1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পঙ্গপালের বিরুদ্ধে যেভাবে লড়ছে পূর্ব আফ্রিকা

১২ মে ২০২০

কয়েক দশকের মধ্যে হানা দেওয়া সবচেয়ে ভয়াবহ পঙ্গপালের বিরুদ্ধে পূর্ব আফ্রিকার দেশগুলোর লড়াই অব্যহত আছে৷ গত বছর হানা দেয়া এ মরু পঙ্গপালের ডিম ধংসে তারা প্রাণন্তরকর চেষ্টা করে যাচ্ছে৷

ছবি: Reuters/N. Mwangi

পূর্ব আফ্রিকায় মার্চ থেকে মে মাস পর্যন্ত বর্ষা মৌসুম৷ বৃষ্টিতে মাটি আর্দ্র হয়ে উঠায় উপযুক্ত পরিবেশ পেয়ে পঙ্গপালেরডিম ফুটে বাচ্চা বেরিয়ে আসে৷ যা নতুন করে হামলা এবং মাইলের পর মাইল ফসলের ক্ষেত ধ্বংস করে ফেলার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে৷ যদি তাই হয় তবে এরইমধ্যে খদ্য সংকটে ভুগতে থাকা দেশগুলোর উপর বাড়তি সংকটের বোঝা নেমে আসবে৷

সেখানে এবছর শুধু এপ্রিল মাসে হানা দেওয়া সবচেয়ে বড় পঙ্গপালের ঝাঁকটির আয়তন দুই হাজার কিলোমিটারের বেশি ছিল৷ যা আয়তনে ইথিওপিয়ার লেক তানার চেয়ে বড়৷

এত বড় আকারের পালে কোটি কোটি পতঙ্গ থাকে৷ এরা একদিনে যে পরিমাণ খাবার খেয়ে সাবাড় করে তা দিয়ে কেনিয়া ও সোমালিয়ার মোট জনগণের এক দিনের খাবার হয়ে যায়৷

এবারের পঙ্গপাল সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করেছে কেনিয়া ও ইথিওপিয়ার৷ মৌসুমি বৃষ্টিপাতে উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি হওয়ায় কেনিয়া, ইথিওপিয়ার দক্ষিণ অঞ্চল এবং সোমালিয়ায় নতুন করে পঙ্গপাল দেখা দেওয়ার পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে৷

জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) পঙ্গপাল বিষয়ক জে্যষ্ঠ কর্মকর্তা কিথ ক্রিসম্যান বলেন, ‘‘জুনের শেষ বা জুলাই মাসের শুরুর দিকে পঙ্গপালের পরবর্তী প্রজন্ম হানা দিতে পারে৷

‘‘এটা নিশ্চিতভাবেই দারুণ উদ্বেগের৷ কারণ, ওই অঞ্চলে তখন ফসল কাটার মৌসুম শুরু হবে৷’’

পঙ্গপাল ধ্বংসের সবচেয়ে কার্যকর অস্ত্র সেগুলোর ডিম ধ্বংস করা৷ এজন্য নিয়মিত নজদারি জরুরি৷ ক্রিসম্যান বলেন, ‘‘এটা খুব কঠিন কাজ না৷ কীটনাশক প্রয়োগ করেই পঙ্গপাল মারা সম্ভব৷’’

হাত মেশিনে মাঠে কীটনাশক ছড়ানোর পাশাপাশি প্লেন বা হেলিকপ্টার থেকে বিস্তৃতিত এলাকায় বিষ প্রয়োগ সম্ভব৷

বর্তমান সংকট এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে আছে জানিয়ে তিনি আরো বলেন, ‘‘এটা অনেকটা দাবানলের মত৷ যখন আপনি এটাকে শুরুতে দেখবেন, তখন ক্যাম্পফায়ার মনে হবে৷ আপনাকে তখনই সেটা নিভিয়ে ফেলতে হবে৷ যদি আপনি সেটা না করেন তবে, ক্যাম্পফায়ারই ছড়িয়ে দাবানলে পরিণত হবে৷ তখন সমস্যা জটিল থেকে জটিলতর হবে এবং সমাধানও ব্যয়বহুল হয়ে পড়বে৷’’

দীর্ঘ সময় ধরে কেনিয়ায় পঙ্গপাল হানা দেয়নি৷ তাই দেশটির এ সংকট মোকাবেলার তাজা অভিজ্ঞতাও ছিল না৷ ফলে এবারের হামলা মোকাবেলায় ব্যবস্থা গ্রহণে দেশটির কয়েকমাস সময় লেগেছে৷ যেহেতু পঙ্গপাল খুব দ্রুত বংশবিস্তার করে তাই এটিকে মোকাবেলায় এই সময় ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ৷

ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলো এরইমধ্যে হাজার হাজার হেক্টর জমিতে কীটনাশক প্রয়োগ করেছে৷

কিন্তু বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে মাটি ভেজা থাকবে, যা পঙ্গপালের বংশবিস্তারের অনুকূল পরিবেশ৷ সেক্ষেত্র যে কীটনাশক প্রয়োগ করা হয়েছে সেটা যথেষ্ট হবে না৷ যার প্রমাণ গত মাসই পাওয়া গেছে৷ আগামী মাসগুলোতে যা ২০ থেকে ৪০০ গুণ বেশি হারে হামলা হতে পারে৷

এ অবস্থায় ইথিওপিয়ার ‘সাউথ উলু জোন’ এ বসবাস করা সম্প্রদায়গুলো ২০১৯ সাল থেকে একজোট হয়ে কাজ করছে৷ তারা পঙ্গপাল হানা দেওয়ার আগেই একজোট হয়ে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার ফসল দ্রুত কেটে ফেলছে৷ এমনকি তারা ফসল ও খাদ্য ভাগভাগিও করছে৷ যাতে কোনো সম্প্রদায় অনাহারে মারা না যায়৷

কিন্তু করোনার এ সময়ে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা জরুরি৷ যদিও ইথিওপিয়ায় এখনো কঠোর লকডাউন জারি হয়নি৷ কিন্তু জাতীয় জারুরি অবস্থা জারি করে লোকজনের চলাচলে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে৷ তবে জরুরি সেবা হিসেবে ইথিওপিয়ায় পঙ্গপাল দমনে ফসলের মাঠে কীটনাশক প্রয়োগ অব্যাহত আছে৷

সাউথ উলু জোনে সাধারণত কৃষি কর্মকর্তারা সরজমিনে পঙ্গপাল প্রতিরোধ ব্যবস্থা নজরদারি করতেন৷ কিন্তু এখন তারা মাঠে যাচ্ছেন না৷ বরং কৃষকরা ফোনে বা অনলাইনে তাদের কাছে মাঠের অবস্থা জানাচ্ছেন৷

কিরা শাখট/এসএনএল

১২ এপ্রিলের ছবিঘরটি দেখুন...

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