1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

করোনায় মহাসংকটে পোশাক খাত

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
২৩ মার্চ ২০২০

করোনার কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে সবচেয়ে বড় অবদান রাখা তৈরি পোশাক শিল্প মহা বিপর্যয়ের মুখে৷ করোনা পরিস্থিতির উন্নতি না হলে পোশাক কারখানাগুলো একের পর এক বন্ধ হয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন বিজিএমইএ নেতারা৷

গড়ে প্রতিদিনই ১০০ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি অর্থের অর্ডার বাতিল হচ্ছে।ছবি: Reuters

এতে বাংলাদেশের রপ্তানি বাণিজ্যই শুধু চরম ক্ষতির মুখে পড়বেনা, প্রায় অর্ধকোটি পোশাক শ্রমিকেরও পথে বসার উপক্রম হয়েছে৷ পোশাক কারখানার মালিকরা বলছেন,‘‘তাদের একমাসের বেতন দেয়ার ক্ষমতাই আমাদের নেই। কারখানা বন্ধ হয়ে গেলে আমরা তাদের বেতন দেব কিভাবে?’’

তবে বিজিএমইএর সভাপতি রুবানা হক বলেছেন, ‘‘আমরা শ্রমিকদের সব ধরনের স্বাস্থ্য নিরাপত্তার ব্যবস্থা করে কারখানা চালু রাখার চেষ্টা করছি৷ কিন্তু ক্রেতারা অবিবেচকের মত অর্ডার বাতিল করায় পরিস্থিতি মহাসংকটের দিকে যাচ্ছে। তারপরও আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ যেকেনো পরিস্থিতিতে আমরা শ্রমিদের বেতন দেব৷ তারা বেতন পাবেন৷’’ 

সিদ্দিকুর রহমান

This browser does not support the audio element.

এফবিসিসিআইর সহ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান জানান, ‘‘প্রতিদিন একটি দু'টি করে কারখানা বন্ধ হচ্ছে৷ যা পরিস্থিতি তাতে সব কারখানাই বন্ধ হয়ে যাবে৷ আগামী জুন পর্যন্ত আমাদের যা অর্ডার আছে তা বাতিল হয়ে যাচ্ছে৷ যারা আমাদের পোশাক কেনেন ইউরোপ, অ্যামেরিকা তারাও করোনায় আক্রান্ত৷ কে আমাদের পোশাক নেবে?’’ 

অর্ডার বাতিলের সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে৷ বিজিএমইএর মনিটিরিং সেলের সোমবারের (২৩ মার্চ) হিসাব অনুযায়ী এপর্যন্ত ১.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের অর্ডার বাতিল হয়েছে। অর্ডার বাতিল হওয়া কারখানার সংখ্যা ১ হাজার ৮৯টি। আর এসব কারখানায় ১২ লাখ শ্রমিক কাজ করেন৷ প্রতিদিনই অবস্থার অবনতি ঘটছে। গড়ে প্রদিনই ১০০ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি অর্থের অর্ডার বাতিল হচ্ছে৷

সোমবার  সাভারের দুটি পোশাক কারখানা করোনার কারণে অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ করে দেয়া হয়েছে৷ কারখানা দু'টি হলো সাভারের হেমায়েতপুরের দীপ্ত অ্যাপারেলস ও ডার্ড গার্মেন্টস লিমিটেড৷ আর রোববার কেরানীগঞ্জের গার্মেন্টসপল্লী অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেয়া হয়৷ সেখানে শতাধিক পোশাক কারখানা আছে৷ আর সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে পোশাক কারখানা  বন্ধের সিদ্ধান্ত বিজিএমইএ নেবে৷

বিজিএমইএর তথ্য অনুযায়ী, আর্থিক সংকটের কারণে গত ১৪ মাসে ১০৬টি কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। এছাড়া গত বছরের তুলনায় এ বছরের ১৮ মার্চ তৈরি পোশাক রপ্তানি কমেছে ৪১ দশমিক ৮৪ শতাংশ। আগের বছরের তুলনায় এ বছরের ১৯ মার্চ কমেছে ১২ দশমিক ০২ শতাংশ৷ এ বছরের ২০ মার্চ কমেছে ৪৪ দশমিক ১৫ শতাংশ৷ সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘‘এখন যা পরিস্থিতি তাতে আর কত অর্ডার বাতিল হচ্ছে তার শতাংশ হিসাব করার সুযোগ নেই৷ সব অর্ডারই বাতিল হচ্ছে৷ সব কারখানা বন্ধ করে দিতে হবে৷ সময়ের ব্যাপার মাত্র৷ করোনা এখন বিশ্ব মহামারি৷ আর বাংলাদেশের পোষাক খাত এখন মহাসংকটে৷’’ 

রুবানা হক

This browser does not support the audio element.

রুবানা হক বলেন,‘‘বিদেশি ক্রেতারা মানবাধিকারের কথা বলেন৷ কমপ্লায়েন্সের কথা বলেন৷ কিন্তু তারা এখন অবিবেচকের মত সব অর্ডার বাতিল করছেন৷ বন্দরে  পোশাক গিয়ে পৌছার পর, মাঝপথে থাকা চালান সবই তারা বাতিল করছেন৷ এটা হতে পারে না৷  করোনা সংকট সারবিশ্বে৷ তাই  একসঙ্গে সংকট মোকাবিলা করতে হবে৷’’ তিনি বলেন, ‘‘তাই আমার আহ্বান সারা বিশ্বের ক্রেতাদের প্রতি, ব্র্যান্ডের প্রতি৷ মানবাধিকারের প্রতি সম্মান রেখে অর্ডার বাতিল করবেন না৷ বাংলাদেশের পোশাক শিল্প এবং কর্মীদের পাশে দাঁড়ান৷ এর সঙ্গে ৪১ লাখ শ্রমিকের জীবন জড়িত৷ আপনারা বিবেক বর্জিত কাজ করতে পারেন না৷’’

বাংলাদেশে মোট পোশাক কারখানা সাড়ে চার হাজারের মত৷ সেখানে কাজ করেন ৪১ লাখ পোশাক শ্রমিক৷ ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বাংলাদেশ তিন হাজার ৪১৩ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে৷ যা মোট রপ্তানির ৮০ ভাগেরও বেশি৷

সাধারণ ছুটি ঘোষণা, নামছে সেনাবাহিনী

করোনার জন্য বাংলাদেশে ২৯ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে৷ এরফলে কার্যত ২৬ মার্চ থেকেই বন্ধের আওয়তায় চলে যাচ্ছে সবকিছু৷ আর মঙ্গলবার থেকে জেলা প্রশাসনকে সহায়তা করতে সারাদেশে সেনাবাহিনী নামছে৷

জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের ( আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্রোরা সোমবার ব্রিফিং-এ জানিয়েছেন, দেশে এখন করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৩৩ জন। মারা গেছেন মোট  তিন জন৷ আইসোলেশনে আছেন ৫১ জন এবং প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে আছেন ৪৬ জন৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