করোনায় আক্রান্তের সংখ্যার নিরিখে রাশিয়াকে পিছনে ফেলে ভারত তিন নম্বরে উঠে এল। ভারতে এখন করোনা রোগীর সংখ্যা প্রায় সাত লাখ। এই পরিস্থিতিতে তাজমহলও এখন খুলছে না।
বিজ্ঞাপন
সামনে শুধু অ্যামেরিকা ও ব্রাজিল। রাশিয়াকে ছাড়িয়ে করোনা আক্রান্তের সংখ্যার নিরিখে ভারত তৃতীয় স্থানে চলে এল। ভারতে এখন করোনা রোগীর সংখ্যা ৬ লাখ ৯৭ হাজার ৪১৩। গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়েছেন ২৪ হাজার ২৪৮ জন। ভারতের ক্ষেত্রে এটাও রেকর্ড। একদিনে এতজন আগে আক্রান্ত হননি। তবে আশ্বস্ত হওয়ার মতো তথ্য হলো, ভারতে করোনা সেরে যাওয়ার হার প্রায় ৬১ শতাংশ। সব মিলিয়ে মারা গিয়েছেন ১৯ হাজার ৬৯৩ জন।
করোনায় এত লোকের আক্রান্ত হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে তাজমহল আপাতত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত রাখা হয়েছে। তাজমহল, ফতেপুর সিক্রি, আগ্রা ফোর্ট সহ আগ্রার কোনও ঐতিহাসিক জায়গাই খোলা হচ্ছে না। খুলছে না দিল্লির লালকেল্লাও। করোনা পরিস্থিতি দেখেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আগ্রাতেই ৭১টি কনটেনমেন্ট জোন হয়েছে, যেখানে প্রবলভাবে করোনা হচ্ছে। দিল্লির কনটেনমেন্ট জোনের সংখ্যা ৪৪৮।
কলকাতার অন্যরকম মুখোশ সংস্কৃতি
লক ডাউন উঠে যাওয়ার পর ক্রমশ স্বাভাবিক ছন্দে ফিরছে কলকাতা। তবে সংক্রমণ ঠেকানোর মুখোশ এখন জীবনযাত্রার অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। ফুটপাথের দোকান থেকে শপিং মল, সর্বত্র, সবাই মুখোশে মুখ–ঢাকা। বিচিত্র সেই মুখোশের বাহার।
ছবি: DW/S. Bandopadhyay
হাটে বাজারে
বাজারহাটে কোনো দোকানিই এখন মুখোশ ছাড়া সওদা করতে বসেন না।
ছবি: DW/S. Bandopadhyay
মাছের বাজারে
মাছ বিক্রেতা থেকে শুরু করে যে মহিলা মাছ কুটে দেন, সবাই সাবধানী।
ছবি: DW/S. Bandopadhyay
সতর্ক কসাই
ফুটপাথের দোকান হলেও কাঁচা মাংসের দোকানে বিশেষ সতর্কতা।
ছবি: DW/S. Bandopadhyay
নেশা ও মুখোশ
যা না হলে চলে না, সেই পানমশলা, গুটকার দোকানেও এখন মুখোশ বিক্রি হয়।
মুখে মুখোশ, হাতে গ্লাভস না থাকলে এখন সুপার মার্কেটে ঢুকতেই দেওয়া হচ্ছে না।
ছবি: DW/S. Bandopadhyay
মুখোশ পাহারা
রাস্তায় কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশ এবং সিভিক পুলিশরা সবাই থাকছেন মুখোশ পরে।
ছবি: DW/S. Bandopadhyay
কিছু অসাবধানী
কিন্তু কিছু লোক বেপরোয়া। মুখোশ ঝুলে মুখের নীচে। যেমন এই অটোচালকেরা।
ছবি: DW/S. Bandopadhyay
11 ছবি1 | 11
আগে মুম্বই, দিল্লি, আমদাবাদের অবস্থা খারাপ ছিল। এখন বেঙ্গালুরু, গুয়াহাটি সহ দেশের অনেকগুলি শহরে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। কেরালার তিরুবনন্তপুরমে সাতদিনের জন্য সম্পূর্ণ লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। পুলিশ ও অত্যাবশ্যকীয় পেশার লোকজন ছাড়া কেউ বাইরে বেরতে পারবেন না। বেঙ্গালুরুতে প্রতি রোববার পুরোপুরি লকডাউনে থাকছে। গুয়াহাটিতে ১৫ দিনের জন্য লকডাউন চলছে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুরোধ মেনে আসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রক ঠিক করেছে, দিল্লি, মুম্বই, পুনে, নাগপুর, চেন্নাই ও আমদাবাদ থেকে কোনও বিমান কলকাতায় যাবে না। এই শহরগুলিতে করোনার তাণ্ডব বেশি। তাই পশ্চিমবঙ্গ সরকার এই সব জায়গার সঙ্গে বিমান চলাচল বন্ধ রাখতে চাইছে। পশ্চিমবঙ্গেও করোনা রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৮৯৫ জন। মারা গিয়েছেন ২১ জন।
