বছর শেষ হতে এখনও এক সপ্তাহ বাকি, কিন্তু এরই মধ্যে পাওয়া তথ্য-উপাত্তে জানা যাচ্ছে, গত এক দশকের গড় মৃত্যুর চেয়ে ২০২০ অনেক বেশি প্রাণঘাতি৷ এর জন্য প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে দায়ী করোনা৷
বিজ্ঞাপন
করোনার প্রত্যক্ষ দায়টা বোঝাই যাচ্ছে৷ করোনা বয়স্কদের সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত করে৷ যাদের হৃদরোগ, ডায়াবেটিস বা অন্য জটিল রোগ রয়েছে, তারাও করোনার প্রথম শিকার৷ কিন্তু করোনা পরোক্ষ যে প্রভাব ফেলছে, তাতেও মৃত্যু কম ঘটেনি৷
বর্ণভেদে মৃত্যুহারেও তফাত
করোনায় কে কেমন ক্ষতির শিকার হয়েছেন, তার সঙ্গে ওতোপ্রতভাবে জড়িত অর্থনীতি৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কথাই ধরা যাক৷ দেশটিতে এবার গত পাঁচ বছরের গড়ের তুলনায় তিন লাখ বেশি মৃত্যুর আশঙ্কা করা হচ্ছে৷ এর বড় একটা অংশের জন্যই করোনা ভাইরাস দায়ী৷
কিন্তু এই দেশটিতেও করোনা সবাইকে সমানভাবে আক্রান্ত করেনি৷ বয়স্করা বেশি ঝুঁকিতে থাকলেও দেশটির একেক জাতির মানুষের ওপর এর প্রভাব পড়েছে একেকরকম৷
২০২০ সালকে যেভাবে মনে রাখবে ভবিষ্যৎ
ক্যালেন্ডার বদলানো আর আট-দশটা বছরের মতো নয় ২০২০৷ শুধু নিকট ভবিষ্যৎ নয়, প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে বারবার গল্প হয়ে ফিরবে সালটি৷ সেই গল্পের বিষয়বস্তুগুলো কী হতে পারে দেখুন ছবিঘরে৷
ছবি: Reuters/J. Malone
‘অজানা’ এক ভাইরাস এসেছিল
২০১৯ সালের শেষে চীনের হুবেই প্রদেশের উহানের মানুষেরা অজানা অসুখে ভুগতে শুরু করে৷ গণমাধ্যমে একটু-আধটু সেই খবর আসতে শুরু করলেও কে ভেবেছিল পরবর্তী এক বছর গোটা বিশ্বকে তা নাড়িয়ে দেবে! ৩১ ডিসেম্বর ২০১৯ সালে উহানের স্বাস্থ্য কমিশন নিউমোনিয়া ছড়িয়ে পড়ার কথা জানায়৷ পাঁচ জানুয়ারি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এই সংক্রান্ত প্রথম প্রতিবেদন প্রকাশ করে৷
ছবি: Getty Images/AFP/STR
নাম সার্স-কোভ-টু
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নতুন এই করোনা ভাইরাসের নাম দেয় সার্স-কোভ-টু৷ আর এর থেকে সৃষ্ট রোগের নাম কোভিড-১৯৷ ১২ জানুয়ারি ভাইরাসটির জিন রহস্য প্রকাশ করে চীন৷ তখন পর্যন্ত সেটি কিন্তু চীনবন্দিই ছিল৷ একদিন পরই প্রথমবারের মতো ধরা পড়ে থাইল্যান্ডে৷ এরপর আর আটকে রাখা যায়নি ক্ষুদে সেই দানবকে৷
ছবি: Reuters/NEXU Science Communication
নীরব ঘাতক
