করোনা রোগীদের দ্রুত সেরে উঠতে সহায়তা করছে ইনফ্লুয়েঞ্জার ওষুধ অ্যাভিগান৷ রোগীদের উপর তৃতীয় পর্যায়ের পরীক্ষা শেষে এ দাবি করছে ওষুধটির প্রস্তুতকারক কোম্পানি৷
বিজ্ঞাপন
ফুজিফিল্ম টোয়ামা ক্যামিক্যাল নামের জাপানি কোম্পানিটি তাই করোনা সারানোয় ওষুধটি ব্যবহারের অনুমতি চাইবে সরকারের কাছে৷
এক বিবৃতিতে প্রতিষ্ঠানটি জানায়, তৃতীয় ধাপের পরীক্ষায় জাপানের ১৫৬ জন রোগীর তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে তারা৷ এতে দেখা যায়, ওষুধটি ব্যবহার করে রোগীরা গড়ে ১১ দশমিক নয় দিনে সুস্থ হয়ে উঠছেন, যেখানে প্লাসেবো ব্যবহার করে সেরে উঠতে সময় লাগে ১৪ দশমিক সাত দিন৷
এখন পরীক্ষায় প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্ত বিস্তারিত বিশ্লেষণ করবে প্রতিষ্ঠানটির গবেষকরা৷
ওষুধটি এখনই বাজারে পাওয়া যাচ্ছে না৷ সরকারের অনুমতি পাওয়ার পর তা উৎপাদন ও বাজারজাত করা হবে৷
ফাভিপিরাভির নামে অ্যাভিগানের ওষুধটি ২০১৪ সালে সর্দি-কাশির দাওয়াই হিসেবে ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছিল জাপান সরকার৷
করোনা মোকাবেলায় চীনেও সফলতা দেখিয়েছে অ্যাভিগান৷ এটি ব্যবহার করে রোগীরা দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠছে এমন খবর জানিয়েছিল চীনের সংবাদমাধ্যমগুলো৷ এ কারণে ওষুধটি নিয়ে শুরু থেকেই আশাবাদী ছিল জাপান সরকার৷ পরীক্ষায় সফল হলে বিভিন্ন দেশকে ওষুধটি বিনামূল্যে দেওয়ার ঘোষণাও দিয়েছিলেন জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে৷
আরআর/এসিবি (এএফপি)
২৯ আগস্টের ছবিঘরটি দেখুন...
টিকা আবিষ্কারের দৌড়ে কে কত এগিয়ে
করোনা ভাইরাসের কার্যকর ভ্যাকসিন আবিষ্কারে অন্তত দশটি দেশে চলছে ১৭০টিরও বেশি প্রচেষ্টা৷ তবে এর মধ্যে এখন পর্যন্ত ছয়টি পৌঁছাতে পেরেছে পরীক্ষার শেষ ধাপে৷
ছবি: Reuters/J. Akena
পৌনে দুইশ’
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভ্যাকসিন আবিষ্কারের দৌড়ে আছে ১৭০ টির বেশি উদ্যোগ৷ একেকটি ভ্যাকসিনের পরীক্ষা-পর্ব সারতেই সাধারণত বছরের পর বছর সময় লাগে৷ তবে কোভিড-১৯-এর ক্ষেত্রে তা ১২ থেকে ১৮ মাসে নামিয়ে আনার চেষ্টা করছেন বিজ্ঞানীরা৷
ছবি: Reuters/B. Guan
প্রাক ক্লিনিক্যাল পর্ব
বেশিরভাগ প্রচেষ্টাই এখনো প্রাক ক্লিনিক্যাল পর্যায়ে রয়েছে৷ এই ধাপে বিজ্ঞানীরা ভাইরাস বা তার কোনো একটি অংশ তৈরি করেন৷ সেটি অন্য প্রাণীদের উপর প্রয়োগ করে দেখেন রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা ঠিকঠাক সাড়া দিচ্ছে কিনা৷ ১৩৯ টি প্রচেষ্টা এখনো এই ধাপে আটকে আছে৷
