থাইল্যান্ডের লপবুরি প্রদেশে খাবারের জন্য দুইদল বানের লড়াইয়ের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে৷ বানরগুলো পর্যটকদের দেওয়া খাবারের উপর নির্ভরশীল ছিল৷
বিজ্ঞাপন
করোনা ভাইরাসের কারণে বিশ্বজুড়ে পর্যটন থমকে গেছে৷ মারাত্মক সংক্রামক এ ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে মানুষকে ঘরে থাকতে বলা হচ্ছে৷ আক্রান্ত বেশিরভাগ দেশ পর্যটক ভ্রমণের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করায় অন্য সব দেশের মতো থাইল্যান্ডেও পর্যটক নেই বললেই চলে৷
এ কারণে বানরের দল খাবারের খোঁজে জঙ্গল ছেড়ে লোকালয়ে চলে আসছে৷ যদিও ওই প্রদেশের লোকজনের দাবি, তারা বানরের খেয়াল রাখছেন৷
স্থানীয় প্রশাসন থেকে সেগুলোকে খাবার দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে৷ ব্যক্তি উদ্যোগেও বানরের দলকে খাবার দেয়া হচ্ছে৷ ফলে সেগুলোর অনাহারে মরার আশঙ্কা নেই৷
কিন্তু পর্যটক না থাকায় স্থানীয়দের জীবন যাপন দিন দিন কষ্টকর হয়ে উঠছে৷
৪১ বছর বয়সি পাকাওয়ান কুন্তাওয়ে সবজি বিক্রি করেন৷ কিন্তু পর্যটক না থাকায় তার বেচাবিক্রি শূন্যের কোঠায় নেমে এসেছে বলে জানান এই নারী৷
বলেন, ‘‘বানরের দল অনাহারে থাকবে না৷ কর্মকর্তারা তাদের খোঁজ-খবর রাখছে, দেখাভাল করছে৷ প্রতিদিন সকালে বাজার থেকে সবজি কিনে সেগুলোকে খেতে দেওয়া হচ্ছে৷
''তাই এগুলো অনাহারে থাকবে না, কিন্তু আমাদের থাকতে হবে৷''
করোনার আগে, করোনার পরে
ছবিগুলো দেখলে বুঝতে পারবেন কয়েকদিন আগে শত সমস্যার মাঝেও কত আনন্দ ছিল, কত গতিময় ছিল জীবন৷ নভেল করোনা ভাইরাস গোটা বিশ্বকে প্রায় স্থবির করে দিয়েছে৷
ছবি: Reuters/G. Newton
স্বাভাবিক অবস্থায় ইরাকের মাজার
গত অক্টোবরে শিয়াদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান চলার সময় ইরাকের নাজাফ শহরের ইমাম আলী মাজারে ছিল প্রচণ্ড ভীড়।
ছবি: Reuters/Alaa Al-Marjani
সেই মাজার এখন যেমন
করোনা ভাইরাসের কারণে ইরাকের নাজাফ শহরের ইমাম আলী মাজার আপাতত বন্ধ। বাইরে কিছু মানুষের আনাগোনা ছিল কদিন আগেও। এখন এলাকাটি আরো ফাঁকা।
ছবি: Reuters/Alaa Al-Marjani
প্রাসাদে দর্শণার্থীর ভীড়
ইরাকের এরবিল শহরের অন্যতম আকর্ষণ এই প্রাসাদ। গত ১৩ মার্চও সেখানে দর্শণর্থীর ভিড় দেখা গেছে।
ছবি: Reuters/A. Lashkari
মানুষ নেই, আছে কবুতর
এরবিল শহরের রাজপ্রাসাদ দেখতে এখন আর দর্শণর্থীরা ভীড় করে না। প্রাসাদপ্রাঙ্গণ এখন শান্তির কপোতের রাজত্ব।
ছবি: Reuters/A. Lashkari
যেমন ছিল টোকিওর ডিজনিল্যান্ড
জাপানের টোকিও ডিজনিল্যান্ডে সবসময়ই থাকে মানুষের ভীড়। গত পহেলা ফেব্রুয়ারি টোকিও ডিজনিল্যান্ডের দ্য স্পেস মাউন্টেন রাইডের এই ছবি তোলা হয়েছিল ওপর থেকে।
ছবি: Reuters/Maxar Technologies
অচেনা ডিজনিল্যান্ড
টোকিও ডিজনিল্যান্ডের স্পেস মাউন্টেন রাইডএলাকার নতুন ছবি। করোনার আতঙ্কে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে ডিজনিল্যান্ড।
ছবি: Reuters/Maxar Technologies
কয়েকদিন আগে নাজাফ বিমানবন্দর
করোনার আতঙ্ক তখন ছড়াতে শুরু করেছে। ইরাকের নাজাফ বিমানবন্দরে তাই মাস্ক পরে বিমানের অপেক্ষায় যাত্রীরা।
চেক প্রজাতন্ত্র সরকার করোনার কারণে জনগণের অবাধ যাতায়াতে নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর জনমানবহীন চার্লস ব্রিজ।
