করোনা মৃত্যুর পরিসংখ্যান আছে। কিন্তু করোনা-কালে বিনা চিকিৎসায় কত রোগী মারা যাচ্ছেন, তার হিসেব কেউ রাখছে না।
বিজ্ঞাপন
তিনি অসুস্থ ছিলেন না। দিল্লির চিত্তরঞ্জন পার্কের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত থেকেছেন করোনা-লকডাউন শুরু হওয়ার কয়েক দিন আগেও। গত ২৩ এপ্রিল হঠাৎ হার্ট অ্যাটাক হয় সুব্রত দাসের। হাসপাতালেও নিয়ে যাওয়া হয়েছিল তাঁকে। কিন্তু করোনা-আতঙ্কে চিকিৎসা তো দূরের কথা, হাসপাতালেই ঢুকতে দেওয়া হয়নি তাঁকে। পরিবারের অভিযোগ বিনা চিকিৎসায় রাস্তাতেই মৃত্যু হয়েছে সুব্রতবাবুর।
এ কোনও নতুন ঘটনা নয়। গোটা দেশ জুড়ে এমনই ঘটনা ঘটে চলেছে প্রতিদিন। সরকার দায় চাপাচ্ছে হাসপাতালের ওপর, হাসপাতাল সরকারের ওপর। আর চিকিৎসা না পেয়ে বেঘোরে মারা যাচ্ছেন সাধারণ মানুষ।
করোনা ভাইরাসে যে দেশে যত মৃত্যু
বিশ্বের ২১০টি দেশে করোনা ভাইরাস ছড়িয়েছে৷ এই মহামারিতে মৃতের সংখ্যাও ক্রমশ বাড়ছে৷ বুধবার অবধি প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে এখানে থাকছে করোনা আক্রান্তে শীর্ষে থাকা নয় দেশের কথা৷
ছবি: AFP/A. Weiss
শীর্ষে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
মার্কিন মুল্লুকে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ কিছুটা দেরিতে শুরু হলেও এখন আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যায় শীর্ষে রয়েছে দেশটি৷ বুধবার অবধি দেশটিতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১,০৩৫,৭৬৫ জন, আর মৃতের সংখ্যা ৫৯,২৬৬ জন৷ বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে ট্রাম্প প্রশাসনের উদাসীনতা দেশটিতে এই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে৷
ছবি: picture-alliance/Zuma/V. Carvalho
দ্বিতীয় অবস্থানে স্পেন
করোনা সংক্রমণে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা বিবেচনা করলে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ইউরোপের দেশ স্পেন৷ দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা ২৩২,১২৮, আর মৃতের সংখ্যা ২৩,৮২২ জন৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/M. Fernandez
মৃতের সংখ্যায় স্পেনের চেয়ে এগিয়ে ইটালি
ইউরোপের আরেক দেশ ইটালিতে করোনা সংক্রমণের সংখ্যা স্পেনের তুলনায় কম ২০১,৫০৫ জন হলেও মৃতের সংখ্যা ২৭,৩৫৯ জন৷ আশার কথা হচ্ছে, দেশটিতে নতুন আক্রান্তের হার এখন কমতির দিকে৷
ছবি: picture-alliance/NurPhoto/C. Minelli
ফ্রান্সেও ভয়াবহ আঘাত
করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বিচারে ইউরোপে স্পেন ও ইটালির পরেই রয়েছে ফ্রান্স৷ দেশটিতে বুধবার অবধি মৃতের সংখ্যা ২৩,৬৬০ জন, আর আক্রান্ত ১৬৫,৯১১ জন৷
