1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

করোনায় কাজ হারাচ্ছেন সাংবাদিকরা

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
২২ জুলাই ২০২০

বাংলাদেশে করোনায় এ পর্যন্ত কমপক্ষে চার হাজার সাংবাদিক ও সংবাদকর্মী নানা ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছেন৷ এর মধ্যে কমপক্ষে ছয়শ' সরাসরি চাকরিচ্যুতি ও ছাঁটাইয়ের শিকার হয়েছেন৷

Bangladesch Journalismus in der Corona-Pandemie
ছবি: DW/Harun-ur-Rashid Swapan

এর বাইরে চাকরি আছে বেতন নেই, বেতন কমিয়ে দেয়াসহ নানা সমস্যার মুখে পড়েছেন তারা৷ এছাড়া করোনায় আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা তো  আছেই৷ করোনায় বাংলাদেশে  সাংবাদিকদের মৃত্যু বিশ্বে দ্বিতীয় অবস্থানে আছে বলে সাংবাদিকদের একটি সংগঠন দাবি করেছে৷

করোনার শুরুতে সংবাদমাধ্যম কর্মীরা নানা প্রতিকূলতার মুখে পড়লেও ঈদের পরে দেশের প্রভাবশালী দুটি পত্রিকা ছাঁটাইয়ের প্রক্রিয়া শুরু করলে সাংবাদিকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে৷ কারণ, ওই দুটি প্রতিষ্ঠান ছাঁটাই করলে অনেক সংবাদমাধ্যমই তাদের পথে হাঁটবে বলে ধারণা করা হয়৷ বাস্তবে হচ্ছেও তাই৷

এরই মধ্যে কয়েকটি পত্রিকা আবার নতুন কৌশল শুরু করেছে৷ তারা সাংবাদিকদের ছাঁটাই করে কম বেতনে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ শুরু করেছে৷ ওয়েজ বোর্ড থেকে বের হয়ে যাচ্ছে কোনো কোনো সংবাদমাধ্যম৷ কেউ কেউ অভিজ্ঞ সংবাদ কর্মীদের বাদ দিয়ে কম বেতনে নতুন কর্মীদের নিয়োগ দিচ্ছে৷ তথ্য মন্ত্রণালয় এই করোনায় ছাঁটাই না করার আহ্বান জানালেও তাতে কাজ হচ্ছে না৷

সাংবাদিকদের অধিকার নিয়ে কাজ করে এমন একটি সংগঠনের সাথে কথা বলে জানা গেছে,  বাংলাদেশে সব মিলিয়ে ছয়-সাতটি পত্রিকা, টিভি ও অনলাইন ছাড়া আর সব সংবাদমাধ্যমেই সাংবাদিকরা কোনো না কোনো ধরনের সংকটে পড়েছেন৷  মূল ধারার কমপক্ষে ৬টি পত্রিকা তাদের প্রিন্ট এডিশন বন্ধ করে দিয়েছে৷ তার মধ্যে দুটি আবার প্রিন্ট শুরু করেছে৷ দুটি  পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে৷ সাতটি টেলিভিশনে ছাঁটাই হয়েছে৷ একটি টেলিভিশন সংবাদ বিভাগ বন্ধ করে দিয়েছে৷

শাকিল আহমেদ

This browser does not support the audio element.

গণমাধ্যম কর্মীদের  সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমভিত্তিক স্বেচ্ছাসেবী গ্রুপ ‘আমাদের গণমাধ্যম আমাদের অধিকার-এর হিসাব মতে, এখন পর্যন্ত চার হাজারের মতো সংবাদ মাধ্যমকর্মী চাকরি হারানোসহ নানা ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছেন৷ এর মধ্যে সরাসরি চাকরি হারানো বা ছাঁটাইয়ের শিকার হয়েছেন কমপক্ষে ছয়শ’ সাংবাদিক এবং সংবাদমাধ্যমকর্মী৷ তাদের হিসেবে এ পর্যন্ত মোট করোনায় আক্রান্ত সাংবাদিক ৬৪৪ জন৷ ঢাকায় ৪৫৪ এবং ঢাকার বাইরে ১৯০ জন৷ করোনা এবং করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন ২৫ জন সাংবাদিক৷ তাদের মধ্যে ১৩ জন ঢাকায় এবং ঢাকার বাইরে ১২ জন৷

