ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ ১২ জেলাকে করোনা সংক্রমণের উচ্চ ঝুঁকির এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর৷ সর্বোচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ জেলার তালিকায় রাজধানী ঢাকা৷
বিজ্ঞাপন
ডয়চে ভেলের কনটেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম অনুযায়ী, বুধবার অধিদপ্তর জানায়, ১০ থেকে ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত তথ্যের ভিত্তিতে জেলাগুলোকে উচ্চ, মাঝারি ও কম ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে ভাগ করে যথাক্রমে রেড বা লাল, ইয়েলো বা হলুদ ও গ্রিন বা সবুজ অঞ্চল হিসেবে চিহ্নিত করেছে৷ নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ২০ শতাংশের বেশি হলে লাল, ৩০ শতাংশের বেশি হলে গাঢ় লাল রঙে চিহ্নিত করা হয়েছে৷
ঢাকায় বুধবার থেকে গত এক সপ্তাহে করোনাভাইরাসের ৬২ হাজার ২১টি নমুনা পরীক্ষায় ১৭ হাজার ৪৩৭ জনের করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে৷ অর্থাৎ শনাক্তের হার ২৮ দশমিক ১১ শতাংশ৷ ঝুঁকিপূর্ণ জেলা হিসেবে ঢাকা সর্বোচ্চ৷
আর গ্রিন জোনে আছে কুমিল্লা, চাঁদপুর, পাবনা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, হবিগঞ্জ, নরসিংদী, কিশোরগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, টাঙ্গাইল, মাদারীপুর, রাজবাড়ী, ভোলা, নেত্রকোনা, গাইবান্ধা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, বরগুনা, চুয়াডাঙ্গা, নীলফামারী ও মেহেরপুর ৷ বান্দরবান জেলায় শনাক্তের হার ১৪ দশমিক ১২ শতাংশ হলেও উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ ধরা হয়নি, এ জেলায় খুব কম সংখ্যক নমুনা পরীক্ষা করে শনাক্তের এই হার পাওয়া গেছে৷ গত এক সপ্তাহে ৬১ জেলায় শনাক্তের হার বেড়েছে, কমেছে মাত্র তিনটি জেলায় ৷ সবচেয়ে বেশি বেড়েছে ঢাকায় তারপর চট্টগ্রাম এবং তৃতীয় স্থানে রাঙামাটি৷
‘‘সংক্রমণ সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে, দিনদিন সংক্রমণ বাড়ছেই৷ একদিনে ৩০ থেকে ৫০ হাজারও শনাক্ত হওয়ার আশঙ্কা আছে, যদি আমরা যথেষ্ট পরিমাণে টেস্ট করি৷’’ বুধবার বিডিনিউজকে এমন আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন আইইডিসিআরের উপদেষ্টা ডা. মুশতাক হোসেন ৷
এনএস/কেএম (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)
বুস্টার ডোজের আদ্যোপান্ত
করোনা ভাইরাসের ভ্যারিয়েন্ট ও টিকার আলোচনায় সবশেষ সংযোজন ওমিক্রন ও বুস্টার ডোজ৷ বুস্টার ডোজের আলোচনা আগেই ছিল৷ তবে ওমিক্রন আসায় বুস্টার ডোজের প্রয়োগে গতি পেয়েছে বেশ৷ ছবিঘরে দেখুন বুস্টার ডোজের আদ্যোপান্ত৷
ছবি: Frank Hoermann/SVEN SIMON/picture alliance
বুস্টার ডোজ কী?
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যমতে, করোনা ভাইরাস ঠেকাতে টিকার প্রাথমিক পূর্ণ ডোজ (ধরন হিসেবে এক বা দুই ডোজ) পাওয়া একটি জনসংখ্যার মাঝে টিকার কার্যকারিতা নির্দিষ্ট মাত্রার নিচে নেমে যাওয়ায় বাড়তি যে ডোজ দেয়া হচ্ছে তাকেই বলা হচ্ছে বুস্টার ডোজ৷ এটি দেয়ার মূল লক্ষ্য হল, মানবশরীরে টিকার কার্যকারিতা বাড়ানো৷
ছবি: Tsafrir Abayov/AP Photo/picture alliance
পেলেন কতজন?
‘আওয়ার ওয়ার্ল্ড ইন ডেটা’র ২২ ডিসেম্বর ২০২১ পর্যন্ত হিসেব বলছে, পুরো পৃথিবীতে প্রতি ১০০ জনে ৫.৮৬ জন বুস্টার ডোজ পেয়েছেন৷ এর মধ্যে চিলির বুস্টার পাওয়ার হার সবচেয়ে বেশি ৫২.৬৮%৷ এছাড়া যুক্তরাজ্যে প্রতি ১০০ জনে ৪৫.২২, ইসরায়েলে ৪৪.৮৯ ও উরুগুয়েতে ৪২.৫৯ জন পেয়েছেন এই ডোজ৷
ছবি: Lukas Barth/REUTERS
ছয় না তিন মাস?