মাছ আছে, ক্রেতা নেই
দীর্ঘ লকডাউনের পর দিল্লিতে এখন আনলক-পর্ব চলছে। প্রায় সবই খোলা। কিন্তু করোনা নিয়ে লোকের ভয় এখনও যায়নি। তাই বাজার খোলা, কিন্তু লোক নেই। দেখা যাচ্ছে না, আড্ডার ছবি। নেহাত দরকার না পড়লে বাইরে যাচ্ছেন না দিল্লিবাসী।
ছবি: DW/G. Hore
মাছের বাজারের হাল
মাছ অঢেল। হরেক রকমের। কিন্তু লোক কোথায় কেনার জন্য? বিক্রেতারা বলছেন, আগের তুলনায় বিক্রি হচ্ছে মাত্র এক তৃতীয়াংশ। বেশিটা হোম ডেলিভারি। করোনার ভয় এবং লোকের আয় কমে যাওয়ায় না কি এই অবস্থা।
ছবি: DW/G. Hore
খাওয়ার দোকান ফাঁকা
দিল্লির বাঙালি প্রধান এলাকা চিত্তরঞ্জন পার্কের এই খাওয়ার দোকানগুলি এমনিতে গমগম করে। তবে করোনায় ভীত লোক আর সেখানে বিশেষ যাচ্ছেন না। ফলে ফাঁকা পড়ে আছে একের পর এক দোকান।
ছবি: DW/G. Hore
ঝাঁপ ফেলেছে রেস্তোরাঁ
অধিকাংশ রেস্তোরাঁ টিকে আছে অনলাইন অর্ডার এবং হোম ডেলিভারির ভরসায়। আবার অনেক রেস্তোরাঁ ক্ষতি সহ্য করতে না পেরে একেবারে বন্ধ হয়ে গিয়েছে।
ছবি: DW/G. Hore
বন্ধ সাংস্কৃতিক সংস্থা
অধিকাংশ সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সংস্থা এখনও খোলেনি। এমনিতে লোকে আসছেন না। তার ওপর কর্মীদের করোনার ভয়। ফলে চিত্তরঞ্জন ভবনের লাইব্রেরি, লাউঞ্জ, হল সবই বন্ধ। একই ছবি অন্যত্রও।
ছবি: DW/G. Hore
দরজা বন্ধ মন্দিরের
এমনিতে ধর্মস্থান খোলার অনুমতি আগেই দিয়ে দিয়েছে সরকার। তবু সতর্ক অনেকে। যেমন এই মন্দিরের দরজা এখনও বন্ধ। খুলবে ১ জুলাই থেকে।
ছবি: DW/G. Hore
ফাঁকা রাস্তা
যে রাস্তা আগে গমগম করত, তা এখন ফাঁকা। বিকেলে অফিস ভাঙার পরের ছবি এটা। অটো যাত্রীর অভাবে দাঁড়িয়ে আছে। গাড়ি কম। লোক নেই বললেই চলে। আতঙ্কে লোকে ঘরবন্দি থাকাই পছন্দ করছেন।
ছবি: DW/G. Hore
6 ছবি1 | 6
এখন অবশ্য আগের থেকে অনেক বেশি লোকের করোনা পরীক্ষা হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে এক লাখ ৮০ হাজার ৫৯৬ জনের করোনা পরীক্ষা হয়েছে। ৫ জুলাই পর্যন্ত ৯৯ লাখেরও বেশি মানুষের করোনা পরীক্ষা হয়েছে। দিল্লিতে রোজ এখন ২০ হাজার বা তার বেশি লোকের করোনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। আক্রান্ত হচ্ছেন দুই হাজার ৫০০ জনের মতো। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ উত্তর প্রদেশ সরকারকে আরও বেশি করে করোনা পরীক্ষা করার নির্দেশ দিয়েছেন।
দিল্লিতে ডিফেন্স রিসার্চ অর্গানইজেশন বা ডিআরডিও বিমানবন্দরের কাছে ১১ দিনের মধ্যে এক হাজার বেডের হাসপাতাল বানিয়ে দিয়েছে। সেখানে ২৫০টি আইসিইইউ আছে। অক্সিজেন, ভেন্টিলেটারের ব্যবস্থা রয়েছে। প্রতিরক্ষামন্ত্রকের জমিতে অস্থায়ীভাবে এই হাসপাতাল তৈরি করা হয়েছে। দিল্লিতে যে হারে লোক করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন, তত হাসপাতাল নেই। সে জন্যই দ্রুত এই হাসপাতাল তৈরি করেছে ডিআরডিও।