করোনা, নাকি বাংলাদেশের মাটিতে মোদী-বিরোধী আন্দোলন, কীসের জন্য বাতিল হল নরেন্দ্র মোদীর ঢাকা সফর, প্রশ্ন ঘুরছে কূটনৈতিক মহলে৷
বিজ্ঞাপন
আগামী ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠান উপলক্ষে ঢাকায় যাওয়ার কথা ছিল ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর৷ শুধু মোদীই নন, ভারতের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়, কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধীরও সেই অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার কথা ছিল৷ কিন্তু রবিবার রাতে বাংলাদেশ জানিয়ে দেয়, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের কথা মাথায় রেখে আপাতত কর্মসূচি ছোট আকারে করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷ ফলে বিদেশি অতিথিদেরও আপাতত ডাকা হচ্ছে না৷ বস্তুত, রবিবারেই বাংলাদেশে প্রথম করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটে৷ ভারতে এখনও পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ৪২৷
এর আগে করোনার কারণে বাতিল হয়েছিল ইইউ-ইন্ডিয়া সম্মেলন৷ আগামী ১৩ মার্চ সেই অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার জন্য ব্রাসেলস যাওয়ার কথা ছিল নরেন্দ্র মোদীর৷ কিন্তু শেষ মুহূর্তে দুই তরফই করোনার কারণে সম্মেলন স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেয়৷ তবে ইইউ-ইন্ডিয়া সম্মেলন বাতিল আর বাংলাদেশ সফর বাতিল কি একই মোড়কে রাখা যায়? শুধু ভারত বা বাংলাদেশ নয়, গোটা উপমহাদেশেই এই প্রশ্ন উঠেছে৷ অনেকেই এর পিছনে রাজনৈতিক যুক্তি খুঁজছেন৷ তাঁদের বক্তব্য, করোনাকে এ ক্ষেত্রে কূটনৈতিক অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করা হল৷
গত ডিসেম্বর মাসে ভারতে বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন পাশ করেছে বিজেপি সরকার৷ যার অব্যবহিত পর থেকেই দেশ জুড়ে প্রবল আন্দোলন এবং বিক্ষোভ শুরু হয়েছে৷ বলা হচ্ছে, এই আইন মুসলিম বিরোধী এবং দেশের সংবিধানের পরিপন্থী৷ এরই মধ্যে গত সপ্তাহে ঘটে গিয়েছে ভয়াবহ দিল্লি দাঙ্গা৷ নিহত হয়েছেন ৪৭ জন৷ এখনও নিখোঁজ অনেকে৷ এই দাঙ্গার জন্যেও হিন্দুত্ববাদী রাজনীতিকে দায়ী করছেন দেশ এবং আন্তর্জাতিক মঞ্চের একটি বড় অংশ৷ এরই মধ্যে মুজিববর্ষ পালনের অনুষ্ঠানে যাওয়ার কথা ছি্ল নরেন্দ্র মোদীর৷ যার জেরে গোটা বাংলাদেশে শুরু হয়ে যায় মোদী-বিরোধী আন্দোলন৷ ঢাকায় তো বটেই, দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলেও মিছিল বার করে বিক্ষোভকারীরা৷ বাংলাদেশের শিক্ষিত মধ্যবিত্ত শ্রেণির মধ্যেও মোদীকে আমন্ত্রণ জানানো নিয়ে আপত্তি স্পষ্ট হয়৷ মনে রাখা দরকার, এই আন্দোলন ভারতবিরোধী নয়, সোনিয়া গান্ধী কিংবা প্রণব মুখোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে কেউ কোনও আপত্তি জানাননি৷ আপত্তি উঠেছে কেবল মোদীর বিরুদ্ধে৷
কিন্তু কূটনৈতিক ভাবে ভারত-বাংলাদেশের যে সম্পর্ক, তাতে আমন্ত্রণ জানানোর পর মোদীর নিমন্ত্রণ ফেরত নেওয়া কার্যত সম্ভব ছিল না শেখ হাসিনার সরকারের পক্ষে৷ দুই দিন আগেও হাসিনার সরকার স্পষ্ট জানিয়েছিল, ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে এবং তা ফেরানোর প্রশ্নই ওঠে না৷ কিন্তু ভারত এবং বাংলাদেশ, দুই পক্ষই বুঝতে পারছিল, এমন পরিস্থিতিতে মোদীর সে দেশে যাওয়া খুব আনন্দের হবে না৷ বিক্ষোভের আঁচ তাঁর উপরে পড়বেই৷