প্রথম ধরা পড়ার ৪৭ দিনের মাথায় চীনে ৬৬ হাজার মানুষকে ভাইরাস আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত করা হয়৷ মারা যান ১৫০০ জন৷ শহর থেকে শহরে, দেশ থেকে দেশে নিয়ন্ত্রণহীনভাবে ছড়িয়ে পড়ে নভেল করোনা৷ সংক্রমণ বাড়তে থাকে লাফিয়ে লাফিয়ে৷ মৃত্যুর খাতায়ও দৈনিক যোগ হতে থাকে কয়েক হাজার সংখ্যা৷ স্মরণকালে এমন মহামারির মুখোমুখি হয়নি মানুষ৷
ছবি: picture-alliance/dpa/F. Maohua
কাছে আসতে মানা
ঔষধ নেই, প্রতিষেধক নেই৷ কিভাবে রোখা যাবে এই ভাইরাসকে, সেটি বড় প্রশ্ন হয়ে উঠে৷ দেয়া হয় মানুষে-মানুষে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার পরামর্শ৷ ব্যবধান রাখতে হবে দেড় থেকে দুই মিটার, যার নাম দেয়া হয় ‘সামাজিক দূরত্ব’৷ গোটা পৃথিবীর চেহারা আর যোগাযোগের ধরনটাই রাতারাতি বদলে যায় তাতে৷
ছবি: Reuters/A. Kelly
হ্যান্ডশেকে বাধা
সৌজন্য হিসেবে হ্যান্ডশেক বা হাত মেলানোর রীতিকে বিদায় জানায় মানুষ৷ তার বদলে সৌজন্য আর উষ্ণতা প্রকাশের অভিনব সব উপায়ও তারা বের করে৷ কেউ মুষ্টিবদ্ধ হাত মেলায়, কেউবা কনুই, আবার হাতের বদলে পায়ে-পায়ে স্পর্শেরও চল দেখা যায়৷ তবে দূরে দাঁড়িয়ে মৌখিকভাবে সৌজন্য প্রকাশই নিরাপদ হিসেবে বিবেচিত হয়৷
ছবি: Reuters/FIDE/M. Emelianova
মাস্ক যখন পরিধেয়
মাস্ক পরলে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি কমানো যায় কিনা শুরুতে এ নিয়ে বিতর্ক উঠেছিল৷ কিন্তু একে একে সব দেশ জনপরিসরে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করে৷ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও সবার মাস্ক পরার পক্ষে মত দেয়৷ সংস্কৃতি ভেদে পোশাকে ভিন্নতা থাকলেও সারা বিশ্বেই মাস্ক হয়ে উঠে অপরিহার্য পরিধেয়৷
ছবি: Getty Images/NYFW - The Shows
যারা সুপারহিরো
করোনার বিরুদ্ধে এক অসম লড়াইয়ে নামতে হয় চিকিৎসকদের৷ দেশে দেশে নিরাপত্তা সরঞ্জামের অভাবের মধ্যেই অচেনা শত্রুর বিরুদ্ধে কঠিন এক যুদ্ধের মুখোমুখি হন স্বাস্থ্যকর্মীরা৷ অন্যকে বাঁচানোর সেই চ্যালেঞ্জে অনেকেই জীবন দেন৷ লকডাউনে তাদের প্রতি নানা উপায়ে ধন্যবাদ আর ভালোবাসা জানাতে ভোলে না বিভিন্ন দেশের কৃতজ্ঞ মানুষেরা৷
ছবি: Reuters/S. Vera
বিচ্ছিন্ন পৃথিবী
এত কিছুর পরও ঠেকানো যায়নি সংক্রমণ, থামছিল না মৃত্যুর মিছিলও৷ লাগাম ধরতে দেশে দেশে চলে লকডাউন৷ সীমান্তে আরোপ করা হয় কড়াকড়ি৷ বন্ধ হয়ে যায় ব্যবসা-বাণিজ্য, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ অর্থনৈতিক আর বিনোদনমূলক সব কর্মকাণ্ড৷ ২০০৮ সালের অর্থনৈতিক মন্দার পর পুঁজিবাজারগুলোর লেনদেনে লাগে সবচেয়ে বড় ধাক্কা৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/T. Camus