ছবি: Reuters/David W Cerny
সেখানে তখন গাড়ি আর গাড়ি
যুক্তরাষ্ট্রের অরল্যান্ডোতে ডিজনির ম্যাজিক কিংডমের বাইরে গত ১৫ মার্চও ছিল কয়েক হাজার গাড়ির ভীড়।
ছবি: Reuters/G. Newton
কার পার্কে গাড়ি নেই
যুক্তরাষ্ট্রের অরল্যান্ডোর ম্যাজিক পার্ক এখন বন্ধ, তাই বাইরে একটাও গাড়ি নেই।
ছবি: Reuters/G. Newton
12 ছবি1 | 12
মানুষ বাস্তবতা মেনে নেওয়ার চেষ্টা করছে
দক্ষিণ লন্ডনের বাসিন্দা টম কেনেডি তার ১৫ মাসের মেয়েকে নিয়ে একটি পার্কে ব্যায়াম করছেন৷ মেয়েকে নিয়েই তিনি স্কোয়াট দিচ্ছেন৷
করোনা ভাইরাসের এপিসেন্টার এখন ইউরোপ৷ ইটালি, স্পেন ও ফ্রান্সে ভাইরাসটি মারাত্মকভাবে ছড়িয়ে গেছে৷
করোনার বিস্তার ঠেকাতে ইটালি ও স্পেন পুরো লকডাউন করে দেওয়া হয়েছে৷ ফ্রান্সেও প্রায় একই অবস্থা৷
জার্মানি ও যুক্তরাজ্যে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ এখনো অতটা মারাত্মক রূপ না নিলেও অবস্থা সেদিকেই যাচ্ছে৷
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ, লোকজনকে বিনা প্রয়োজনে বাইরে বের হতে নিষেধ করা হয়েছে৷ এমনকি সম্ভব হলে বাসা থেকে অফিস করার নির্দেশও এসেছে৷
কেনেডি বলেন, ‘‘একই সময়ে বাড়ি থেকে কাজ করা এবং সন্তানের যত্ন নিতে গিয়ে আমরা হিমশিম খাচ্ছি৷ আমরা বাস্তবতা মেনে নেওয়ার চেষ্টা করছি এবং বাইরে এসে কিছু ব্যায়াম করে নিজেদের সুস্থ রাখতে চাইছি৷''
মেয়ের নার্সারি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অফিসের কাজের পাশপাশি মেয়ের যত্ন নিচ্ছেন কেনেডি৷ তার স্ত্রী-ও বাসা থেকে কাজ করা শুরু করেছেন৷
তিনি বলেন, '‘কত দিন এ অবস্থা থাকবে কেউ জানে না৷ এই অনিশ্চয়তাই সবচেয়ে বড় উদ্বেগের৷'‘
এসএনএল/এসিবি (রয়টার্স)
অর্থনৈতিক ধাক্কা সামলাতে কোন দেশ কী করছে
করোনা ভাইরাসের কারণে বিশ্ব অর্থনীতিতে বড় ধরনের ধাক্কা লেগেছে৷ প্রতিষ্ঠানগুলো দেউলিয়া হওয়াসহ আছে সাধারণ মানুষের কর্মসংস্থান হারানোর শঙ্কা৷ তবে উন্নত দেশগুলো এই পরিস্থিতি সামলাতে বিভিন্ন আর্থিক ব্যবস্থাও নিচ্ছে৷
ছবি: Getty Images/AFP/J. Jordan
জার্মানি
সব ধরনের কোম্পানি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জন্য ১১০ কোটি ডলারের ঋণ দিচ্ছে জার্মান সরকার৷ দুর্যোগকালীন এই পরিস্থিতি সামাল দিতে মোট ৮০ হাজার কোটি ডলারের তহবিল রয়েছে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক৷ কোম্পানিগুলোর আর্থিক স্বচ্ছলতা বজায় রাখতে দেয়া হচ্ছে কর-ছাড়৷ দেরিতে ঋণ পরিশোধে গুণতে হবে না জরিমানা৷ প্রতিষেধক আবিষ্কারের জন্য শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটকে দেয়া হবে সাড়ে ১৪ কোটি ইউরো৷
অর্থনৈতিক ধাক্কা সামাল দিতে ২১ হাজার ৯০০ কোটি ডলারের তহবিল ঘোষণা করেছে স্পেন৷ ক্ষতিগ্রস্ত কোম্পানি, কর্মী আর আর্থিক অস্বচ্ছলদের সুরক্ষায় এই অর্থ ব্যয় করা হবে৷ এর মধ্যে শুধু সামাজিক নিরাপত্তায় খরচ করা হবে প্রায় ৬৪ কোটি ডলার৷
ছবি: picture-alliance/dpa/AAB. Akbulut
পর্তুগাল
১৮ মার্চ থেকে ১৫ দিনের জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে পর্তুগাল৷ এখন পর্যন্ত এক হাজার কোটি ডলারের প্রণোদনা ‘প্যাকেজ’ ঘোষণা করেছে দেশটির সরকার৷ এরমধ্যে ৩২২ কোটি ডলার পর্যটন, বস্ত্র, কাঠসহ বিভিন্ন ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের জন্য ঋণ সহায়তা হিসেবে দেয়া হবে৷ ৫৩৬ কোটি ডলার আর্থিক প্রণোদনা দেয়া হচ্ছে কর সুবিধা ও সামাজিক নিরাপত্তা খাতে৷
