করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন লতা মঙ্গেশকর। মুম্বইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে আইসিইউ-তে ভর্তি তিনি।
বিজ্ঞাপন
সংবাদসংস্থা এএনআই জানাচ্ছে, লতার ভাইঝি রচনা বলেছেন, ''সাবধানতার জন্যই তাকে আইসিইউ-তে রাখা হয়েছে। তার অবস্থা স্থিতিশীল।''
এই কিংবদন্তী সঙ্গীতশিল্পীর বয়স ৯২ বছর। রচনা বলেছেন, ''এই বয়সে করোনায় আক্রান্ত বলে তাকে আইসিইউ-তে রাখা হয়েছে। তার জন্য আপনারা প্রার্থনা করবেন। আর আমাদের ব্যক্তিগত পরিসরকে আপনারা সম্মান জানানোয় সবাইকে ধন্যবাদ।''
বেশ কয়েক বছর হলো লতা বাড়ির বাইরে বিশেষ বেরোন না। করোনাকালে তো তিনি কোথাও বেরোননি। সম্ভবত তার ঘনিষ্ঠ কেউ বা বাড়ির কর্মীদের কাছ থেকে তার করোনা হয়েছে।
চলে যেতে যেতে দিন বলে যায়
চলে গেলেন সুরের সম্রাজ্ঞী, ভারতরত্ন লতা মঙ্গেশকর৷ সাত দশক ধরে ভক্তদের কণ্ঠের জাদুতে মোহন করে রেখেছিলেন৷ মধুবালা থেকে কাজল পর্যন্ত শত নায়িকার ঠোঁটে শোনা যায় তাঁর গান৷ তার বিদায়ে বিষাদেও মনে পড়ে মধুর সব গান৷
ছবি: Dinodia Photo/imago images
চিরবিদায় ‘নাইটিঙ্গেল অফ বলিউড’
ভারতের গণমাধ্যমগুলো জানায়, চার সপ্তাহ ধরে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন এ শিল্পী৷ সম্প্রতি তার অবস্থার উন্নতিও হচ্ছিল৷ কিন্তু শনিবার (০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২) হঠাৎ তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে৷ রোববার স্থানীয় সময় সকাল ৮টা ১২ মিনিটে শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি৷
ছবি: Sherwin Crasto/REUTERS
জন্ম
১৯২৯ সালের ২৮শে সেপ্টেম্বর ভারতের মধ্যপ্রদেশের ইন্দোরে একটি মারাঠি পরিবারে জন্ম লতা মঙ্গেশকরের৷ বাবা দীননাথ মঙ্গেশকর ছিলেন শাস্ত্রীয় সংগীত শিল্পী এবং মঞ্চ অভিনেতা৷ বাবার কাছে হাতেখড়ি হওয়ার পর ওস্তাদ আমানত আলী খাঁ সাহেবের কাছে সংগীত শিক্ষা হয় তাঁর৷
ছবি: AP
প্লেব্যাক জীবনের শুরু
১৯৪৩ সালে মাত্র ১৪ বছর বয়সে মারাঠি ছবি গজবহুর মাধ্যমে প্লেব্যাক জীবনের শুরু তাঁর৷ এরপর ভারতের ৩৬টি আঞ্চলিক ভাষাসহ বিশ্বের বেশ কয়েকটি ভাষায় গান গেয়েছেন তিনি৷
ছবি: AP
বাংলা গান গাওয়া
১৯৫৯ সালে সলিল চৌধুরীর পরিচালনায় প্রথম বাংলা গানে কণ্ঠ দেন লতা মঙ্গেশকর৷ গানটি ছিল ‘না যেওনা, রজনী এখনো বাকি৷’ সলিল চৌধুরীর সুরে এরপর অনেক জনপ্রিয় গান গেয়েছেন তিনি৷ তাঁর গাওয়া রঙ্গিলা বাঁশিতে, ও মোর ময়না গো, সাত ভাই চম্পা – এই গানগুলি এখনো জনপ্রিয়তার শীর্ষে৷
ছবি: dapd
মধুবালা থেকে প্রীতি জিনতা
২০ বছর বয়সে মহল ছবিতে যিনি মধুবালার জন্য গেয়েছিলেন অমর সেই গান, ‘আয়েগা আনেওয়ালা’, ৪৪ বছর বয়সে ডিম্পল কাপাডিয়ার জন্য তিনি ববি ছবিতে গাইলেন, ‘হাম তুম এক কামরেমে বন্দ হো’, ৬৯ বছর বয়সে একই শিল্পী যব পেয়ার কিসিসে হোতা হ্যায় ছবিতে ডিম্পলের মেয়ে টুইঙ্কেল খান্নার জন্য গাইলেন, ‘মদহোশ দিল কি ধড়কন’, ৭৫ বছর বয়সে বীরজারা ছবিতে প্রীতি জিনতার জন্য অবলীলায় গেয়ে দিলেন, ‘তেরে লিয়ে হাম জিয়ে!’
