বাংলাদেশে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে৷ গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরো ৪৯২ জনের কোভিড-১৯ শনাক্ত হয়েছে৷ মারা গেছেন ১০ জন৷
বিজ্ঞাপন
এ নিয়ে করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে বাংলাদেশে ১০১ জনের মৃত্যু হলো৷ গত ২৪ ঘণ্টায় ২,৭৭৯টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে৷ মোট নমুনা পরীক্ষা ২৬ হাজার ৬০৪টি৷ মোট শনাক্ত ২,৯৪৮ জন৷
গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ১০ জন, মোট সুস্থ ৮৫ জন৷
সর্বশেষ মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে পাঁচ জন ঢাকায়, চার জন নারায়ণগঞ্জ এবং একজন নরসিংদীতে৷
সোমবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত অনলাইন ব্রিফিংয়ে অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা এসব তথ্য তুলে ধরেন৷
তিনি বলেন, ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ ছাড়াও এখন গাজীপুর ও কিশোরগঞ্জে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ বেশি হচ্ছে৷ নতুন আক্রান্তদের প্রায় ২০ শতাংশ গাজীপুরের বাসিন্দা৷ কিশোরগঞ্জে ১৩.৫ শতাংশ৷
এ পরিস্থিতিতে তিনি জনগণকে ঘরে থাকার, মাস্ক ব্যবহার করার এবং সামাজিক দূরত্ব বজার রাখার অনুরোধ করেন৷
মিটফোর্ডের ২৩ চিকিৎসক আক্রান্ত
করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার তথ্য গোপন করে জরুরি চিকিৎসা নেওয়া একজন রোগীর মাধ্যমে তারা সংক্রমিত হয়েছেন বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ধারণা৷
ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল কাজী মো. রশিদ উন নবীর বরাত দিয়ে বাংলাদেশে ডয়চে ভেলের কনটেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম এ তথ্য জানায়৷
রোববার রাতে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল রশিদ তাঁর হাসপাতালে ৪২ জন স্বাস্থ্যকর্মীর আক্রান্তের খবর দেন৷
তিনি বলেন, গত বৃহস্পতিবার ১২ জন এবং শুক্রবার ১০ জনের করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে৷ তাদের মধ্যে সার্জারি ও গাইনি বিভাগের ১০ জন চিকিৎসক এবং আটজন নার্স আছেন৷ শনিবার আরো ৬৯ জনের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করালে তাদের সবার ফল ‘নেগেটিভ' আসে৷
ডাক্তারদের করোনার ভয় এখনো কাটেনি
02:45
‘‘তবে রোববারের পরীক্ষায় আরো ১৩ জন চিকিৎসক এবং সাতজন নার্সের করোনা শনাক্ত হয়েছে৷ সব মিলিয়ে ৪২ জন আক্রান্ত, যাদের ২৩ জনই চিকিৎসক৷ বাকিদের মধ্যে নার্স ছাড়াও একজন আনসার আছেন৷’’
গত ১১ এপ্রিল হাসপাতালের সার্জারি বিভাগে একজন রোগী ভর্তি হন৷ তার জরুরি ভিত্তিতে অস্ত্রোপচার করাতে হয়৷ ওই অস্ত্রোপচারে যারা যুক্ত ছিলেন, তারা সবাই আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানান পরিচালক৷
বলেন, ‘‘মূলত ওই রোগীর মিথ্যা তথ্যের কারণেই ডাক্তাররা আক্রান্ত হয়েছেন৷ এখন সেটা একজনের কাছ থেকে অন্যজনে ছড়াচ্ছে৷ আর আমরাই বা কী করব, একজন রোগীর ইমার্জেন্সি অপারেশনের দরকার হলে তো অপারেশন করতে হবে, না হলে রাস্তায় মারা যাবে৷’’
যারা আক্রান্ত হয়েছেন তাদের আইসোলেশনে এবং যারা তাদের সংস্পর্শে এসেছেন তাদের সবাইকে হোম কোয়ারান্টিনে পাঠানো হয়েছে বলেও জানান তিনি৷
এ ঘটনায় হাসপাতালের কর্মীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে৷
এসএনএল/এসিবি (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)
করোনায় সাংবাদিকতা
বাংলাদেশে সাংবাদিকরাও করোনায় আক্রান্ত। ঝুঁকির মুখে আছে অনেক সংবাদমাধ্যম। এই পরিস্থিতিতেও কীভাবে চলছে বাংলাদেশের প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক ও অনলাইন সাংবাদিকতা?
ছবি: DW/Harun-ur-Rashid Swapan
মাঠে যারা কাজ করেন
প্রধানত ইলেট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিক এবং ক্যামেরাম্যানদের সীমিত আকারে হলেও বাইরে যেতে হয় অ্যাসাইনমেন্ট কাভার করতে। তারা চেষ্টা করেন স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে।
ছবি: DW/Harun-ur-Rashid Swapan
সবাই কি যথেষ্ট সচেতন?