সংগঠনটির প্রধান সমন্বয়ক ও নিউ এজ পত্রিকার সাংবাদিক আহম্মদ ফয়েজ বলেন, ‘‘করোনায় পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি সাংবাদিক মারা গেছেন পেরুতে৷ এরপরই বাংলাদেশের অবস্থান৷ এই মানসিক চাপের মধ্যেও বাংলাদেশে সংবাদমাধ্যমে চাকরিচ্যুতি, বেতন না দেয়া, বেতন কমিয়ে দেয়া এবং ছাঁটাইয়ের ঘটনা ঘটেছে৷ গত ঈদে উৎসব ভাতাও অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানে দেয়া হয়নি বা কমিয়ে দেয়া হয়েছে৷  এই প্রবণতা অব্যহত আছে৷’’

করোনার আগেও বাংলাদেশের গণমাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিকরা সংকটে ছিলেন৷ গত বছরের জুন থেকে ডিসেম্বর এই ছয় মাসে চাকরি হারান ৪৫০ জন টিভি সংবাদ কর্মী৷ তখন ১০টি টিভি চ্যানেলে আয় না থাকার অজুহাতে ছাঁটাইয়ের ঘটনা ঘটে৷ কিন্তু করোনায় এই সংকট  আরো তীব্র হয়েছে৷

আহম্মদ ফয়েজ

This browser does not support the audio element.

ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টার (বিজেসি)-র সদস্য সচিব এবং একাত্তর টেলিভিশনের হেড অব নিউজ শাকিল আহমেদ বলেন, ‘‘ছয়-সাতটি বেসরকারি টেলিভিশন এখন অর্ধেক বেতন দিচ্ছে৷ বেশ কয়েকটি টেলিভিশনে দুই মাসের বেতন বকেয়া হয়েছে৷ এরই মধ্যে করোনা শুরুর সময় এবং করোনার মধ্যে ৪৫ জনের মতো টিভি সাংবাদিককে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে৷ আরো অনেক টিভিতে এখন চাকরি যাওয়ার কথা শোনা যাচ্ছে৷ আর যেসব প্রতিষ্ঠানে বছর ধরে বেতন হয় না সেখানকার কর্মীরা তো বিনা বেতনেই কাজ করছে৷’’

তিনি বলেন,  ‘‘এটাও ঠিক যে,  করোনায় টেলিভিশনগুলোর আয় কমে গেছে,  বিজ্ঞাপনের টাকা ঠিকমতো পাওয়া যাচ্ছে না৷’’

ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের কাছে করোনায় কতজন সাংবাদিক চাকরি হারিয়েছেন তার সঠিক তথ্য নেই৷ তবে তারা  লক্ষ্য করছেন, চাকারিচ্যুতির ঘটনা বড় আকারেই ঘটছে৷ সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম খান তপু বলেন, ‘‘আমরা এই চাকরিচ্যুতি ও ছাঁটাইয়ের বিরোধিতা করে নানা কর্মসূচি দিচ্ছি৷ সরকারের সাথেও দফায় দফায় বৈঠক করছি৷’’

এই সময়ে সরকারের এগিয়ে আসা উচিত বলে মনে করেন শাকিল আহমেদ৷ তিনি বলেন, ‘‘সাংবাদিকদের কাজের কারণেই করোনার ব্যাপারে মানুষের মধ্যে ব্যাপক সচেতনতা তৈরি হয়েছে৷ তারা ফ্রন্ট লাইন যোদ্ধা হিসেবে কাজ করছেন৷ তাই শুধু করোনার চিকিৎসা খাতেই ব্যয় করলে হবে না, সচেতনতার জন্যও ব্যয় করতে হবে৷ আর সরকার যদি এই কাজে সংবাদমাধ্যমকে বরাদ্দ দেয়, তাহলে এই করোনাকালে সংকট অনেকটাই কেটে যাবে৷’’

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