এমন এক পরিস্থিতিতে করোনা ভাইরাসকে অজুহাত হিসেবে দাঁড় করিয়ে দেওয়া হল বলেই মনে করছে ভারতের রাজনৈতিক মহলের একাংশ৷ কারণ, ইউরোপ বা দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় করোনা যে ভাবে ছড়িয়েছে, ভারত কিংবা বাংলাদেশে তার প্রভাব মোটেই এখনও সে ভাবে পড়েনি৷ শুধু এই কারণেই এত বড় অনুষ্ঠান বাতিল হয়ে যাওয়া অনেককেই অবাক করেছে৷ সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য তথা প্রাক্তন সাংসদ মহম্মদ সেলিম ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, ‘‘সিএএ, এনআরসি এবং দিল্লি দাঙ্গার কারণে কূটনৈতিক মহলে ভারত এখন এমনিই আইসোলেশনে চলে গিয়েছে৷ বিশ্ব জুড়ে ভারত সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ধ্বনিত হচ্ছে৷ এমন অবস্থায় করোনাকে অজুহাত হিসেবে সামনে এনে সেই আইসোলেশনকে মান্যতা দেওয়া হল৷’’
বঙ্গবন্ধুর অসাম্প্রদায়িকতা ও একজন মোদী
দিল্লির ঘটনার পর আবারো ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে সাম্প্রদায়িক হিসেবে চিহ্নিত করছেন অনেকে৷ সেই মোদীই আসছেন মুজিববর্ষের অন্যতম অতিথি হিসেবে৷ অথচ বঙ্গবন্ধু পরিচিত ছিলেন তাঁর অসাম্প্রদায়িক নীতির জন্য৷
ছবি: bdnews24
জাতির জনকের অসাম্প্রদায়িক বাঙালি চেতনা
অনেকেই বলেন, মধ্যবিত্ত মুসলিম পরিবার থেকে এলেও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান বাঙালির সাংস্কৃতিক পরিচিতিকে (ভাষা ও ঐতিহ্য) বড় করে দেখেছেন৷ ‘বাঙালি’ শব্দটিই ছিল জাতীয়তাবাদের একটি অসাম্প্রদায়িক পরিচয়৷ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি তারিক আলী বলেন, ‘‘বঙ্গবন্ধুর যে বিষয়টি আমাকে অনুপ্রাণিত করে তা হলো, কেমন করে মুসলিম লীগের ছাত্রনেতা থেকে তিনি বাঙালির মুক্তি আন্দোলনের নেতা বনে গেলেন৷’’
ভারতের সাংবাদিক পিকে বালাচন্দ্রন তাঁর একটি লেখায় লিখেছেন, ‘‘মুজিবের অসাম্প্রদায়িক চেতনা কিন্তু ধর্মকে বাদ দিয়ে নয়৷ তাঁর কাছে অসাম্প্রদায়িকতা ছিল সব ধর্মের মানুষের মাঝে একতা৷’’ তিনি আরো লিখেছেন, একইভাবে মহাত্মা গান্ধীও ভাবতেন৷ গান্ধী হিন্দু ধর্ম পালন করলেও সব ধর্মের মানুষের নেতা ছিলেন৷
ছবি: Journey/M. Alam
ভিন্নতায় মিল
মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হক বলেছেন, ‘‘তিনি (বঙ্গবন্ধু) ভিন্নতার মাঝে মিল তৈরি করেছেন এবং জাতীয়তাবাদ ও ধর্মকে এক করেছেন৷’’
ছবি: bdnews24
অসাম্প্রদায়িক জয় বাংলা শ্লোগান
সাবেক সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর বলেছেন, ‘‘অনেকে বঙ্গবন্ধুকে ‘বুর্জোয়া নেতা’ বলতে চাইলেও তিনি কিন্তু এলিট শ্রেণির বিরুদ্ধে ও শোষিতের পক্ষে যুদ্ধ করেছেন৷ শুধু তাই নয়, তিনি ধর্মীয় রাজনীতিকে অসাম্প্রদায়িক রাজনীতিতে পরিণত করেছেন এবং অসাম্প্রদায়িক শ্লোগান ‘জয় বাংলা’ তৈরি করেছেন, যা আমাদের মুক্ত দেশের প্রথম দিককার শব্দ৷’’
ছবি: Journey/M. Alam
নরেন্দ্র মোদীর ‘সাম্প্রদায়িকতা’