মাস্ক তারা ঠিকই পড়েছেন। কিন্তু সতর্কতার জন্য আরো যা ব্যবহার করা প্রয়োজন তা কি করছেন?
ছবি: DW/Harun-ur-Rashid Swapan
সামজিক দূরত্ব কতটা মানছেন?
এই সম্প্রচার সাংবাদিকরা পিপিই পড়েছেন। তারপরও তারা কতটা নিরাপদ?
ছবি: DW/Harun-ur-Rashid Swapan
যাদের বাইরে না গিয়ে উপায় নেই
ফটো সাংবাদিক আর টেলিভিশনের ক্যামেরাম্যানদের তো বাইরে যেতেই হবে। তাই তাদের অনেকেই নিরাপদ থাকতে সচেষ্ট।
ছবি: DW/Harun-ur-Rashid Swapan
অনলাইন আর প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকদের সুরক্ষা
যারা সরেজমিন প্রতিবেদন করেন তাদের বাইরে যেতেই হয়। তাই তারা যতটুকু সম্ভব সুরক্ষিত থাকার চেষ্টা করেন।
ছবি: DW/Harun-ur-Rashid Swapan
ঘরে বসে কাজ
এই করোনায় সুরক্ষার জন্য সাংবাদিকদের বড় একটি অংশ, বিশেষ করে যারা ডেস্কে কাজ করেন এখন তারা বাড়িতে বসেই কাজ করেন।
ছবি: DW/Harun-ur-Rashid Swapan
অফিসে সামাজিক দূরত্ব
যারা অফিসে কাজ করেন, তারা চেষ্টা করছেন সামাজিক দূরত্ব মানতে।
ছবি: DW/Harun-ur-Rashid Swapan
অফিসে বসেই সংবাদ সংগ্রহ
এখন নানা ধরনের ব্রিফিং অনলাইনেই হয়। অফিসে বসেই করোনা নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ব্রিফিং শুনছেন।
ছবি: DW/Harun-ur-Rashid Swapan
নিয়মিত স্প্রে করা হয়
নিউজরুমে নিয়মিত জীবানুনাশক স্প্রে করা হয়।
ছবি: DW/Harun-ur-Rashid Swapan
আছে স্বাস্থ্য সুরক্ষার ব্যবস্থা
এখন সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রবেশ পথেই হ্যান্ড স্যানিটাইজার থাকে। আছে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা ও শরীরের তাপ মাপার যন্ত্র।
ছবি: DW/Harun-ur-Rashid Swapan
কেউ আর ঝুঁকি নিতে চান না
চেয়ারে বসে প্রথমেই স্যানিটাইজার দিয়ে হাত জীবানুমুক্ত করেন সংবাদমাধ্যম কর্মীরা।
ছবি: DW/Harun-ur-Rashid Swapan
টকশো চলে স্টুডিও ছাড়া
টকশোর অতিথিরা বাসা থেকেই যুক্ত হচ্ছেন জুম বা স্কাইপে। উপস্থাপকও অনেক সময় বাসা থেকে কাজ করেন।
ছবি: DW/Harun-ur-Rashid Swapan
সাংবাদিকদের গাড়ি
করোনায় স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য সংবাদিকদের গাড়িটিও হতে হয় জীবানুমুক্ত।
ছবি: DW/Harun-ur-Rashid Swapan
বাড়তি সতর্কতা
টেলিভিশন সাংবাদিকদের কেউ কেউ বাড়তি সতর্কতার অংশ হিসেবে এখন লম্বা বুম ব্যবহার করেন।
ছবি: DW/Harun-ur-Rashid Swapan
তারপরও ঘটে দুঃখজনক ঘটনা
সাংবাদিকরা তারপরও করোনা সংক্রমিত হচ্ছেন। প্রতিষ্ঠানগুলো ঝুঁকির মুখে আছে। কয়েকজন কর্মী করোনা পজিটিভ হওয়ায় বেসরকারি চ্যানেল দীপ্ত টিভির খবর প্রচার ১৪ দিনের জন্য স্থগিত করা হয়েছে।
ছবি: DW/Harun-ur-Rashid Swapan
গৃহিনী এবং সাংবাদিক
রিপোর্টারদের বড় একটা অংশও এখন বাড়ি থেকে কাজ করছেন। সংসার আর অফিসের কাজ একসঙ্গেই করছেন তারা।
ছবি: DW/H.U. Rashid Swapan
সাংবাদিকরা কতটা মানেন?
করোনা প্রতিরোধে মসজিদে ৫ জনের বেশি নামাজ পড়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে৷ নিষেধাজ্ঞা মানা হচ্ছে কিনা তা নিয়মতি দেখতে হয় সাংবাদিকদের। তাই প্রায় প্রতিদিনই বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের সামনে যেতে হয় তাদের। অনেকেই কিন্তু ‘সামাজিক দূরত্ব’ বজায় রাখেন না৷