ছবি: Reuters/M. F. Lopes
ফ্রান্স
প্রায় পাঁচ হাজার কোটি ডলার সহায়তা তহবিলের প্রকল্প হাতে নিয়েছে ফ্রান্স সরকার৷ এর বড় একটি অংশ দেয়া হবে ক্ষুদ্র ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে৷ রেস্টুরেন্ট, দোকান বন্ধ হয়ে যাওয়া এবং কোয়ারান্টিনের কারণে যেসব কর্মী কাজে যোগ দিতে পারছেন না, তাদের জন্য কয়কশ’ কোটি ডলার ব্যয়ের ঘোষণা দেয়া হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে৷
ছবি: Getty Images/AFP/L. Marin
যুক্তরাজ্য
করোনা ভাইরাসের কারণে ১৪৫০ কোটি ডলারের জরুরি আর্থিক প্রণোদনা ঘোষণা করেছে যুক্তরাজ্য৷ জাতীয় স্বাস্থ্য সেবা এবং সমস্ত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের লোকসান মেটাতে এই টাকা দেয়া হবে৷ পাশাপাশি খুচরা ব্যবসা এবং পর্যটন শিল্পের জন্য ৪০ হাজার কোটি ডলারের ঋণ তহবিলও রাখা হয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/empics/PA Video
যুক্তরাষ্ট্র
সম্প্রতি ১০ হাজার ৪০০ কোটি ডলারের একটি সহায়তা প্যাকেজের অনুমোদন দিয়েছে সেনেট৷ স্বাস্থ্য বিমা ছাড়াই করোনার পরীক্ষা করানো, স্কুলগামী শিশুদের জন্য খাবার সরবরাহ, কর্মীদের ১০ দিনের অসুস্থতাজনিত এবং কিছু ক্ষেত্রে ১২ সপ্তাহের বেতনসহ ছুটির পেছনে এই টাকা ব্যয় হবে৷ পাশাপাশি এক ট্রিলিয়ন ডলারের আরেকটি প্রণোদনা প্যকেজের জন্য আইনপ্রণেতাদের সঙ্গে আলাপ চালিয়ে যাচ্ছে ডনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন৷
ছবি: Reuters/L. Millis
ক্যানাডা
ক্যানাডার জন্য পাঁচ হাজার ৬৪০ কোটি ডলারের সহায়তা দেয়ার কথা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো৷ এই অর্থ দেশটির জিডিপির তিন শতাংশ ৷ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কর-ছাড়, কর্মীদের বেতন, সমাজে নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য ব্যয় হবে এই অর্থ৷
ছবি: picture-alliance/empics/M. Sudoma
অস্ট্রেলিয়া
১১০০ কোটি ডলারের আর্থিক প্রণোদনার ঘোষণা দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া সরকার৷ ৬৫ লাখ নিম্ন আয়ের মানুষকে এককালীন ৪৫১ ডলার করে দেয়া হবে এই তহবিল থেকে৷ পাশাপাশি এক লাখ ২০ হাজার শিক্ষানবিশ চাকুরিজীবী এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে টিকিয়ে রাখতেও খরচ করা হবে এখান থেকে৷ অন্যদিকে অর্থনীতিকে সচল রাখতে ঋণের সুদহার কমিয়ে দিয়েছে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক৷
ছবি: picture-alliance/dpa/J. Carrett
তুরস্ক
করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় ১৫৪০ কোটি ডলারের ব্যয় পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে তুরস্ক৷ ‘অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষা’ শিরোনামের এই প্যাকেজটির আওতায় মোট ২১ টি খাতে খরচ করা হবে৷ এর মধ্যে অবসরকালীন ভাতা বৃদ্ধি, ব্যবসা সহযোগিতা, মূল্য সংযোজন কর হ্রাসসহ খুচরা, ইস্পাত, গাড়ি ও পর্যটন শিল্পে আর্থিক প্রণোদনার ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে৷