ছবি: AFP/S. Bozon
পঞ্চম যুক্তরাজ্য
সদ্য ইউরোপীয় ইউনিয়ন ত্যাগ করা যুক্তরাজ্যে করোনার আঘাতে প্রাণ হারিয়েছেন ২১,৬৭৮ জন, আর আক্রান্ত ১৫৯,৯১২ জন৷
করোনা ভাইরাসে ইরানে আক্রান্তের সংখ্যা ৯২,৫৮৪ জন আর মৃতের সংখ্যা ৫,৮৭৭ জন৷ দ্রষ্টব্য: ছবিঘরটি তৈরিতে জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটি এবং ওয়ার্ল্ডোমিটারস-এ প্রকাশিত তথ্য ব্যবহার করা হয়েছে৷ বিভিন্ন দেশের সরকারি হিসেবের সঙ্গে এই সংখ্যায় মাঝেমাঝে তারতম্য দেখা যায়৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/A. Shirband
9 ছবি1 | 9
সুব্রতবাবুর ঘটনার দিকেই চোখ রাখা যাক। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তাঁর মেয়ে ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন তাঁর মর্মান্তিক অভিজ্ঞতার কথা। দিল্লির বাঙালি পাড়া চিত্তরঞ্জন পার্কে থাকতেন ৬৫ বছরের সুব্রতবাবু। মেয়ে এবং জামাইয়ের বাড়ি পাশেই। ২৩ তারিখ সকালে সুব্রতবাবুর হঠাৎই বুকে ব্যথা শুরু হয়। কিছুক্ষণের মধ্যেই তিনি অজ্ঞান হয়ে যান। তাঁর অবস্থা দেখে সঙ্গে সঙ্গেই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি শুরু করেন সকলে। কিন্তু লকডাউনের মধ্যে অ্যাম্বুল্যান্স পেতেও যথেষ্ট বেগ পেতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। সুব্রতবাবুর মেয়ের ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। ডয়চে ভেলেকে তিনি জানিয়েছেন, ''অ্যাম্বুল্যান্সের জন্য পুলিশ, হাসপাতাল সর্বত্র ফোন করেছি। এমার্জেন্সি নম্বরে বার বার ফোন করেছি, লাভ হয়নি। বেশ কিছুক্ষণ এ ভাবে চলার পরে কোনও মতে একটি অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা হয়। তাতে তুলে বাবাকে সব চেয়ে কাছের বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাই। কিন্তু সেই হাসপাতাল ইমার্জেন্সি ওয়ার্ডে পর্যন্ত বাবাকে নিয়ে যেতে দেয়নি। আমাদের বলা হয়, এ ভাবে করোনা ছড়াবেন না। রোগীকে নিয়ে হাসপাতাল চত্বরের বাইরে চলে যান।''
করোনার কোনও লক্ষণই ছিল না সুব্রতবাবুর। বার বার তা বলা সত্ত্বেও প্রথম হাসপাতালটি রোগীর পরিবারের কথা শুনতে চায়নি। অগত্যা, আরেকটু বড় এবং রীতিমতো নাম করা একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় সুব্রতবাবুকে। ততক্ষণে তাঁর শরীর শক্ত হয়ে গিয়েছে। অভিযোগ, সেই হাসপাতালেও সুব্রতবাবুকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। সুব্রতবাবুর মেয়ের দাবি, চিকিৎসকরা জানান, এই পরিস্থিতিতে কোনও রোগীকে ইমার্জেন্সিতে দেখাও সম্ভব নয়। এখানেই শেষ নয়, অ্যাম্বুল্যান্সের চালক তাঁদের বলেন, প্রতিদিন এ ভাবেই রোগীদের ফিরিয়ে দিচ্ছে বেসরকারি হাসপাতালগুলি। ফলে অন্য জায়গায় নিয়ে গিয়ে আর লাভ নেই। একই অভিজ্ঞতা হবে।