ব্যালকনি বা অনলাইন কনসার্ট
আশাহীন সময়েও মানুষ আনন্দে বাঁচার উপায় ঠিক খুঁজে নেয়৷ স্পেন, ইটালিসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশের ঘরবন্দি মানুষেরা ব্যালকনিতে কনসার্ট জমিয়ে ফেলে৷ অনলাইনে ডুব দেয়া মানুষকে নতুন প্রযুক্তির মাধ্যমে নানাভাবে বিনোদিত করার চেষ্টা করেন তারকারাও৷
ছবি: AFP/P. Singh
প্রকৃতির ফুরসত
আধুনিক জীবনযাত্রার চাপে কোণঠাসা প্রকৃতি যেন এই দফা হাঁফ ছেড়ে বাঁচে৷ বিশ্বের অর্ধেকের বেশি মানুষ যখন ঘরবন্দি, তখন নিজেকে নতুন করে ফিরে পাওয়ারই তো তার সময়৷ কোনো কোনো নির্জন মহানগরীর বুকে এমনকি বুনো প্রাণীরাও নেমে আসে৷ আর গবেষণায় দেখা যায়, ২০২০ সালে বিশ্বের কার্বন নিঃসরণ সাত ভাগ কমেছে, যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে নতুন রেকর্ড৷
ছবি: picture-alliance/empics/P. Byrne
পড়তি ঢেউ
আক্রান্ত আর মৃত্যুর রেখাচিত্র জুন নাগাদ নামতে শুরু করে৷ ধীরে ধীরে লকডাউন তুলে নেয় দেশগুলো৷ শুরু হয় ব্যবসা-বাণিজ্য, যাতায়াত৷ খুলে দেয়া হয় এয়ারপোর্ট৷ কিন্তু এর মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রে বেকারত্বের হার পৌঁছে যায় মহামন্দার সময়ের পর সর্বোচ্চ ১৪ দশমিক সাত ভাগে৷ বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোর দারিদ্র্য বিমোচনে বিগত দেড় দশকের অর্জন ম্লান হয়ে যেতে থাকে৷
ছবি: picture-alliance/Zumapress/J. Merida
দর্শকবিহীন খেলা
আন্তর্জাতিক সিরিজ বা বিভিন্ন লিগের খেলা হবে, অথচ মাঠে দর্শক থাকবে না- অন্য সময় হলে এমন কথা বললে সেটি নির্ঘাত উদ্ভট শোনাতো৷ অথচ ২০২০ সালে ইউরোপীয় ফুটবল লিগ কিংবা আইপিএলসহ বিভিন্ন ক্রীড়া আসর অনুষ্ঠিত হয় স্টেডিয়ামে শূন্য বা সীমিত দর্শক উপস্থিতি নিয়ে৷
ছবি: Angel MartinezGES/picture alliance
দ্বিতীয় ঢেউ
শীতের মৌসুমে বিভিন্ন দেশে নভেম্বর থেকে নতুন করে বাড়তে শুরু করে করোনার প্রকোপ৷ এই ধাক্কায় আবার বিপর্যস্ত ইউরোপ৷ একে একে আবারো লকডাউনে ফিরে দেশগুলো৷ শুধু তাই নয় যুক্তরাজ্যে নতুন ধরনের করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়, যেটি আগের চেয়েও দ্রুত গতিতে সংক্রমণ ঘটায়৷এ কারণে নতুন করে ব্রিটেনের সঙ্গে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দেয় বিভিন্ন দেশ৷
ছবি: Sebastian Kahnert/dpa/picture alliance
অসম্ভবকে সম্ভব