প্রাথমিকভাবে বলা হচ্ছিল, টিকার পূর্ণডোজের ছয়মাস পর বুস্টার ডোজ নেয়া যেতে পারে৷ কারণ ছয় মাস পর টিকার কার্যকারিতা এরপর কমতে শুরু করে৷ কিন্তু সম্প্রতি জার্মানির টিকা কমিশন বা এসটিআইকেও বলছে, পূর্ণ ডোজের তিন মাস পরই নেয়া যাবে বুস্টার৷
ছবি: Frank Hoermann/SVEN SIMON/picture alliance
ওমিক্রনের টেনশন
করোনা ভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনের প্রকোপের কারণে বুস্টার ডোজের প্রতি ঝুঁকছে দেশগুলো৷ যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপে ওমিক্রনের প্রভাব বাড়ায় নতুন করে বিধিনিষেধ আরোপের পাশাপাশি বুস্টার টিকার ওপর জোর বাড়ানো হচ্ছে৷
ছবি: Fleig/Eibner-Pressefoto/picture alliance
ইউরোপে ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা
ইউরোপীয়ান ইউনিয়ন এরইমধ্যে বুস্টার ডোজ ছাড়া ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারির সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷ সম্প্রতি ইউরোপীয়ান কমিশন ঘোষণা দিয়েছে, প্রাথমিক পূর্ণ ডোজ পাওয়া ব্যক্তিরা বুস্টার ডোজ না নেয়া থাকলে কেবল নয় মাস ইউরোপে ভ্রমণের সুযোগ পাবেন৷ অন্যথায় তাদের ভ্যাকসিন পাসপোর্ট কার্যকর থাকবে না৷
ছবি: Frank Hoermann/SVEN SIMON/picture alliance
ওমিক্রনে বুস্টার কতটা কার্যকর?
ওমিক্রন ঠেকাতে বুস্টার ডোজ কতটা কার্যকর তা নিশ্চিত করে এখনো (ডিসেম্বর ২০২১ পর্যন্ত) বলতে পারেনি ইউরোপীয় মেডিসিনস এজেন্সি কিংবা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা৷ কোন কোন টিকা কোম্পানি দাবি করছে, তাদের টিকা এই ভ্যারিয়েন্ট প্রতিরোধে কার্যকর৷ তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধু টিকা নয়, মাস্ক পরাসহ বিধিনিষেধ অনুসরণ করলেই কেবল প্রচণ্ড সংক্রমক ওমিক্রনকে ঠেকানো যাবে৷
ছবি: Charlotte Chelsom-Pill/DW
বাধ্যতামূলক টিকা
ইউরোপে অস্ট্রিয়াতে সবার আগে করোনার টিকা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে৷ জার্মানিতে হাসপাতাল ও নার্সিং হোমগুলোতে কাজ করাদের জন্য টিকা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে৷ এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যেও অনেক দেশ টিকার ব্যাপারে কড়াকড়ি আরোপ করেছে৷ এছাড়া ২০২২ সালের শুরুতে অনেক দেশেই বিশেষ বিশেষ পেশা বা বয়সের মানুষের জন্য টিকা বাধ্যতামূলক করবে বলে জানিয়েছে৷
ছবি: Martin Meissner/ASSOCIATED PRESS/picture alliance
টিকার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ
অন্যদিকে, বুস্টারসহ কোন ধরনের টিকা নিতে চান না এমন লোকেরও অভাব নেই৷ অস্ট্রিয়া, বেলজিয়াম, নেদারল্যান্ডসসহ ইউরোপের অনেক জায়গায় টিকা ও বিধিনিষেধের বিরুদ্ধে সম্প্রতি ব্যাপক আন্দোলন দেখা গেছে৷ পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষও হয়েছে প্রতিবাদকারীদের৷
ছবি: Angelo Carconi/ANSA/picture alliance
ধনী দেশে বুস্টার, আর গরীব দেশে?
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা উন্নত বিশ্বের লোকজন যে ঢালাওভাবে করোনার বুস্টার টিকা দেয়া শুরু করেছে, তার নিন্দা জানিয়েছে৷ বিশ্বের অনেক দেশে এখন প্রয়োজনীয় প্রাথমিক টিকার সংস্থানও হয়নি৷ আফ্রিকা মহাদেশের বেশ কয়েকটি দেশে ১ শতাংশের কম মানুষ টিকার আওতায় এসেছেন৷ সেখানে বিশ্বে এখন ২০ ভাগ টিকা বুস্টার ডোজ হিসেবে দেয়া হচ্ছে৷
ছবি: Evrard Ngendakumana/Xinhua/imago images
মিশন চতুর্থ বুস্টার
তৃতীয় ডোজ বা বুস্টার ডোজের পর এখন আলোচনা চতুর্থ ডোজ নিয়ে৷ জার্মানির ডাক্তার অ্যাসেসিয়েশনের প্রধান উলরিশ ভাইগেল্ডট সম্প্রতি বলেন যে, ২০২২ সালের গ্রীষ্মে বা তারপর চতুর্থ বুস্টার ডোজের প্রয়োজন পড়তে পারে৷