সুব্রতবাবুর মেয়ে জানিয়েছেন, ''শুধু বাবাই নয়, দ্বিতীয় হাসপাতালটির বাইরে আরও এক হার্টের রোগীর সঙ্গে আলাপ হয়েছিল। তাঁকেও হাসপাতালে ঢুকতে দিচ্ছিলেন না ইমার্জেন্সির চিকিৎসকরা।'' বাড়ি ফেরার পরে কোনও মতে এক পরিচিত চিকিৎসককে ডেকে আনা হয়। তিনি এসে ডেথ সার্টিফিকেট লিখে দেন। পরিবারের দাবি, হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসাটুকু পেলে হয়তো বাঁচানো যেত সুব্রতবাবুকে। কার্যত বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু হয়েছে তাঁর।
করোনা নজরে রাখার কয়েকটি অ্যাপ
করোনার বিস্তার ঠেকাতে বিভিন্ন দেশ প্রযুক্তির সহায়তা নিচ্ছে৷ এক্ষেত্রে মোবাইল অ্যাপ, সফটওয়্যার, কিউআর কোড ব্যবহৃত হচ্ছে৷ ছবিঘরে থাকছে বিস্তারিত৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Keystone/L. Gillieron
অস্ট্রেলিয়া
করোনার বিস্তার ঠেকাতে ‘কোভিডসেফ’ অ্যাপ চালু করেছে সরকার৷ এর মাধ্যমে একজন অ্যাপ ব্যবহারকারী আরেকজন ব্যবহারকারীর দেড় মিটার দূরত্বের মধ্যে আসার তথ্য সংগ্রহ করছেন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা৷ ব্লুটুথ ওয়্যারলেস সিগন্যালের মাধ্যমে এই তথ্য জোগাড় করা হচ্ছে৷ একজন ব্যবহারকারী করোনা আক্রান্ত কারো সঙ্গে ১৫ মিনিট বা তার বেশি সময় ধরে ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে এসে থাকলে, সেই তথ্য বার্তা দিয়ে ঐ ব্যক্তিকে জানিয়ে দেয়া হয়৷
ছবি: Getty Images/Q. Rooney
চীন
নাগরিকদের চলাফেরার তথ্য সংগ্রহ করছে দেশটি৷ ‘আলিপে’ ও ‘উইচ্যাট’ অ্য়াপ ব্য়বহারকারীরা ব্যক্তিগত তথ্য, ভ্রমণের ইতিহাস, অসুস্থতার লক্ষণ ইত্যাদি তথ্য দেয়ার মাধ্যমে একটি কিউআর কোড পেয়ে থাকেন৷ বাসে, ট্রেনে, অফিসে, এমনকি নিজের বাড়িতে ঢুকতে এই কোড স্ক্যান করতে হয়৷ এভাবে হালনাগাদ তথ্য পেয়ে থাকে সরকার৷ কোডের রং সবুজ হলে চলাফেরায় বাধা নেই, হলুদ হলে সাতদিন আর লাল হলে ১৪ দিনের কোয়ারান্টিনে যেতে হয় নাগরিকদের৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Imaginechina/D. Qing
ইটালি
কেউ করোনা আক্রান্তের স্পর্শে এসেছেন কিনা, সেই তথ্য় জানতে অ্যাপ চালু করতে চায় ইটালি৷ সেজন্য টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছে৷ শত শত প্রস্তাব জমা পড়েছে৷ শিগগিরই তা চালু হবে৷ তবে এই অ্যাপ ব্যবহার ঐচ্ছিক হবে৷
ছবি: picture-alliance/AP Photos/L. Bruno
দক্ষিণ কোরিয়া