একটি ভ্যাকসিন উদ্ভাবন থেকে শুরু করে পরীক্ষা- সবগুলো ধাপ পেরিয়ে সরবরাহ পর্যন্ত কমপক্ষে ১০ বছর সময় লাগে৷ কিন্ত এক বছরের কম সময়ে একাধিক ভ্যাকসিন উদ্ভাবনের মাধ্যমে অসম্ভবকে সম্ভব করেন বিজ্ঞানীরা৷ ডিসেম্বর থেকেই কয়েকটির প্রয়োগ শুরু হয় দেশে দেশে৷ করোনার অন্ধকার এক টানেলের যাত্রা দিয়ে ২০২০ সালের সূচনা হলেও, বিদায়টা হয় শেষ প্রান্তে টিকার আলোতে৷
এফএস/এসিবি
ছবি: Robin Utrecht/picture alliance
14 ছবি1 | 14
মার্কিন সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল জানাচ্ছে, শ্বেতাঙ্গদের তুলনায় ল্যাটিনো এবং কৃষ্ণাঙ্গদের করোনায় মৃত্যু হয়েছে দুই দশমিক আট গুণ বেশি৷ অ্যামেরিকান ইন্ডিয়ান ও আলাস্কান নেটিভদের মধ্যে মৃত্যু দুই দশমিক ছয় গুণ বেশি, এশিয়ানদের ক্ষেত্রে এটি এক দশমিক এক গুণ বেশি৷
এর কারণ কী! যদিও এখনও এ নিয়ে পর্যাপ্ত গবেষণা হয়নি, বিশেষজ্ঞরা প্রাথমিকভাবে তিনটি কারণকে চিহ্নিত করেছেন৷ প্রথমত, ল্যাটিনো, কৃষ্ণাঙ্গ এবং এশিয়ানদের বেশিরভাগই অ্যামেরিকায় ছোটখাট কাজের সঙ্গে জড়িত৷ ফলে আয় সীমিত হওয়ায় খরচ বাঁচাতে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষাও অনেকেই করান না৷ ফলে আগে থেকেই অনেকের শরীরে নানা জটিল রোগ বাসা বেঁধে থাকতে পারে৷ এমনকি অনেকেই করোনার লক্ষণ দেখা দিলেও কাজ হারানো এবং চিকিৎসা খরচের ভয়ে তা লুকিয়ে রেখেছেন বলেও নানা সময়ে জানা গেছে৷
দ্বিতীয়ত, অর্থনৈতিকভাবে কম স্বচ্ছল হওয়ায় তারা অনেকেই গাদাগাদি করে এবং তুলনামূলক অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বাস করেন৷ ফলে করোনায় সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকিও অন্যদের তুলনায় তাদের বেশিই থাকে৷
দ্বিতীয়ত, জরুরি সেবা হিসেবে যেসব কাজকে চিহ্নিত করা হয় সেগুলোতে বেশিরভাগই অশ্বেতাঙ্গ মানুষকে চাকরি করতে দেখা যায়৷ ফলে বাসা বা কর্মক্ষেত্রের বাইরে বেশি বের হওয়ার ফলে ভাইরাসের বেশি ঝুঁকিতেও ছিলেন কৃষ্ণাঙ্গ ও ল্যাটিনোরা৷
ভবিষ্যতে বিস্তারিত গবেষণায় হয়তো আমরা আরো তথ্য জানতে পারবো৷
অর্থনীতি, মানসিক স্বাস্থ্য ও আত্মহত্যা
করোনার ফলে বিশ্বজুড়ে মানসিক স্বাস্থ্যে পড়েছে ব্যাপক প্রভাব৷ একদিকে লকডাউনের ফলে অনেকে চাকরি হারিয়েছে, ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেছে৷ অন্যদিকে স্কুল-কলেজ বন্ধ, বাসা থেকে বের হওয়ায় নিষেধাজ্ঞার কারণে, মানুষের মধ্যে বিষণ্ণতা বেড়েছে কয়েকগুণ৷ পাশাপাশি বেড়েছে পারিবারিক সহিংসতার ঘটনাও৷