২০০২ সালে গুজরাটে সাম্প্রদায়িক সংঘাত বাঁধে৷ সংখ্যালঘু মুসলিমদের ওপর হিন্দু উগ্রবাদীদের হামলায় শত শত মুসলিম নিহত হন৷ অনেক হিন্দুও তাতে মারা যান৷ অভিযোগ আছে, রাজ্য সরকারের মদদে এই হামলা চালানো হয়৷ তখন বিজেপি ক্ষমতায় এবং নরেন্দ্র মোদী গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী৷ তখন থেকেই মোদী সাম্প্রদায়িক নেতা হিসেবে একেবারে খোলাখুলি অভিযুক্ত হন৷
ছবি: picture-alliance/AP
‘ফ্যাসিস্ট’
ঘটনা চলাকালীন বিখ্যাত লেখক অরুন্ধতী রায় বলেন, ‘‘এটা মানতেই হবে, ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্রের মদতে পুষ্ট জয় শ্রীরাম ধ্বনি দেওয়া জনতাই প্রথম হামলা চালিয়েছিল৷ পুলিশ নিষ্ক্রিয় থেকেছে বা অনেক ক্ষেত্রে অগ্নিসংযোগে সাহায্য করেছে৷ মারধর করেছে রাস্তায় পড়ে থাকা যুবকদের৷ আমরা জানি সেই যুবকদের মধ্যে একজন মারা গেছেন৷ হিংসায় নিহত বা ক্ষতিগ্রস্ত হিন্দু-মুসলিম সবাই ফ্যাসিস্ট প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সরকারের শিকার৷’’
ছবি: Getty Images/AFP/S. Panthaky
দ্বিচারিতা?
ভারতীয় গীতিকার জাভেদ আখতার বার বার মোদীর সমালোচনা করেছেন সিএএ-এনআরসি নিয়ে৷ তিনি বলেছেন, ‘‘বিজেপি বলছে তাঁরা প্রতিবেশী দেশের খ্রিস্টানদের নাগরিক করবে৷ আর বেঙ্গালুরুতেই যিশুর মূর্তি গড়তে বাধা দিচ্ছে তাঁরা৷ অসাধারণ! গোটা বিষয়টাই অর্থহীন৷’’
ছবি: Reuters/A. Dave
‘বরং হিংসা ছাড়ুন’: রাহুল
গেল রোববার নরেন্দ্র মোদী টুইট করে জানিয়েছেন, তিনি ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম ও ইউটিউব থেকে বেরিয়ে যাবার চিন্তা করছেন৷ এর জবাবে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বলেন, ‘‘আপনি সামাজিক গণমাধ্যমের অ্যাকাউন্ট নয়, বরং হিংসা ছাড়ুন৷’’
ছবি: Reuters/A. Abidi
8 ছবি1 | 8
সেলিমের মতো ততটা স্পষ্ট ভাবে না বললেও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্কের অধ্যাপক এবং ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ অনিন্দ্যজ্যোতি মজুমদারের বক্তব্য, ‘‘কূটনীতিতে দুইয়ের সঙ্গে দুই যোগ করলে সব সময় চার হয় না৷ বহু সময়েই নানা অজুহাত সামনে এনে মূল বিষয়টিকে ধামা চাপা দেওয়া হয়৷ এ ক্ষেত্রেও সে প্রশ্ন উঠছে সঙ্গত ভাবেই৷ তবে কোনও দেশই তা স্বীকার করবে না৷ ফলে করোনা অজুহাতই, এ কথাও নিশ্চিত করে বলা যায় না৷’’
আনুষ্ঠানিক ভাবে কিছু না বললেও, ভারতের বিদেশমন্ত্রকের সূত্র বলছে, করোনার কারণ দেখিয়ে বাংলাদেশ তাদের অনুষ্ঠান বাতিল করেছে৷ ফলে প্রধানমন্ত্রীরও আপাতত সেখানে যাওয়ার প্রশ্ন উঠছে না৷ কিন্তু ভারত এই সফর বাতিল করেনি৷ ফলে করোনাকে ভারত অজুহাত হিসেবে দাঁড় করিয়েছে, এই প্রশ্নটিই অবান্তর৷ বস্তুত, বৃহস্পতিবারই ভারতের বিদেশ মন্ত্রক আনুষ্ঠানিক ভাবে জানিয়ে দিয়েছিল মোদী বাংলাদেশ সফরে যাবেন৷
আলোচনায় উঠে আসছে আরও একটি যুক্তি৷ কূটনীতিবিদদের একাংশ বলছে, বাংলাদেশ সরকার বুঝতে পারছিল, এই সময়ে মোদীকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া বিচক্ষণ সিদ্ধান্ত হবে না৷ ফলে করোনাকে অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করে দেশের ভিতর তৈরি হওয়া বিক্ষোভকে সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেছে বাংলাদেশ৷ ভারত সরকারের প্রাক্তন উচ্চপদস্থ আধিকারিক অমিতাভ রায় ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, ‘‘আজ সকালেই বাংলাদেশ থেকে একজন ফোন করেছিলেন৷ তিনি বললেন, আমরা বেঁচে গেলাম। পুরো বিষয়টি নিয়ে যে ধরনের বিতর্ক হচ্ছিল, তাতে আশঙ্কা বাড়ছিল৷ এ ক্ষেত্রে করোনা সকলকেই বাঁচিয়ে দিল৷’’
