1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

করোনার টিকা যেভাবে পেতে চায় বাংলাদেশ

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
১১ সেপ্টেম্বর ২০২০

করোনা ভ্যাকসিন যেখানে প্রথমে পাওয়া যাবে সেখান থেকেই সংগ্রহ করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা৷ স্বাস্থ্য সচিবও বলেছেন, ‘‘শুরুতেই ভ্যাকসিন পাওয়ার জন্য আমরা সব ধরনের যোগাযোগ করছি৷ টাকাও প্রস্তুত রাখা হয়েছে৷’’

ছবি: picture-alliance/dpa/Tass/V. Prokofyev

তবে এই ভ্যাকসিন ব্যবহারের জন্য বাংলাদেশকে যথেষ্ট প্রস্তুতি নিতে হবে বলে মনে করেন জাতীয় টেকনিক্যাল কমিটির সদস্য ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম৷ তার মতে, ‘‘আগে ঠিক করতে হবে কোন ভ্যাকসিন আমাদের দেশের মানুষের জন্য উপযোগী৷’’

এর মধ্যে সবচেয়ে বড় অগ্রগতি হিসেবে দেখা হচ্ছে চীনা ভ্যাকসিনকে৷ আইসিডিডিআর,বি সূত্রে জানা গেছে, এই মাসের মধ্যে চীনের সিনোভ্যাক কোম্পানির ভ্যাকসিনের ট্রায়াল শুরু হবে বাংলাদেশে৷ এর ভালো দিক হলো, ট্রায়াল সফল হলে বাংলাদেশেরই দুটি কোম্পানি এখানে এই ভ্যাকসিন উৎপাদন করবে৷ সেই দুটি প্রতিষ্ঠানের সাথে এরই মধ্যে সিনোভ্যাকের চুক্তিও হয়েছে৷ তারা বাংলাদেশের মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বিবেচনা করে দাম নির্ধারণ করবে৷ আর এক লাখ ১০ হাজার ভ্যাকসিন ফ্রি দেবে৷ এই ট্রায়াল পরিপূর্ণভাবে শেষ হতে ১৮ মাস লাগার কথা৷ ট্রায়াল শুরুর ছয় মাস পর ডাটা অ্যানালাইসিস শুরু হবে৷ ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘‘এখন পর্যন্ত আমার কাছে চীনা ভ্যাকসিনই সুবিধাজনক মনে হচ্ছে৷’’

বাংলাদেশ এরই মধ্যে চীন ছাড়াও রাশিয়ার সাথে ভ্যাকসিনের জন্য কথা বলেছে৷ স্বাস্থ্য সচিব আবদুল মান্নান বলেন, ‘‘আমরা সারা দুনিয়ায় যেখানেই ভ্যাকসিন হচ্ছে সেখানেই চিঠি দিচ্ছি, পত্রালাপ করছি, যোগাযোগ করছি৷ আমরা বসে নেই৷ প্রধানমন্ত্রী তো সংসদে বলেছেন, যেখানেই আগে পাওয়া যাবে সেখান থেকেই আমরা ভ্যাকসিন আনবো৷ প্রয়োজনে কিনে আনব৷ এজন্য আমরা টাকাও প্রস্তুত রেখেছি৷’’

আমরা সারা দুনিয়ায় যেখানেই ভ্যাকসিন হচ্ছে সেখানেই চিঠি দিচ্ছি: স্বাস্থ্য সচিব

This browser does not support the audio element.

ভ্যাকসিন পেতে যোগাযোগের তৎপরতার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘আমরা চীনা ভ্যাকসিনের আমাদের দেশে ট্রায়ালের অনুমতি দিয়েছি৷ রাশিয়ার সাথে কথা বলেছি৷ ভারতের সাথে কথা বলেছি৷ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি৷’’ তিনি জানান, গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ভ্যাকসিনস অ্যান্ড ইম্যুনাইজেশন-এর (গ্যাভি) সঙ্গেও বাংলাদেশ নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে৷ ওখানে বাংলাদেশ তালিকাভুক্ত৷ বুকিং দেয়া আছে৷