উদাহরণ হিসেবে জাপানের দিকে তাকানো যায়৷ দেশটিতে কেবল অক্টোবরে যে পরিমাণ মানুষ আত্মহত্যা করেছেন, পুরো বছরে তত মানুষ করোনাতে মারা যাননি৷ কেবল অক্টোবরেই দেশটির সরকারি পরিসংখ্যান ২,১৫৩ জনের আত্মহত্যার তথ্য জানাচ্ছে৷ নভেম্বর পর্যন্ত করোনায় মৃত্যু ছিল দুই হাজারের একটু বেশি৷
এ ধরনের পরিসংখ্যান এতো দ্রুত বেশিরভাগ দেশই আপডেট করে না৷ ফলে সার্বিক চিত্র জানা সম্ভব হয় না৷ কিন্তু বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা শুরু থেকেই করোনার মানসিক প্রভাব নিয়ে সবাইকে সতর্ক করে আসছে৷ ফলে জাপানের এই উদাহরণ দিয়ে অন্যান্য দেশের অবস্থাও অনেকটাই বোঝা সম্ভব৷
জাপানে এমনিতেও আত্মহত্যার হার অন্য অনেক দেশের চেয়ে বেশি৷ দীর্ঘ কর্মঘণ্টা, স্কুলে পড়াশোনার চাপ, সামাজিক একাকিত্ব এবং সাংস্কৃতিক চাপ ইত্যাদি নানা কারণকে অতিরিক্ত মানসিক চাপের কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়৷
কিন্তু সরকারের ব্যাপক উদ্যোগের ফলে গত ১০ বছর ধরে এই হার ধীরে ধীরে কমছিলো৷ করোনার ফলে আবার তা বাড়তে শুরু করায় দেশটির সরকারও ব্যাপক উদ্বিগ্ন৷
এখানেও মূল কারণটা অর্থনৈতিক৷ দীর্ঘদিন অনেকে পরিশ্রম করে দারিদ্র্য থেকে উঠে এসেছিলেন৷ কিন্তু করোনার ফলে হোটেল, রেস্টুরেন্ট, পর্যটনের মতো ক্ষেত্রেগুলো বাধাগ্রস্ত হওয়ায় অনেকেই আবার দারিদ্র্যে ফিরে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন৷ এসব কাজে নারীদের পার্টটাইম চাকরি বেশি হওয়ায় নারীদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতাও বেশি দেখা গেছে৷
কেবল এশিয়া-আফ্রিকার দরিদ্র দেশ নয়, ইউরোপ-অ্যামেরিকা-অস্ট্রেলিয়ার মত শক্তিশালী অর্থনীতির দেশেও ২০২০ সালে ভয়াবহ আকারে বেড়েছে নারীর প্রতি সহিংসতা৷ ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম বলছে, প্রতি ঘণ্টায় বিশ্বজুড়ে ছয় জন নারী তার পার্টনার বা পরিবারের সদস্যের হাতে খুন হন৷ যুক্তরাজ্যে প্রতি তিন দিনে একজন নারী খুন হচ্ছেন পরিবারের সদস্যদের হাতে৷
করোনা শুরু আগেই এ পরিস্থিতি ছিল ভয়াবহ৷ করোনার ফলে তা আরো খারাপের দিকে যাচ্ছে৷
এছাড়া শিক্ষা ও সংস্কৃতিতে করোনা যে প্রভাব ফেলছে, তাতে শিশু ও তরুণরা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বলেও নানা সময়েই জানিয়েছে জাতিসংঘসহ অন্য আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো৷ অর্থনীতির ধাক্কা দ্রুত কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হলেও শিক্ষা ও সংস্কৃতিতে করোনার ধাক্কা একটি প্রজন্মকেই হুমকিতে ফেলবে, এমন আশঙ্কা তো থাকছেই৷