দীর্ঘদিন ধরে সিএএ বিরোধী আন্দোলনে যুক্ত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ভারতীয় ছাত্রের বক্তব্য, শুধু বাংলাদেশ নয়, গোটা বিশ্বেই এখন সফর করতে ভয় পাচ্ছেন দেশের প্রধানমন্ত্রী৷ ইইউ পার্লামেন্ট থেকে শুরু করে যুক্তরাজ্য, বাংলাদেশ থেকে অ্যামেরিকা সর্বত্র মোদী-শাহের বিভিন্ন পদক্ষেপ সমালোচনার মুখে পড়ছে৷ দিল্লি দাঙ্গার পরে তা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে৷ মোদী বুঝতে পারছেন, সর্বত্রই এখন তাঁকে প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হবে৷ যতই বিষয়গুলিকে তিনি অভ্যন্তরীণ বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করুন৷ করোনা সত্যি সত্যিই ভারতকে অপ্রীতিকর প্রশ্নের হাত থেকে বাঁচিয়ে দিচ্ছে৷
দেখুন গত জানুয়ারির ছবিঘর...
বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর যত আয়োজন
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনে বিপুল পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে সরকার৷ ১৭ মার্চ ২০২০ থেকে শুরু হয়ে ১৭ মার্চ ২০২১ সাল পর্যন্ত চলবে মুজিববর্ষের এই আয়োজন৷
ছবি: bdnews24.com/PID
বঙ্গবন্ধু বিপিএল
চলতি মৌসুমের বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের নাম দেয়া হয়েছে বঙ্গবন্ধু বিপিএল৷ আট ডিসেম্বর এই আয়োজনের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা৷ মূল আকর্ষণ ছিল বলিউড সুপারস্টার সালমান খান ও ক্যাটরিনা কাইফের পারফরম্যান্স৷
ছবি: bdnews24.com/PID
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান
বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ১২ জানুয়ারি ঢাকার হাতিরঝিলের এমফিথিয়েটারে বর্ণিল সাংস্কৃতিক আয়োজন করে অর্থমন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ৷ বছরব্যাপী সাংস্কৃতিক আয়োজনে স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র, প্রামাণ্যচিত্র, আন্তর্জাতিক প্রকাশনা, বাংলা ও ইংরেজিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব জন্মশতবার্ষিকী স্মারকগ্রন্থ প্রকাশের পরিকল্পনা৷
ছবি: bdnews24.com
ক্ষণগণনা
আগামী ১৭ মার্চ থেকে শুরু হবে ‘মুজিববর্ষ’-এর বছরব্যাপী কর্মসূচি৷ যার ক্ষণগণনা শুরু হয়েছে গত ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে৷ তেজগাঁওয়ে পুরাতন বিমানবন্দরে বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন ‘প্রতীকীভাবে’ ফুটিয়ে তোলা হয়েছে৷অনুষ্ঠানে মুজিববর্ষের লোগো উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা৷
ছবি: bdnews24.com/PID
সংসদে বিশেষ অধিবেশন
মুজিববর্ষ উপলক্ষে সংসদে বিশেষ অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে৷ ২২ মার্চ অধিবেশন শুরুর আগে সব সংসদ সদস্য ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করে বিশেষ অধিবেশনে যোগ দেবেন৷