অক্সফোর্ড ভ্যাকসিনের ট্রায়াল বন্ধ হয়ে যাওয়া বাংলাদেশের জন্য একটি হতাশার খবর৷ বেক্সিমকো ফার্মা ভারতীয় প্রতিষ্ঠান সেরাম ইন্সটিটিউটের সঙ্গে অক্সফোর্ড ভ্যাকসিন বাংলাদেশে বিপণনের চুক্তি করেছে৷ সেরাম ইন্সটিউটের সঙ্গে ভারতে টিকা উৎপাদনের চুক্তি আছে অক্সফোর্ডের৷ বাংলাদেশে এই টিকা উৎপাদনের কোনো চুক্তি হয়নি৷

ভারত নিজেও করোনার টিকা নিয়ে কাজ করছে৷ ভারতের বায়োটেক ইন্টারন্যাশনাল ওই টিকার ট্রায়াল বাংলাদেশে করতে চায়৷ বাংলাদেশেরও তাতে আগ্রহ আছে৷ ভারত থেকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা পাবে বাংলাদেশ৷

১৭৯টি পৃথক টিকা উদ্ভাবনের চেষ্টা চলছে তার মধ্যে প্রাথমিক পর্যায়ে আছে ১৪৫টি৷ আর পরীক্ষামূলক পর্যায়ে আছে ৩৪টি৷ এসব টিকা শেষ পর্যন্ত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কাছে প্রি কোয়ালিফাই করলেই বাজারজাত করার অনুমতি পাবে৷ কিন্তু রাশিয়া ১২ আগস্ট টিকা আবিস্কারে সফলতার ঘোষণা দিলেও স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদন পায়নি৷ তারপরও রাশিয়ার টিকা পেতে আগ্রহী বাংলাদেশ৷ বাংলাদেশেরও একটি প্রতিষ্ঠান টিকা তৈরির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে৷

আগে ঠিক করতে হবে কোন ভ্যাকসিন আমাদের দেশের মানুষের জন্য উপযোগী: ডা. নজরুল ইসলাম

This browser does not support the audio element.

যেসব দেশের মানুষ গরিব বা নিম্ন আয়ের, তাদের বিনামূল্যে বা নামমাত্র দামে টিকা সরবরাহের জন্য কাজ করছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা৷ সংস্থাটি কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন গ্লোবাল অ্যাকসেস (কোভ্যাক্স) নামে একটি কোয়ালিশন গড়ে তুলেছে৷ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কোভ্যাক্স-এর সাথেও যোগাযোগ রাখছে৷

ডা. নজরুল ইসলাম বলেছেন, ‘‘এছাড়া বিনামূল্যে বা কম মূল্যে ভ্যাকসিন পাওয়ার আরো কিছু কোয়ালিশন আছে৷ তাদের সাথেও যোগাযোগ করতে আমরা স্বাস্থ্যমন্ত্রলয়কে পরামর্শ দিয়েছি৷’’

তার মতে, আগে ভ্যাকসিন পাওয়া যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি কোন ভ্যাকসিন বাংলাদেশের মানুষের জন্য প্রয়োজনীয় ও কাদের ভ্যাকসিন প্রয়োজন, সেটা নির্ধারণও জরুরি৷ কারণ, করোনা বিভিন্ন দেশে তার রূপ পরিবর্তন করছে৷ তাই বাংলাদেশে ট্রায়াল দিয়ে নিশ্চিত হওয়া প্রয়োজন যে, এখানে কোন ভ্যাকসিন কার্যকর হবে৷ আর সবার ভ্যাকসিন লাগবেনা৷ যার অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে, তার তো ভ্যাকসিনের প্রয়োজন নেই৷ যে ভাইরাস বহন করছে তাকে দিয়েও তো কোনো লাভ নেই৷

তিনি বলেন, ‘‘আমরা মনে করছি, ভ্যাকসিন আসলেই সবাই বেঁচে যাবো৷ কোনো স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে না৷ বিষয়টি সেরকম নয়৷’’

জাতীয় টেকনিক্যাল কমিটি এখন মূলত ভ্যাকসিন এলে তা সংরক্ষণ ও বিতরণ কীভাবে হবে, তা নিয়ে কাজ করছে৷

২৯ আগস্টের ছবিঘরটি দেখুন...

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