করোনায় জার্মানির প্লেক্সিগ্লাসের রমরমা ব্যবসা
১২ মে ২০২০![](https://static.dw.com/image/53364602_800.webp)
প্লেক্সিগ্লাস সাধারণভাবে অ্যাক্রিলিক গ্লাস বা জেলাটিন গ্লাস নামেও পরিচিত৷ প্লেক্সিগ্লাস কাঁচের মত স্বচ্ছ৷ এছাড়া এটির রাসায়নিক স্থায়িত্ব ও যান্ত্রিক বৈশিষ্ট্য অত্যন্ত উচ্চ শক্তির৷ এটি ওজনে হাল্কা, আবহাওয়া প্রতিরোধক এবং সহজে প্রক্রিয়াজাত করা যায়; দেখতেও সুন্দর৷ ফলে সারা বিশ্বের এর নানা ব্যবহার রয়েছে৷
১৯৩৩ সালে জার্মান রয়াসনবিদ অটো ব়্যোম প্লেক্সিগ্লাস আবিষ্কার করেন৷ তিনি দেশটির বিখ্যাত ‘ব়্যোম উন্ড হাস কেমিক্যাল কোম্পানি’র প্রতিষ্ঠাতা এবং সবচেয়ে দীর্ঘদিন কোম্পানির প্রেসিডেন্ট পদে দায়িত্ব পালন করেছেন৷
১৯০৫ সালে যাত্রা শুরু করা কোম্পানিটি এখনো সগৌরবে টিকে আছে এবং ‘ব়্যোম প্লেক্সিগ্লাস’ নামে পণ্য উৎপাদন করে চলেছে৷ তাদের কারখানা হেসে প্রদেশের ভাইটার্স্টাডে৷
কোভিড-১৯ বৈশ্বিক মহামারির রূপ নেওয়ার পর জার্মানি জুড়ে সুপারমার্কেট ও ওষুধের দোকানে ভাইটার্স্টাডেতে তৈরি থার্মোপ্লাস্টিক ব্যবহার করা শুরু হয়৷ কোম্পানিটির বর্তমান প্রধান মিখাইল প্যাক ডয়চে ভেলেকে বলেন, পণ্যের চাহিদা এত বেড়ে গেছে যে আমাদের ফোন বেজেই চলছে৷
‘‘মার্চের মাঝামাঝিতে জার্মানিতে যখন সংক্রমণ ছড়াতে শুরু করে তখন আমাদের এখানে চাহিদার বন্যা শুরু হয়৷ চাহিদা সামাল দিতে মার্চ থেকে আমরা উৎপাদন পাঁচ থেকে ১০ গুণ বাড়িয়ে দিয়েছি৷ কোম্পানি সাধ্যের সর্বোচ্চ দিয়ে প্লেক্সিগ্লাস উৎপাদন বাড়িয়ে চলেছে৷’’
সারা পৃথিবীতে ব়্যোম প্লেক্সিগ্লাসের ১৫টি কারখানা আছে৷ কর্মীর সংখ্যা চার হাজারের বেশি৷ বিশ্বে স্বচ্ছ থার্মোপ্লাস্টিক উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলোর মধ্যে এটি অন্যতম৷ করোনা ভাইরাস প্রাদুর্ভাবের আগে থেকেই তাদের ব্যবসা রমরমিয়ে চলছিল৷
তবে কোম্পানির ১১৫ বছরের ইতিহাসে সম্ভবত এবার প্রথম তারা উৎপাদনে সবচেয়ে ব্যাস্ত সময় পার করছে৷ তবে একদিকে যেমন চাহিদা দ্রুত গতিতে বাড়ছে, তেমনি টান পড়ছে কাঁচামালে৷ বিশ্বজুড়ে চলা লকডাউনে যোগাযোগ প্রায় বন্ধ, আমদানি-রপ্তানি ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে৷ ফলে কমবেশি সব কারখানাতেই কাঁচামালের সংকট দেখা দিয়েছে৷
কিন্তু এই সংকটে বেশ কিছুটা সুবিধাজনক অবস্থায় আছে ব়্যোম প্লেক্সিগ্লাস৷ কারণ, ভাইটার্স্টাডেতে কারখানা থেকে মাত্র ৩১ মাইল দূরে নিজস্ব প্লান্ট থেকেই তারা কাঁচামাল পাচ্ছে৷
সিইও প্যাক বলেন, ‘‘দূরত্ব খুব কম, ফলে পরিবহন খরচও কম পড়ছে৷ যার কারণে এই মুহূর্তে অবশ্যই অন্যান্য কোম্পানি থেকে আমরা সুবিধাজনক অবস্থানে আছি৷’’
করোনা ভাইরাস প্রাদুর্ভাবের পর সংক্রামক রোগ নিয়ে জনমনে যে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে এবং সংক্রমণ এড়াতে যেসব স্বাস্থ্যসুরক্ষা বিধি মেনে চলতে বলা হচ্ছে তাতে প্লেক্সিগ্লাসের চাহিদা আরো কয়েক বছর ধরে বাড়তেই থাকবে বলে মনে করেন প্যাক৷
বলেন, ‘‘যখন সব জায়গায় ধাপে ধাপে বিধিনিষেধ উঠে যাবে তখন আরো বেশি দোকানপাঠ খুলবে৷ আমাদের পণ্যের চাহিদাও তত বাড়বে৷ আমরা পণ্য চাহিদার দ্বিতীয় বৃহৎ ঢেউয়ের অপেক্ষায় আছি৷’’
টোমাস কোলমান/এসএনএল