেয়েদের মা-বাবারা মনে করছেন, মেয়েকে জোর করে বিয়ে দেওয়া ছাড়া এই মুহূর্তে তাদের আর কোনো বিকল্প পথ খোলা নেই৷ এক্ষেত্রে নাবালিকার হবু স্বামীর বয়স নিয়ে তারা ভাবছেন না৷ এ কথা বলেন সেভ দ্য চিলড্রেনের পরিচালক ইঙ্গার অ্যাশিং৷ বর্তমান পরিস্থিতি বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে দীর্ঘ কয়েক দশকের সংগ্রামের অগ্রগতিকে রোধ করে আবার আগের অবস্থায় ফিরিয়ে নেয়ার হুমকি তৈরি করছে বলেও মনে করেন তিনি৷
লন্ডনে সেভ দ্য চিলড্রেনের লিঙ্গসমতা বিষয়ক বিশেষজ্ঞ গাব্রিয়েলে সাজাবো বলেন, দুঃখজনক বিষয় যে, মহামারি লিঙ্গ বৈষম্যকে আরো বাড়িয়ে তুলেছে৷ করোনায় স্কুল বন্ধ, মা-বাবারা চাকরি হারাচ্ছেন, লকডাউনে বাড়ছে সহিংসতা আর ধর্ষণ৷ এসব কারণে কন্যার নিরাপত্তার কথা ভেবে মা-বাবারা তাদের নাবালক মেয়েদের জোর করে বিয়ে দিচ্ছেন৷ বিয়ে হলে মেয়ে অন্তত ক্ষুধা আর বঞ্চনা থেকে রক্ষা পাবে বলে তাদের ধারণা৷
এদিকে করোনার কারণে ২০২০ সালে কমপক্ষে আরো পাঁচ লাখ মেয়েকে জোর করে বিয়ে দেয়া হতে পারে বলে উল্লেখ করা হয়েছে সেভ দ্য চিলড্রেনের গ্লোবাল গার্ল হুড প্রতিবেদনে৷ ২০২৫ সালের মধ্যে বাল্য বিবাহের শিকার হতে পারে আরো অতিরিক্ত ২৫ লাখ মেয়ে৷ গত ২৫ বছরের মধ্যে এবারই বাল্যবিবাহের হার সবচেয়ে বেশি ৷ ২০২৫ সালে বাল্যবিবাহের সংখ্যা বেড়ে মোট ছয় কোটি দশ লাখ হতে পারে বলে সংস্থাটি আশঙ্কা করছে৷
এ বছর আগের তুলনায় আরো দশ লাখ বেশি কিশোরী গর্ভবতী হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে৷ মেয়েদের জোর করে বিয়ে দেওয়ার প্রবণতা বেশি রয়েছে দক্ষিণ এশিয়া, পশ্চিম আফ্রিকা ও ল্যাটিন অ্যামেরিকায়৷ আফগানিস্তান, সিরিয়া ও ইয়েমেনের মতো সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলে এই প্রবণতা সবচেয়ে বেশি৷
এনএস/এসিবি (ইপিডি,কেএনএ,সেভ দ্য চিলড্রেন)
প্রতিটি শিশুরই নির্দিষ্ট কিছু অধিকার রয়েছে৷ জাতিসংঘের শিশু অধিকার চুক্তি ১৯৮৯-তে শিশুদের জন্য সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং স্বাস্থ্য সম্পর্কিতসহ ৫৪টি অধিকার নির্ধারণ করা আছে৷ এনিয়েই এই ছবিঘর৷
ছবি: DW/Unbreen Fatimaসন্তান জন্মের সঙ্গে সঙ্গে তার নাম রেখে নিবন্ধনের কাজটি পিতা-মাতাকে করতে হবে৷ পিতা-মাতাকে জানার এবং তাদের লালন-পালনে বেঁচে থাকার সুযোগ পাওয়া শিশুর অধিকার৷
ছবি: picture-alliance/OKAPIA KG, Germanyকোনো শিশুকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে তার বাবা-মার কাছ থেকে আলাদা করা উচিত নয়৷ কোনো শিশুকে তখনই তার পিতা-মাতার কাছ থেকে আলাদা করা যাবে যখন তারা ওই শিশুর জন্য ক্ষতিকর৷
ছবি: imago/Westend61প্রত্যেক শিশুরই অধিকার আছে মতামত দেওয়ার৷ যদি কোনো বিষয়ে সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে আদালত পর্যন্ত যেতে হয়, তবে শিশুর কথাও শুনতে হবে৷ তবে কোনো শিশুর মতামতকে কতটা গুরুত্ব দেওয়া হবে, তা তার বয়সের উপর নির্ভর করবে৷
ছবি: Fotolia/Sebastian Dudaসভ্য সমাজে শিশুদের বিভিন্ন ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার নিয়ে অবস্থানটি বিতর্কিত৷ তবে সব শিশুর দেশি এবং বিদেশি মিডিয়াগুলোতে প্রবেশযোগ্যতা থাকা উচিত৷
ছবি: picture alliance/blickwinkelশিশুদের যে কোনো ধরনের মারধর বা অবহেলা থেকে রক্ষা করা তার বাবা-মা, শিক্ষক বা অভিভাবকদের দায়িত্ব৷ এটি নিশ্চিত করতে সরকারের উচিত আইনি বা প্রশাসনিক বিধি তৈরি করে এ বিষয়ে জনগণকে সচেতন করা৷
ছবি: Colourbox/Phovoirপ্রতিবন্ধী শিশুরা যাতে সমাজের সক্রিয় অঙ্গ হিসেবে কাজ করতে পারে সেই অধিকার রাষ্ট্রকেই নিশ্চিত করতে হবে৷
ছবি: Imago/M. Winterশিশুদের সর্বোত্তমভাবে বেড়ে উঠার জন্য সরকারকে ব্যবস্থা নিতে হবে৷ তাদের স্বাস্থ্যসেবায় যেন কোনো ঘাটতি না থাকে তা-ও সরকারকেই নিশ্চিত করতে হবে৷
ছবি: Getty Images/AFP/S. Mainaপ্রতিটি শিশুর পড়াশোনার অধিকার আছে৷ এজন্য প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কোনো ফি নেওয়া উচিত নয়৷ আর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষা গ্রহণ করা শিশুদের জন্য বাধ্যতামূলক৷
ছবি: Imago/View Stockসংখ্যালঘু বা উপজাতি গোষ্ঠীতে জন্ম নেওয়া শিশুর নিজস্ব ধর্ম, ভাষা, আচার এবং রীতিনীতিকে সম্মান করতে হবে৷
ছবি: imago/imagebrokerশিশুদের বিশ্রাম, খেলাধুলা এবং অবসর নেওয়ার জন্য প্রতিদিনের রুটিনে পর্যাপ্ত সময় এবং সুবিধা রাখতে হবে৷
ছবি: Imago Images/UIGকোনো শিশু যাতে অপহরণ বা যৌন হয়রানির শিকার না হয় তা নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব৷
ছবি: Getty Images/AFP/A. Karimiশিশুরা বড় ভুল বা অপরাধ করলেও তাদের মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া যাবে না৷ কারণ, ভুল থেকেই শিশুরা শিক্ষা নেয়৷
ছবি: AFP/T. Aljibe