ছবি: Imago/blickwinkel
প্রথম ধাপ
ক্লিনিক্যাল পরীক্ষার প্রথম ধাপে সীমিত সংখ্যক মানুষের মধ্যে টিকাটি প্রয়োগ করা হয়৷ দেখা হয়, প্রাক ক্লিনিক্যাল পর্বে পশুর দেহে যেভাবে প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেছে, মানুষের শরীরেও তা একইভাবে কাজ করছে কিনা৷ বর্তমানে ২৫টি টিকা রয়েছে এই ধাপে৷
ছবি: Getty Images/AFP/G. Gobet
দ্বিতীয় ধাপ
ক্লিনিক্যাল পরীক্ষার দ্বিতীয় ধাপে আছে ১৫টি ভ্যাকসিন৷ সম্ভাব্য টিকাটি কতটা নিরাপদ আর তা কী মাত্রায় প্রয়োগ করতে হবে, এই ধাপে মূলত সেটি দেখেন বিজ্ঞানীরা৷ এজন্য কয়েকশ’ মানুষের শরীরে টিকাটি পরীক্ষা করা হয়৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/University of Oxford
তৃতীয় ধাপ
তৃতীয় ধাপে ভ্যাকসিন পরীক্ষার আওতায় আসেন কয়েক হাজার মানুষ৷ কার্যকরীতা, শরীরে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার দিকগুলোতে এই পর্যায়ে বিজ্ঞানীরা মনযোগ দেন৷ এই ধাপটিতে এখন পর্যন্ত কোভিড-১৯-এর মাত্র সাতটি সম্ভাব্য ভ্যাকসিন পৌঁছাতে পেরেছে৷
ছবি: Getty Images/AFP/P. Pochard-Casabianca
অনুমোদন
পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে ভ্যাকসিন বাজারজাতের অনুমোদন দেয় দেশগুলোর সংশ্লিষ্ট নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ৷ গত জুনে ক্যানসিনো বায়োলোজিক্স এর ভ্যাকসিন ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে চীনের সামরিক বাহিনী৷ অন্যদিকে পরীক্ষায় সফল হয়েছে দাবি করে সরকারি প্রতিষ্ঠান গামালিয়া ইন্সটিটিউটের ভ্যাকসিনের অনুমোদন করেছে রাশিয়া৷ যদিও তাদের এই ভ্যাকসিনের কার্যকারিতে নিয়ে বিতর্ক চলছে৷
ছবি: picture-alliance/Photoshot
শেষ ছয়
ক্লিনিক্যাল পরীক্ষার তৃতীয় ধাপে পৌঁছানো সাতটি ভ্যাকসিনের তিনটি চীনের৷ এর মধ্যে নিষ্ক্রিয় ভাইরাস থেকে টিকা তৈরি করেছে সাইনোভেক নামের একটি প্রতিষ্ঠান৷ জুলাইতে আরব আমিরাতে চূড়ান্ত পরীক্ষা শুরু করেছে সাইনোফার্ম নামে দেশটির আরেকটি কোম্পানি৷ শেষ ধাপের এই দৌড়ে আরো আছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জার্মানি এবং অস্ট্রেলিয়ার কোম্পানিও৷
ছবি: Reuters/J. Akena
আলোচনায় অক্সফোর্ড
করোনার ভ্যাকসিন নিয়ে শুরু থেকে আলোচনায় যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়৷ ব্রিটিশ-সুইডিশ কোম্পানি অ্যাস্ট্রাজেনেকার সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করছে তারা৷ পৌঁছে গেছে তাদের উদ্ভাবিত টিকা পরীক্ষার শেষ ধাপে৷ দক্ষিণ আফ্রিকা আর ব্রাজিলে চলছে তার ট্রায়াল৷