ছবি: bdnews24.com
জাতীয় দিবস
গণহত্যা দিবস, স্বাধীনতা দিবস, মুজিবনগর দিবস, আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠা, জাতীয় শোক দিবস, বুদ্ধিজীবী দিবস, বিজয় দিবসসহ এই বছরের সব জাতীয় আয়োজনে বঙ্গবন্ধুকে বিশেষভাবে স্মরণ করা হবে৷
ছবি: DW/M. M. Rahman
আসবেন ম্যারাডোনা
বঙ্গবন্ধু জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকায় আসবেন ফুটবলের জীবন্ত কিংবদন্তী ম্যারাডোনা৷ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমকে এই তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন৷ যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় দুটি ইউরোপীয় ক্লাবের মধ্যে প্রীতি ম্যাচ আয়োজনের পরিকল্পনা করেছে বলেও জানা গেছে৷
ছবি: Reuters/S. Perez
ক্রীড়া আসর
বছরব্যাপী বিভিন্ন ক্রীড়া ইভেন্টের আয়োজন করবে ফেডারেশনগুলো৷ এর মধ্যে রয়েছে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক গোল্ডকাপ ফুটবল-২০২০, দুটি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট ম্যাচ, আন্তর্জাতিক হকি টুর্নামেন্ট, সাফ অ্যাথলেটিকস চ্যাম্পিয়নশিপ, বিশ্ব কাবাডি প্রতিযোগিতা, আন্তর্জাতিক ভলিবল প্রতিযোগিতা, আন্তর্জাতিক রোলবল গোল্ডকাপ, আন্তর্জাতিক হ্যান্ডবল প্রতিযোগিতা, ইন্টারন্যাশনাল এয়ারগান চ্যাম্পিয়নশিপ৷
ছবি: Getty Images/A. Davidson
বইমেলা
অমর একুশে বইমেলা ২০২১ ও নভেম্বরে ঢাকা আন্তর্জাতিক বইমেলা ২০২০ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে উৎসর্গ করা হবে৷
ছবি: Public domain
বঙ্গবন্ধু মান মন্দির
ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলায় স্থাপন করা হবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মান মন্দির৷ কেননা, কর্কটক্রান্তি ও দ্রাঘিমাংশের সংযোগস্থলের বিচারে এই স্থানটি ভৌগলিকভাবে তাৎপর্যপূর্ণ৷ (প্রতীকী ছবি)
ছবি: picture-alliance/AP Photo/P. Semansky
গিনেস রেকর্ড
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে একটি আন্তর্জাতিক পুরস্কার দেয়া হবে৷ লাখলাখ হাতে মানব প্রতিকৃতি তৈরির মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের প্রতিকৃতি তৈরি করে গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে অন্তর্ভুক্ত করার কর্মসূচিও রয়েছে৷
ছবি: guinnessworldrecords.com
বৃক্ষ রোপন
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব স্মরণে সারা দেশে এক কোটি বৃক্ষরোপণ করবে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়৷
ছবি: DW/M.M. Rahman
১৭ মার্চ ২০২১
সোহরাওয়ার্দী উদ্যান বা জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় মুজিববর্ষের সমাপনী অনুষ্ঠান আয়োজন করা হবে৷
আন্তর্জাতিক পরিসরে
বঙ্গবন্ধুকে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দিতে বিভিন্ন দেশে অনুষ্ঠান করার পরিকল্পনা করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়৷ বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশের ৭৭টি দূতাবাসে ২৬০টিরও বেশি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে বলে জানানো হয়েছে৷