ছবি: Yashrajfilms
আশা ভোঁসলে
ছোট বোন আশা ভোঁসলে একসময় ছিলেন লতার ছায়াসঙ্গী৷ আশার স্বামী রাহুল দেব বর্মনের পরিচালনায় অনেক জনপ্রিয় গান গেয়েছেন তিনি৷ এগুলোর মধ্যে ‘মেরে ন্যায়না শাওন ভাদো’, ‘বাহো মে চালে আ’ এখনো সবার মুখে মুখে৷
ছবি: Wikipedia
অভিনেত্রী লতা
পুরোদমে সঙ্গীত শিল্পী হওয়ার আগে এবং পরেও ছবিতে অভিনয় করেছেন লতা মঙ্গেশকর৷ শিল্পী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার আগে আটটি এবং তারপর মাত্র একটি গানের দৃশ্যের জন্য একটি ছবিতে৷
ছবি: UNI
পুরস্কার
২০০১ সালে ভারতের সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার ভারতরত্ন দেয়া হয় তাঁকে৷ জাতীয় পুরস্কার পেয়েছেন ৩ বার, ফিল্মফেয়ার পুরস্কার চারবার৷ এছাড়া পদ্মভূষণ, দাদাসাহেব ফালকে, রাজীব গান্ধী পুরস্কারসহ অজস্র পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন তিনি৷
ছবি: UNI
ক্রিকেটের ভক্ত
ক্রিকেটের দারুণ ভক্ত লতা মঙ্গেশকর৷ তাঁর জন্য একটা বিশেষ আসন বরাদ্দ রয়েছে লর্ডসে৷
ছবি: Getty Images
কেন বিয়ে করলেন না?
জবাবে লতাজী সবসময়ই বলে থাকেন, ‘‘গান গাইতে গাইতে আর সংসারের কথা ভাবতে ভাবতে বিয়ে করার সময়টা পেলাম কই!’’
ছবি: UNI
সঙ্গীত অনুসরণ করে তাঁকে
লতাজীর বন্দনা করতে গিয়ে পরিচালক যশ চোপড়ার বলেছিলেন, ‘সব শিল্পী সংগীতকে অনুসরণ করে, আর সংগীত অনুসরণ করে লতাকে৷’
ছবি: Getty Images
নেহেরুর কান্না
চীন-ভারত যুদ্ধের সময় এক অনুষ্ঠানে ‘অ্যায় মেরি ওয়াতন কে লোগো’ গানটা শুনে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু অঝোরে কেঁদে ফেলেছিলেন৷
ছবি: Getty Images
বিশ্ব রেকর্ড
১৯৭৪ থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি গান রেকর্ড করার জন্য তাঁর নাম গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস এ স্থান পায়৷ এ সময় তিনি প্রায় ৩০,০০০ গান রেকর্ড করেছিলেন৷ বিভিন্ন সূত্রের দাবি, বর্তমানে তাঁর গানের সংখ্যা প্রায় ৫০ হাজার৷
ছবি: UNI
13 ছবি1 | 13
২০১৯ সালে লতা একবার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন শ্বাসকষ্ট নিয়ে। সেসময় রচনা জানিয়েছিলেন, লতার ভাইরাল চেস্ট ইনফেকশন হয়েছিল।