এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, জার্মানিতে করোনা সংকটে বেশি অর্থকষ্টে পড়েছেন তরুণরা৷ তবে মহামারির কারণে মানসিক চাপে বেশি রয়েছেন নারীরা৷
বিজ্ঞাপন
রোববার সমীক্ষা থেকে উঠে আসা নানা দিক এক প্রতিবেদনের মাধ্যমে তুলে ধরেছে জার্মানির ঔষধ উৎপাদকদের সংস্তা বিএএইচ৷ বিএএইচ-এর হয়ে সমীক্ষাটি করেছে বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান নিয়েলসেন৷
গত ৯ জুন থেকে ১৬ জুনের মধ্যে মোট এক হাজার মানুষের তথ্যের ভিত্তিতে করা সমীক্ষা প্রতিবেদনে বলা হয়, জার্মানিতে ত্রিশের কাছাকাছি বয়সের মানুষরাই করোনাকালে বেশি আর্থিক সংকটে ভুগছেন৷ আর্থিক সংকটে পড়া মানুষদের শতকরা ৩৮ ভাগই এই বয়সশ্রেণির৷
জরিপে অংশ নেয়াদের অন্তত এক তৃতীয়াংশ জানিয়েছেন, করোনার প্রাদূর্ভাবের কারণে আয় লক্ষ্যণীয় মাত্রায় কমেছে তাদের৷ তবে বাকিদের বেশিরভাগই বলেছেন, করোনা তাদের আয়ে বিশেষ কোনো প্রভাব ফেলতে পারেনি৷
করোনায় জার্মানির জিডিপির রেকর্ড পতন
করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে বছরের দ্বিতীয় কোয়ার্টারে (এপ্রিল থেকে জুন) জার্মানির অর্থনীতির ১০.১% ভাগ ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধি হয়েছে৷ তবে সরকারের নীতির কারণে এখনো দেশটিতে সে অর্থে কর্মী ছাটাই বাড়েনি৷
ছবি: picture-alliance/imageBroker
অর্থনীতিতে বিরাট ধাক্কা
বৃহস্পতিবার এ বছর এপ্রিল থেকে জুনের কিছু অর্থনৈতিক উপাত্ত প্রকাশিত হয়েছে৷ সেখানে দেখা গেছে, জার্মানির অর্থনীতির প্রবৃদ্ধিতে রেকর্ড পতন হয়েছে (১০.১%)৷ এমন একটি সময়ে জার্মানির কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান দপ্তর এই তথ্য প্রকাশ করল, যখন পুরো ইউরোপ করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কায় পড়তে যাচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে৷
ছবি: picture-alliance /J. Tack
১৯৭০-এর পর প্রথম
১৯৭০ সালে সবশেষ অর্থনীতির এমন পতন দেখেছিল জার্মানি৷ পরিসংখ্যান দপ্তর বলছে, করোনার কারণে এমনকি বাসাবাড়িতে ব্যয় যেমন কমেছে, তেমনি ব্যবসায় বিনিয়োগ কিংবা রপ্তানি সবকিছুতেই ধস নেমেছে কোভিড-১৯ এর কারণে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/S. Hoppe
পরামর্শকদের ধারণা ভুল
মার্চে জার্মানির অর্থনৈতিক পরামর্শকদের প্যানেল বলেছিল যে, পুরো বছরে হয়ত জিডিপির পতন ২.৮% ভাগ হতে পারে৷ তাদের ধারণা ছিল, পাঁচ সপ্তাহের লকডাউন শেষে জীবনযাত্রা স্বাভাবিক হয়ে উঠবে৷ কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি৷
ছবি: Imago Images/F. Sorge
বেকারত্বের হার এখনো স্বাভাবিক
পরিসংখ্যান বলছে, এত কিছু হয়ে গেলেও এ বছর জুলাইতে বেকারত্বের হার ৬.৪%৷ অর্থাৎ বড় আকারে কর্মী ছাটাই হয়নি (মার্চে ছিল ৫%)৷ এতে সরকারের দেয়া প্রণোদনা অর্থ ভূমিকা রেখেছে৷
ছবি: picture-alliance/blickwinkel/McPHOTOs
বাড়ছে প্রণোদনার চাপ
দিন দিন সরকারের প্রণোদনার সুবিধা পাওয়াদের সংখ্যা বাড়াতে হচ্ছে৷ যেমন, মে মাসে ৬৭ লাখ মানুষকে সরকারের ‘ফারলো স্কিমের’ আওতায় অর্থ পেয়েছেন, যেখানে এপ্রিলে এ সংখ্যা ছিল ৬১ লাখ৷
ছবি: picture-alliance/dpa/M. Gerten
5 ছবি1 | 5
একা থাকেন, কিংবা সঙ্গী বা সঙ্গীনির সঙ্গে থাকেন এমন মানুষরা মহামারির কারণে বেশি ভুগছেন না- এমন তথ্যও উঠে এসেছে নিয়েলসেন পরিচালিত জরিপে৷ এক সপ্তাহে এক হাজার মানুষের মধ্যে চালানো জরিপ অনুযায়ী, তিন জনের বা তার চেয়ে বেশি মানুষের পরিবারের করোনাকালে স্বচ্ছলতা যথেষ্ট কমেছে৷
তবে আর্থিক সমস্যা সব বয়সের, সব লিঙ্গের মানুষের কিছু-না-কিছু হলেও নারীদের মনোজগতকে বেশি নাড়িয়েছে করোনা৷ ১০ জনের মধ্যে ছয়জন নারী্ই জানিয়েছেন, আগের চেয়ে করোনাকালেই বেশি মনস্তাত্ত্বিক সমস্যায় আছেন তারা৷