‘কোভিড-১৯ স্মার্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম’-এর মাধ্যমে করোনা রোগী ও যারা কোয়ারান্টিনে আছেন তাদের চলাফেরা পর্যবেক্ষণ করা হয়৷ এছাড়া যারা হোম-কোয়ারান্টিন মানছে না ভবিষ্যতে তাদের হাতে ইলেকট্রনিক ব্যান্ড পরানোর চিন্তা করছে দেশটি৷ কেউ এটি না পরলে তাকে আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠানো হবে এবং তার খরচ ঐ ব্যক্তিকেই দিতে হবে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Keystone/L. Gillieron
ভারত
করোনা রোগী ও তাদের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের গতিবিধি জানতে ‘আরোগ্যসেতু’ অ্যাপ চালু করেছে সরকার৷ প্রায় সাড়ে সাত কোটি মানুষ এটি ডাউনলোড করেছেন বলে সরকার জানিয়েছে৷ এগারোটি ভাষায় অ্যাপটি চালু হয়েছে৷ এই অ্যাপে করোনা নিয়ে সচেতনতা ও জরুরি স্বাস্থ্যসেবার সঙ্গে সহজে যোগাযোগের উপায়ও বলা আছে৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/M. Swarup
জার্মানি
আপনি করোনা আক্রান্ত কারো সংস্পর্শে এসেছেন কিনা, তা জানাতে অ্যাপল ও গুগল যৌথভাবে একটি সফটওয়্য়ার তৈরি করছে৷ মে মাসে এটি পাওয়া যেতে পারে৷ জার্মানি এই উদ্যোগকে সমর্থন জানিয়েছে৷ যদিও জার্মানি একই কাজের জন্য নিজ উদ্য়োগে ‘পিইপিপি-পিটি’ নামে একটি ব্যবস্থা গড়ে তুলতে চেয়েছিল৷ কিন্তু সমালোচনার কারণে সেই পরিকল্পনা থেকে সরে এসেছে৷
ছবি: picture-alliance/NurPhoto/E. Contini
6 ছবি1 | 6
দিল্লি মেডিকেল কাউন্সিলের সভাপতি অরুণ কুমার গুপ্ত জানিয়েছেন, কোনও হাসপাতাল এ ভাবে রোগী ফেরত পাঠাতে পারে না। এটা হাসপাতালের প্রোটোকল-বিরোধী। এ ক্ষেত্রেও দু'টি বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত বলে মত প্রকাশ করেছেন দিল্লির বহু চিকিৎসক। অন্তত তদন্ত করে দেখা উচিত, কেন সুব্রতবাবুকে ইমার্জেন্সিতেই ঢুকতে দেওয়া হয়নি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা একাধিকবার এ বিষয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে। হাসপাতালগুলিকে বার বার তারা অনুরোধ করেছে, যেন করোনার জন্য সাধারণ রোগীদের চিকিৎসায় গাফিলতি না হয়। দিন কয়েক আগে পোপও আফ্রিকার উদাহরণ দিয়ে একই কথা বলেছেন। ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার এ বিষয়ে স্পষ্ট অ্যাডভাইসারি বা নির্দেশিকা জারি করেছে। যাতে বলা হয়েছে, কোনও হাসপাতাল সাধারণ রোগীদের চিকিৎসায় গাফিলতি করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু বাস্তব বলছে, এ সবই কথার কথা।
শুধু দিল্লি নয়, গোটা দেশেই একই চিত্র। দক্ষিণ ভারতের একাধিক বেসরকারি হাসপাতাল ওপিডি বা আউটডোর বন্ধ করে দিয়েছে। কলকাতায় বেসরকারি হাসপাতালগুলির বিরুদ্ধে বার বার অভিযোগ উঠছে যে, তারা রোগী ভর্তি করতেই চাইছে না। সরকারি হাসপাতালগুলির অবস্থাও তথৈবচ। করোনা আতঙ্কে গুরুত্বপূর্ণ সরকারি হাসপাতালগুলির বিভিন্ন ওয়ার্ড অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করা হয়েছে। বন্ধ করা হয়েছে কলকাতার ঠাকুরপুকুরের ক্যান্সার হাসপাতাল। গরিব ক্যান্সার রোগীদের একমাত্র যাওয়ার জায়গা। বেশ কিছু বেসরকারি হাসপাতাল কার্যত রোগী ভর্তিই বন্ধ করে দিয়েছে বলে সূত্র জানাচ্ছে। যদিও সরকারি ভাবে হাসপাতালগুলি সে কথা স্বীকার করছে না। কিন্তু তাদের রোগী ভর্তির খাতা দেখলেই বোঝা যাচ্ছে, গত কয়েক দিনে কাওকে ভর্তি নেওয়া হয়নি।
করোনা সংকটে আশার আলো দেখাচ্ছেন ফরাসি শিল্পী
ছবি একটু বড় হলে ক্ষতি কী! ফরাসি শিল্পী সেইপ সুইজারল্যান্ডের আল্পস পর্বতের উপর প্রায় ৩,০০০ বর্গমিটার আয়তনের ছবি এঁকেছেন৷ করোনা সংকটের মাঝে আশার আলো জাগিয়ে তুলতেই এই প্রয়াস৷
ছবি: picture-alliance/Keystone/V. Flauraud
খোলা আকাশের নীচে ক্যানভাস
সুইজারল্যান্ডের লেইসিন এলাকার এক পাহাড়ে আক্ষরিক অর্থেই বড় শিল্প সৃষ্টি হয়েছে৷ প্রায় ১,২০০ মিটার উচ্চতায় ঘাসজমিকেই ক্যানভাস করে তুলেছেন ফরাসি শিল্পী সেইপ৷
ছবি: picture-alliance/Keystone/V. Flauraud
দর্শকের স্থান উপরে
সমতলে দাঁড়িয়ে এই শিল্পকর্ম উপভোগ করার উপায় নেই৷ তার জন্য আকাশে পাড়ি দিতে হবে৷ উপর থেকেই ‘সংকট ছাড়িয়ে’ নামের এই ছবির প্রকৃত মর্ম বোঝা সম্ভব৷ শৈলশিলার উপর আচমকা একটি মেয়েকে বসে থাকতে দেখা যায়৷ স্বপ্নভরা দৃষ্টিতে সে পাহাড়ের সৌন্দর্য দেখে চলেছে৷
ছবি: picture-alliance/Keystone/V. Flauraud
তৃতীয় মাত্রা
বিমান অথবা ড্রোনের মাধ্যমে একমাত্র সঠিক অ্যাংগেল বা কোণ থেকেই এই ছবির থ্রিডি বা ত্রিমাত্রিক রূপ দেখা যায়৷ দেখলে মনে হবে মেয়েটি যেন সত্যি মাথা উঁচু করে রয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/Keystone/V. Flauraud
প্রথমে স্ট্রিট পেইন্টিং, তারপর ল্যান্ড আর্ট
সেইপের আসল নাম গিয়োম লেগ্রো৷ কোনো প্রথাগত প্রশিক্ষণ নেন নি, নিজেই সব কায়দা শিখে নিয়েছেন৷ আগে তিনি রাজপথের উপর স্প্রে করতেন৷ গত পাঁচ বছর ধরে তিনি ল্যান্ড আর্ট নিয়ে মেতে রয়েছেন৷
ছবি: imago images/A. Morissard
সমবেত উদ্যোগ
এত বড় ফর্ম্যাটে ছবি আঁকতে হলে সবচেয়ে বড় শিল্পীরও সহায়তা লাগে৷ সহকারী লিওনেল সেইপকে সাহায্য করে থাকেন৷ চক ও কাঠকয়লার মিশ্রণ দিয়ে অরগ্যানিক রং তৈরি করেন তাঁরা৷
ছবি: picture-alliance/Keystone/V. Flauraud
আশা জাগাতে রংয়ের বাহার
তারপর স্প্রে করা হয়৷ আইন মেনেই সব কাজ করা হয়৷ মাঠের জমির মালিক একজন চাষি এবং শিল্পীর বন্ধু৷ গোটা বিশ্বের জন্য কঠিন এই সময়ে শিল্পী এভাবে আশার আলো দেখাতে চান৷
ছবি: picture-alliance/Keystone/V. Flauraud
ছবির মাধ্যমে বার্তা
সেইপ তাঁর সৃষ্টিকর্মের মাধ্যমে এক ইতিবাচক বার্তা পাঠাতে চান৷ ৩১ বছর বয়সি এই শিল্পী বলেন, ‘‘প্রায় তিন হাজার বর্গমিটার বড় এই ফ্রেসকো আরো সংহতি ও মানবিকতার ভিত্তিতে আবার সবকিছু গড়ে তোলার কথা যেন মনে করিয়ে দেয়৷’’ করোনা সংকট শেষ হবার পর বিশ্বের মানুষ সমষ্টিগতভাবে একই দিশায় পাড়ি দেবে, এমনটাই তাঁর আশা৷
ছবি: picture-alliance/dpa/V. Flauraud
ক্ষণস্থায়ী শিল্পের জন্য কঠিন পরিশ্রম
এই শিল্পকর্ম কিন্তু চিরস্থায়ী নয়৷ আরো ঘাস গজালে দুই থেকে চার সপ্তাহের মধ্যে ছবিটি প্রকৃতির মধ্যেই মিলিয়ে যাবে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/V. Flauraud
8 ছবি1 | 8
পশ্চিমবঙ্গের একটি সরকারি হাসপাতালের প্রাক্তন সুপার চিকিৎসক সাত্যকি হালদার ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, ''এ গুলো মর্মান্তিক ঘটনা। আসলে বেসরকারি হাসপাতালগুলি আগেও ব্যবসা করতো, এখনও ব্যবসা করছে। ফলে তাদের অমানবিক মুখ বার বার বেরিয়ে পড়ছে। তবে একই সঙ্গে আরও একটি কথা বলা দরকার। চিকিৎসকদের একাংশের মধ্যেও ভয় তৈরি হয়েছে। এখনও বহু ডাক্তারের কাছে ন্যূনতম নিরাপত্তা পোশাকটুকু পৌঁছয়নি। করোনা নিয়ে সাধারণ লোক যেমন আশঙ্কিত হয়ে আছেন, ডাক্তারদের একটি অংশও তেমনই আশঙ্কিত। তবে বিশ্ব জুড়ে এই সব কিছু উপেক্ষা করে দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন বহু চিকিৎসক। মারাও যাচ্ছেন। তাঁরা প্রমাণ করে দিচ্ছেন, বড় বড় দেশগুলির হাতে আনবিক অস্ত্র আছে, কিন্তু পিপিই দেওয়ার ক্ষমতা নেই।''
দিল্লির চিকিৎসক সুব্রত কুণ্ডু ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, ''গত এক মাস ধরে সাধারণ রোগীরা এ ভাবে সমস্যায় পড়ছেন। আসলে কার করোনা আছে, আর কার করোনা নেই, সেটা বোঝা খুব মুশকিল। এই ঘটনাগুলি বুঝিয়ে দিচ্ছে আমরা করোনা পরিস্থিতি সামলানোর জন্য তৈরিই নই। সেই পরিকাঠামোটাই তৈরি করা যায়নি। চিকিৎসকরাও জানেন না, কার করোনা হয়েছে। গঙ্গারাম হাসপাতালে একজন হার্ট পেশেন্টকে দেখতে গিয়ে দেখা যায়, তাঁর করোনা হয়ছে। সঙ্গে সঙ্গে ৩০ জন চিকিৎসক ও চিকিৎসাকর্মীকে কোয়ারান্টিনে পাঠানো হযেছে। সমস্যা দুই দিকেই রয়েছে।''
রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে অবশ্য বার বার বলা হচ্ছে সাধারণ রোগীদের চিকিৎসা করতেই হবে। কিন্তু কে শুনছে কার কথা? নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক চিকিৎসকের বক্তব্য, যে সমস্ত হাসপাতাল রোগীদের সঙ্গে এই দুর্ব্যবহার করছে, সহজেই তাদের শাস্তি দিতে পারে স্বাস্থ্যমন্ত্রক বা মেডিকেল কাউন্সিল। কিন্তু সে কাজটা হয় না। ভিতরে ভিতরে 'দেওয়া-নেওয়ার' সম্পর্কের অভিযোগ অনেক সময়ই ওঠে। সেই সম্পর্ক যদি থাকে তা হলে এমন ঘটনা ঘটতেই থাকবে।